সারা দুনিয়াতে এখন স্ট্রিট ফুড বা সস্তায় ভাল খাবার খুব জনপ্রিয়, এমন কি আমাদের পাশবর্তি দেশ গুলোতেও রাস্তার ফুটপাতে চমৎকার খাবার পাওয়া যায় সস্তা দামে, মানে কিংবা গুনে এবং শরীরের উপযোগী। হাজার হাজার নারী পুরুষ, পরিবার এই কর্মে নিয়োজিত থেকে নিজদের উন্নতি, সময় পার সহ দারুন এক সময় কাটায় এবং পরে তাঁরা তাদের এই সঞ্চিত অর্থে ব্যবসাও বদল করে বেশ ভাল জীবন কাটায়, মোট কথা লক্ষ লক্ষ মানুষ, পরিবার এর সুফল ভোগ করে, শ্রমিক, কৃষক, খামারি, পরিবহন, উৎপাদক সহ প্রায় সব শ্রেণীর মানুষ এতে জড়িত হতে পারে। সারা দুনিয়া এভাবেই তাদের একটা বিশাল জনগোষ্টীর কর্ম সংস্থান করছে এবং এদের বেকারত্ব থেকে তুলে আলাদা সুন্দর জীবনে নিয়ে যাচ্ছে, নিজ দেশের জনগণকে অন্যদেশের পরিচ্ছন্ন কর্মী বানাচ্ছে না!
অধিক আলোচনায় যাচ্ছি না, যারা এই পর্যন্ত লেখা পড়েছেন, তাদের শুধু একটু চিন্তা করতে বলবো এবং এখন সারা দুনিয়ার যে কোন বিষয়ের ভিডিও ইউটিউবে পাওয়া যায়, তা খুঁজে দেখতে অনুরোধ জানাবো। সন্ধ্যার পরে মহল্লা মহল্লায়, পাড়ায় পাড়ায় কিংবা বড় বড় রাস্তার ধারে এমন নানান সুখাদ্যের দোকান খুলে কম লাভে খাদ্য বিক্রয়ে সরকারের পূর্ন সমর্থন, পুলিশি ক্যাচাল রোধ (এদের নিবন্ধন করা যেতেই পারে) সহ একটা বছর দুয়েক সময় নিয়ে ট্রেনিং দিয়ে এমন একটা আলাদা কর্মী দল গঠন করা যেতেই পারে, এতে সামগ্রীক ভাবে রাষ্ট্রই লাভবান হবে।
এই বিষয়ে যে কোন মাধ্যমে সরকারের যে কোন ব্যক্তির সাথে আমাদের মত অনেক মানুষ আছেন বা যারা এমন দুনিয়া দেখেছেন, তাদের সাথে আলোচনা বা সরকারকে বুঝিয়ে বলার ক্ষমতা আছে। সরকার উদ্যোগ নিলে বা সামান্য বুঝতে পারলে একটা সেল গঠন এবং প্রধানমন্ত্রী চাইলে নিজেও এই বিষয়ে তদারকী করে পূর্ন কৃতিত্ব নিয়ে গর্ব করে কোটি মানুষের সামনে বলতেই পারেন, আমি লক্ষ লক্ষ মানুষের পরিবারের কর্ম সংস্থান করেছি।
সহজ কথায়, সরকার সামান্য বুদ্ধি বিবেক খাটালেই বা সামান্য উদার হলেই একটা নুতন ব্যাপার গড়ে উঠত, যার সাথে উপকৃত হত লক্ষ লক্ষ মানুষ, পরিবার।
অনেকে হয়ত এখন বলতে পারেন, এখনো তো এমন আছে বা দেখা যাচ্ছে। না, বসার জায়গা সহ কোন অবকাঠামোই নেই, কোন তেমন নিয়ম নেই, যাতে একজন মানুষ নিশ্চিত হয়ে কিছু তৈরী করে বিক্রি করতে পারে বা এমন একটা চেইন বানাতে পারে। পুলিশি নিষেধাজ্ঞা, মস্তানদের চাঁদাবাজি (এখানে বসা যাবে না, এখানে না, বসবে কোথায়) সহ যারা সামান্য কিছু করতে চাইছেন, তাঁরা এই ব্যাপারে আরো বলতে পারবেন। টং দোকান গুলো (এগুলো সম্পূর্ন শরীরের জন্য ক্ষতিকারক দোকান, যে চা বিক্রি করে, তা পানেই তো আমাদের একটা পঙ্গু জেনারেশন হচ্ছে/যাচ্ছে, এই বিশ্রী চা পান তো আরো এক ধরনের নেশা, যা শরীর শেষ করে দিচ্ছে! এদের তো এমনিতেই ব্যান করা দরকার।) হয়ত কেহ কেহ বলবেন, আছে তো! এটা নিতান্তই হাস্যকর।
যাই হোক, অন্তত আমাকেও যদি কোথায় ডেকে ফুটপাতের নানান খাবার এবং কি কি ভাবে এই বিষয়ে আরো এগিয়ে যাওয়া যেতে পারে, আমি উপস্থিত বিজ্ঞদের সামনে বলতে ইচ্ছুক আছি। বিশ্বাস করুন, শুধু এই চমৎকার কাজে লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের ও পরিবারের মুখে হাসি ফোটানো সম্ভব, দরকার শুধু সামান্য ভালবাসার চিন্তা! আবারো বলছি, এই চিন্তা আসতে হবে, রাষ্ট্রের পরিচালকদের কাছ থেকেই, তাদের বিবেচনা থেকেই গড় উঠতে পারে একটা আলাদা জগত।
সিঙ্গাপুরের একটা স্ট্রিট ফুড এলাকার ছবি। ছবিঃ মেহেদী হাসান খান
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৬