
The matrix view this link মুভি সিরিজ কেউ দেখেছেন কিনা, তা আমি জানিনা। আপনি যদি নিছকই sci-fi হলিউড এ্যাকশন মুভি ভেবে এটি দেখে থাকেন, তবে এর মূল message বা বক্তব্য আপনি কিছুই বুঝবেননা। ইসলামী শরীয়তকে লাইটলি নেয়া মুসলিমরা নিছকই বিনোদন ভেবে এটি উপভোগ করার ব্যর্থ চেষ্টা করবেন আর যারা মুভির শরীয়ত সংক্রান্ত বিধান এর ব্যাপারে সিরিয়াস, স্বভাবতই সেসব মুসলিমগণ তা দেখা হতে বিরত থাকবেন। তবে আপনি যদি বাইবেল ও কুরআন-হাদিসের কিয়ামত সংক্রান্ত ভবিষ্যৎবাণী, দাজ্জাল বা Anti-Christ, ইয়াজুজ-মাজুজ বা Gog-Magog এর ব্যাপারগুলো জেনে থাকেন, তবে আপনি মুভিটি দেখার সাথে সাথে বাস্তবতার দেয়ালে প্রচন্ডরকম মানুষিক ধাক্কা খাবেন। মুভিটির প্রতিটি অংশই দেখবেন মিলে যাচ্ছে বাইবেল ও কুরআন-হাদিসের সাথে।
হটাৎ করেই সম্পূর্ণ নতুন এক বিশ্বের আত্নপ্রকাশ। বিজ্ঞান-তথ্য-প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্হার অভাবনীয় বিকাশ যা পৃথিবীকে পরিণত করল গ্লোবাল ভিলেজে। এক বিশ্ব, এক শাসন ব্যবস্হা-অর্থব্যবস্হা তথা একক ওয়াল্ড অর্ডার। আপনি বিশ্বাস করছেন ইন্টারনেট আপনাকে দিয়েছে মত প্রকাশের ও যোগাযোগের অবাধ স্বাধীনতা। কিন্তু আপনার চিন্তাচেতনা একটি জালের মাঝে আটকে আছে। আপনাকে সেই জালে বন্দী রেখে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, আপনার উপর নজরদারি রাখা হচ্ছে। এটি বোঝার মত বুদ্ধি কি আপনার সত্যিই আছে? আপনার প্রতিটি ইমেইল, ইনবক্সের প্রতিটি ক্ষুদে বার্তা, প্রতিটি লিখা, প্রতিটি ভিডিও তথা, প্রতিটি তথ্যের রেকর্ড জমা আছে গুগল, ফেসবুক, ইয়াহু, টুইটার, হোয়াটসএপ, ভাইবার সহ সব social media ও অন্যান্য ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলির হাতে। আর হ্যা! আপনার তথ্যের উপর সর্বদাই নজরদারী করা হচ্ছে। আর আপনি বোকার মত ভাবছেন আপনি স্বাধীন!!
যাইহোক, সিনেমায় ফীরে যাই। মূল চরিত্র নিও একজন তরুণ কম্পিউটার প্রোগ্রামার যার বন্ধুবান্ধব বলতে কেই নেই, নিত্যদিন একা একা কম্পিউটার ও ইন্টারনেটে হ্যাকারদের সাথে তার অধিকাংশ সময় কাটে। এর জের ধরেই সে হটাৎ বুঝতে পারে, সে যে পৃথিবীতে বসবাস করছে, এখানে বড় রকমের কোন গোলমাল আছে, এটা স্বাভাবিক বিশ্ব না। "কিন্তু সমস্যাটা যে আসলে কি? সমাধানই বা কি?" এটা সে বুঝতে পারছিলনা আর তাই উদভ্রান্তের মত এলোমেলো জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পরে সে। হটাৎ ট্রিনিটি নামের একজন নারী হ্যাকার তাকে আত্নগোপনে থাকা Morpheus নামের এক ব্যক্তির গন্তব্যে পৌছে দেয়। এই ব্যক্তিই হল মানবজাতির মাঝে সেই সৌভাগ্যবান ও তীক্ষ্ণ মেধাসম্পন্ন মানুষ, যে এই এলোমেলো বিশ্বের গোলমাল বা ধোঁকাবাজির ব্যাপারটা স্পষ্টভাবে জানে এবং এর থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য সে বদ্ধ পরিকর। ফলাফলস্বরূপ সে বিশ্ব নিয়ন্ত্রক সুপার পাওয়ারদের তালিকায় পৃথিবীর সব চাইতে ভয়ানক সন্ত্রাসী এবং আধুনিক সভ্যতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। তাই তারা তাকে হণ্যে হয়ে খুঁজছে, হত্যার পরিকল্পনা করছে। সমস্ত পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ অথচ তার অনুসারী হাতে গোণা ৬-৭ জন যারা মানবসভ্যতার অন্তরালে Morpheus কর্তৃক নির্মিত (Nebuchadnezzar) নেবুচাঁদনেজার নামক বিশেষ এক জাহাজে গোপনে বসবাস করে। Morpheus নিওকে তার ল্যাবে বা জাহাজে তৈরী নানান কম্পিউটার প্রোগ্রাম ও বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার দ্বারা জানিয়ে দেয় যে, মানুষ যেই পৃথিবীতে বসবাস করছে, সেটা আসলে একটা পরাবাস্তব ভার্চুয়াল জগত, বাস্তব না। এটা একটা কম্পিউটার প্রোগ্রাম আর প্রতিটা মানুষও কৃত্রিম। সমস্ত পৃথিবী আসলে নিয়ন্ত্রণ করছে এক সুপার কম্পিউটার সিস্টেম। প্রকৃত মানব সভ্যতা ও বাস্তব পৃথিবীকে সে ২১ শতকে ধ্বংশ করে দিয়েছে। আর সূর্যের বিকল্প এনার্জির সোর্স হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে মূলত মানুষের শরীর। সমস্ত মানুষের শরীরগুলি রাসায়নিক প্লান্টের মত বিশাল এক এনার্জি প্লান্টে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে এবং তাদের বিশেষ ব্যবস্হায় অজ্ঞান করে তাদের শারিরিক ক্রিয়া-প্রক্রিয়া সচল করে রেখে শরীরে উৎপাদিত এনার্জি দ্বারাই টোটাল সিস্টেম চালানো হচ্ছে। তাদের শারিরিক কাঠামো ও অন্যান্য বিষয়গুলোর যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে কম্পিউটার সিস্টেম একটি পরাবাস্তব কম্পিউটার জগত তৈরী করেছে এবং মানুষকে এই জগতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অধিকাংশ মানুষই এই সত্যটা জানেনা। কিন্তু ভয় থেকেই যায় কারণ মানুষ হল অবাধ্য প্রাণী তারা দাসত্ব মানতে চায়না, চায় স্বাধীনতা। সে বারবার বিপ্লবের দিকে ঝুকে পরে যার মূল কারণ সে চায় স্বাধীনতা, সুখ-শান্তি ও নিরাপত্তা। অর্থ উপার্জন, জশ-খ্যাতি, বাড়ি-গাড়ির বাসনা সব কিছুর পেছনেই মূল কারণ একটাই, "সুখ-শান্তি অর্জন।" এসব প্রদান করলে, সে দাসত্ব মেনে নিতেও রাজি। কম্পিউটার সিস্টেম এই ব্যাপারটা বুঝে ফেলে তাই সে এই পরাবাস্তব জগতে মানুষকে অবারিত করে সব কিছু বিলিয়ে দিয়েছে তার সুখ-শান্তির জন্য। ফলাফলস্বরূপ অধিকাংশ মানুষেরই কোন অভিযোগ নেই। তারা এই সিস্টেমকে আরো মজবুত করার জন্য, সমৃদ্ধি আরো বাড়ানোর জন্য কাজ করে চলেছে। মানুষ ধন-সম্পদ, বাড়ি-গাড়ি, দামি খাবার সব কিছুর স্বাদই নিচ্ছে, অথচ এসব নিছকই ধোঁকাবাজি, ভার্চুয়াল, কোনটাই আসল না, এর কোন মূল্যই নেই। মানুষ মূলত পরাবাস্তব জগতে বন্দী এই কম্পিউটার সিস্টেমের দাস। এই সিস্টেম অদৃশ্য কিন্তু তারা এটাকেই নিজেদের প্রভু বানিয়ে নিয়েছে এবং নিজের অজান্তেই তার সন্তুষ্টির জন্য তার সিস্টেম চালু রাখার জন্য রাতদিন নিরলসভাবে পরিশ্রম করে চলেছে। কম্পিউটার সিস্টেম হিউম্যান ফর্মে কিছু অতি মানবীয় শক্তিসম্পন্ন লোক তৈরী করেছে যারা এই সিস্টেমের নিরাপত্তা, শাসনব্যবস্হা ইত্যাদি ব্যাপারগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। তারা যে কোন মানুষের শরীরে যাতায়াত করতে পারে এবং অন্য মানুষকে ধোঁকা দিতে পারে। ব্যাপারটা বোঝানোর জন্য Morpheus নিওকে একটা কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা আরেকটা পরাবাস্তব জগতে নিয়ে যায়। রাস্তায় হাটার সময় নিও হটাৎ লক্ষ করে বিপরীত দিক থেকে আসা এক সুন্দরী যুবতী নারী আকর্ষণীয় লাল পোশাক পরে তার মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছে। নিও তার প্রতি আকৃষ্ট হতেই Morpheus তাকে বলে, নিও তুমি সম্ভবত ঐ লাল ড্রেস পরা মেয়াটার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছ, তাইনা? নিও সম্মতি জানাতেই Morpheus বলে ওঠে, আবার তার দিকে তাকাও। নিও সুন্দরী মেয়েটার দিক তাকাতেই দেখে এক পুরুষ তার দিকে পিস্তল তাক করে আছে। Morpheus বলে আগে যেটা দেখেছ সেটা ধোঁকা আর এখন যা দেখছ এটাই সত্যি। এটাই হল Matrix. কিন্তু যারাই সত্যটা জেনে ফেলেছে বা Matrix বুঝে ফেলেছে কোনভাবে এবং মানুষকে জানানোর চেষ্টা করেছে, কম্পিউটার সিস্টেমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার চেষ্টা করেছে_ তাদেরকেই সন্ত্রাসী বা আতঙ্কবাদী হিসাবে বিবেচনা করে হত্যা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অন্যান্য মানুষও তাতে সমর্থন ও সাহায্য যুগিয়েছে। Morpheus তাকে জানায় এই সিস্টেম আসলে কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে রিমুভ করা সম্ভব না, যারা চেষ্টা করেছে, সবাই হত্যার শিকার হয়েছে। শুধুমাত্র একজন মাসীহা বা মানবসমাজের মুক্তিদাতা হিসাবে আগমণকারীর পক্ষেই শুধু সম্ভব এই সিস্টেম রিমুভ করা। আর Morpheus এর বিশ্বাস নিও-ই হচ্ছে সেই মাসিহা, প্রতিশ্রুত মুক্তিদাতা। কিন্তু দৃশ্যে পরিবর্তন আসে কারণ Morpheus এর অনুগত একজন ব্যক্তি ধৈর্যহারা হয়ে ওঠে। ৯ বছর সে Morpheus এর আধ্যাতিক নির্দেশনা অনুসারে মানবসভ্যতার বাইরে ছোট নেবুচাঁদনেজার জাহাজে, অতি সাদাসিধে সঙ্গীহীন জীবন-যাপনে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। সে আর Morpheus এর আধ্যাতিক বাণীর প্রতি আস্হা রাখতে পারেনা। সুস্বাদু খাবার-দাবার, ধন-সম্পদ, যশ-খ্যাতি ইত্যাদির লোভ তাকে পেয়ে বসে, যদিও সে জানে এসবের কোন মূল্য নেই, সব নকল-ভার্চুয়াল। কিন্তু জীবনটাও তো ফুরিয়ে আসছে তাই ভোগের জীবন তার কাছে বড় হয়ে ওঠে সে কম্পিউটার সিস্টেমের সাথে হাত মেলায় প্রতিশ্রুতি দেয় Morpheus কে ধরিয়ে দিবে, তার গোপন সব তথ্য তাদের হাতে তুলে দেবে আর বিনিময়ে দাবি করে তার ভোগ-বিলাসের যাবতীয় উপায়-উপকরণের বন্দোবস্ত করে দিতে হবে। সে বিশ্বাসঘাতকতা করে ফলাফলে Morpheus ধরা পরে, তার কিছু অনুসারী মারা যায়। তবে এই ক্ষতি ছিল সাময়িক কারণ নিও আধ্যাতিক শক্তি সম্পন্ন সে নিজের দায়িত্ব বুঝে নেয় এবং কম্পিউটার সিস্টেমকে চ্যালেজ্ঞ জানায়, সিস্টেমে কিছু ধ্বশ নামায় এবং সবশেষে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে................. সিনেমা এগিয়ে চলে তার আপন গতিতে।
কিন্তু আমি হটাৎ সিনেমা নিয়ে উঠেপরে লাগলাম কেন?
কারণ আমরাও এমন এক পরাবাস্তব জগতে বন্দী হয়ে আছি যার নিয়ন্ত্রণ মূলত এক অদৃশ্য সুপার পাওয়ারের হাতে। কিছু লোক ভয়াবহ সব মরনাস্ত্র, পারমানবিক যুদ্ধাস্ত্র, অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট, যোগাযোগ যান-মহাযান, নতুন অর্থব্যবস্হা, শাসন ব্যবস্হা ইত্যাদি নিয়ে মানবীয় শরীর নিয়ে পৃথিবীতে আত্নপ্রকাশ করেছে এবং সেই অদৃশ্য শক্তির নির্দেশনা অনুসারে গোটা ওয়াল্ড অর্ডার আর মানব জাতিকে নিয়ন্ত্রণ করছে। আর অধিকাংশ মানুষই মূলত এই ব্যাপারে সম্পূর্ণ গাফেল। তারা নিজের অজান্তেই সেই অদৃশ্য শক্তিকেই প্রভু বানিয়ে তার কথায় উঠছে-বসছে, তাকে খুশি করার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে। অর্থাৎ, সেই অদৃশ্য শক্তির নির্দেশ মাফিক আরো বেটার ওয়াল্ড তৈরীতে সাহায্য করছে। অথচ এই মহাবিশ্বের পরিণতি হল "Endless expansion অথবা Big crunch" নামক এক ভয়াবহ ধ্বংশযজ্ঞ। দাসত্বের বিনিময়ে অধিকাংশ মানুষ দামী খাবার-দাবার, ধন-সম্পদ, জশ-খ্যাতি, বাড়ি-গাড়ি দুনিয়ার সমস্ত রকম ভোগ-বিলাসে ডুব দিতে চাইছে, অথচ বাস্তবতা হল তাদেরও শেষ গন্তব্য মৃত্যু ছাড়া আর কিছুইনা। পৃথিবী ও তা হতে সৃষ্ট মানুষ, সবার শেষ দুর্ভাগ্য হল ধুলা-মাটিতে পরিনত হওয়া।
১৪০০ বছর আগের একজন মরুবাসী ব্যক্তির কিছু কথা স্বরণ করুন। তিনি আপনার নিকট "সন্মানিত, নাকি ঘৃণিত?" এটি নির্ভর করে " আপনি আপনার অদৃশ্য প্রভুর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বর্তমান সিস্টেমের দাসত্বে কত বেশি অগ্রগামী, নাকি বিরুদ্ধাচরণকারী?"
স্বরণ করুন, তিনি বলেছিলেন, ইরাক-সিরিয়ার মাঝ থেকে এক অতিপ্রাকৃত শক্তিমান ব্যক্তি বের হবে এবং ডানে-বামে বিশৃংক্ষলা সৃষ্টি করবে। তার গতি হবে বাতাসে ভেসে চলা মেঘের ন্যায়। সে এক সম্প্রদায়কে তার দিকে আহবান করবে এবং সে সম্প্রদায় তার প্রতি বিশ্বাস স্হাপন করবে, তার নেতৃত্ব মেনে নেবে। খুশি হয়ে এই ব্যক্তি আকাশকে নির্দেশ দিবে বৃষ্টি বর্ষণ করতে এবং ভূমিকে হুকুম দিবে অধিক পরিমাণে শস্য-ফলাদি উৎপাদন করতে। তাদের গবাদিপশুগুলি অধিক হ্রষ্টপুষ্ট হয়ে উঠবে এবং অধিকহারে দুধ উৎপাদন করবে। সুখ-সমৃদ্ধি তাদের মাঝে নেমে আসবে। এই ব্যক্তি আরেক সম্প্রদায়ের নিকট আসবে এবং তার এই সমৃদ্ধির লোভ এই সম্প্রদায়ের সামনে তুলে ধরবে এবং তাকে মেনে নিতে আহবান জানাবে কিন্তু এই সম্প্রদায় তাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে ফলে সে যখন এই সম্প্রদায়কে পেছনে ফেলে চলে যাবে, তার পর পরই এই সম্প্রদায়ের মাঝে দারিদ্রতা নেমে আসবে। অর্থ ফুরিয়ে যাবে এবং খাদ্য-পানীয়ের অভাবে দুর্ভিক্ষে তারা নিঃশেষ হতে থাকবে। অতঃপর এই ব্যক্তি পতিত মরুভূমিতে গিয়ে হাজির হবে এবং তাকে নির্দেশ দিবে, তোমার সব গুপ্ত সম্পদ আমার সামনে জড় কর। মরুভূমি তার চারপাশে সম্পদ স্তুপ করতে থাকবে যেভাবে মৌমাছি সর্দারের চারপাশে একত্রিত হয়। ( মুসলিম, অধ্যায় ৫৪/ফিৎনা ও কিয়ামতের আলামত, হাদিস নং: ৭১০৬, ইফাবা) কে এই অতিপ্রাকৃত ব্যক্তি? উত্তর: আদ-দাজ্জাল।
প্রশ্ন হল: কারা আজ তার আহবানে সাড়া দিয়েছে? কারা আজ আকাশ ও ভূমির উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ও কতৃত্ব স্হাপন করেছে? কারা আজ কৃষি-শিল্প ও সবদিক দিয়ে সমৃদ্ধি অর্জন করেছে? কারা আজ মূল্যহীন পতিত আরব মরুভূমির গুপ্তসম্পদ তেল-গ্যাস আবিষ্কারের পর নিজেদের জন্য নিয়ে যাচ্ছে? কারা তাকে প্রত্যাখ্যান করে আজ অর্থাভাব, খাদ্য-পানীয়ের অভাব, দারিদ্রতা ও যুদ্ধে ধ্বংশ হচ্ছে? উত্তর আপনারাই বের করুন। এটা বাস্তব matrix এর কিছু ধাঁধা।
তার বয়স কতদিন হবে?
মাত্র ৪০ দিন।
কিন্তু প্রথম তিনদিন কেমন হবে?
১ম দিন ১ বছর, ২য় দিন ১ মাস ও ৩য় দিন ১ সপ্তাহের সমান। এই সময়ে কেউ তাকে দেখবেনা কারণ কি? কারণ সে অদৃশ্য থাকবে। কখন সে মানবিক শরীর (যুবক এবং কোঁকড়া চুল বিশিষ্ট, চক্ষু হবে স্ফীত আঙ্গূরের ন্যায়) নিয়ে পৃথিবীর মানুষের সামনে আসবে? মুসলিমদের নিকট কনস্টান্টিনোপল (বর্তমান তুরষ্ক) পদানত হবার পর। (মুসলিম অধ্যায় ৫৪, ইফাবা হাদিস নং: ৭০৬৯)
১বছর ১মাস ১ সপ্তাহ এর অর্থ কি? পৃথিবীর হিসাবে তিনটি সুদীর্ঘ সময় বা তার তিনটি ভিন্ন অবস্হান বা পর্যায়। প্রমাণ কি? স্বরণ করুন, সাহাবীগণ প্রশ্ন বললেন, আমরা কি তখন নামাজ একদিনে একবার করেই পড়ব? তিনি বললেন, নাহ! এখনকার সময়ের সাথে মিলিয়ে নিবে। (মুসলিম, অধ্যায় ৫৪, ইফাবা)
স্বরণ করুন, তিনি আমাদের জানিয়েছেন, দাজ্জাল, ইয়াজুজ-মাজুজ ও ইয়াহুদী বা বনী ইজরাইল একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং সকলেই আবার একটি নির্দিষ্ট ভূমির সাথে জড়িত, আল-আরদুল মুকাদ্দাসা বা ফিলিস্তিন, বর্তমান ইজরাইল।
মহান আল্লাহ বলেন, এরপর আমি বনী ইজরাইলকে বললাম, তোমরা জমীনের (ফিলিস্তিন) উপর বসবাস কর, অতঃপর যখন প্রতিশ্রুত কিয়ামত আসবে তখন আমি তোমাদেরকে সংমিশ্রিত দলবলে হাজির/একত্রিত করব (বনী ইজরাইল: ১০৪)
যে জনপদকে (ফিলিস্তিন/ জেরুজালেম) আমি ধ্বংশ করেছি তার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে যে, তার অধিবাসীগণ (বনী ইজরাইল বা ইহুদীজাতি) আর ফীরে আসবেনা, যতক্ষণনা ইয়াজুজ ও মাজুজকে মুক্তি দেয়া হবে এবং তারা প্রতি উচ্চভূমি হতে ছুটি আসবে। (সুরা আম্বিয়া: ৯৫-৬)
এখনো যারা ইউরোপ-আমেরিকায় স্বস্হির ঢেকুর তুলছেন, বসে বসে স্বপ্নের লিস্ট বানাচ্ছেন আর যারা সেখানে যাবার স্বপ্নে বিভোর, হয়ত কেউ কেউ IELTS_এ স্কোর ৭-৭.৫ করার জন্য জীবন বিলিয়ে দিচ্ছেন, ভিসা হাতে পেয়ে নিজেকে পৃথিবীর সেরা ভাগ্যবান ভাবছেন তাদের জন্য এই মহান বাণী উৎসর্গ করলাম।
এমন কোন জনপদ নেই যা আমি কিয়ামত পূববর্তী সময়ে ধ্বংশ করব না, অথবা যাকে কঠোর শাস্তি দিবনা; এটা তো কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। (সুরা বনী ইজরাইল: আয়াত: ৫৮)
দুঃখিত matrix ভেদ করার সাহস আমার নেই কারণ আমি নিজেও এই পরাবাস্তব জগতের কোন জালে বন্দী আর Morpheus মত আমি দুঃসাহসী নই, কারণ এটা সিনেমা নয়, বাস্তব। যদি এই matrix ভেদ করতে পারেন তবে হয়ত হৃদয়ের অন্ধত্ব কেটে যাবে কিন্তু এই matrix বা মায়াজালের বাইরের জীবনপ্রণালী যে সুখকর হবেনা সেটি বলতে পারি।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



