আগের কথা পড়ুন এখানে
অতসীর ডাকে ঘুম ভাঙল রোমিলার। বেশ ঘুমের মধ্যে স্বপ্নের দেশে ডুবে ছিল
রোমিলা।কথা বলছিল হঠাৎ পরিচিত তরুণের সঙ্গে।ঠিক সেই সময়ে অতসী
ডাকল,এই রোমিলা তাড়াতাড়ি ওঠ,গ্রামে পুলিশ এসেছে।
রোমিলা পাশ ফিরতে ফিরতে বলল,পুলিশ এসেছে তা আমি কি করব,আমি
কি চোর নাকি?
---আরে না,না,গ্রামে একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে।
---ভয়ঙ্কর ঘটনা ছাড়া পুলিশ আসে না,এটা আমরা শহরে বাস করার সুবাদে
জানি। তা বল,কে রেপ হল,দিল্লির মত ঘটনা নাকি?
---রেপ নয়,মার্ডার,কাল যার সাথে গল্প করছিলি সেই ছেলেটা।
---আঁ,বলিস কি,কে করল রে এমন শয়তানি। বলে বিছানা থেকে একরকম
লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়াল।
---সবাই বলাবলি করছে,গনেশদের দাদা ‘ওয়াশিম’।
কথাগুলো চিবিয়ে-চিবিয়ে বলল অতসী।
---এমন বলার কারণ?
---কারণ অনেকগুলো,তাই পুলিশ সন্দেহ করছে ওকে।
---ও মানে তোদের সর্বজন প্রিয় ‘দাদা’ ওয়াশিম কি বলছে?
---বলবে কি,সে তো ভোরবেলা গ্রাম থেকে পালিয়েছে।
---পালিয়েছে বলেই সকলের সন্দেহ বদ্ধমূল ধারণায় রুপান্তরিত হয়েছে।
--- না-রে কিছু প্রত্যক্ষ প্রমাণও আছে।
---কি রকম?
---কাল রাতে ওর সারা শরীর রক্তাক্ত দেখেছি।
---কিছু বলিস নি?
---হ্যাঁ,বলেছিলাম,জবাবে বলল,কুকুরে কামড় মেরেছে।
---তারপর?
---এমন বুভুক্ষুর মত মুড়ি চিবিয়ে খাচ্ছিল যেন এখনই কেউ ওকে ধরতে
আসছে।
---তার সাথে মারডারের কি সম্পর্ক?
---একটা কুকুরও মরে পড়ে আছে। তার শরীরে বিঁধে আছে বুলেট।দাঁতে লেগে
আছে রক্তের দাগ।
---তারমানে তুই বলতে চায়ছিস,প্রভুভক্ত কুকুরটিও মার্ডার হয়েছে ওয়াশিমের
হাতে।
---বলতে চায়ছি মানে,এখনই পুলিশকে সব বলব।
---পুলিশ কিন্তু সবসময় জটিলতা বাড়ায়। যা বলবি তার সবই দেখবি উল্টো মানে
করছে। তাতে তোর লাভ?
---লাভ না হোক বিবেকের সায় আছে। মজার কথা কি জানিস রোমি,শিশির বিশ্বাস
নামের যে ছেলে মার্ডার হয়েছে, সে-ও কোন ধোয়া তুলসীপাতা নয়,আমি একবার
ওর ফাঁদে পড়ে নিগৃহীত হয়েছি।
---বেশ তাহলে চুপ মেরে যা,কেঁচো খুঁড়তে কেউটে তুলে দরকার নাই।
---কেউটে উঠবে কেন, যা দেখেছি,যা বুঝেছি তাই পুলিশকে বলব। বলব,যে,
কাল মাঝরাতে ওই ওয়াশিম নামের ছেলেটা আমার ভাইয়ের নাম ধরে ডাকাডাকি
করছিল। আমি আর ভাই দরজা খুললে,সে বলল, আমার খুব ক্ষিদে পেয়েছে,মুড়িটুড়ি
কিছু দাও। আমরা তাকে ঘরে ডাকলাম।হ্যারিকেনের অল্প আলোয় আমরা প্রথমে
বুঝতে পারিনি,তার সারা শরীর কুকুরের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত। যখন বুঝলাম,তখন
সে কুকুরে কামড়েছে বলে, খাওয়া ফেলে চলে গেল।
---এসব তুই না বললেও পুলিশ ঠিকই উদ্ধার করবে।শুধুমুধু নিজেকে ঝামেলায়
জড়িয়ে লাভ আছে?
---তুই বারম্বার লাভক্ষতির কথা কেন বলছিস বুঝছি না।একটা লোক সমাজে
‘মসিহা’ সেজে ঘুরবে আর মানুষ খুন করবে,এটা আমি কিছুতেই মানতে পারছি
না।
---বুঝছি,তুই প্রেমে পড়ে গেছিস।বলে মৃদু হাসল রোমিলা।
---তোর বোঝা তুই বুঝে থাক,ইচ্ছে হয় তো প্রেমেও পড়। আমি কিন্তু পুলিশের কাছে
যাব।
---যাবি? তাই চল,ভাললাগা ছেলেটার মরা মুখটা দেখে আসি।
(পরের কথা আগামী পর্বে)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




