somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাংবাদিক নিয়ে আমার একটা অভিজ্ঞতা

০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গেল বৃহম্পতিবারের ঘটনা। অবৈধ পাবলিক ট্রান্সপোর্টের মাইক্রোবাসে চেপে হাতিরঝিল পার হচ্ছিলাম। পুলিশ প্লাজা পার করে দেখি একটা গাড়ি আমাদের মাইক্রোবাসটাকে আটকাল। একটা স্বনামধন্য নিউজ চ্যানেলের গাড়ি, পিছনের গ্লাসে স্টিকার দেখে চিনলাম। সম্ভবত মাইক্রোবাসটা মিডিয়াওয়ালা গাড়ির গায়ে লাগিয়ে দিতে নিয়েছিল। গাড়ির সহযাত্রিরা বলতে শুরু করলেন মিডিয়াওয়ালা গাড়ির ড্রাইভারের দোষ, সে অন্য দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিল।

তো, মিডিয়াওয়ালা গাড়িটা থেকে একটা লম্বু আর একটা মটু নামল। মটু হাতে একটা দশাসই ক্যামেরা বাগিয়ে রেখেছে, যেন সেটা একটা আগ্নেয়াস্ত্র, তার ক্ষমতার প্রতীক। লম্বু আমাদের বলল, সবাই গাড়ি থেকে নামেন। মটু ড্রাইভারের সাথে হম্বিতম্বি শুরু করল। যাত্রিরা মটুর কথা প্রতিবাদ করায় মটু শাসাল, বলল মাঝখানে কথা বলবেন না। তারা সেলফোন বের করল, কার সাথে যেন কথা বলার ভান করতে চায়। ড্রাইভারও গাড়ি থেকে নেমে ঠাট দেখাতে শুরু করল।

একজন যাত্রি, সাধারণ চাকুরিজীবী, গাড়ি থেকে নেমে ড্রাইভারের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন। আরেকজন মিডিয়াকর্মী গাড়ি থেকে নেমে গিয়েছিল। সে গিয়ে ঐ চাকুরিজীবীকে ধরে বলে, এত কথা বলেন ক্যান? আপনিই তাইলে গাড়ির মালিক, নেন মোবাইলে কথা বলেন... অন্য ভাষায় চাকুরিজীবীকে বুঝিয়ে দিল, তুমি সঠিক হইলেও ভয়েস রেইজ করার আওকাদ তোমার নাই্, মানে মানে কেটে পড়। চাকুরিজীবী বেচারা হকচকিয়ে গেল।

কিছুক্ষণ পর ট্রাফিক পুলিশ আসল। আস্তে আস্তে যে যার গন্তব্যে রওনা দিল। ঝামেলা বেশি দূর বাড়ল না যেহেতু, বোঝা গেল মিডিয়াওয়ালাদের সাথে ট্রান্সপোর্ট চক্রের গোপন যোগসাজশ আছে, এই গ্যাঞ্জাম দিয়ে স্রেফ নিজেদের টেরিটরিটা দেখিয়ে গেল। দুই পাড়ার কুকুরদের ঝগড়ার মত।

সবাই ব্যাঙের ছাতার মত মিডিয়া গজানো নিয়ে কথা বলে। কিন্তু এটার আসল বিপদ নিয়ে কথা বলতে কাউকে দেখলাম না- সেটা হল, মিডিয়াকর্মী তকমায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের কাছে ক্ষমতা এসে পড়ছে। সাংবাদিকের ক্ষমতা অলিখিত, তাদের ডান্ডা বিমূর্ত, অপব্যবহার করলে ফলাফল হয় নৃশংস। হুটহাট মিডিয়ার জন্মসূত্রে হুড়মুড় করে অনেক মানুষ ঢুকে পড়ছে এই পেশায়, যারা কিনা প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলোর নৈতিকতা চর্চার পরম্পরা থেকে বিযুক্ত। সোজা কথায়, রাস্তাঘাটে আপনার সাথে ফাপর নেওয়ার লোকের সংখ্যা বেড়ে গেছে, যাদের কাজ আপনার ভয়েজকে রিপ্রেজেন্ট করা না, রিপ্রেস করা, ঐ বেচারা চাকুরিজীবীর মত।

সমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয়ের সময়ে মিডিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি একটা অশনি সংকেত। অবৈধ পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চড়ে সেটা নিয়ে আবার পোস্ট দিয়ে পোস্টদাতা যে ধৃষ্টতাটা দেখাল, সেটা এই অবক্ষয়েরই একটা দৃষ্টান্ত :P

ও আচ্ছা, স্টিকার মারতে ভুলে গেছি, আমি এই মর্মে বিবৃতি দিচ্ছি যে, সকল সাংবাদিকই খারাপ নয়, অজানা পার্সেন্টেজের সাংবাদিকের সমিস্যা থাকলেও থাকতে পারে...
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ৯:২৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×