somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্র আন্দোলনের 10 দফা, অপ্রাসঙ্গিক সমৃতিময়তা আর প্রাসঙ্গিক রাজনৈতিক মেরুকরণ...

২০ শে ডিসেম্বর, ২০০৬ রাত ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এরশাদ যখনই সিন'এ চইলা আসে তখন আমার মনে পইরা যায় ছাত্র সমাজের ঐতিহাসিক 10 দফার কথা...যেই 10 দফা আমাগো রক্ত উদ্দাম করা দিনগুলার একমাত্র অনুঘটক...আমরা পথে নামছি পথ দখলের স্বপ্ন নিয়া...শুনতে অনেক ক্লীশে লাগতে পারে কিন্তু আসলেই আমরা প্রাণের কসুর করি নাই। একদিক দিয়া স্বৈরশাসকের চরগো গুলি আরেকদিকে রাজু ভাই ছিলো...গুলি খাওনের সম্ভাবণা নিয়া আমরা পথেই ছিলাম...সেই এরশাদ তার পতনের পরেও আবার জাগ্রত হইয়া যান! আমরা অনেক দুঃখ পাই, আমরা মনে করি এরশাদের সাথে কেমনে বসনের কথা ভাবেন খালেদা-হাসিনা!?

কিন্তু আসলেই কি দুঃখের বিষয় হিসাবে এই বসাবসিটা খুব যৌক্তিক হয়? ছাত্র সমাজের 10 দফারে অপমান করা হয়? রক্তে রঞ্জিত করা হয়? 10 দফা নিয়া যখন আমাগো নেতারা বসছেন 22 দলীয় ঐক্য জোটের সাথে তখন আমার বয়স 19/20, যুক্তির চাইতে আমার কাছে আবেগ অনেক বড় জিনিষ তখন...আবেগের দোলায় ভাসতে গিয়া অনেক রোমহর্ষক কিছু করি...আমি 10 দফারে বুঝি অধিকার আদায়ের দাবীনামা...ছাত্র আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এই 10 দফা প্রাণের দাবী হইয়া আসছিলো। পাকিস্থানীগো বিরুদ্ধে প্রথম ছাত্র আন্দোলনের সেই 11 দফা! সেইটা ক্রমাগত গেলো প্রবহমানতার ঝোকে! স্বাধীন দেশে শেখ মুজিবের কাছে ঐ সকল দাবী নামা ছিলো একটু বিক্ষিপ্ত অবস্থায়...কিন্তু আসলে সেই একই দাবী! তিনি পূরণ করবেন বইলা প্রতিশ্রুতি দিছিলেন...কিন্তু পরবর্তী কার্যক্রম কিন্তু তার কথা কয় না। মুজিববাদী ছাত্রলীগের ভূমিকা ছাত্র আন্দোলন আর অধিকার বিরোধী অবস্থানই নিছিলো এই দেশে। পরবর্তীতে এই দেশে দীর্ঘসময় রাজনৈতিক স্থবিরতা ছিলো...সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে যে কোন আন্দোলন গইড়া উঠতে যেইরম প্রস্তুতি পর্ব লাগে তাই চলছিলো। 11 দফার ধারাবাহিকতা 10 দফায় রূপান্তরিত হইছিলো...এরশাদের বিরুদ্ধে যার বিস্ফোরন্মূখ প্রকাশ আমরা দেখি। খালেদা-হাসিনা দুইজনেই তখন 10 দফা নিয়া প্রতিশ্রুতি দিছিলেন!

এরশাদ ছিলো স্বৈরশাসক। ক্ষমতা দখল করছিলো বন্দুকের নল দেখাইয়া। পরবর্তীতে পৃথিবীর তাবৎ সামরিক শাসকেরা যা করে তা'ই করতে চেষ্টা করছে...দেশপ্রেমের বলিহারী দেখাইয়া ক্ষমতা কুক্ষিগতকরণ! আমরা তার সাথে কোন কথা বলতে চাইনা। কিন্তু খালেদা-হাসিনাগো দলগুলিতো আন্দোলনের দল! তারা আমাগো আন্দোলনের সহযাত্রী ছিলো। এইরম কথা ভাবতে আমার নিজেরো ভাবতে ভালো লাগে। অথচ 90-এর পরবর্তী গণতান্ত্রিক(?) সরকার গুলির ছাত্রসমাজের 10 দফা পূরণের অঙ্গীকার ছিলো...কিন্তু তারা শুনছি 10 দফা কি এইটা ভুইলাই গেছেন!

আমার এই পোস্টের মূল বিষয় আসলে হারাইয়া গেলো হঠাৎ। কিন্তু আমি যা বলতে চাইছিলাম, তা হইলো এরশাদের বিরুদ্ধে আমরা রক্তক্ষয়ী আন্দোলন করছিলাম। তিনি ছাত্র সমাজের 10 দফার বিরুদ্ধে নিজের মতো শিক্ষানীতি প্রবর্তনের কথা ভাবছেন। কিন্তু পরবর্তী যা'গো আমরা বিশ্বাস করছি তারা কি করছে? তাগো শ্রেণী চরিত্র কি অন্যরম? তারাও কি ছাত্র সমাজের উপর অনৈতিক শিক্ষানীতি চাপাইয়া দেওনের কথা ভাবে নাই!? তারাও কি শিক্ষারে পণ্য বানানের চক্রান্তে অংশগ্রহণ করে নাই!? মাদ্রাসা শিক্ষা তাগো সময়েও তো একইরম বরাদ্দ পাইছে। শিক্ষা হইয়া উঠছে বহুগামী। দরদাম কইরা যেমনে পাওন যায়।

কোন দল সঠিক আন্দোলন করে এইটা আমি বলতে চাই না। কিন্তু আমার কাছে এই ক্ষমতা মূখী লড়াইয়ে এরশাদ, আওয়ামি কিম্বা বিএনপিরে আলাদা কিছু মনে হয় না। তারা সবাইই ক্ষমতামূখি দল। ক্ষমতায় যাওনের লেইগা তারা যে কোন কিছুই করতে পারে। খালেদা হাসিনার লগে যদি কেউ যুগপৎ আন্দোলন করনের স্বপ্ন দেইখা বসতে পারে তাইলে এরশাদের সাথেও সেইটা সম্ভব। সবাই তারা বিশ্বাসঘাতক সেইটা এখন প্রমাণিত। আমার ভয় লাগে যখন দেখি বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের অনেক দল আওয়ামি লীগরে প্রগতিশীল বুর্জোয়া কাতারের দল ভাবে। জাসদতো বহুত আগেই তাগো গঠনতন্ত্র পালটাইয়া ফেলছে...কিন্তু ওয়ার্কাস পার্টি কিম্বা অনেক ক্ষেত্রে সিপিবির মতো দলগুলি যে এখনো এই দেশরে একটা পুঁজিবাদি দেশ হিসাবে স্বিকৃতি দিতে পারতেছেনা...এখনো আওয়ামি লীগরে লইয়া জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা তাগো কাছে আছে...এইটা ভাবতে আমার আসলেই ভয় লাগে।

আমি বিশ্বাস করি আওয়ামি বিএনপি'র রাজনীতিতে এখন ক্ষমতা যেমনে তেমনে দখলের বাসনা কাজ করে। এই খানে শত্রু-মিত্র নির্ধারণের বিষয়টা আসে সুবিধা মাথায় রাইখা। কার সাথে গেলে কতো ভোট বাড়ে! বুজের্ায়াগো নির্বাচনী রাজনীতিতে শিবির এখন দুইটা, আওয়ামি আর বিএনপি। যেহেতু স্বাধীনতা বিরোধীরা সদর্পে হাটে তাই জামাত এই দুই শিবিরের বিরোধরে কাজে লাগানের স্বপ্ন দেখে সাংগঠনিক ভাবে। আর বাকীরা খোঁজে আশ্রয়।

10 দফা পূরণের স্বপ্ন কি তাইলে ভাইঙ্গা গেলো? আমি তা মনে করি না। যখন 10 দফার পাঠ নিছিলাম আন্দোলনের শপথে তখনই বুঝছিলাম একটা সত্য!...এই সমাজ ব্যবস্থায় 10 দফা পূরণের কোন বাস্তবতা নাই।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭


ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

পহেল গাঁয়ে পাকিস্থানি মদদে হত্যাকান্ডের জন্য ভারত পাকিস্থানে আক্রমন করে গুড়িয়ে দেয় , আফগানিস্থান তেহেরিক তালেবানদের মদদ দেওয়ার জন্য, পাকিস্থান... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রবাসীর মৃত্যু ও গ্রাম্য মানুষের বুদ্ধি!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০



একজন গ্রামের মানুষের মাথায় ১০০ জন সায়েন্টিস্ট, ৫০ জন ফিলোসফার, ১০ জন রাজনীতিবিদ এবং ৫ জন ব্লগারের সমপরিমাণ জ্ঞানবুদ্ধি থাকে, তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন এসব লোকজন বাংলাদেশের এক একটি সম্পদ।

বিস্তারিত:... ...বাকিটুকু পড়ুন

×