somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা (১৯)

২৬ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


[শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রীষ্টানরা। মসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রীষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা যার মূলে থাকে খ্রষ্টীয় বৃটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন বৃটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। "Confession of British Spy and British enmity against Islam" গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ।

১৯তম পর্ব

মুসলমানদের শক্তিকে ধ্বংস করে দেবার জন্য বইটিতে নীচের মতামতগুলো প্রকাশ করা হয়েছে-

১. স্বগোত্রীয় প্রীতি এবং জাতিগত অহংকার সম্পর্কে মুসলমানদের উগ্র এবং অন্ধ স্বদেশ প্রেমে এমনভাবে উম্মাদ করতে হবে যাতে প্রাক ইসলামিক যুগের বীরত্বের প্রতি পুনঃ মনোনিবেশ করে। মিশরে ফিরআউনের যুগ, ইরানের ম্যাগী সময়কাল, ইরাকের ব্যাবিলনীয় সময়, অটোম্যানদের আঠিলা চেঙ্গিস যুগের অরাজক অবস্থা পুনঃ জাগরিত হয়। (তারা এ বিষয়ে একটা লম্বা তালিকা প্রণয়ন করেছে।)

২. গোপনে বা প্রকাশ্যে নীচের অপকর্মগুলো অবশ্যই করতে হবে। শরাব, জুয়া, ব্যাভিচার, শুকরের গোস্ত খাওয়া এবং খেলাধুলার দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা। এসব করতে গিয়ে মুসলিম দেশগুলোর খ্রিস্টান, ইহুদী, ম্যাগিয়ান এবং অন্যান্য অমুসলিমদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজে লাগাতে হবে। আর এ কাজে যারা নিয়োজিত থাকবে তাদেরকে কমনওয়েলথ মন্ত্রণালয়ের কোষাগার থেকে বেশি পরিমান বেতন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. জিহাদ সম্পর্কে তাদের মনে সংশয়ের বীজ বপন করতে হবে। তাদেরকে বুঝাতে হবে জিহাদ ছিল একটা সাময়িক হুকুমমাত্র যা বর্তমানে অচল হয়ে গেছে।

৪. শিয়াদের মন থেকে এ ধারণা দূর করে দিতে হবে যে, কাফিররা মন্দ নয়। সেজন্যে কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করবে যেমন “আজ তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ হালাল করা হল। আহ্লে কিতাবদের খাদ্য তোমাদের জন্য হালাল এবং তোমাদের খাদ্য তাদের জন্য হালাল। তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে।” (সূরা মায়িদা, আয়াত-৫)

তাদেরকে বলবে, নবীর এক স্ত্রী ছিল ইহুদী, যার নাম ছিল সাফিয়া। আর মারিয়া নামেও এক খ্রিস্টান স্ত্রী ছিল। তারা তো মন্দ ছিল না।
(হযরত সাফিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা একজন ইহুদী সর্দারের কন্যা তিনি ইসলাম কবুল করেছিলেন এবং উম্মুল মু’মিনীর এর মর্যাদা লাভ করেছিলেন। আর মারিয়া কিবতীয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা মিশরের এক সম্ভ্রান্ত খ্রিস্টান বংশে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তিনিও ইসলাম কবুল করেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পুত্র ইব্রাহীম রদ্বিয়অল্লাহু তায়ালা আনহু মূলত হযরত মারিয়া কিবতীয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর মুবারক রেহেম শরীফে আসেন। সুতরাং হযরত সাফিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাকে ইহুদী এবং হযরত মারিয়া কিবতীয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাকে খ্রিস্টান বলা চরম বেয়াদবি এবং কুফরী কাজ।)

৫. মুসলমানদের মধ্যে এ ধারণার জন্ম দিতে হবে যে, “নবীগণ ইসলাম বলতে যা বুঝিয়েছেন তাই পূর্ণাঙ্গ ধর্ম। সেদিক থেকে ইহুদী ধর্ম এবং খ্রিস্টান ধর্মও আসলে ইসলাম। এ মতবাদকে নীচের যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করবে।
কুরআন সব ধর্মের সবাইকে মুসলমান নাম দিয়েছে। যেমন ইউসুফ আলাইহিস সালাম-এর কথা উল্লেখ করতে গিয়ে বলা হয়েছে, আমাকে একজন মুসলিম হিসেবে কতল কর।” আর হযরত ইব্রাহীম ও হযরত ইসমাইল আলাইহিস্ সালাম তাদের দোয়ায় বলেছেন, “হে আমাদের রব (আল্লাহ পাক) আমাদিগকে মুসলমান বানান এবং আমাদের বংশধরদের থেকেও মুসলিম জনতা তৈরী করুন।” হযরত ইয়াকুব আলাইহিস্ সালাম তাঁর ছেলেকে বলেছিলেন, “মরতে হলে একমাত্র মুসলমান হিসেবে মরবে।”

(সকল আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালামগণ একই মৌলিক নীতি সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু সকল রসূলগণের শরীয়ত বা আদেশ নিষেধ এক রকম নয়। ঈমান আনা এবং শরীয়ত অনুসরণ করাটাই হল ইসলাম। প্রেত্যেক নবী আলাইহিমুস্ সালামগণের শরীয়ত অন্যদের চেয়ে ভিন্ন রকমের, সেজন্য ইসলাম পালনও ছিল ভিন্ন রকম। আল্লাহ পাক-এর রসূল হিসেবে উলুল আ’যম রসূলগণ ওহীর মাধ্যমে নতুন শরীয়ত প্রণয়ন করেছিলেন। আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ইসলাম এনেছেন সেটা দুনিয়ার শেষ দিন পর্যন্ত অন্খুন্ন থাকবে। সূরা আল ইমরানের ১৯তম এবং ৮৫তম আয়াত শরীফে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইহুদী খ্রিস্টানদেরকে তাদের পূর্বের ধর্ম ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, “যারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক আনীত ইসলাম কবুল করবে না, তারা বেহেশ্তে প্রবেশ করতে পারবে না এবং অনন্তকাল দোযখের আগুণে জ্বলবে।” পূর্বোক্ত নবী হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্ সালাম, হযরত ইসমাইল আলাইহিস্ সালাম ও হযরত ইউসুফ আলাইহিস্ সালাম তৎকালীন ইসলামকে মান্য করতে বলেছেন। গির্জায় যাওয়ার সেই শরীয়ত এখন আর কার্যকর নয়।)

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

এথান থেকে পরুন পর্ব- ১
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৩
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৪
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৫
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৬
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৭
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৮
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৯
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১০
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১১
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১২
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৩
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৪
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৫
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৬
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৭
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৮
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০১২ ভোর ৬:১১
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×