somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাবিজাবি লেখা!!

২৩ শে জুলাই, ২০১০ রাত ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(পদার্থবিজ্ঞান মাস্টার্স ফাইনাল সামনে, ব্লগ এ আসাটাই উচিত না কিন্তু পোস্ট না দিয়েও পারিনা, মন ভাল না তাই রম্য লেখাও লিখতে ইচ্ছে করছে না তাই এই হাবিজাবি লেখা।)

১৯৭১ সম্পর্কে পাকিস্তানি বর্তমান প্রজন্ম মোটামুটি তিন রকমে। সব থেকে সাধাসিধা প্রজন্ম জানে ৭১ এ কিছু একটা গন্ডগোল হয়েছিল কিন্তু সে ব্যাপারে তাদের তেমন কোন আগ্রহ নাই। দ্বিতীয় কিন্তু খুব কম সংখ্যক অবশ্য আছে যারা এতটুকু জানে যে হা একটা অন্যায় বাংলাদেশিদের সাথে হয়েছিল।শেষ একটা প্রজন্ম খুবি চমতকার। তারা মনে করে আমরা গাদ্দার কাফির, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনি বাংলাদেশ এ এসে কোনো খুন হত্যা ধর্ষন কিছু করেনি তারা ঢাকা এর রাস্তায় রুচি চানাচুর খাইতেসিল আমরা বাঙ্গালিরা ইন্ডিয়ানদের সাথে নিয়ে তাদের তাড়াইসি।

ফেসবুকে আই জাস্ট হেট পাকিস্তান ফর দা জেনোসাইড অফ ১৯৭১ গ্রুপটাতে প্রায়ই মারামারি লাগে। সেই মারমারিতে অংশ নিতে গিয়ে আমি ইতিমধ্যে আমার জনপ্রিয় ফেসবুক একাউন্ট খুইয়েছি (আরো কারন ছিল)। বড়ই আফসুস এর ব্যাপার। পাকিস্তান বর্তমান প্রজন্মদের ব্যাপারে জানার অনেকগুলা কারনের একটা হচ্ছে এই মারমারি আমি খালি ফেসবুক এই করিনাই। যখন যেখানে পাইসি করসি। ইউটিউব এ রশীদ মিনহাস নামে সার্চ দিলে একটা ভিডিও আসবে। পাকিস্তানিদের আপলোড করা ভিডিও তে রশিদ মিনহাস কে খুব বড় করে দেখানো আর আমাদের মতিউর রহমান কে গাদ্দার কাফির এইভাবে সম্বোধন করা। খুবি বিরক্তিকর একটা ব্যাপার। সেখানে অনেক তর্ক টর্ক করসি। পাকিস্তানিদের ১৯৭১ এর বিভিন্ন ওয়েবসাইট পেপার কাটিং দেখালে তাদের একটাই কথা এইসব হইল ইন্ডিয়ান ষড়যন্ত্র, তাদের অপপ্রচার। আমি তখন বলে দিয়ে আসছি, তোমাদের বউরা প্রেগনেন্ট হইলে সেটাও কি ইন্ডিয়ানদের ষড়যন্ত্র এর কারনে হয়!! আজব!

ইউটিউব এ যেইসব পাকিস্তানিদের সাথে মারমারি করতাম তাদের থেকে মোহাম্মাদি বেগম একটু ভিন্ন। কিছু পাকিস্তানিরা ছিল হাস্যকর ইংলিশ তাদের কে সেইভাবে জবাব দেওয়া যেত কিছু পাকিস্তানি আছে ইতিহাস কিছুই জানেনা। মোহাম্মদি বেগম এর সাথে দেখলাম কথায় পেরে উঠা বেশ কঠিন। তার ইংলিশ চমতকার। ইতিহাসের নাড়ি নক্ষত্র জানা আর সব থেকে বড় ব্যাপার হল তার কথা বলার কৌশল গুলাও দারুন। সে বাংলাদেশ সম্পর্কে সব জানে যেখানে আমি পাকিস্তান নিয়ে সেই তুলনায় অনেক কম জানি। সে বিডিয়ার বিদ্রোহ নিয়ে আমাকে আমাকে খোঁচা মারে আমি আবার তালেবান নিয়ে খোঁচা মারি। এরপর আমি মুইতারাম মাই (পাকিস্তানি এক মহিলা যাকে রাস্তায় টেনে এনে প্রকাশ্যে ধর্ষন করা হয়) এর উদাহরন আনায় ব্যাপারটা একটু সিরিয়াস হয়ে গেল। তারপর হাল্কা কথা বার্তায় একবার জিজ্ঞেস করলাম তোমার আমাদের উপর এত ক্ষোভ কেন? বাংলাদেশ আলাদা হওয়াটা আমাদের অধিকার। অনেক মুল্য দিয়েছি আমরা। তখন তার কথা শুনলাম। মোহাম্মাদি বেগম এর বয়স এখন ৬০ এর কাছাকাছি। যুদ্ধের সময় তারা যখন পাকিস্তান তাদের এর বাবা ছিলেন বাংলাদেশ এ। তার বাবাকে বাঙ্গালিরা ধরে নিয়ে যায় এবং হত্যা করে। এই কথা শোনার পর অবশ্য আর তর্ক করা যায় না।মুক্তিযুদ্ধে আমরা অনেক কিছু হারিয়েছি এবং যারা স্বজন হারিয়েছে তারা স্বজন হারানোর বেদনা জানে। যুদ্ধের উলটা পিঠের ঘটনা এটা। তার কথা কতটুকু ঠিক জানিনা কিন্তু আমি একটাই জবাব দিয়েছি তাহলে খালি চিন্তা কর আমাদের অবস্থা। এমন কোন লোক মনে হয় না ছিল যার চেনা জানা কাউকে তোমার মেরে যাওনি।

লিসা (আসল নাম ভুলে গেছি তবে এই জাতীয় নাম) আবার মোহাম্মদী বেগম এর ঠিক উলটা। তার কমেন্ট শুনলে মনে হত কিছু মানুষ থাকে খুব আসতে আসতে কথা বলে সেরকম একজন। লিসা এর সাথে বাংলাদেশ বা পাকিস্তান এর কোন সম্পর্কই নাই। সে থাকে কানাডা, দুই বাচ্চার মা। ছোটবেলা থেকেই অবশ্য সে জানত বাবা-মার পালিত কন্যা সে। বাবা- মা হোয়াট সে কিছুটা ডার্ক। তার ডেট অফ বার্থ ১৯৭১। ইতিহাস এ তার আগ্রহ, নিউমোরলজিতে বিশ্বাসি লিসা একদিন অবেক হয়ে দেখে তার জন্মসাল এর সময় একটা দেশের জন্ম হয়েছিল। তার বয়স যখন ১৩ তখন সে খুব অবাক হয়ে তার পালক বাবা মায়ের কাছে শুনল তার জন্মভুমি ঐ ৭১ সালে জন্ম হওয়া দেশটাতেই। লিসার পালক বাবা মা নিঃসন্তান দম্পত্তি ক্যাম্প থেকে তাকে ১৯৭২ সালেই নিয়ে আসে। বাব-মা কেউ ছিল না। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনি খুবই সরল মনে পবিত্র ভাবে কলেমা পড়ে লিসার বাবাকে মারে আর মাকে ধর্ষন করে পরে মাও মারা যায়। লিসা কোনভাবে উদ্ধার হয়ে ক্যাম্প এ আসে। অবশ্যই একা আসেনি কেউ একজন তাকে ক্যাম্প এ রেখে যায়। ১৩ বছর বয়স থেকেই মাঝে মাঝে তার বাবা-মার কথা মনে করে সে কেঁদে উঠে। ইন্টারনেট এ অনেক দেখেছে পাকিস্তানিদের বাংলাদসেহ এর উপর অত্যাচার এর ঘটনা। একদিন বাংলাদেশ এ আসার পরিকল্পনা তার। নিজ জন্মভুমি দেখতে। আমার সাথে শেষ কতাহ হয়েছে তাও প্রায় একবছর হয়ে গেল। জানিনা নিজ জন্মভুমি সে দেখে গিয়েছে কিনা।

জানিনা যুদ্ধ-বিগ্রহ কত রকমের বিষ্ময়ের জন্ম দেয়।


সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১১ রাত ৮:৫৮
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×