somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুই বাংলার সিনেমাঃ আশিকি, টুট টুট টুট!!!

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন পর আজ বাংলা সিনেমা দেখতে সিনেমা হলে গিয়েছিলাম। সে যে সে সিনেমা না! "আশিকি"। ছোট কালে পড়তাম মহেশ গল্পের নামকরনের সার্থকতা বর্ণনা কর। ঠিক সেরকমই এই সিনেমার নামকরন পুরোপরি সার্থক।

যাহোক আমি আমার এক সাড়ে ছয় ফিট সাইজের বন্ধুরে নিয়ে রওনা দিলাম সিনেমা হল অভিমুখে। রাজশাহী শহরে কালের বিবর্তনে একটি মাত্র সিনেমা হল টিকে আছে নাম "উপহার" যেটা যেকোনো সময় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নিকট চলে যেতে পারে। ছয়টার সো, সাড়ে পাঁচটার সময় সিনেমা হলের গেটে গেলাম সেখানে দেখি বিশাল লাইন! মনে হচ্ছে আমি সিনেমা হলে না এসে পাসপোর্ট অফিসে চলে আসেছি। বন্ধু আমার লাইনে দাঁড়ালো, কিন্তু একি! সময় হয়ে যাচ্ছে কিন্তু কাউন্টার খোলার কোন নাম গন্ধ নাই! কিছুক্ষণ পরে দেখি দুইজন টিকেট বিক্রি করছে ৫৯ টাকার টিকেট ৮০ টাকায়। একটু পরে দেখি আরো কয়েকজন টিকেট বিক্রি করতে শুরু করল! শুনলাম ওরাই নাকি কাউন্টারের লোক। ব্ল্যাকে বিক্রি করছে। বন্ধু তো চলেই যাবে আমি বললাম, এত দূর আসছ দেইখা যাও! কেনা হলো টিকেট। সিনেমা হলের ২য় তলায় সিট। শুরু হতে ১০ মিনিট বাকি আছে। ওখানে গিয়ে তো আমার চক্ষু কাঁঠাল গাছ! গেটম্যান যে আছে সেও টিকেট বিক্রি করছে! উনি দর্শকদের জন্য এত সুবিধা করে রেখেছেন ভাবাই যায় না! কষ্ট করে টিকেট কেটে নিয়ে আসার কি দরকার? উনার কাছে থেকে নিবে আর ঢুঁকে পড়বে, কিছু পেতে হলে তো কিছু দিতে হয়! এজন্য উনাকে টিকেট প্রতি ৩০ টাকা করে বেশি দিতে হবে এই আর কি!

যাহোক শেষ পর্যন্ত হলে প্রবেশ করে ২টা সিট দখল করতে পারলাম দুই বন্ধু তে! সকল লাইট নিভে গেল, বুড়ো মানুষের ঝাপসা দৃষ্টির মত প্রজেকশন শুরু হল! কিন্তু পর্দাই দেখি কলকাতার নায়ক দেব, সব ভেঙ্গে চুরে একাকার করে ফেলছে! আমি তো অবাক! সেকি এই সিনেমাতে আবার দেব আসলো কবে?? মারামারি পর্ব শেষ করে নাচা গানা শুরু করল!! এক টিকেটে দুই ছবি নাকি!!! একটু পরে বুঝলাম ব্যপারটা, অন্য মুভির ট্রেলার দেখাচ্ছে! কিন্তু কলকাতার সিনেমার কেন?? এবার পর্দায় জাতীয় পতাকা ভেসে উঠলো জাতীয় সঙ্গীত বাজতে শুরু করল! উঠে দাঁড়ালাম, দাঁড়িয়ে দেখি আমরা দুই বন্ধু আর কোনাই একজন দাঁড়িয়ে আছে :(

এবার শুরু হল সিনেমা, কি ভাবে শুরু হল মনে নাই! যে সিনেমার নামটাই নকল সেটা আসল হবে কিভাবে? শুরু থেকে যত দূর দেখেছি তার মধ্যে কোন বাংলা সিনেমার ছিটেফোঁটাও নাই! মনে হচ্ছে আমি বাংলাদেশে নাই কলকাতা এসেছি সিনেমা দেখতে। মনে হয় কলকাতার কোন সিনেমাতেও এত হিন্দি ব্যবহার করা হয় না। প্রথম হাফ দেখার পর আর গিলতে পারিনি। চলে আসছি! যতটুকু দেখেছি এর মধ্যে একটা সেকেন্ডও মৌলিক কিছু দেখি নাই! তামিল, তেলেগু, দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে, হাম তুম,ব্যান্ড বাজা বারাত ইত্যাদি সিনেমার একটা সমসত্ত্ব মিশ্রণ। আমি ভেবে পেলাম না মৌসুমির মত এত খ্যাতিমান একজন অভিনেত্রী কেন এই মুভিতে????

প্রথম হাফ দেখে আমার যা মনে আছে তা হলো নুসরাত আফা আঙ্গুররে সরি অঙ্কুশ রে চুম্মা দিতে যাইতেছিল (ইমরান আংকেলের সাথে শুরু করার প্রিপারেসন) আর থেমে যাচ্ছিল। আর একটু পরে দেখলাম চাদ্দর পইরা কানতেছে! মনে মনে বললাম পিউলি আছে না ৭২ ঘন্টা তো হয় নাই! এ ছাড়া আর কিছু মনে নাই!

আমার জীবনে এমন বিরক্তকর, ফাউল সিনেমা আমি দেখি নাই এর চাইতে জলিল আংকেলের খোঁজ লাখো গুনে ভাল! রাগে দুঃখে সিনেমার বাকি অংশ না গিলে চলে এসেছি! এভাবে চলতে থাকলে আর কিছু দিনের মধ্যে জাজ মাল্টিমিডিয়া, বাংলাদেশের সিনেমা তে বাজ ফেলিয়ে পুরো হিন্দি বানিয়ে দিবে। নিচ দিয়ে কলকাতার ভাষায় সাবটাইটেল উঠবে! বলি এখনও সময় আছে, এই ফাউল সিনেমাও হাউজ ফুল হয়, এভাবে চলতে থাকলে... কিছু একটা হবে!

শেষে এই সিনেমার পুরা ইউনিট টাকে আমার পক্ষ থেকে টুট টুট টুট! এবং নুসরাত ফারিয়া মাজহার আপুর কাছে একটা প্রশ্ন, আপনি কি কখনো বাংলা চলচিত্র দেখেছেন????
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০০
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×