আমির খান-কে একবার বলা হয়েছিল হিন্দি সিনেমার সব থেকে উদ্ভট ব্যাপারটা কি। আমির খান চিন্তাশীল মানুষ। চিন্তা ভাবনা না করে কথা বলেননা। তিনি বললেন, আমি একটা মেয়েকে ভালবাসি এটা আমাকে নেচে-গেয়ে বুঝাইতে হয়। কথাটা খারাপ বলেনি। হিন্দি সিনেমায় নাচ-গান অবিচ্ছেদ্য অংশ। হিন্দি সিনেমা মশল্লা মিশানো মুভি। অর্ধেক এর বেশি হলিউড থেকে কপি। যেটা কেউই জানেনা সেটা হল অনেকগুলাই কোরিয়ান মুভি’র কপি। কোরিয়ান মুভির মার্কেট খুব ভাল। কোরিয়ানরা নিজেদের মুভি আগে দেখে। তারপর হলিউড গুলা। আমি কয়েকটা দেখেছি। অসাধারন। কয়েকটার নাম মনে আছে, ডেইজি, মাই লিটল ব্রাইড। হলিউড এর দুই একটা মুভি আছে কোরিয়ান মুভু থেকে ইন্সপায়ার্ড। কোরিয়ান একটা মুভি আমি দেখেছিলাম যেটা আমাকে বলা হয়েছিল খুব ভাল না। মজার ব্যাপার আমার কাছে সেটাও দারুন লেগেছিল। মুভির নাম হাউস টিউটর। এগুলা আসলে ইংলিশ নাম বলা হচ্ছে। কোরিয়ান ভাসাটা খুব আজব। সাবটাইটেল থাকলেও প্যাচ লেগে যায়।
যেমন ডায়লগ এ হয়ত বলল – abcd efg. এটার সাবটাইটেল পড়ে দেখা যাবে এটার মানে- তোমাকে অনেকদিন পড়ে দেখলাম। দেখে খুব ভাল লাগল। এত দিন কই ছিলে? কেন ছিলে? কিভাবে ছিলে? কেন আমাকে দেখতে আসনি?
আবার হয়ত দেখা যাবে ডায়লগটা অনেক বড় – zxc vbn nml kjh gfd dfg fds dsa dfr fgt fgt fde fgtr ghui hjko huyt hjn bgt bf d cds – এটার মানে হয়ত দেখা যাবে- মুড়ি খা।
এখানে অবশ্য হলিউড বা কোরিয়ান মুভি না। হিন্দি মুভি নিয়ে কথা বলতে আসছি। হিন্দি মুভি আমি নিয়মিত দেখি। এটার কারন ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি। হিন্দি মুভি দেখতে গেলে খুঁত বের করতে হয় না। এটা যে করতে যাবে সে আসলে মুভিটা দেখতেই পারবেনা।
যেমন আমার প্রিয় সিনেমা দিলওয়ালে দুলহানাইয়া লে জায়েঙ্গে। সব থেকে প্রিয়। ৫০ বার দেখা হইসে আরো ৫০ বার দেখলেও শখ মিটবেনা। এটার খুঁত ধরতে গেলে সব থেকে বড় ব্যাপার হইল শাহরুখ খান এর কোন কাজ কর্ম না থাকতে পারে আমাদের আসে। রাজ সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে পাঞ্জাব এ চলে যায় বাস্তবে কোন ছেলের পক্ষে যাওয়া এত সোজা না।
সানি দেওলের জিদ্দি সিনেমায় সানি দেওল ভিলেন এর ভাইয়ের হাত একটান দিয়া তুইলা ফালায়। ব্যাপক সিন। কিন্তু কথা হইল হাত কি টান দিয়া তুইলা ফালানো যায়? হাতের সাথে চামড়া থাকবেনা? সানি দেওল গাদার সিনেমায় নলকুপ উঠায় নিয়ে আসে। মারামারি করার জন্য। নলকুপ আর টুথপিক এর মধ্যে তার কাছে কোন পার্থক্য নাই। বড়ই আজিব।
কুছ কুছ হোতা হে অনেকের প্রিয় সিনেমা। এখন কথা হইল ৮ বছরের মাইয়া প্রেম কি বুঝে? সে আবার তার বাপের প্রেম মিলাইতে যায়। দেইখা মনে হইসে এক থাবড় দেই, আরে মাইয়া তুই অঙ্ক কর। যোগ বিয়োগ গুন ভাগ এইসব শিখা দরকার, তা না- গেছে বাপ মায়ের প্রেম মিলাইতে।
সালমান খান এর একখান সিনেমা ছিল গর্ব হিন্দিতে গারভ। ওইখানে একজন সালমান ভাইরে হাতুরি দিয়া পিটাইতে যায়। সালমান খান ঐটা প্রিডেটর এর মত ঠেকায়। তারপর হাতুরিটা ঘুড়ায় মাইরা দেয়।
রজনীকান্ত নিয়া অনেক কাহিনী আছে। এতটা এখন বলতে ইচ্ছা করতেসেনা। তবে শুনলাম কোন সিনেমায় জানি তার ব্রেন টিউমার হয়। ভিলেন গুলি মারে। গুলি নাকি মাথায় ধুইকা টিউমারটা আলাদা করে নিয়ে যায়। তাতে তার টিউমার ভাল হয়ে যায়। অবশ্য রজনীকান্তের ব্যাপার স্যাপারি আলিদা। একবার এক কোবরা সাপ তারে কামড়াইছিল। ৫ দিন তীব্র ব্যাথা সহ্য কররা পর সাপটাই মইরা যায়।
হিন্দি সিনেমায় একজন ব্রাইট, টল, অচাম, হ্যান্ডচাম নায়ক আছে তুষার কাপুর। এই বছর মার্চ মাসে পিকনিকে গেলাম। বাসওয়ালার কাছে দেখি একটাই ভিসিডি। বেস্ট অফ তুষার কাপুর। তুষার কাপুর এর বেস্ট ও থাকতে পারে সেইটা আবার একতা কাপুর ছাড়া কেউ কিনতে পারি এমন ধারনা ছিলনা। যাই হোক, আমি যেটা বলতে চাই সানি দেওল সঞ্জয় দত্ত পিটায় হাড্ডি গুড়া কইরা ফালাইলে মানা যায়। কিন্তু তুষার কাপুর কিভাবে একসাথে ১৬ জনকে পিটায় সেটাই বড়ই আজিব। এক সিনেমায় আবার দেখসিলাম তো।
করন জোহার এর কোন একটা সমস্যা আছে। তার প্রতি সিনেমায় মেয়েরা হুদাই নায়কের প্রেম এ পড়ে। তার সিনেমার ফর্মুলা বাস্তবে জীবনেও কাজে লাগবেনা। আমার ধারনা এই লোক বাস্তব জীবনে এক গাদা ছ্যাকা খাইসে। সেটার শোধ সিনেমাগুলাতে নেয়। সব সিনেমায় খালি, রাহুল মুঝসে দোস্তি করোগী, রাহুল মুঝসে দোস্তী করোগী। শাহরুখ পাধ মারলেও নায়িকারা বলবে, কিতনী খুব সুরাত পাধ হ্যায়।
RAB (Rapid Action Battalion) নে বানাদী জোড়ি। এইখানে কি নায়িকাটা বোকা না আমি বোকা এইটাই চিন্তা করে পাইলাম না। একজন মানুষ এর সাথে মোছ লাগাইতে পারে কোন ভাবেই স্টাইল চেঞ্জ করতে পারবেনা মুদ্রা দোষ চেঞ্জ করতে পারবেনা। গলার ভয়েস ও না।
হিন্দি একটা সিনেমা আছে মার্ডার। এইটা হইল মাল্টি চোরা সিনেমা। আনফেইথফুল থেকে ডায়লগ টু ডায়লগ কপি। গানগুলা একটা সৌদী আরবের গান, একটা পাকিস্তান এর আরেকটা বাংলাদেশ এর মাইলস।
হোয়েন হ্যারী মেট শ্যালী থেকে হামতুম বানানো হলেও হিন্দিটা কেন জানি বেশি ভাল লাগবে।
দিল চাহতা হ্যায় এর সবই ঠিক আছে। লাস্ট এ আমির খান “ হা শালীনি তুম সির্ফ মেরি হো……….” ঐ অংশটাই যা একটু বেমানান। মানে খুঁত ধরতে চাইলে আর কি।
যাই হোক। কাজ কাম নাই তাই এই পোস্ট। খুঁত ধরতে গেলে হিন্দি মুভি দেখা যাবেনা। এই যেমন রবোট দেখলাম। খুঁত ধরতে যাই নাই। আরাম লাগল। ঐশ্বরিয়া রয় বড়ই সৌন্দর্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১১ সকাল ১০:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




