somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই লেখাটা তোর জন্য

১১ ই এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৪:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ বিশেষ কোন দিন নয়।না তোর জন্মদিন কিংবা অন্য কিছু।আমিও বিশেষ কিছু ভেবে লিখতে বসিনি।শুধু বলবো- আজ তোকে নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করছে।

দিন তারিখ ঠিক ঠাক মনে নেই।শুধু মনে আছে মনটা সেদিন অনেক অনেক খারাপ ছিল।তবে দিনটা নয়।প্রচন্ড ঝকঝকে এক রোদেলা দুপুর ছিল সেদিন।আমি পিসির সামনে বিডি চ্যাটের এক কোণায় বসে আছি চুপচাপ।কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছিলনা।নীরবতা ভেংগে অনেকক্ষণ পর তোর নিকে নক করেছিলাম।কেন করেছিলাম বলতে পারবোনা। এমন আহামরি কোন নিক বাগিয়েও বসে ছিলিনা তুই।সাধারণ আটপৌরে এক বাংগালি মেয়ের নামে নাম।কথাবার্তাও হয়েছিল টুকটাক।সব সাধারণের মধ্য দিয়েই সেদিন তোর সাথে আমার পরিচয়।

তারপর মেসেঞ্জারে এসে জুড়ে বসলি।একটু একটু কথা হতে লাগলো।আমি বলি,তুই শুনিস।আমি শুনি,তুই বলিস।কিছুদিন এভাবেই চললো।একটা সময় এসে বুঝলাম আমার ভেতরে জমে থাকা কথার মেঘগুলো চোখ বুজে তোর উপর বৃষ্টি হিসেবে ঝরিয়ে দেয়া যায়।তুইও তাতে ভিজতে আপত্তি করবিনা।এমন নয় যে আমার বন্ধুর অভাব ছিল কোনদিন।কিংবা নিজের কথা শোনার মত কেউ ছিলনা।তারপরও আমি তোকেই বলতে বেশি ভালবাসতাম।তুই নিজেও তখন আমার মত ডানাভাঙ্গা পাখি।ঊড়তে না পারার কষ্টটা তোর মত আর কেউ বুঝতে পারতোনা।হয়তো বা এজন্যই গড়গড়িয়ে তোকে সব কিছু বলে যেতাম।আস্তে আস্তে আমি তোর ওপর নির্ভর করা শুরু করলাম।নিজের কথা নিজের মত করে শোনাতে লাগলাম।তুইও নিজের মত করে বুঝে নিতি সেগুলো।প্রয়োজনের সময় প্রয়োজনীয় কথাটা ধরিয়েও দিতি।

এভাবে চলতে চলতে একসময় আমার ফোনবুকেও এসে বাসা বাঁধলি।স্লো নেট কানেকশন অথবা ডিসকানেক্শন এর ভূত আমাদের বন্ধুত্বের সামনে খুব বেশি সুবিধা করে উঠতে পারলোনা আর।আমার ভালো লাগা মন্দ লাগা অনুভূতিগুলো ফিঙের ল্যাজে উড়ে ঊড়ে তোর কাছে যখন তখন পৌঁছে যেত।নিজের ভেতর বাসা বাঁধা একাকিত্ব গুলোর দুই এক মুঠো তুই জোর করেই নিজের করে নিতে লাগলি।আমিও বাঁধা দেইনি কখনো।অমন একটা সময়ে তোর মত একজনের জোর করা বড় বেশি দরকার ছিল।

ভার্চুয়াল অবয়ব ভেঙ্গে এক সময় বাস্তবজীবনে আমার পাশে এসে দাঁড়ালি...সেটা অবশ্য তখন শুধু সময়ের ব্যাপার ছিল।

স্বীকার করতে দ্বিধা নেই তোর সাথে বন্ধুত্বের প্রথম কয়েকটা দিন আমি কিছুটা দ্বিধান্বিত ছিলাম।আমি তোকে নিয়ে কি ভাবছি বা তুইই আমাকে কি চোখে দেখছিস।কারণ খুব অল্প দিনেই আমরা অনেক কাছাকাছি চলে এসেছিলাম।যতটুকু কাছাকাছি হলে অন্যদের চোখে সেটা অন্য কিছুও মনে হয়।তোর সাথে কথা বলতে বলতে কত রাত ভোর করে ঘুমুতে গিয়েছি সেটার হিসেব আমার কাছে নেই।তাই হিসেব মেলাতেও একটু কষ্ট হচ্ছিল।"ছেলেতে মেয়েতে কখনো বন্ধুত্ব হয়না,যা হয় তা বন্ধুত্বের চেয়েও বেশি কিছু"- ছোটবেলা থেকে বয়ে বেড়ানো এই সমীকরণটাও কম জ্বালাতন করেনি।মাঝপথে এসে সব কিছু জট পাকিয়ে যাচ্ছিল।এতসব গোলমেলে হিসেব নিকাশে আমি যখন দিন দিন বাঁধা পড়ছি সেই সময়টাতে তুইই আস্তে আস্তে আমাকে সেখান থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে এসেছিলি।প্রয়োজন অনুযায়ী একেক সময় একেক সাজে আমার সামনে এসে দাঁড়াতি।কখনো বন্ধু হয়ে,কখনো বোন কিংবা কখনো কড়া মেজাজি মাস্টার মশাই যার কথা না শুনে উপায় নেই।একটু একটু করে এলোমেলো সব সন্দেহ আর দ্বিধা কখন উবে গেল বুঝতেই পারিনি।অথবা তুই বুঝতে দিসনি।চোখ বুজে আমি এখন নিশ্চিন্তে তোকে শুধুই বন্ধু ভাবতে পারি।চারপাশের উড়ো কথাগুলো ঠিক মত ঠাঁই গাড়তে না গাড়তেই আবার উড়িয়ে দিতে পারি।

দেখতে দেখতে অনেকদিন হয়ে গেল তোর সাথে আমার পরিচয়।প্রথম দিনের সেই সাধারণ মানুষটার খোলস ছেড়ে তুই আজ অসাধারণ একটা বন্ধু হয়ে গেলি!এটা কি কখনো ভেবে দেখেছিস??কিংবা এমন করে ভেবে দেখেছিস?আমি নিজেই আসলে এভাবে খুব বেশি ভাবিনি।তবে আমার কোন ভাবনা তোকে না জানিয়ে থাকলে কোথায় যেন একটা অসম্পূর্ণতা থেকে যায়।সেটা বুঝি।আজকের লেখাটাও হয়তো সেরকম কোন অবচেতন বোঝাপড়া থেকেই বেরিয়ে এলো।

আমি খুবই চুপচাপ ছেলে,তুই জানিস।আমার অন্য বন্ধুরাও সেটা জানে।অনেক সময় অনেক কথাই বলার থাকে,বলতে ইচ্ছে হয়।তোর গুনগুনিয়ে গাওয়া গানগুলোর মত করে।কিন্তু কোন কথাই ঠিকঠাক গুছিয়ে বলা হয়না বেশিরভাগ সময়।শুরুর আগেই থেমে যাই।এজন্য অনেক সময় অনেকেই ভুল বোঝে।কিন্তু তুই আমার এই ব্যাপারগুলো ঠিকই ধরতে পেরেছিস।বুঝতে ভুল করিসনি এখনো পর্যন্ত।যদি কখনো এর উল্টোটা হয়,কখনো আমাকে বুঝতে অসুবিধা হয় কিংবা কোন কারণে অচেনা মনে হয় তাহলে আমার এই লেখাটা কষ্ট করে একটু ছুঁয়ে দেখিস।হাতের মুঠোয় শব্দগুলো নিয়ে একটার পর একটা নেড়েচেড়ে দেখিস।তাতে লাভ কি হবে??... সেটা তুই নিজেই বুঝে নিবি তখন।না হলে আর বন্ধু হলি কীসের??

বর্ষা,এই লেখাটাকে তোর প্রতি আমার ঋণস্বীকারও ধরে নিতে পারিস।আমার জীবনের খুব বাজে একটা সময়ে তোর মত বন্ধুর ছায়া পাশে এসে থেমেছিল।সামনে আরো অনেকটুকু পথ।ওটুকুতেই তোকে পাশে চাই।থাকবিনা?


৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×