প্রতি পুরুষের সহিংসতা নতুন কিছু নয় সেই আদিম যুগ থেকেই নারীদের কেউ কেউ পুরুষ দ্বারা নির্যাতনের শিকার। আমার নানা আর নানুর সম্পর্কটা ছিল খুবই মধুর আমার নানা যেহেতু সেকেলের পুরুষ ছিলেন তার পর ও তার ভিতর অনেক আধুনিকতা ও সু-সভ্যতা আমি দেখেছি। তার মুখে একটি কথা প্রায় শুনতাম তা হলে নারীদের সাথে দুর্ব্যবহার একমাত্র ছোট লোককেই মানায় আমি তখন নানাকে বলতাম কেন ছোট লোকেরা কি মানুষ নয় নানা বলতেন হ্যা মানুষ তার পর আবার বলতেন ছুক্কু অমানুষকেই মানায়। তার মানে আমার নানার যুক্তিতে যারা নারীর সাথে দুর্ব্যবহার করে নারীকে নির্যাতন করে তারা মানুষ নয় তাদের আগে একটা অ দিয়ে অমানুষ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
গত কয়েক দিন যাবৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে একটি ঘটনা দ্রুত বেগে ঘুরছে তা হলো সংবাদ মাধ্যমের দুই কর্মীর গোপনে বিয়ে ও নির্যাতনের ঘটনা। পুরো দেশ যখন ভয়াবহ করোনার থাবায় আক্রান্ত এর মাঝেই গত ২ এপ্রিল দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টর রেজাউল করিম প্লাবন বিশেষ শর্তে গোপনে বিয়ে করেন দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার সানজিদা ইসলাম পারুলকে। প্লাবনের শর্ত যেহেতু দেশে করোনার মহামারি তা এই মুহুর্তে কাউকে এই বিয়ের কথা না জানানোই উত্তম আর প্লাবনের কিছু নাকি পারবারিক সমস্যা ও আছে তাই এসব সমস্যা সমাধান করে সবাইকে জানানোর কথা বলেন প্লাবন। যাই হউক বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর যে যার মতে চলে আসে। কয়েক দিনের মাথায় ঠাট্টার ছলে পারুল প্লাবনকে নিয়ে একসাথে থাকার কথা বলতেই প্লাবন তেলে বেগুলেনে জ্বলে উঠে। তিনি নাকি পারুলের কাছে ঢাকার শহড়ে একটা ফ্ল্যাটের দাবী করে বলেন তাকে একটা ফ্ল্যাট কিনে দিলেই একসাথে সংসার করা সম্ভব। এর মধ্যে নাকি প্লাবন পারুল কে কয়েক বার শারীরিকভাবে ভাবে ও নির্যাতন ও করেন৷ হঠাৎ পারুল শোনতেপান তার শ্বাশুড়ি অর্থাৎ প্লাবনের মা অসুস্হ এমন কি প্লাবন আবার বিয়ের জন্য তার গ্রামের বাড়ী কুড়িগ্রামের চিলমারীর চলে গেছেন। পারুল কোন উপায়ন্ত না দেখে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি নেতৃবৃন্দের সহায়তার একটি এ্যাম্বুলেন্সে করে চিলমারীর প্লাবনের বাড়ী গিয়েও নাকি নির্যাতনের শিকার হন। সাজিদা ইসলাম পারুল ও এক সময় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নির্বাচিত মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন সেই সাথে একজন নাট্যকর্মী একজন নারী আন্দোলনের কর্মী এমকি লিউক্লাব ৩১৫ এ২ এর লীডার ও ছিলেন।
পারুলকে আমি ছোট বোনের মত ভাবি ওর সাথে পরিচয়টা কম দিনের নয় সেই ২০১৪ জানুয়ারী দিক থেকে তখন পারুল দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকায় কাজ করেন। দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ এ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সাফল্য সমস্যা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতেন। থাক সেই কথা পারুলের সাথে এখন সম্পর্কটা অনেকটাই আপন যে কোন প্রয়োজনে পরামর্শে আমি পারুল কে ফোন করি কখনে পারুল আমাকে। তবে পারুল যে গোপনে এমন কাজ করে ফেলেছে তা আমি স্বপ্নে ও ভাবী নাই গত সপ্তাহ খানেক আগে হঠাৎ পরিচিত একজনের কাছ থেকে তিনটা ছবি সহ ফেইসবুকের ম্যাসেজ্ঞারে একটা ছবি পেলাম সাথে পারুলের বিয়ের খবরটা। খবরটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পারুলের ও ঘনিষ্ট আরেক ছোট ভাইকে ফোন করলাম ও বললো ভাইয়া আমি তো কিছু জানিনা। যেহেতু ছেলেটা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের গুরুদায়িত্বে আছে করোনার মহামারিতে মানুষের জন্য দিন রাত কাজ করছে হয়তো না ও জানতে পারে। পরক্ষনেই মনে হলো পারুল হয়তো কাউকে না জানিয়ে ই শুভ কাজটি সেরে ফেলেছে। তাই পারুলের ফেইসবুক ম্যাসেজ্ঞারে অভিনন্দন ও শুভকামানা লিখে একটি ম্যাসেট পাঠিয়ে রাখলাম। কিছুক্ষন পরেই পারুল কারন জানতে চাইলে শুধু ছবির স্ক্রিনশট টা পাঠিয়ে দিলাম। এর পর আর পারুলের সাথে আমার কথা বা যোগাযোগ করিনি। পারুলের শুভ পরিনয়ের কথা আমার স্ত্রীকে সাথে বলতে বলতে ওর শুভকামনায় দোয়া করলাম। হয়তো সৃষ্টি কর্তা কান পর্যন্ত সেই দোয়া পৌঁছায় নি।
বিয়ে একটা সমাজিক ধর্মীয় রীতি মানুষ বিয়ে করে সামাজিক ভাবে বৈধ যৌনসম্পর্ক ও সুখে শান্তিতে সাংসারিক জীবন যাপনের জন্য। তাই কোন প্রাপ্তবয়স্ক নিজেদের পছন্দ ভিত্তিতে ধুমধাম করে কিংবা সীমিত পরিসরে মধ্যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে। কিন্তু আমাদের সমাজে একশ্রেণির লম্পট আছে যারা নিজেদের যৌনাকাংখা ও ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য চুপ চুাপ বিয়ে করে স্বার্থ হাসিল হলে কেটে পড়ার ধান্দা করে। রেজাউল করিম প্লাবন ও তাদের ই একজন। যদি তেমনি না হতে বিয়ে মাত্র করেক দিনের মাথায় তো আর এমন কান্ড করতে পারেন না। পারুল একজন নিন্মমধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান নানা ঘাত প্রতিঘাত পার করে জীবনকে এত টুকু এনেছেন। তাই প্লাবন ও তার পরিবার খুবই ভাল করে জানতো পারুল বা তার পরিবারের পক্ষে তাদের দাবী দাওয়া মিটানে মোটে ও সম্ভব নয়। তাই পারুলের সাথে প্লাবনের এই প্রতারনা।
পারুল একজন সংবাদ সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মী পারুল তার অধিকার সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন। পারুল প্লাবনের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেয়ার পথে ও এগুচ্ছেন। এদিকে পারুল ও প্লাবন যেহেতু একই পেশায় সম্পৃক্ত তাই তাদের পেশাজীবিদের সর্বোচ্চ সংগঠন ও চাচ্ছেন এই ঘটনার সুস্ঠ সমাধান। আমি আমার নানার সেই অমানুষ যুক্তি দিয়েই বলছি। আজো আমাদের সমাজে প্লাবনের মত হাজারো অমানুষ আছে যারা নিজেদের ব্যক্তিগত নানান স্বার্থ হাসিলের জন্য ঘরে স্ত্রী থেকে শুরু করে নানান ভাবে আমাদের নারীদের ব্যবহার করছে স্বার্থের বেঘাত ঘটলেই চালাচ্ছে নারীদের উপর শারীরিক মানসিক সহ নানান ধরনের নির্যাতন। এমন কি খুনের মত ঘটনা ও ঘটছে প্রতিনিয়ত। নানান অযুহাতে প্লাবনের মানুষরূপী যে জনোয়ারেরা পারুলদের উপরে নানান ভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছে আইনের মাধ্যমে এর যদি সুষ্ঠু বিচারের ব্যবস্হা করে সাজা কার্যকর করা হতো তা হলে হয়তো আর কোন পারুলকে এমন নির্যাতন ও প্রতারনার শিকার হতো না।