somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আত্মকথন ০৩- স্কুল লাইফের বিস্কুট চুরি।

২৮ শে মে, ২০১৩ রাত ১১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্কুল জীবনটাকে মিস করেনা এমন লোকের সংখ্যা খুব কম। কত মজার, কত ভয়ে, কত রোমাঞ্চকর স্মৃতি যে রয়েছে আমাদের এই স্কুল লাইফকে কেন্দ্র করে তার ইয়াত্তা নেই। অভিভাবকের নিষেধ, শিক্ষকের শাসন থাকার পরেও আমরা কেও কি দমে গেছি? কোন কিছু করার চেষ্টা বা কোন নিষিদ্ধ অভিযানের কথা বা ভীষণ দুষ্টুমির কথা কি আমরা ভুলতে পারব? সেরকম এক নিষিদ্ধ অভিযানের বর্ণনা এখন দিব।

তখন ক্লাস নাইনে পড়ি, উঁচু ক্লাসে পড়ি তাই ভাবের শেষ নেই। B-) বড়ভাই ভঙ্গিতে চলাফিরা করি সবসময়। সেসময় আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু ছিল ক্লাস টেন কারণ তারা আমাদের বড়ত্বে ভাগ বসাত। তাদের কিভাবে ঘায়েল করা যায় সেই চিন্তাতে সবসময় বিভোর থাকতাম। যাক ঘটনাতে আসি, তখন “পার্টনার” বলে একটা এনজিও থেকে আমাদের সপ্তাহে একটা ক্লাস নিত। ক্লাসটা হত বয়ঃসন্ধি কাল, এইডস এইসব বিষয়ের উপর। আমরা বেশ আগ্রহ করে ক্লাসে যেতাম কারণ সেই ক্লাসটাই একমাত্র ছেলে মেয়ে একসাথে হত ;) । তারপরে আবার ঐসব বিষয়ের উপর ক্লাস :#) । বিভিন্ন ধরনের ছবি থাকত, বুঝেন তো কিসের ছবি ;) ! আমাদের সেই ক্লাসে আসার আগ্রহের আরও একটা প্রধান কারণ ছিল সেটা হল, তারা ক্লাস শেষে সবাইকে এক প্যাকেট করে বিস্কুট দিত। যাহোক আমরা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সে সকল বিষয়ে ব্যপক জ্ঞান অর্জন করে ফেললাম। অন্য সকল ইস্যু বাদ দিয়ে আমরা কেবল ঐ ক্লাসের বিষয় নিয়েই আলোচনা করতাম। ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে কয়েক জন মেয়ের সাথেও বেশ আলাপ হল। ক্লাস ভালই চলছিল কিন্তু গ্রীষ্মকালীন অবকাশের (আমরা বলি আম খাওয়ার ছুটি) জন্য স্কুল এক মাসের জন্য বন্ধ হয়ে গেল। মেয়েদের সাথে ক্লাস করতে পারব না, বিস্কুট পাব না, ঐসব বিষয়ে আর জ্ঞান ভান্ডার বাড়াতে পারব না এ নিতে আমাদের সবার মধ্যেই চিন্তার ছাপ।
যথারীতি এক মাস পর স্কুল খুলল এখন অপেক্ষা কবে বৃহস্পতি বার আসবে। প্রথম সপ্তাহে ক্লাস হলোনা। পরের সপ্তাহের বৃহস্পতি বারে দেখি স্যার মোটরসাইকেলে চড়ে আসছে পেছনে এক বক্স বিস্কুট। আজ মনে হয় আমাদের এখানেই প্রথম আসছে! আমাদের গ্রুপের চার পাঁচ জন মিলে স্যারের সাথে দেখা করার জন্য বের হলাম, স্যার হেড স্যারের রুমে ঢুকেছেন। আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছি এমন সময় চোখ চলে যায় স্যারের মটর সাইকেলের পেছনের দিকে। কু বুদ্ধি চেপে যায় আমাদের মাথায়। মোটর সাইকেল্টা দেওয়ালের পাশে একটা গলির মত যায়গায় ছিল। ব্যাস যেই ভাবা সেই কাজ পুরা কার্টুন সহ বিস্কুট গায়েব করে দিলাম :-B । বিস্কুটের বক্স নিয়ে দিলাম দৌড় পাসের আঁখ খেতের মাঝখানে। তারপর সে কি খাওয়া! কিন্তু পাঁচ জনে কি আর অত গুলা বিস্কুট খাওয়া যায়? আমি সব প্যাকেট গুলা পাঁচ ভাগে ভাগ করলাম তারপর সেই জমির মধ্যে লুকিয়ে রেখে বের হলাম। দুরু দুরু বুকে স্কুলের দিকে যাচ্ছি “কি আছে যে আজ কপালে!” পেছন দিক দিয়ে ক্লাসে ঢুকে পড়লাম। ততক্ষণে পুরা স্কুলে তুলকালাম কাণ্ড বেধে গেছে। স্যারের সন্দেহ ক্লাস টেনের ছাত্ররা এই কাজ করেছে কারণ তারা স্যারকে একদিন বিস্কুট চুরির হুমকি দিয়েছিল। যাক বাঁচা গেল। হেডস্যার ততক্ষণে কয়েকজনকে এক তরফা শাস্তি দিয়ে ফেলেছেন। আর আমাদের ক্লাসে এসে বললেন ‘ওদের মত যদি এসব কাজ করার চিন্তাও কর তাহলে সোজা স্কুল থেকে বের করে দিব।’
আমাদের কারণে বেচারাদের বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল। সরি বড় ভাইয়ারা ।
এই ছিল বিস্কুট চুরির ঘটনা। আপনারা কারা কি কি করছেন বলেন?


উৎসর্গঃ স্কুলের সকল দোস্তদের, কেমন আছিস তোরা?


অনেক দিন পর লিখলাম এই সিরিজটা। আমি লেখালিখিতে চুড়ান্ত রকমের অলস! এ থেকে মুক্তি পাব কিভাবে?
এর আগে কিছু লিখেছিলামঃ
আত্মকথন০১- পলিটেকনিক এর ঘুষখোর ডিজিটাল মাস্টার ও আমার কম্পিউটার কেনা

আত্মকথন ০২- কিছু মজার ঘটনা। না পড়লে পুরা মিস!!!
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×