somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

**মুভি রিভিউ** আয়রন ম্যান টু ও রবিন হুড

২৪ শে মে, ২০১০ রাত ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আয়রন ম্যান টু

আয়রন ম্যান টু ক্রিটিকদের কাছ থেকে নাম কুড়িয়েছে বেশ। ২৪০টি রিভিউয়ের মধ্যে ১৭৮টি রিভিউ আয়রন ম্যান টুয়ের প্রশংসায় মুখরিত। অর্থাৎ ৭৪% ক্রিটিক মুভিটি পচ্ছন্দ করেছেন। ফলে গড় রেটিং ৬.৫/১০।

আয়রন ম্যানের (২০০৮) সিক্যুয়েল আয়রন ম্যান টুতে গল্পের দিক থেকে খুব একটা অভিনবত্ব না থাকলেও ভালো পরিচালনা, অসাধারণ অভিনয় আর জমজমাট অ্যাকশন মুভিটিকে সামার ব্লকবাস্টার হিসেবে সার্থক করে তুলেছে। সফল মুভির সিক্যুয়েল নির্মাণ বরাবর একটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে থাকে। এই চ্যালেঞ্জ উতরে যেতে অসংখ্য মুভির দ্বিতীয় পর্ব ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু ডিরেক্টর জন ফাভরোর হাত ধরে অভিনেতা রবার্ট ডাউনি জুনিয়রের আয়রন ম্যান টু চ্যালেঞ্জ জিতেছে। টনি স্টার্ক ওরফে আয়রন ম্যানের চরিত্রটি যেন রবার্ট ডাউনির প্রতিরূপ। পরিচালকের কাছ থেকে পাওয়া স্বাধীনতায় ডাউনি নিজের বাস্তব চারিত্রিক বৈশিষ্টকে টনি স্টার্কের খোলসে পুরেছেন। তাই তো আয়রন ম্যানের মতো আয়রন ম্যান টুতেও চমৎকার সাবলীল অভিনয় করে গেলেন তিনি। নতুন এই মুভিটির প্লটে জটিলতা নেই। সেই প্রথমটির মতোই ভালো-মন্দের দ্বন্দ-যুদ্ধের দিকে এগিয়েছে কাহিনী। কিন্তু বাদবাকি সব যদি ঠিক থাকে চর্বিত প্লটেও যে মুভি হয়ে উঠতে পারে অসাধারণ - প্রমাণ আয়রন ম্যান টু। দৃষ্টিনন্দন ইস্পেশাল ইফেক্টস মুভিটির সাফল্য মুকুটের অন্যতম রত্ন। তবে লৌহমানবের এতো পতন-সংঘর্ষের পরও কিভাবে যে বর্মের ভেতরের মানুষটি গুরুতর ক্ষতি ছাড়া টিকে থাকে তা অবাক করার মতো বৈকি! আপনার সময় ও পয়সা উসুলের জন্য ২ ঘন্টা ৪ মিনিটের আয়রন ম্যান টু সানন্দে দেখতে পারেন।

রেটিং: ৪/৫



রবিন হুড

যে সব দর্শক রবিন হুডের চিরচেনা রূপটি দেখার আশায় থিয়েটারে পা বাড়িয়েছিলেন, এক কথায় তারা হতাশ হয়ে ফিরেছেন। বোদ্ধা ডিরেক্টর রিডলি স্কটের রবিন হুড বিদদ্ধ মুভি ক্রিটিকদেরকেও সন্তুষ্ট করতে পারেনি। অর্ধেকেরও বেশি ক্রিটিক মুভিটির বিরূপ রিভিউ লিখেছেন। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০১টি প্রকাশিত রিভিউয়ের মধ্যে ৯১টি রিভিউতে সমালোচকরা মুভিটির পক্ষে বলেছেন। কিন্তু বাকি ১১০টি রিভিউতে বাঘা বাঘা ক্রিটিকরাসহ অন্যরা মুভিটির নানামুখী নিন্দে করেছেন। ফলে দেখা যাচ্ছে, মাত্র ৪৫ শতাংশ ক্রিটিক রবিন হুডকে পজিটিভ ট্রিটমেন্ট দিয়েছেন। ক্রিটিকদের সম্মিলিত রেটিংয়ের গড় দাঁড়াচ্ছে ৫.৪/১০। যা রিডলি স্কটের মতো পরিচালকের জন্য দুঃখজনক।

রাসেল ক্রো অভিনীত রবিন হুডে ভালো অভিনয় আছে, সিনেমাটোগ্রাফিও ভালো, আছে চিত্তাকর্ষক অ্যাকশন দৃশ্য। কিন্তু নেই রবিন হুডের সেই সব রোমাঞ্চকর গল্প - যা কল্পিত রবিন হুডকে বানিয়েছিল কিংবদন্তী। তাই মূল সুরের এই অনুপস্থিতিতে ২ ঘন্টা ২০ মিনিট ধরে চলার পরও মুভিটি দর্শকদের রাখে অতৃপ্ত। কারণ রবিন যে এখনও রবিন হুড হয়ে ওঠেনি! শেরউডের কিংবদন্তী রবিন হুডের দেখা পাওয়াটা যে বৃথা গেল! অপেক্ষা করতে হবে বুঝি কখন আসবে সিক্যুয়েল, তার জন্য! আমি মনে করি, রবিনের উত্থান বর্ণনায় এতোটা সময় ব্যয় করার প্রয়োজন ছিল না। দ্রুতগতির এডিটিংয়ের সাহায্যে রবিনের রবিন হুড হয়ে ওঠা মুভির বর্তমান সময়ের চেয়ে অর্ধেকেরও কম সময়ে উপস্থান করা যেত। এই মুহূর্তে ক্রিস্টোফার নোলানের ব্যাটম্যান বিগিনসের (২০০৫) কথা মনে পড়ছে। যেখানে ব্রুস ওয়েনের (ক্রিশ্চিয়ান বেল) ব্যাটম্যান হয়ে ওঠা ও ব্যাটম্যানরূপী তার ভূমিকা চমৎকারভাবে দেখানো হয়েছিল। প্রিয় রিডলির রবিন হুডে তেমনটা হলে বাকি সময়টুকুতে উপভোগ করা যেত গরীবের বন্ধু প্রিয় রবিন হুডের অ্যাডভেঞ্চার। তবে রবিন হুড চরিত্রে রাসেল ক্রোকে খুব বেশি মানানসই মনে হয়নি, রাশভারী মনে হয়েছে। তাই গ্লাডিয়েটরের (২০০০) ছায়াসঙ্গী রবিন হুডের (২০১০) চেয়ে আমার কাছে এরল ফ্লাইন অভিনীত ক্লাসিক মুভি দি অ্যাডভেঞ্চারস অফ রবিন হুড (১৯৩৮) মুভিটিই প্রিয় হয়ে থাকলো।

রেটিং: ৩/৫



যবনিকার পূর্বে...

আয়রন ম্যানের কাছে পরাজিত হয়েছে রবিন হুড। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এই গ্রীষ্মে (২০১০) মুক্তি পেয়েছে মুভি দুটি। আয়রন ম্যান টু ৭ই মে, রবিন হুড ১৪ই মে রিলিজ পেয়েছিল। ক্রিটিকদের কাছে রবিন হুড সমাদৃত হয়নি। তবে নন্দিত হয়েছে আয়রন ম্যান টু। তাই বক্স অফিসের লড়াইয়ের আগেই সমালোচনার লড়াইয়ে পরাজিত হয়েছে রবিনহুড। রিলিজের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে বক্স অফিসের প্রথম স্থানে থাকা আয়রন ম্যান টুয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে রবিন হুড এসেও আয়রন ম্যান টুকে টলাতে পারেনি এতোটুকু। সেই সপ্তাহে কোন থিয়েটার না হারিয়ে উল্টো আরও দশটি থিয়েটার যোগ হয়েছিল আয়রন ম্যান প্রদর্শনে। প্রথম সপ্তাহে আয়রন ম্যান টু আয় করেছিল ১৫৯.১৬ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে মুক্তির প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবিনহুড আয় করেছে ৪৭.৪ মিলিয়ন ডলার। সেই সপ্তাহেই তথা নিজের দ্বিতীয় সপ্তাহে আয়রন ম্যান টু আয় করেছে ৬৫.৫৪ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ বক্স অফিসে আয়ের দিক থেকেও রবিন হুড আয়রন ম্যানের কাছে পরাজিত। অন্যদিকে, চলতি সপ্তাহে মুক্তি প্রাপ্ত শ্রেক ফরএভার আফটার (২১ মে, ২০১০) শুরুতেই প্রত্যাশিতভাবে টপ চার্টের এক নাম্বারে। তাই রবিনহুডের প্রথম স্থান অর্জন এখন স্বপ্নে পরিণত হয়েছে!


_______________
পুনশ্চ: দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের শোবিজ পাতার এক ক্লাউন সম্প্রতি আন্দাজে, কোন কিছু না জেনে, না বুঝেই লেখা নিজের কল্পসংবাদকে শুদ্ধ প্রমাণ করতে গিয়ে ভুল তথ্যে রবিন হুডের ব্যাপক মিথ্যে জয়গান গেয়ে পাঠকদের চরমভাবে প্রতারিত করেছে। উপরের লেখার শেষ প্যারাটি তার গাঁজাখুরি লেখার জবাব। তার উচিত এখন পাঠকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নিজের চুনকালি মাখা মুখটি কোন সেইফ ভল্টের হেফাজতে কিছুদিন লুকিয়ে রাখা। কোন কিছু লেখার পূর্বে তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে নিতে হয়। অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানও থাকতে হয়। কিন্তু তা না, আমাদের মিডিয়ার কিছু লোক পত্রিকা গরম করার জন্য মনগড়া রিপোর্ট লেখে। অসহায় পাঠকদের ওসব ছাঁইপাশ পড়া ছাড়া উপায় থাকে না। আমি নিজে মিডিয়া সংশ্লিষ্ট হওয়ার পরও মিডিয়ার এই সব আচরণে যারপরনাই বিরক্ত, বীতশ্রদ্ধ ও রাগান্বিত!

লিংক: উক্ত ক্লাউনের লেখা দুটি - ২২ মে|১০ মে|
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১০ রাত ২:৪৩
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×