আমাদের দেশের ৭০% ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনা ভালো না লাগার কারন "বিদেশি ভাষার (মানে ইংরেজীর অত্যাধিক) প্রভাব।" মাতৃভাষাতে মানুষ যতটা স্বাচ্ছন্দ্যে পড়তে, বুজতে পারে অন্য ভাষায় সে জিনিস টা বুজা আসলেই কষ্টসাধ্য।
স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অনেক ছাত্র-ছাত্রী কে ডিপ্রেশনে ফেলে দেয়ার জন্য বিদেশী ভাষার বই গুলো ই দায়ী। অনেকে না বুজে মুখস্ত করে সিজিপিএ বাড়িয়ে নিলে ও, কারো কারো বেলাতে গলায় কাটা হয়ে গেথে থাকে এই ভিন্ন ভাষার বই!
আমাদের উচ্চশিক্ষার পড়ানো সিলেবাসের সব বই ই বিদেশি ভাষায় লিখিত, এই গুলো কে বাংলা ভাষাতে অনুবাদ করে শিক্ষার্থীদের মাঝে দেয়া গেলে পড়াশুনা টা আনন্দ দায়ক হত, সবাই মনের তৃপ্তি সহকারে পড়াশুনা তে ফোকাশ দিতে পারত।
গতকাল The Daily Star পত্রিকায় পড়লাম ঢাকা ভার্সিটির sciences, biology, earth and environmental, engineering and technology অনুষদের সিলেবাসে দেয়া ৩২০১ টি বইয়ের মাঝে শুধু ৩৪ টা বই বাংলাতে অনুবাদ করা অবস্থায় পাওয়া যায়, আর এই অনুবাদের মান ও যাচ্ছেতাই!
১২-১৪ বছর বাংলা ভার্সনে পড়ে এসে হুট করে স্নাতক পর্যায়ে অন্য ভাষার সাগরে পতিত হয়ে অনেক শিক্ষার্থীর মানষিক শিক্ষার মৃত্যু ঘটে! শিক্ষা অর্জন আর ঠিকঠাক মত হয়ে উঠে না, যা হয় সেটা মুখস্ত করে ভালো ফল আর চাকরীর জন্য পড়াশুনা।
সে উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৫৫ সালে বাংলা একাডেমি তৈরি হয়েছিল সেটা কি তারা করতে পারছে? ভাষা টা কে ঠিকঠাক মত ছড়িয়ে দিতে পারছে?
১৯৫২ সালে যে উদ্দেশ্য নিয়ে এদেশের মানুষ সংগ্রাম করেছিল সেই মানুষদের দেখানো পথে আমরা কি হাটতে পারছি? এদেশে বাংলা ভাষায় কথা বলা মানুষদের কে বিশেষ অর্থে ক্ষ্যাত ভাবা হয়! যারা যত ভালো ইংরেজি জানে তারা সমাজের সুপিরিয়র! তারা নিজেদের উচ্চস্তরের মানুষ ভাবে। চাকরী ক্ষেত্রে বাংলা ভাষাভাষীদের কদর ই দেয়া হয় না!!
চীন আজকে এত উন্নত হয়েছে, কারন তারা তাদের ভাষা-সংস্কৃতি কে গুরুত্ব দিয়ে আগিয়েছে। জার্মানদের ক্ষেত্রে ও একই! এই যে বাংলা ভাষা কে গুরুত্ব না দিয়ে অন্য ভাষা নিয়ে পড়ে আছি এদিন এর জন্য হয়ত আমাদের বড় কোনো খেসারত দিতে হতে পারে। বছরের একটা দিন ২১শে ফেব্রুয়ারি আসলে আমরা এটা নিয়ে অনেক ভাবি, আলোচনা হয় বাকি ৩৬৪ দিন এই গুলা ভুলে যাই। সেকেন্ড ল্যাংগুয়েজ অবশ্যই দরকার আছে কিন্তু সেটা মাতৃভাষা কে ছোট করে বিসর্জন দিয়ে নয়, মাতৃভাষা কে সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌছে দেয়ার পরেই অন্য ভাষার উপর গুরুত্বারোপ করা উচিত।