somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের সমবায় সমিতি

০৬ ই জুন, ২০০৬ রাত ১২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হাইস্কুলে র্ভতি হওয়াটা সব মানুষের জন্য একটা মোড়। অজানা সব নতুন মুখের ভীড়ে, বন্ধু খুঁজে পাওয়া।চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে আমরা একই স্কুলের বেশ কয়েকজন র্ভতি হয়েছিলাম। হাই স্কুলে দূরে হওয়ার সুবাদে স্কুল যাওয়ার জন্য রিকশা ভাড়া পাওয়া যেত। আপ এন্ড ডাউন ৬/৮ টাকা। তবে মাসখানেক বাদে সেটা শুধু আপ অর ডাউনে নেমে আসল।মানে ৪ টাকা। ঘরের আয় অনুযায়ী বরাদ্দ, বাট এই টাকাই আমার জন্য অনেক।
এর আগে প্রাইমারি স্কুল ছিল নাকের ডগায়, টাকার মুখ ফলে কোনো দিন দেখিনি। শুধু ঈদের দিন নানি একটা কড়কড়ে পাঁচ টাকার নোট দিত। ঈদের দিন ঐ টাকা না পাওয়া র্পযন্ত মন খুব অস্থির থাকত। নিজেকে আবার খুব র্স্বাথপর মনে হত, মনে হত আমি নানীকে ভালবাসিনা, ঐ টাকা ভালবাসি।

নানির সাথে ভাব আমার ভালই ছিল।একদিন নানিকে নিয়ে রিকশায় করে বাসায় আসছি, আমি বললাম 'হুড তুলে দিই নানি '।
' দে , কেউ আবার দেখলে বলবে বয়ফ্রেন্ড নিয়ে যাচ্ছি '। আরেকবার তখন কলেজে পড়ি উনাকে বললাম চলেন, বলল ' গয়না নিব ' । আমি বলি ' কেন ?' । উনি বলল ' আমরা পালাব না, হাত ধরাধরি করে, ফেরি করে আরিচা ঘাট দিয়ে '। আমার মনে পড়লে এখনো হাসি। পঁচাত্তর এর উপর বয়স তখন, একবার বাসায় আমার র্ভাসিটির একগাদা বন্ধু এসেছে। নানিকে বললাম আসেন পরিচয় করিয়ে দিই । নানী মেজআপাকে বলল '' আমাকে একটু লিপস্টিক দিয়ে দে না। এতগুলো ইয়ং ছেলে আসছে, একটু সেজে গুজে যাবো না ।'

আমার নানীর নাতি-নাতনী গুলো একটাও উনার রসবোধ বা প্রাঞ্জলতা পায়নি। নিজের স্বকীয়তা
তৈরি করতে গিয়ে সবাই জীবনের মানে ভূলে গেছে।

কোথা থেকে কোথায় চলে গেলাম। অবশ্য অসুবিধা নেই, আমার লিখা এত কম লোক পড়ে যে, আলু জায়গায় মূলা লিখলেও পাবলিক টের পাবেনা।
স্কুলে যেতাম হেঁটে, জোর কদমে নওজওয়ান। আর টাকা জমতো টিনের বাক্সে। রেয়াজ্জুদ্দিন বাজারের ভিতর দিয়ে, কাগজের গন্ধ আর প্লাস্টিক এর খেলনার টুং টাং পার হয়ে ক্ষিপ্র গতিতে ছুটে চলেছি
আমি আর র্পাথ। কে কার আগে ছুটতে পারে। তখন এক আজব অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল হাঁটার সময়
দোকানের নাম মুখস্থ করা।পাঁচ বছর হেটেছি ঐ রাস্তায়।
আমি, র্পাথ আর আরিফ তিন দোস্ত মিলে সমবায় খুললাম। একার টাকায় বই কেনা যায় না। প্রতি সপ্তাহে দশ টাকা, প্রতি জন। তখন ক্লাস সিক্সে আমরা। প্রতি সপ্তাহে ৩০, মাসে ১২০। টাকা হুহু করে বাড়তে লাগল। এখন বিলিনিয়ার হলে আমি মনে হয় তখনকার আনন্দ পাব। আমাদের প্রথম দিককার বই ছিল 'টিনটিন'।আনন্দ পাবলির্শাস থেকে বের হত একটা ৮০ টাকা। হিসাবের খাতা বাই রোটেশন মেইনটেইন হত। তবে বেশীর ভাগ সময় আরিফ দেখাশুনা করত, বড়লোকের পোলা। পুরো হাইস্কুল জীবন চলেছে সমবায়।
যা হোক ভাই এবং বোনেরা আসল কথায় আসি, আপ্তবাক্য হিসেবে মনে রাখবেন, '' সমবায়ে বই কিনতে পারেন, কিন্তু প্রেম করতে যাবেন না'' । তাহলে আম এবং ছালা দুটোই যাবে। বন্ধু ও যাবে, বন্ধুত্ব ও যাবে।


=======================================
৬'ই জুন,২০০৬
রাত ১২:৩৭
কলাম্বিয়া।

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০০৬ সন্ধ্যা ৬:৪০
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×