somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিকড়।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৯১ সালে আমি প্রথম শ্রেনীর ছাত্র। সমাজ বইয়ের নাম পরিবেশ পরিচিত ও সমাজ। সেখানে লেখা বাংলাদেশে গ্রামের সংখ্যা ৮৫০০০। আমার সাত বছরের অল্প বয়সের বিশাল দেহের (আমার দেহ কখনো ছোট ছিল এই জিনিশটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়) আকুল প্রানটা মনের আনন্দে নেচে উঠল। একটা গ্রাম আছে আমার। সেখানে আছে আমার শিকড়। সাত বছরের বাচ্চা আমি রওনা দিলাম আব্বার হাত ধরে আমার শিকড় দেখতে। লঞ্চ ভ্রমন সব সময় মজাদার এবং অনেক আনন্দের। এর একটা কারন লঞ্চ ভ্রমনে আপনি ক্লান্ত হবেননা। পা ফেললাম মাদারীপুর আড়িয়াল খাঁ নদীর এক প্রান্তে। বেশ কিছু দূর হেটে খাল বিল পেরিয়ে ভ্যানে করে হাজির হলাম একটা ঘরে। হামিদ মাস্টারের ঘর। হামিদ মাস্টার বেঁচে নেই। তার কীর্তি গ্রামের পরতে পরতে ছড়িয়ে। সেই কীর্তিকে স্বাক্ষী রেখে আমার দাদী উঠানে বসে আছে। দূরে আমাকে দেখেই তিনি সবাইকে জানান দিলেন- “ঐযে দেখ তোরা হামিদ মাস্টারের নাতী আসে। আমার নাতী আসে”। আজকের এই লেখা আমার দাদাকে নিয়ে। আমি লিখি উপভোগ করার জন্য। এই লেখাটার মান কেমন হবে জানিনা তবে লেখাটাতে হৃদয়ের আবেগ মাখানো থাকবে।

দাদার নাম মরহুম আব্দুল হামিদ মাস্টার। তিনি বেঁচে নেই তাই তার নামের আগে মরহুম। মরহুম হয়েও তিনি মাদারীপুরে সাহেব রামপুরের আর কালকিনির প্রতিটা মানুষের কাছে জীবিত। ১৯০৮ সালে মাদারীপুরের কালকিনি থানার অধীনে কয়ারিয়াতে তিনি জন্মগ্রহন করেন। তখন মাদারীপুর বলে কোন জেলা ছিলনা। বলা হত বৃহত্তর ফরিদপুর। দরিদ্র পরিবারের ছেলে প্রতিকূল পরিবেশে বড় হওয়া দাদা ১৯২৪ সালে মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামিয়া হাই স্কুল থেকে কোলকাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করলেন। তার দুটি প্রশ্নপত্র দীর্ঘদিন আমার আব্বার কাছে সংরক্ষিত ছিল। আজ আমি সেটা স্ক্যান করে এখানে দিচ্ছি। তার পঞ্চম শ্রেনীর অঙ্ক খাতাটা সময়ের অভাবে স্ক্যান করা যায়নি। তবে জানিয়ে রাখি সেই খাতাটা পুরাটাই ইংলিশে। বাংলার কোন ব্যাপার সম্ভবত তখন ছিলনা। দাদা ম্যাট্রিক পরীক্ষায় অঙ্কে লেটার সহ প্রথম শ্রেনীতে উত্তীর্ন হলেন। অঙ্কে লেটার তখন বিশাল ব্যাপার। কয়েকটা গ্রাম মিলে একজনের ভাগ্যে হয়ত এটা জোটে। তখন গ্রামে গ্রামে ইউনিয়ন বোর্ড ছিল। তিনি সেখানকার ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ৩৫ বছর ছিলেন এবং সর্বদাই সরকার কতৃক মনোনীত। এর মাঝে ১৯৩৯ সালে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শের এ বাংলা একে ফজলুল হক সাহেবরামপুর এলেন। এরকম প্রত্যন্ত একটা অঞ্চলের এক গ্রামের স্কুল মাস্টারের মুখে ইংরেজী শুনে ফজলুল হক বেশ অবাক হলেন।





দাদাজান তখন সাহেব রামপুর স্কুলের হেড মাস্টার। একজন শিক্ষক চাইলে যে পুরা একটা গ্রামের চেহারা বদলে দিতে পারেন, একজন শিক্ষক চাইলে যে সবার শ্রদ্ধার প্রাপ্য হতে পারেন তার সব থেকে বড় প্রমান তিনি। তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন শিক্ষার গুরুত্ব। আদর্শবাদী তিনি। নির্লোভ তিনি। ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠা করলেন পঞ্চম জর্জ মেমোরিয়াল পাবলিক লাইব্রেরী। লাইব্রেরীতে বাদশাহ আলমগীরের হাতে লেখা কোরান শরীফের কপি, মাসেক সওগাত ও মাহেনও এর সংকলন সহ বহু দূর্লভ বই সেখানে। এরকম দুষ্পাপ্য বইয়ের সংগ্রহ দেখে পন্ডিত ব্যক্তিরাও বিষ্ময় প্রকাশ করলেন।

ইসলাম ধর্মের প্রতি তার অনুরাগ ছিল দেখার মত। ধর্মপ্রান ব্যক্তি এবং ধর্মের পর তার প্রধান আগ্রহ জ্ঞ্যান অর্জন করা। তিনি প্রচুর পড়ালেখা করতেন। তার ৫ ছেলের মধ্যেও তিনি এই গুন ছড়িয়ে দিতে চেস্টা করেছেন তাতে তিনি কতখানি সফল সেটার প্রমান বর্তমানে আবার আব্বা এবং চাচারা। আগেকার দিনে গ্রামের বাড়িগুলো একতালার উপরে অর্ধতালার মত ছিল সেখানে বসে দিন-রাত পড়ালেখা করাই ছিল আব্বাদের প্রধান কাজ আর এই বিষয় তদারকি করতেন দাদাজান নিজেই। প্রতিটা ছেলেদের তিনি ভালবাসতেন। আব্বার বয়স যখন ৫ তখন বিশাল এক আলমারী তার গায়ে পড়ল। সবাই মিলে ধরাধরি করে আলমারি সরানো হল। একদিন ধরে দাদাজান কাঁদলেন তার ছেলে হয়ত বাঁচবেনা। আল্লাহর প্রতি তার অগাধ বিশ্বাস তাই হয়ত কান্না আল্লাহ শুনলেন। দাদাজানের মেঝ ছেলে আমার আব্বা প্রানে বেঁচে গেলেন। দাদাজান যে শুধু তার ছেলে মেয়েদেরি পড়ালখা করিয়েছেন তা না। দাদাবাড়ির কঠিন অনুশাসন আমার ফুপাতো ভাই-বোনদের মধ্যেও ছিল। আব্বারা পাঁচ ভাই হওয়ার আগে তাদের দুইবোন আমার বড় ফুপু আর ছোট ফুপু ছিলেন। তাদের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর তাদের ছেলেমেয়েরাও দাদাজানের কাছে বড় হয়েছেন। দাদাজানের কাছে থাকার অর্থ পড়ালেখা করতে হবে। আজকে আমার এক ফুপাতো ভাই যে এফসিপিএস ডাক্তার, আরেক ফুপাতো ভাই স্কিন ডিজিজ স্পেশালিস্ট বাকি সবাইও যে এত ভাল ভাল জায়গায় সব তো দাদাজানের দেখিয়ে দেওয়া পথ অনুসারেই। গ্রামে আব্বাদের বয়সী অনেক ছেলে মেয়েই তখন দাদাজানের অধীনে পড়ালেখা করে বড় হয়েছেন। এদের মধ্যে বর্তমানে বিদেশের বিভিন্ন এম্বেসীতে কর্মরত বড় বড় কর্মকর্তাও আছেন।

১৯৬০ সালে আমার বড় চাচার ম্যাট্রিক পরীক্ষার রেজাল্ট তেমন ভাল হলনা। দাদাজান মনে কষ্ট পেলেন। সেই কষ্টের কারনে কিছু কথা বড় চাচা শুনলেন। বড় চাচাও অভিমানী। তিনি রাগ করে গিয়ে মাদারীপুর নাজিমুদ্দীন কলেজে গিয়ে ভর্তি হলেন। দাদাজানের সাথে কথাবার্তা কমিয়ে দিলেন। এইচএসসিতে তার রেজাল্ট কি হল সেটা বলার আগে বলে রাখি তখন সমগ্র বাংলাদেশ ৫ টনের মত ৫ বোর্ড ছিলনা। সমগ্র বাংলাদেশ এক বোর্ড। বাংলাদেশ তো আর না তখন ছিল পূর্ব পাকিস্তান। সেখানে সব মিলিয়ে বড় চাচা ফিফথ স্ট্যান্ড করলেন। আমার দাদা হামিদ মাস্টারের মন খুঁশিতে ভরে গেল। মজার ব্যাপার হচ্ছে আমার চাচাতো ভাইয়ের সাথেও এই ঘটনা ঘটেছে। অন্যান্য চাচাতো ভাই বোনেরা বৃত্তি পায় আরা আমার বড় চাচাতো ভাই অঙ্কে খুব নগন্য নম্বর পান। চাচার মনে দুঃখ ভারাক্রান্ত। কিন্তু তিনি পরিশ্রমে বিশ্বাসী। চাচাতো ভাই ম্যাট্রিকে খারাপ রেজাল্ট করলেন। খারাপ আসলে না তবে আশানুরুপ নয়। নটরডেম ঢাকা কলেজের মত কলজে পড়ার সুযোগ হারালেন। এইচএসসিতেও তেমন ভাল হলনা। কোনরকমে বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবেন। বুয়েটের নিয়ম হল ৪৫০০ জন পরীক্ষা দিতে পারে। তখন একটা ব্যাপার ছিল। এখনকার মত ইন্টার দেওয়ার পর পরই বুয়েটের পরীক্ষা হত না। এক বছর সময় ছিল চাচাতো ভাই তার অঙ্কের উপর যত ক্ষোভ ছিল সব সেখানে ঢেলে দিলেন। বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় ইলেক্ট্রিকাল পাওয়ার পর চাচার মনে শান্তি আসল। চাচাতো ভাই পরবর্তিতে বুয়েটের টিচার হয়ে বর্তমানে আমেরিকাতে পিএইচডি রত। চেস্টার সাথে আন্তরিকতা থাকলে কি না হয়।





দাদাজানের এই কঠিন অনুশাসনের ফল ভোগ করেছিলেন তার ছেলেমেয়েরা। ১৯৬২ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত প্রতি দু’বছর অন্তর অন্তর তার একজন করে ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছেন। তখন দুটি সাবজেক্টে সব ভাল ছাত্ররা ভর্তি হয়। ইকোনোমিক্স অথবা ফিজিক্স। আব্বার প্রথম তিন ভাই ভর্তি হলেন ইকোনোমিক্সে। ছোট চাচা’র কি জানি মনে হল। তিনি চলে গেলেন পাবলিক এড ডিপার্টমেন্ট। নতুন সাবজেক্ট সেটা। সেখান থেকে শিক্ষক হওয়া হয়ত সহজ হবে। তিনি হলেন। প্রফেসর মাহবুবুর রহমান। ঢাবি পাবলিক এড এর চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। চাচা ছিলেন জসীম উদদীন হলের প্রভোস্ট। দাদার শেষ বয়সের ছেলে দেখে অনেকের মনে শংকা ছিল তিনি হয়ত পথভ্রষ্ট হবেন। তা হয়নি। কারন দাদার অনুপস্থিতিতে আমার আব্বা তার অভিভাবকের ভুমিকা পালন করেন। ঢাকা কলেজে তার পড়ার খরচ দিয়ে আসার জন্য মাঝে মাঝেই আব্বা অনেক সময় ধরে সেখানে অপেক্ষা করতেন। ১৯৬২ থেকে ১৯৭০ সালের আমলে গ্রামের একজন প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোক কিভাবে তার পাঁচজন ছেলেকে ঢাকা পাঠিয়ে লেখাপড়া করালেন তা ভেবে অবাক না হয়ে উপায় নেই। লেখাপড়া তখন এত সহজ ব্যাপার নয়। নানা রকমের প্রতিকুলতা। আব্বারা স্কুলে যেতেন খাল-বিল পার হয়ে। আমার দাদী রত্নগর্ভা পুরস্কার প্রাপ্ত। এই পুরস্কার পাওয়ার দাবী তার আছে। তিনি পেয়েছেন।

সমাজসেবাতে দাদার আগ্রহ ছিল। তিনি প্রচুর পুল/রাস্তা নির্মান করেছিলেন তার কর্ম জীবনে। নলকূপ স্থাপন করেছেন। গভর্নমেন্ট অফ ইস্ট বেঙ্গল (তখনকার সরকার) তাই তাকে বেশ কয়েকবার “সার্টিফিকেট অফ ফার্স্ট ক্লাস” দিয়েছিলেন। তার এই গুনটা আমি আব্বাদের মাঝেও দেখেছি। বড় বড় মন্ত্রনালয়ে থাকার সুবিধার্থে আব্বারাও গ্রামে সমাজ সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন।

দাদা মারা যান ১৯৭৬ সালে। আমার আব্বা তখন সরকারী কাজে সরকারী খরচে নেদারল্যান্ডে। প্রবাসে বসে বাবার মৃত্যুর খবর গভীরভাবে তাকে আলোড়িত করেছিল। আরেকজনের কথা বলতে হয় তিনি হলেন আমার সেঝ চাচা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের সাবেক সচিব মতিউর রহমান। দাদা যে কোন এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট দেখলে খুশি হতেন। দাদার মৃত্যুর কিছুদিন পরেই চাচা ম্যাজিস্ট্রেট হন। মতি চাচার ম্যাজিস্ট্রেট হওয়াটা দাদা দেখে যেতে পারেননি এই দুঃখ চাচার মনে অনেকদিন বসবাস করেছিল। দাদাজানের শিখিয়ে দেওয়া পথে চলেছেন তার ছেলেরা। দাদাজান সৎ ব্যক্তি ছিলেন পরিশ্রমী ছিলেন। তার ছেলেরাও সেরকম। সরকারী লোভনীয় পদে বিরাজমান থাকা অবস্থাতেও তারা সে পথ থেকে বিচ্যুত হননি। এক সময় মনে হত আব্বাদের মত চাকুরী করা লোকের ছেলে মেয়েরা কিভাবে এত টাকা পয়সা খরচ করে। মনে কষ্ট পেতাম। আজ কষ্ট হয়না। আজ শান্তি লাগে। এটা এক অন্যরকম শান্তি। আজ থেকে ১৩ বছর আগে যখন লঞ্চে করে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। নিজের কেবিন থেকে উঠে অন্য জায়গায় ঘুরলাম। দেখি কোন একটা কেবিনে কিছু লোক কার্ড খেলছে। তার সাহেবরামপুর যাবে। তারা সাহেব রামপুরের হামিদ মাস্টারের কথা বলছে। তার ছেলেদের গুনকীর্তন করছে।তারা কিন্তু জানেনা আমি তাদের কথা শুনছি। আমার পরিচয় তাদের কাছে নেই। একটা অসৎ মানুষের প্রশংসা মানুষ সামনাসামনি করবে সুবিধা আদায়ের জন্য। আড়ালে কখনও করেনা। আড়ালে গালি দেয়। কিন্তু সৎ মানুষ সব জায়গায় শ্রদ্ধার পায়। আমার স্কুলের বন্ধু আসিফ রেজওয়ানের বাসায় যখন প্রথম যাই। অনেক কথাবার্তায় বেরিয়ে আসে আমি হামিদ মাস্টারের নাতি। আসিফের মা মানে আন্টি ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত যেই স্কুলে লেখাপড়া করেছেন সেটা সাহেবরামপুর স্কুল এবং সেখানকার হেডমাস্টার ছিলেন দাদাজান। আন্টি বলে উঠেন, আরে তুমি দেখি হামিদ মাস্টারের নাতি!!





দাদাজান যদি গাছের শিকড় হন তাহলে আব্বারা হলেন ডালপালা। সেই ডালাপালার শাখা প্রশাখা আমি।সেই প্রশাখা আমার চাচাতো ভাইবোনেরা। যখন আমি আমার গ্রামের বাড়ী যাই তখন আমার পরিচয় আমি হামিদ মাস্টারের নাতি। গ্রামের লোকজন আমাকে দেখেই বুঝে এ একজন আগুন্তক। কি নাম তোমার? রাসয়াত রহমান নাম শুনে কোন ভাবান্তর আসেনা। জিকো নাম শুনে বিরক্ত হয়। দাদার নাম শুনে সবাই বুকে জড়িয়ে ফেলে। ফিরে যায় তারা ৩০ বছর আগে। দাদার নতুন কোন গল্প শোনা হয়ে যায়। কিভাবে গ্রামের প্রতিটা উন্নয়নের সাথে, গ্রামের মাটি মানুষের সাথে তিনি জড়িয়ে ছিলেন সেই গল্প। হটাৎ দুয়েকজন বলে উঠে আমাকেও নাকি দেখতে অনেকটা তার মতই লাগে। কারন আমি হামিদ মাস্টারের নাতি। আমরা চাচাতো ভাই-বোন মিলায় দশজন। হামিদ মাস্টারের শাখা প্রশাখা। হামিদ মাস্টার শিকড়ের শাখা প্রশাখা বিভিন্ন জায়গায় বিরাজমান। যদি বাংলাদেশের সেরা ইঞ্জিনিয়ারের জায়গা বুয়েট হয় তাহলে সেখানকার শিক্ষক আমার চাচাতো ভাই এই প্রশাখার একজন, যদি বিবিএ এমবিএ এর জন্য সেরা আইবিএ হয়, সেখানকার এক শিক্ষিকা হামিদমাস্টারের আরেক প্রশাখা। দশ চাচাতো ভাই-বোনদের মধ্যে যে ডাক্তার সে হল ডিএমসির। আরেকজন ঢাবি কমিউটার সায়েন্সের টিচার। প্রতিটি প্রশাখা এসছে তো একই শিকড় থেকে। দেশে বিদেশে ছড়িয়ে থাকা তার শাখা প্রশাখা প্রতি নিয়ত তার পরিচয়টাই তো বহন করে। একজন পরিশ্রমী, একজন লড়াকু একজন সৎ ব্যাক্তির পরিচয়।

দেশের বাড়িতে খুব বেশি যাওয়া হয়না। গেলে কিছুক্ষন সময় কাটানোর চেস্টা করি দাদার কবরের সাথে। যেখানে দাদা-দাদী শুয়ে আছেন পরম আদরের সাথে। কবরের পাশেই একটি গাছ অনবরত তাদের ছায়া প্রদান করে যাচ্ছে। দাদীর মৃত্যু অবশ্য আমি দেখেছি। রত্ন গর্ভার মৃত্যু পাঁচ রত্নের সামনেই হয়েছিল। ভাগ্যবতী তিনি। মৃত্যুর পর তার বিশাল কপালে হাত বুলিয়ে ছিলেন তার ছেলেরা তার নাতীরা- শিকড়ের শাখা প্রশাখারা। ছোটবেলায় বাসায় দাদী আসলে অন্যরকম আনন্দ হত। দাদীর পান ছেঁচে দেওয়া ছিল আমার অন্যতম আনন্দের কাজ। দাঁত ছিলনা তার। পান খেতে হলে তো ছেঁচে দিতে হবেই। দাদীর মৃত্যুর পর একবার দাদীকে স্বপ্নে দেখেছিলাম। হয়ত পরকালে গিয়েও তিনি একবার আমার হাতে ছেঁচে দেওয়া পান খেতে চেয়েছিলান।

দাদাজানের কোন ছবি নেই। তিনি ছবি তোলা পছন্দ করতেননা। তার ম্যাট্রিকের প্রশ্ন স্ক্যান করে এনেছি। সেগুলো পোস্টের সাথে দিয়ে দিলাম।










সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১১ রাত ১২:৪২
২৫টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×