somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুলিশের মতো মিলিটারি বা মিলিটারির মতো পুলিশ- যে কারণে ভয়ংকর

০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২৬মার্চ অনেক কারণেই স্মরণীয়। ড়েবের জন্মদিন। ২০০৪ সালের ২৬মার্চ 'লুকিং ফর শত্রু' খ্যাত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাবরের ব্রেইনচাইল্ড ড়েবের জন্ম। আমেরিকার সোয়াট টিমের আদলে আমাদেরও পুলিশের মিলিটারাইজেশনের শুরুয়াদ। এরপরে গেল ১০বছরে মোট কতবার অস্ত্রউদ্ধারকালে অন্ধকারে ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ, জিজ্ঞাসাবাদকালে হৃদযন্ত্রের বৈকল্যে মৃত্যু হইছে তার হিসাব নাই। হাজারখানেক? পুলিশের মিলিটারি হয়ে উঠার পথে, যত্রতত্র গুলি চালিয়ে মীমাংসা করবার এন্তেজাম করতে ড়েব একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পুলিশের সাথে 'শুট টু কিল' ট্রেনিং পাওয়া আর্মি-আনসারের মিশেলে একটা সংকর বাহিনী। এর সাফল্যে পরে চিতা কোবরার মতো দল গড়ে তোলা হয়। পোষাকে আর নামধামেই একটা ভীতি জাগানিয়া বিষধর ভাব। নিজের দেশের ভেতরেই নাগরিকের সাথেই তাদের বোঝাপড়া। কিন্তু তাদের হাতে থাকে যুদ্ধাস্ত্র। রাষ্ট্র নিজের দেশের মানুষের সাথেই একটা যুদ্ধে নেমে যায়। এন্টি-টেররিজম ইউনিট। কিন্তু এই যুদ্ধে পরাজিতপক্ষই পরাজিত হয়ে মিষ্টি খেয়েছে। ক্রসফায়ারকে সন্ত্রাসদমনে জনপ্রিয় করতেই সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয় অমুক সন্ত্রাসীর ক্রসফায়ারে মৃত্যু, মৃত্যুকালে তার নামে চাঁদাবাজি, রাহাজানি সহ এতোগুলি মামলা ছিল। যেন মামলা থাকলে গুলি খাওয়া ফরজ। সুতরাং, উনি ক্রসফায়ারের যোগ্য দাবিদার। জনমনেও পুলিশ বলতে ভেড়াবাহিনী ও ড়েব বলতে সকাল সন্ধ্যে রাতে কালোচশমা পরে ঘুরে বেড়ানো সাক্ষাৎ যম হিসেবে সুনাম কামিয়েছে।

আওয়ামীলীগ সরকার আমলেও এই 'সুনামের' ধারা জারি রেখে ক্রসফায়ারকে বলা হতে থাকে 'বন্দুকযুদ্ধ' আর জিজ্ঞাসাবাদে খুনের চেয়ে গুম পরবর্তী খুনেই হাতপরিস্কার রাখা সুবিধাজনক পন্থা হিসেনে ব্যবহার করা হয়েছে। সবচেয়ে বড়কথা হচ্ছে, এসবে কারো বিচার হয় না। সাধারণত সুবিচার চেয়ে গলা ফাটানো মানবাধিকার সংস্থা বা বিরোধীদল বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিপক্ষে বললেও ড়েবের কোন সদস্যের বা তাদের আদেশ দেয়া সরকারী উর্ধ্বতন রাজনীতিবিদ কাম আইনপ্রনয়নকারীকে মামলার ফ্যাসাদে ফেলেন না, ক্ষমতায় গেলেও না। সব শাসকের পছন্দ বড় ডান্ডা, যাতে যারে তারে ঠান্ডা করে দেয়া যায়। তাই গদির ছোয়া পেলেই উনারা ড়েবের সুনাম করতে থাকেন।

২০০৪-২০০৫ সাল ড়েবের বড় কামিয়াবির বছর। জঙ্গিদমনে তারা ছিলেন সিদ্ধহস্ত। কিন্তু জঙ্গিলালনে পুলিশবাহিনী কেন খ্যাতি পাচ্ছিলো, কেন জঙ্গিদের বেড়ে ওঠার ঘটনাকে সরকারি দল 'মিডিয়ার অতিরঞ্জন' বলে চালিয়ে দিচ্ছিলো সেগুলি এড়িয়ে গিয়ে ড়েবকে বোলানো হলো। শুধু জঙ্গি দমনেই ড়েবের চাহিদা ফুরিয়ে যায় নি। যেন দেশে অফুরান জঙ্গি-ভান্ডার আছে তাই ড়েবকে নিয়মিত ব্যবহার করে চলে শাসকগোষ্ঠি। ড়েবের দেখাদেখি পুলিশও বুকে মাথায় গুলি চালাতে থাকে আওয়ামী লীগ আমলে। গেল দেড়বছরে আড়াইশো খুন হয়েছে। আসাদুজ্জামান নূরের উপর হামলা করা আসামিরা মারা পড়তে থাকেন। রাজনৈতিক সহিংসতার আছরে আরো বেশি ব্যবহার হচ্ছে গুলি। মাঝে পিপারস্প্রে নিয়ে যে বাহাস হলো সেটা যেন গুলির ব্যবহারে বাকহারালো।

বিচারবিভাগের নানা ফাঁকফোকর বন্ধ করে পুলিশে আস্থা না ফেরালে, পুলিশের মিলিটারাইজেশন না থামালে এই পাইকারি গুম-খুন-বন্দুকযুদ্ধ থামবে না। এই না থামার ফলাফলস্বরূপ প্রতাপশালী শাসক তৈরি হবে। ভোট বা ভোটবিহীন নির্বাচনে শাসকের চেহারার পরিবর্তন হলেও তার আচরণে বিন্দুমাত্র পরিবর্তন আসবে না।

১.ক্রসফায়ার সেটা উপকারি বা অপকারি যাই হোক বন্ধ করুন।
২.পুলিশের মিলিটারাইজেশন বন্ধ করুন। ড়েবকে মিলিটারিমুক্ত করে সিভিলিয়ান পুলিশ ফোর্স হিসাবে গড়ে তুলুন।
৩.বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, রিমান্ডে নির্যাতনকে না বলুন।
৯টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×