somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সন্ত্রাসের উল্টো কথা

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চলমান রাজনৈকিত সমস্যাকে বাংলাদেশের সব গুলি টিভি চ্যানেল, সংবাদ পত্র এবং ক্ষমতাশীলরা সন্ত্রাসবাদ এবং রাষ্ট্রিয় সমস্যা হিসেবে দেখাচ্ছে। এ দলে বিরোধীদলের সুবিধাভূগী কিছু বুদ্ধিজিবীরাও আছে।
টেররিজম নাকি বাংলাদেশের কাঁধে ভর করেছে। গত দুই শতাব্দিতে (কনফ্লিক্ট অফ সিভিলাইজেশন) সভ্যতার সংঘর্ষের এক পক্ষ হলো পশ্চিমা দুনিয়া অন্যদিকে মুসলিম প্রধান দেশ এবং সামগ্রিক মুসলিম কমিউনিটি।
কনফ্লিক্ট অফ সিভিলাইজেশন নামে বিশ্ব রাজনীতির নানা ধাপে প্রয়োজনে- অপ্রয়োজনে , যুক্তিক বা অযুক্তিক ভাবে ইসলামের নামে অনেক সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরী হয়েছে।
কোন কোন সন্ত্রাসী গ্রুপ জিহাদের ভূল আবেগের ভিতর দিয়ে পশ্চিমা ও তাদের অনুসারীদের দমন করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হয়েছে। আবার অয়েষ্টার্ন কনস্প্যারেছি থিওরীর ভিতর দিয়েও আনেক সন্ত্রাসী গ্রুপের জন্ম। যে ভাবেই এদরে জন্ম বা গঠন হওক না কেন এরা প্রকৃত অর্থে সমগ্র মানবতা এবং ইসলামের জন্য ভীষন ক্ষতিকর ।
বর্তমান বিশ্বে ইসলামের নামে সন্ত্রসী গ্রুপ হিসেবে আন্তর্জাতিক গন মাধ্যমে
বেশ আলোচিত হলো - অাল কায়েদা, বকু হারাম, আল-শাবাব এবং এশিয়া বিশেষ করে ইন্ডিয়া এবং পাকিস্তানের অনেক ছোট -বড় সন্ত্রাসবাদী গ্রুপ।
সন্ত্রাসীদের একটা পরিচিত চরিত্র হলো এরা সংখায় বেশী হয় না , কিন্তু তাদের কৃত খারাপ কর্মে অনেক মানুষ এমন কি সারা পৃথিবী ক্ষতিগ্রস্থ হয়। উদাহরন হিসেবে অামরা অাল কায়দা কে যদি ধরি তাহলে দেখতে পাই মাত্র কয়েক হাজার সশস্র মিলিটান্ট শুধু মাত্র আমেরিকান নাগরিক হত্যা করেছে ৬৯ হাজারের ও বেশি ( পৃথিবীর নানা দেশে এবং ৯/১১ এ). ইরাকে এ পর্যন্ত ১১ হাজারের ও বেশী মানুষ নিহত হয়েছে আল কায়দার হাতে। এমন ভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বর্বরতায় কত নিরপরাধ হত্যার শিকার হয়েছে তা খুজে বের করা দূরহ।
মাত্র ৩০০০-৪০০০ মিলিটান্ট সদস্য দিনে আল শাবাব সুমালিয়াকে অকার্যর রাষ্ট্রে পরিনত করেছে । কেনিয়া , ইথোপিয়ার ছাড়াও ইস্ট আফ্রেকির নানা দেশে এই সশস্র ধর্মীয় সংগঠন নানা হত্যাযঞ্জ চালাচ্ছে।
নাইজেরিয়ার ক্ষেত্রে বকু হারাম মাত্র কয়েক হাজার মিলিটান্ট নিয়ে কত এক বছরে হত্যা করেছে ১০০০ এর চেয়ে বেশি নিরপরাধ মানুষ।
সন্ত্রাসীদের আরেকটা চরিত্র হলো এদের দেশ কোন দেশ নেই, রাষ্ট্রিয় কোন কাঠামোকেই তারা ধারন করে না। এবং সোসাল রিফরমেশন বা সমাজ বিনির্মানের কোন কাজের সাথেও তাদের সম্পৃক্ততা দেখি না।
বাংলাদেশে জামাতে ইসলামী এবং তাদের ছাত্র সংগঠন শিবিরকে গন হারে সরকার , মিডিয়া এবং বুদ্ধিজীবিরা সন্ত্রাসী অাখ্যা দিতে দিতে অনেকটা মুখের চোয়ালের ব্যাথায় অাক্রান্ত হওয়ার দশা।
এখানে বাংলাদেশের সন্ত্রসীদের চরিত্রটা একটু ভিন্ন, এই সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য কর্মী এবং সমর্থকের সংখ্যা ১কোটির ও বেশি। রাষ্ট্রের নিয়ম কানুন মেনে নানা অার্থিক, দাতব্য সেবা সংস্থা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে।
রাজনীতিতে প্রকাশ্য অংশ গ্রহন এবং নানা সময় বিভিন্ন ক্ষমতাশীলদের সাথে অথবা বিরোদ্ধে আন্দোলন করেছে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরুষ্কার, গরিবদের সহযোগীতা, এডুকেশন এইড, এমারজেন্সি রিলিফ ওয়ার্ক এবং শীত বস্র বিতরন ছাড়াও রাস্তা ঘাট সংস্কারের কজেও নিয়মিত অংশ গ্রহন করে এ সন্ত্রাসী গ্রুপটি।
বাংলাদেশের যে কোন রাজনৈতিক সংকটে এদেরকেই বেশি পরিমানে হত্যা করা হয়। হওক তা বি ন পি অথবা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত শাসনকাল।
এই সন্ত্রাসী গ্রুপটির সকল শীর্ষ নেতা এবং অাঞ্চলিক নেতারা ছাড়াও হাজার হাজার কর্মী জেলে বন্ধি এবং একজন শীর্ষ নেতা কে ফাঁসি ও দেয়া হয়েছে কিন্তু তারপরেও কোন অাত্নঘাতি হামলা, এ কে ৪৭ বা রকেট লাঞ্চারের মহরা হয় নাই । কোন ভবন উড়িয়ে গুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দামকি ও এ সন্ত্রাসী গ্রুপটি দেয় নি।
বর্তমান সরকারের আমলে এ সন্ত্রাসী দলের নেতা সাইদীর ফাঁসির রায়ের পর প্রায় ১৭০ এর চেয়েও বেশি নেতা কর্মীদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোন অস্র-শস্র উদ্ধার করা যায় নি এমন কি এ ইস্যুতে এ দলটির কোন নেতা বা কর্মীর সাক্ষাতকার ও গন মাধ্যম প্রচার করেনি।
কাদের মোল্লার র্ফঁসির পর সাতক্ষিরা সহ নানা অঞ্চলে এ দলের হাজার হাজার নেতা কর্মীদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয় , অনেক কে হত্যা করা হয় এবং সাতক্ষিরার সাবেক এক জামাতের সংসদ সদস্যের বাড়িটি মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে তাতেও এ সন্ত্রাসী গ্রুপটি আর ডি এক্স বা অনুরোপ পদার্থের বমা বাজি , বা এ কে ৪৭ নিয়ে সরকার এবং প্রতিপক্ষকে দমনে , হত্যায় নেমে যায় নি।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাজনৈতিক কারনে বা আদর্শিক কারনে জামাত শিবির নামক এ সন্ত্রাসী দলটির যত নেতা কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, জেল এবং জুলুম করা হয়েছে, তা অন্য সব দল বা গোষ্টি সম্মিলিত ভাবেও অনেক অনেক কম এসবের শিকার হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এবং এমন কি স্বাধিনতার পর থেকে বাংলাদেশের ইতিহাসে যত মধ্যযুগীয় বর্বরতা বা তার চেয়েও নিকৃষ্ট আদলে যত হত্যা কান্ড হয়েছে তার প্রায় সবই হয়েছে বর্তমান ক্ষমতাশীলদের দল আওয়ামী লীগের হাতে।
হোক তা ৬৯ এ রট দিয়ে পিটিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী আব্দুল মালিক হত্যা, নব্বইয়ের দশকে ইট দিয়ে থেতলিয়ে রাজশাহীতে শিবির কর্মী হত্যা, পুরনো ঢাকার হিন্দু তরুনের উপর বর্বর কসাইগিরি, পটুয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ে চাপাতি দিয়ে শিক্ষার্থীকে কুপানো , জিবন্ত মানুষদের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা , কলেজ পড়ুয়া ছাত্রকে হত্যার পর চোখ তুৎের ফেলা এবং লাশের উপর উল্লাস করার মত নিকৃষ্ট যত পশুসুলভ অমানবিক কাজ তা এ ক্ষমতাশীলদের হাতেই হয়েছে।
তার পরেও আমাদের দেশে যেহেতু অনেক কিছুই উল্টা চলে তাই হয়তো যারা অস্র হাতে, যারা মানুষ মারে তারা ভালো মানুষ ।
আর যারা মরে, যাদের হাতে অস্র নেই তারা অবশ্যই সন্ত্রাসী কারন এটি উল্টো দেশ।


০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×