somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সরকারকে নিয়ে বামপন্থী ও দেশবিরোধীদের গভীর ও সুচারু চক্রান্তের কথা।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেতন ভাতার দাবিতে তোবা গ্রুপের শ্রমিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গত ৬ই আগস্ট থমাস নামে একজন জার্মান সাংবাদিকের সাথে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের প্রেসিডেন্ট মোশেরেফা মিশুর একটা ফোনালাপ হয় যেটা একজন গোপনে ধারণ করে ইউটিউবে ছড়িয়ে দেয়। এই ফোনালাপের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে গার্মেন্টস সেক্টর ও সরকারকে নিয়ে বামপন্থী ও দেশবিরোধীদের গভীর ও সুচারু চক্রান্তের কথা।
ফোনালাপের বিস্তারিতঃ
থমাসঃ মোশেরেফা মিশু বলেছেন?আমি ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে থমাস। হাই মিশু আপনি কেমন আছেন?শুনলাম আপনি আসুস্থ।
মিশুঃহ্যা, আপনি কেমন আছেন? আমরা অনশনে আছি। আজকে নবম দিন চলছে।
থমাসঃঅনশন করছে কতজন?
মিশুঃ সব মিলিয়ে ১৬০০। এর মধ্যে ১৩০০ নারী আর ৩০০ পুরুষ কর্মী। তিন মাসের বেতন এক মাসের ওভার টাইম আর ঈদ বোনাসের জন্য তাদের সাথে আমাদের সংগঠন ওভার টাইম করছে।
থমাসঃ অর্থাৎ তোবা গ্রুপের কাছে আপনাদের বিশেষ দাবি রয়েছে। এখন পরিস্থিতি কেমন?
মিশুঃ এখন পরিস্থিতিটা বেশ মজার। সব বামদল, সব উদারপন্থী বাম গণতান্ত্রিক দল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন আমাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। ঢাবিতেও শিক্ষকরা প্রতীকী অনশন করেছে। এই ফাঁকে আমরা তোবা গ্রুপ ওয়ার্কার্স একশন কমিটি নামে একটি সংগঠনও গড়ে তুলেছি। এরই মধ্যে সব ছাত্র ও নারী সংগঠনগুলোর সঙ্গে বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো যেমনঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও খুশি কবীরের মতো মানুষেরাও আমাদের সঙ্গে আছে। এখন মানুষ গুলো সব একতাবদ্ধ। সরকার ও বিজিএমইএ’কে এখন গোটা জাতি ঘৃণার চোখে দেখছে। ৯ দিন ধরে অনশোনে আছি আমরা, এখনও তারা কর্মীদের বেতন দেয়নি। আমরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেআছি, আমার নিজের রক্তচাপ এখন ১৭০ বাই ১২০। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের বেশিরভাগই নারী। তাদের স্যালাইন ও ভিটামিন দিচ্ছি। প্রথম দিন থেকেই আমরা মেডিক্যাল টিম গঠন করেছি। আমার সহপাঠী ডাক্তাররাও সাহায্য করছে। লোকের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করছি। এই প্রথম গার্মেন্টস শ্রমিকরা এত কঠিনভাবে একতাবদ্ধ হয়েছে। কয়েক মিনিট আগেও ১০টি গার্মেন্টসের কর্মীরা আমাদের কাছে এসে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। তারা বাড্ডা ও গুলশান এলাকা থেকে এসেছে।
থমাসঃ এখন আপনি কোথায়? কারখানা ভবনে?
মিশুঃ হ্যাঁ, তোবা গ্রুপের ১২তলা ভবনের ৮তলায় আছি।
থমাসঃ বিজিএমই;র সাথে কি আপোস করছেন? নাকি করছেন না?
মিশুঃ অনশনের আগে তোবা গ্রুপ ও বিজিএমইএ কতৃপক্ষকে আমরা জানিয়েছিলাম। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বেতন বোনাস দেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। শ্রমমন্ত্রী, বিজিএমইএ ও তোবা গ্রুপের সঙ্গে আলাপ করেছি। কিন্তু তারা পাত্তা দেয়নি। তাই ঈদের আগের দিন আমরা অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছি। এই শ্রমিকেরা বিশ্বকাপে জার্মানি, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার জার্সি তৈরি করেছিল। আমি খুব খুশি যে আপনি আমাকে কল করেছেন। এখন এই খবর যদি জার্মানি থেকে ইউরোপীয়দের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেন যে, বিশ্বকাপটা কোটি কোটি দর্শক উপভোগ করলেও এ কর্মীরা তাদের মজুরি পায়নি। এটা নৃশংস-অমানবিক।
থমাসঃ জার্মান কোম্পানি গুলার নাম জানেন?
মিশুঃ হ্যাঁ আমি জানি কোম্পানিগুলোর নাম।
থমাসঃ কোম্পানির নামগুলো আপনি আমাকে মেইল করতে পারেন?
মিশুঃ এখানে ইন্টারনেট নেই। তবে আমি নাম বলতে পারি- ওডাব্লিউআইএম।
থমাসঃ আপনি এসএমএস করে পাঠাতে পারেন।
মিশুঃ আপনি আপনার ইমেইল ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার পাঠিয়ে দেন। আর এই খবর ইউরোপ ও আমেরিকায় ছড়িয়ে দেন।
থমাসঃ আমি করবো। এটাকে ইন্টারভিউ হিসেবে ছাপবো।
মিশুঃ এখানে চারটা শ্রমিক ইউনিয়ন আছে, কিন্তু কতৃপক্ষ এগুলোকে পাত্তা দেয় না। আপনি এটাও উল্লেখ করবেন যে, রানা প্লাজা ও তাজরীনের ঘটনার পর বিজিএমইএ বলেছিল গার্মেন্টস কারখানার কর্মীদের অবস্থা বেশ ভাল, তাদের নিয়মিত বেতন দেওয়া হচ্ছে; কিন্তু আদতে এসব সত্য নয়।
থমাসঃ আমাকে মেইলে প্রতিদিনের আপডেট পাঠানো সম্ভব কি? তাহলে এটা যতদিন চলবে, আমি ইন্টারনেটে প্রতিদিন আপডেট করতে পারবো।
মিশুঃ ঠিক আছে।
থমাসঃ আমার শুভেচ্ছা রইল। আমরা যোগাযোগের মধ্যে থাকবো।
মিশুঃ দয়া করে আমাদের জন্য ও এই আন্দোলনের জন্য একটা কিছু করবেন। জার্মান পত্রিকাগুলোতে এ নিয়ে লিখবেন যাতে বাস্তবতা সবাই বুঝতে পারে।
থমাস ঠিকাছে। ধন্যবাদ। মিশু, লাল সালাম।
মিশুঃ লাল সালাম।
কথোপকথন ভিডিওঃ https://www.youtube.com/watch?v=CGHXV8A6grQ
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×