বাঁশ...দুটো অক্ষর পড়েই চিন্তা করা শুরু করে দিয়েছেন তাইনা? কেমনে কাকে কবে বাঁশ দিয়েছিলেন? বাঁশ এর আবার রকমফের আছে- মুলি, বোরাক,সোজা, ব্যাকা, আইক্কাওলা, আইক্কাছাড়া, আরো কত কি ! সুযোগ পেলে তো কেউ কেউ আস্ত বাঁশঝাড়টিই দিয়ে দেয় অন্যকে। আচ্ছা হ্যাঁ আপনাকেই বলছি পাঠক, আপনাকে অগ্রিম চিন্তা করতে কে বলেছে ? অবশ্য আমি বললেই বা আপনি থামবেন এমন তো কোন কথা নাই! এই যে, এখনো আপনার ঠোঁটের কোনায় হাসিটি লেগে আছে ! মনে মনে ঠিকি ভাবছেন। যাই হোক আপনি আপনার মত ভাবতে থাকেন আর আমি আমার মত লিখতে থাকি!বেশ কিছুদিন ধরে ভাবছিলাম বাঁশ নিয়ে একটা বাঁশ মার্কা লেখা লিখব। কিন্তু কেন জানি ইদানীং আর বাঁশ দেয়া লেখা লিখতে পারিনা, অনভ্যাসে বিদ্যা হ্রাস বলে একটা কথা আছেনা, যেহেতু আগের মত নিয়মিত লিখিনা তাই চুপ করে বসে থাকতে পারি খুব ভাল মত। দলবেঁধে আনুষ্ঠানিক ভাবে অলসতা করতে পারি...
মুল গল্পে আসি, বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীর রাস্তায় খেয়াল করেছেন নিশ্চয় বাঁশ দিয়ে ডিভাইডার দেয়া হচ্ছে।যাতে এক প্রান্তের গাড়ি আরেক প্রান্তে ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃত চলে না যায় ! সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য আবার কিছু কিছু বাঁশ রঙ করে দেয়া হয়। শেষে এসে অবশেষে এতদিনে আমাদের নগর পরিকল্পনাকারীরা বুঝতে পেরেছে বাংগালী কে আসলে বাঁশ না দিলে আটকানো যায়না ! কত সুন্দর সুন্দর সাইনবোর্ড/লিফ্লেট/নিয়নসাইন/শো বোর্ড দিয়ে চেষ্টা করা হল কিন্তু কিছুতেই কিছু হলনা রাস্তায় লাল নীল কত রকম সিগন্যাল কিন্তু ট্রাফিক এর হাত এর দিকেই সবার নজর,আদতে নজর ট্রাফিকের হাতের ডান্ডা মতান্তরে বাঁশটির দিকে। আর ট্রাফিকের নজর কাগজপত্র নাই বা ভেজাল আছে এমন অবৈধ গাড়ির দিকে। একটা কথা আমার মত গন্ডমুর্খের মাথায় ঢোকেনা আপনাদের কারো মাথায় ঢুকলে আমাকে একটু বলবেন প্লিজ। তা হল ঢাকা শহরতলীর রাস্তায় যেখানে বেশিরভাগ গাড়ি/বাহন ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যাম এ পড়ে থাকে গতিহীন হয়ে, সেখানে গতিসীমা ২০- ৩০ কিঃমিঃ এরকম ইলেক্ট্রনিক সাইনবোর্ড দেয়ার কি কোন মানে আছে ? যেসব রাস্তায় গতি তোলা যায় সেসব রাস্তায় এই শোবোর্ড গুলো দিন, এই শো বোর্ড চালাতে নিশ্চয় বিদ্যুত খরচ হয়? কুইক রেন্টাল বলেন আর ডিলে রেন্টাল! যেখান থেকেই কিনুন সেই বিদ্যুত নিশ্চয় কিনতে হয়। আর আমাদের ট্যাক্স এর টাকায় এভাবে আমাদের বাঁশ না দিলেও তো হয়! আমি নিয়মিত কর প্রদানকারি একজন নাগরিক। বাংলাদেশের বৃহতকরদাতা ইউনিট এ আমার কর জমা হয় প্রতিমাসে। তাই আমি জোড় গলায় অনেক কিছুই বলি। যা বলছিলাম রাস্তায় বাঁশ এর কথা, গত সপ্তাহে মতিঝিলে হোটেল পুর্বানীর কাছে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ঢাকার বাইরে যাব। অফিসের কাজে, এখানেই আমাদের গাড়ি আসার কথা, তখন দেখছিলাম সিটি কর্পোরেশন (উত্তর না দক্ষিন জানিনা) ট্রাক থেকে বাঁশ নামিয়ে রাস্তায় ডিভাইডার দিচ্ছে। আমার সাথেই দুইজন ফরেনার ছিলেন, তারা জিজ্ঞাসা করলেন, এরা কি করছে ? আমি জবাব দিতে পারলাম না। অসহায় ভাবে অন্যদিকে তাকিয়ে ভাবনায় ডুবে গেলাম, তারপর... বলতে পারলাম না আমাদের দেশের মানুষ তার নিজের রাস্তায় না থেকে ওভারটেক করে অন্যপাশে চলে আসে নিঃদ্বিধায়, ফুট ওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে দৌড়ে রাস্তা পার হতে পছন্দ করে, বাঁকা পথে চলতে বেশি পছন্দ করে তাই মটর সাইকেল নিয়ে ফুটপাথে উঠে যায়, অন্যকে পেছন থেকে টেনে রাখে যাতে বড় হতে না পারে ! আর আমাদের এই অবাধ্য জাতিকে মানুষ করার জন্য বাঁশ ছাড়া গতি নেই ! কোটি টাকার গ্রিল দিলে খুলে নিয়ে বিক্রি করে দিবে যেমন টা করে ম্যানহোলের ঢাকনা নিয়ে! তাই দেশীয় প্রযুক্তি তে এবার আমরা রাস্তায় বাঁশ দিচ্ছি, আর প্রতিবার আমরা আমাদের সেবা করার পাশাপাশি বাঁশ দেয়ার জন্য কিছু মানুষ কে নির্বাচন করি ডান অথবা বাম যে কোনদিকে বাঁশ আমাদের খেতেই হবে। গাড়ির প্রচন্ড হর্নে ভাবনার জালটা ছিন্ন হয়ে গেল, ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। বাস্তবে এসব ভাবব ! মাথা খারাপ বাস্তবে এইসব ভাবতে গিয়ে আমি আবার বাঁশ খাব নাকি !!
[email protected]
আসুন রাস্তায় বাঁশ দেই- সৈয়দ রাকিব (রম্য/বিদ্রুপ)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে
তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না
সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন
লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা
ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।
মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না
নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন
দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন