রিপাবলিক অফ নাউরু (Republic of Nauru), অস্ট্রেলিয়ার কাছাকাছি একটা স্বাধীন দ্বীপ রাষ্ট্র। ১৯৯০ সালের আগেও এই দ্বীপ রাষ্ট্র দুনিয়ার ধনী রাষ্ট্র হিসাবে গন্য হত, কুয়েতের সাথে সমসাময়িক ভাবে এগিয়েছিল এবং অনেকে মনে করত কুয়েত থেকেও ধনী রাষ্ট্র, বাহ্য অবস্থা দেখে তাই মনে হত, আর্থিক গননাও তাই ছিলো। আপনারা যারা তথ্য দেখেন তারা নিশ্চয় জানেন সেই সব কাহিনী। একটা রাষ্ট্র ভুল প্রশাসনে, রাস্ট্র পরিচালকদের অদূরদর্শিতায়, অর্থ পাচারে, দূর্নীতিতে ডুবে কোথায় চলে যায় তার সেরা উদাহরণ এই রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রের প্রশাসকগণ! আমাদের দেশের সবার এই ইতিহাস পড়া দরকার, বিশেষ করে শাসকদের তো বটেই! (ইন্টারনেটে Republic of Nauru লিখে সার্চ দিলেই সব ইতিহাস চোখের সামনে এসে পড়ে।)
বর্তমানে এদের জনসংখ্যা প্রায় ১২ হাজারের মত এর বেশীর ভাগই ডায়াবেটিকস সহ নানান রোগে কাবু এবং মোটা শরীর। আর এদের আগের প্রায় সবাই দুনিয়ার নানান দেশে টাকা পাচার করে বড় বড় ব্যবসা বানিজ্য নিয়ে ভেগে গেছে এবং সেই সব দেশের মুল স্রোতে মিশে গেছে। একটা দেশকে নিঃস্ব করে তারা কি করেছে, প্রায় সব সরকারী কর্মকর্তা মন্ত্রী মিনিষ্টার সবাই টাকা পচার করে পালিয়েছে। এখন সেখানে যারা আছে তারা না পারতেই পড়ে আছে হয়ত! তবে এখন কিছু কিছু আবার ফিরে যাচ্ছে এবং দেশ প্রেম দেখাচ্ছে! শুধু ভুল শাসনে বা শাসকের অদূরদ্ররশিতায় যেখানে এই দেশ সিঙ্গাপুর বা কুয়েত হত এখন দুনিয়ার সেরা নিঃস্ব দেশ!
যারা কিছু জানেন না তাদের জন্য কয়েক লাইনে এই দেশের ইতিহাস বলি, এই দ্বীপে সারা বিশ্বে সব চেয়ে ভাল ফসফেট উৎপাদন হত। এই ফসফেট বাইরের দুনিয়ার বিক্রি করে হাজার হাজার মিলিয়ন ডলার আয় করে দেশ। কিন্তু শাসক গনের আনন্দ, বিনোদন, বিদেশে টাকা পাচার ছাড়া আর কিছু করার ছিলো না, ফসফেট থেকে পাওয়া টাকা সরকারের সব লোক এমন চুরি করতে লাগলো যে, তারা সবাই ভুলেই গিয়েছিল এই ফসফেট উৎপাদন বন্ধ হলে কি করে চলবে এমন কি এই টাকায় তারা ভাল স্কুল কলেজ, রাস্তা, স্বাস্থ্য সব কোন কিছুতেই রি ইনভেষ্ট করে নাই। আর কিছু ইনভেষ্ট ছিল পুরোই ভুল! নিজেরা কৃষি পন্য উতপাদন, মাছ ধরা সহ নানা কাজে কাউকেই নিয়োগ করে নাই। এদিকে ফসফেট উৎপাদন শেষ হলে পরিবেশ বিরাট বিপর্যয় ঘটে, মানুষ যারা ছিলো তারাও ক্যান্সার, ডায়াবেটিকস সহ নানা অসুখে পড়ে গিয়েছিল। এখন বসবাসের সামান্য ভাল সুযোগ আর নেই, যারা আছে তাদের জন্য সব কিছু এখনো বিদেশ থেকেই নিয়ে আসতে হয়। এখন আর আগের কোন জৌলুস নেই। সাধারন নাগরিকেরা খুব কষ্টে বা সাধাসিধে জীবন যাপন করছে। যাই হোক, আপনারা আরো অনেক কথা জানতে পারেন, তবে সারাংশ এটাই যে, শাসকদের ভুলে কি করে একটা দেশ নিঃস্ব হয়ে যায় তার উদাহরণ এই দেশ।
তবে এখনো এই দেশকে অস্ট্রেলিয়া তাদের নানা প্রয়োজনে ব্যবহার করে। ভিন্নদেশের মাইগ্রেট করা লোকদের এখানে রাখে বা রাখা হত।আর এখনো আষ্ট্রেলিয়া তাদের সুবিধার জন্য ফ্লাইট অপারেশন করে, যদিও এখন বছরে ২০০ থেকে ৩০০ লোক এই দেশ ভ্রমণ করে, যা আসলে কোন সংখ্যায় পড়ে না!
যে দেশ চাইলে কুয়েত কিংবা সিঙ্গাপুর হতে পারত, সেই দেশ তাদের নিজদের লোকের ভুলে আজ কোথায় গেল? শাসকদের এই জন্য দুরদর্শী হতে হয়। আনন্দ বিনোদনে আর টাকা পাচারে কি হয় তার উদাহরণ হয়ত হতে হত না!
বিশেষ করে যারা দেশ থেকে অবৈধ, চুরি করে আয় করে টাকা বিদেশে পাচার করে, তাদের জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা সহ, যে কোন অন্যায় পথে টাকা উপার্জন চীরতরে বন্ধ করা উচিত। বাংলাদেশ থেকেও এমন এক শ্রেনী বিদেশে টাকা পাচার করে উন্নত জীবনের আশায় চলে যাচ্ছে, এদের রহিত করা উচিত। আমাদের সাম্নেও এমন দুঃখ আসতে পারে, যদি না আমরা এই সব ঘটনা থেকে না বুঝি।
ইউটিউবে লিঙ্ক দেখুন। এমন অনেক সংবাদ ও ডকুমেন্টারী আছে।
আর একটা
সবাইকে ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:০৫