somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আলো

২৮ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৪:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(কাল্পনিক গল্প। গল্প তো গল্পই। )


গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম ঘুরতে। পাগল টাইপ লোকটার সাথে দেখা সেখানেই। পাগল বলব না জ্ঞানের স্বল্পতা বলব জানি না। আমি নিজে যে জ্ঞানে ভরপুর ব্যাপারটা তাও না। গ্রামে গিয়েছি অনেকদিন পর। যে নির্মল বাতাস, পংকিলতামুক্ত হাওয়া, সহজ সরল জীবনের সন্ধানে এখানে আসা তা খুব একটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। জীবন এখন কোথাও সহজ নয়। গ্রামের মেঠোপথ এখন আর মেঠোপথ নাই। গ্রামেও এখন পাকা রাস্তা। গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙ্গামাটির পথও নাই। নাস্তা খাওয়ার জন্য হোটেলের মত এক জায়গায় এসেছি। গ্রামের লোকজন ছোটখাট ব্যাপার নিয়ে গর্ব করতে ভালবাসে। হোটেলের মালিক তাদের কোন এক মিষ্টি আমাকে খাওয়াবেই। পরোটা দিয়ে মিষ্টি খাচ্ছি তখন মুরুব্বী শ্রেণির এক লোক বললেন বাপধন কোন বাড়ির পোলা? বললাম, মাস্টার বাড়ি। ওহ মাস্টারের নাতি। জ্বি, স্লামালাইকুম। গ্রামে আমাকে মাস্টারের নাতি হিসেবে চিনে। দাদাজান স্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন। দাদাজানকে নিয়ে বলতে গেলে শুধু স্কুলের মাস্টার বললে আসলে অনেক কম বলা হয়। যিনি ১৯৬০-৭০ এর সময় তার পাঁচ ছেলে ঢাকায় পাঠিয়ে লেখাপড়া করিয়েছেন এবং তাদের সবাই হয় সচিব না হয় ঢাবি এর প্রফেসর কিংবা সেই পর্যায়ে কিছু না কিছু হয়েছেন তার পরিচয় শুধু স্কুল মাস্টার হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত না। তা নাইও। গ্রামের প্রত্যেক পরতে পরতে তার কীর্তি ছড়ানো।

যাই হোক গল্পে ফিরে আসি, যেই লোককে সালাম দিলাম সেই লোকের গল্পে। তিনি এরপর বললেন, মাস্টারের নাতি, আমি তোমার চাচা হই। জ্বি অবশ্যই। গ্রামের সব এই বয়সী লোকজনেরাই আমার চাচা, মহিলারা আমার ফুপু। এতটুকু সম্মান দিতেই হয়। তাদের সেই দাবী আছে। আগের বাপধন এখন ভাতিজায় পরিণত হল। ভাতিজা কি ফার্স্ট স্ট্যান্ড করছিলা? এই প্রশ্নের জবাব কী দিব বুঝলাম না। স্ট্যান্ড জিনিসটা বিলুপ্ত হয়েছে এক যুগ আগে। আমাদের ব্যাচ থেকেই তা নাই। থাকলেও লাভ হতোনা। আমি বরাবরই গড় মাপের ছাত্র। তবে আমার আত্মীয়-স্বজনদের ব্যাপার তা না। তাদের মধ্যে এই কীর্তি গড়ার রেকর্ড আছে। গ্রামে একটা গল্প প্রায়ই শোনা যায়। দাদার সাথে রাগ করে আমার বড় চাচার গ্রাম ত্যাগের খবর। দুইবছর পর যখন বড় চাচা পূর্ব পাকিস্তান বোর্ডে ৫ম হয়ে গ্রামে ফিরে এলেন, বাবা-ছেলের সেই মিলন দেখার জন্য দূর দুরান্তের গ্রামের লোকজন এসেছিল।

ভাতিজা লেখাপড়া কী বিষয়ে করছ?

জ্বি পদার্থবিজ্ঞান।

ওহ! নিউটনকে চিন? আইন্সটাইন?

ব্যক্তিগত পরিচয় নাই। নাম শুনেছি। আচ্ছা এখন আমি যাই। আপনি কিছু খাবেন?

জ্বি মিষ্টি দিয়ে পরোটা খাব।

এই মিষ্টির মধ্যে সবাই কী পাইছে কে জানে!! হোটেলের মালিককে বললাম উনি যা খেতে চায় দিন। বিকালে আমি সব দাম একেবারে দিয়ে যাব। গ্রামে আমি চাচ্ছিলাম নিজের মত করে সময় কাটাতে। অতিরিক্ত কথা বলার স্বভাব আমার আছে কিন্তু সব সময়ের জন্য না। কখনো কখনো আমি নিজের মধ্যে হারিয়ে যাই। তখন না কারো কথা শুনতে ভালো লাগে, না বলতে। আমার এই স্বভাবের জন্য আমার বিরুদ্ধে আমার প্রিয়জনদের অভিযোগ আছে।

যেই লোকের সাথে হোটেলে পরিচয় হয়েছিল শুনলাম তার নাম কামাল। তিনি স্কুল শিক্ষক ছিলেন। এখন আর পড়ান না। জনশ্রুতি আছে তিনি আইন্সটাইন এবং নিউটন দুইজনকে এক সাথে ভুল প্রমান করেছিলেন। এতটুকু শোনার পর তার ব্যাপারে সব আগ্রহ হারিয়ে ফেললাম। অসুস্থ একজন মানুষকে নিয়ে মজা করতে চাচ্ছিনা। গ্রামের কেউ কেউ দেখা যাচ্ছে ঠিকই বিশ্বাস করে বসে আছেন ব্যাপারটা। করুক গিয়ে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ভুল প্রমান করাটা কঠিন হতে পারে। দেশে অনেক দুর্নীতি থাকলেও তারা সবাই নির্দোষ। আইন্সটাইন , নিউটনকে ভুল প্রমান করা সেই তুলনায় অনেক সহজ হওয়ার কথা (!)।

কামাল চাচা নিউটন আর আইন্সটাইনকে ভুল প্রমাণ করেছেন কিন্তু কী ভুল প্রমাণ করেছেন এই ব্যাপারটা কেউ বলতে পারেনা। এটা নিয়ে মোটামুট হাসাহাসি হল রাতে খাওয়ার সময়। তবে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম গ্রামের সহজ সরল লোকদের জ্ঞানের স্বল্পতা নিয়ে প্রকাশ্যে কোন মজা করা হবেনা। কয়েকদিনের জন্য মাত্র গ্রামে এসেছি আদর আপ্যায়নে কোন কমতি তারা দেখাচ্ছেনা। আইন্সটাইন , নিউটনকে ভুল প্রমান করা কামাল চাচাকেই দেখলাম ভোর পাঁচটার সময় খেঁজুরের রস নিয়ে আসতে। খেঁজুরের রসে "নিপাহ" ভাইরাস থাকার সম্ভাব্যতা বিবেচনায় সেটা অবশ্য খাওয়া হল না। তবে কামাল চাচাকে ধন্যবাদ দেওয়া দরকার, তাই তার বাসা খুঁজে বের করলাম।

আগেকার দিনে গ্রামের প্রত্যেক বাড়ির সামনে পুকুর থাকত, এখন খুব একটা নাই। কামাল চাচার বাড়ির সামনে আছে। কামাল চাচা বাড়ির উঠানে ঝাড়ু দিচ্ছিলেন। বাইরে থেকেই বুঝা যাচ্ছে বাসার ভিতরটা অন্ধকার।

স্লামালাইকুম।

আসো ভাতিজা। তুমি আসবা জানতাম।

তাই নাকি! কেউ বলে গিয়েছিল আপনাকে?

হ, আলো বলছিল।

আলো নামে কারো সাথে অবশ্য আমার খাতির নাই। গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে বেড়ানো কোন ছেলে হবে আর কি।

আচ্ছা আচ্ছা। আলো বলাতে ভাল হয়েছে। আপনি এত কষ্ট করে খেঁজুরের রস এনেছিলেন দেখে ধন্যবাদ।

কামাল চাচা চুপ করে থাকলেন। ঝাড়ু হাতে উঠানে বসে রোদ পোহাচ্ছেন। বিদেশে মানুষ অনেক আয়োজন করে সমুদ্রের পাশে বসে এই কাজ করে। তিনি গ্রামে বসেই তা করছেন।

কামাল চাচা কি এই বাসাতে একা থাকেন?

জ্বি ভাতিজা। তোমার চাচীর মৃত্যুর পর থেকে তাই আছি।

আচ্ছা আচ্ছা।

খেজুরের রস তো খাইলানা ভাতিজা।

আমার চমকানোর কথা কিনা জানিনা তবে এটাতে কোন রহস্য নাই। কেউ একজন বলে গেছে যে পুরা খেঁজুরের রসটা ফেলে দেওয়া হয়েছে।

আসলে "নিপাহ" ভাইরাস নামে একটা ভাইরাস আছে। বাঁদুরের কারনে ছড়ায়। বাঁদুর রাতে খেঁজুরের রসের হাড়িতে মুখ দিতে পারে।

হ এটাতেও দিছিল। তবে ভাইরাস ছিলনা। আলো সব ভাইরাস পরিষ্কার কইরা দিছে।

কি বলব বুঝতে পারলাম না। আমার এইখানে আসার খবর আলো দিয়েছে বুঝলাম , আলো ভাইরাস কিভাবে দূর করলো?

চাচার এইখানে থাকার আর কোন মানে পেলাম না, চলে আসলাম। নিপাহ ভাইরাস দূর করা চরিত্র আলো (?) কে তাই একটু খোঁজ নেওয়া জরুরী মনে করলাম। আমার দুঃসম্পর্কের দাদীকে বললাম, দাদী। আলো কে? দাদী বললেন, আলো কে মুই চিনিনা। ভালো , দাদী চিনেনা আলো। গ্রামে আসলে নয়ন নামে এক ছেলের সাথে আমার মাঝে মাঝে গল্প হয়। সেই নয়নকে এবার পাওয়া যাচ্ছেনা। অনেক কষ্ট করে নয়নকে পাওয়া গেল। নয়ন মারফত যা জানা গেল তা হলো,
কামাল চাচা আসলে আমার চাচা না আমার ফুপা। কারন তার মৃত যে স্ত্রী সে আব্বাদের দুঃসম্পর্কের বোন। উনি একটা বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। বাচ্চাটার বয়স যখন ২ তখন বাচ্চাটাও মারা যায়। বাচ্চাকে খাটে রেখে কামাল চাচা যখন নামাজ পড়ছিলেন তখন কোনভাবে বাচ্চা পুকুরে নেমে যায়। কামাল চাচা বাচ্চা মারা যাওয়ার পর কান্নাকাটি তেমন করেন নাই। এমনকি এক ফোটা চোখের পানিও ফেলেন নাই। সোজা কোরআন খতম করা শুরু করেন। তারপর থেকে তিনি শিক্ষকতাও ছেড়ে দেন। ওনার মধ্যে ছোটখাট পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। বেশিরভাগ সময় তিনি অন্ধকার করে রাখেন তার ঘর। তবে তারপরেও কোন কিছুতে তেমন কোন বাড়াবাড়ি করেন না।

আচ্ছা নিউটন, আইন্সটাইনকে ভুল প্রমাণ করার ব্যাপারটা কী?

নয়ন তার নয়ন কপালে তুলে বলল, এটা আবার কী জিনিস? এরকম কিছু নাই। কামাল ফুপা বিজ্ঞান পড়াতেন। সেখান থেকে কেউ মজা করে এমনটা বলে। উনি নাকি কখনই ভুল প্রমাণ করার কথা কিছু বলেন নাই।

আমি বললাম, কিন্তু তিনি আমাকে একবার বলেছিলেন আমি তাদের চিনি কিনা।

নয়ন বলল, কী জানি কী খেয়ালে বলছে।

আচ্ছা তাহলে আলো নামে আমাদের গ্রামে কেউ থাকেনা?

নাহ, গ্রামের বেবাকডি লোক আমি চিনি। এই নামে কেউ নাই।

আলো বিষয়ক কোন কিছু মীমাংসা করার ইচ্ছা আর নাই। তবে আলো ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টার। খেঁজুরের রস থেকে নিপাহ ভাইরাস দূর করে। আলো আমার, আলো ওগো আলোয় ভূবন ভরা।

রাত সাড়ে ১২ টা গ্রামে অনেক রাত। গ্রামের এক জায়গার এক ব্রিজে বসে আছি আমি আর নয়ন। নয়ন সিগারেট খাচ্ছে এবং এই জিনিসের অভ্যাস আমার নাই এটা জেনে সে অবাক হচ্ছে। তার ধারনা আমি সিগ্রেট খাইলে দেশ বিদেশ কাপাইয়া দিতে পারতাম। শুধুমাত্র সিগ্রেট খাইনা দেখে এটা আমাকে দিয়ে হইতেছেনা।

গ্রাম থেকে ব্যস্ততম নগরী ঢাকায় ফিরে এলাম। ঢাকা শহরের নিজস্ব প্রাণ, নিজস্ব গতি থেকে অনেকদিন দূরে ছিলাম। অফিসে কাজ করায় ব্যস্ত হয়ে গিয়েছি। একদিন একটা ঘটনা ঘটল। ঘটন না অঘটন বলতে পারব না। এটা নজরে আসার মতও না কিন্তু আমার নজরে আসল। বাথরুমে গিয়েছি তখন কারেন্ট চলে গেল। বাথরুমের লাইট নিভে যাওয়ার পরেও আমার বাথরুম আলোকিত। যেটা আসলে হওয়ার কথা না। ইদানিং কোন এক অস্বাভাবিকতা আমি লক্ষ করতে পারছি আমার মধ্যে। সেটা কি আমি জানিনা। পরিবর্তনটা খুব সূক্ষ্ম কিছু, স্থূল না। এগুলা খেয়াল করার আমার কোন দরকার আছে কিনা আমি জানিনা। অফিসে বড় স্যারের কাছে ফাইল নিয়ে গিয়েছি। ফাইল দিয়ে একটু দূরে দাড়িয়েও আমি ফাইলের কিছু লেখা দেখতে পাচ্ছি। কেন পাচ্ছি জানিনা। আমার চোখ অতিরিক্ত ভাল হয়ে গেল কিনা কে জানে!! চোখ দেখাতে গেলাম। মেশিনে চোখ রেখে পরীক্ষা করে জানানো হলো আমার চোখ স্বাভাবিক। চোখে কোন সমস্যা নাই। এক এক্সিবিশন অনুষ্ঠানে গেলাম কয়েকদিন পর। তখন কোন এক অসামঞ্জস্যতা পেলাম। আমার পূর্ণ বিম্ব দেখতে হলে সমতল দর্পন কমপক্ষে আমার অর্ধেক হতে হবে। এক্সিবিশনের ছোট এক আয়নাতে আমি নিজেকে পুরাপুরি দেখলাম। পাশের লোককে বললাম ভাই আয়নাতে কি আমাকে পুরাপুরি দেখা যায়? তিনি আমার সমস্যা বুঝল না। তিনি আমাকে বলল, ভাই আপনি কি নিজেকে বাগদাদের রাজপুত্র মনে করেন? তাহলে সেই চিন্তা বাদ দেন।





আমার এই অস্বাভাবিকতার সাথে কীসের যোগসূত্র আছে আমি জানিনা। পরিবর্তনগুলা এতই ক্ষুদ্র যে কাউকে বলে বোঝাতে পারছিনা। পাত্তা না দিলেও হয় কিন্তু মনের মধ্যে খচখচানি চলছেই। অফিস থেকে কয়েকদিনের ছুটি নিলাম। আবার গ্রামের বাড়ি যাব। একবার হলেও কামাল ফুপার সাথে দেখা করব। কামাল ফুপা অসুস্থ। তিনি গ্রাম থেকে দূরে কোন এক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছেন। তার শরীরের অবস্থা বেশ খারাপ। তার মুখ হাসি হাসি। আমি গিয়ে বললাম,

কেমন আছেন?

ভাল আছি। তোমার ছুটি নিয়ে আসা ঠিক হয় নাই। ঢাকায় তোমার নামে খারাপ কথা হচ্ছে।

আপনি কীভাবে বুঝলেন?

আলো বলেছে আমাকে।

আলোটা কে?

আমার ২ বছরের বাচ্চার নাম রেখেছিলাম আলো। তখনও জানতাম না আলো আমাকে বাধ্য করেছে এই নাম রাখতে। আলোকে তারা নিয়ে গেছে। আমাকেও নিবে। এরপর তোমার পিছে লাগবে।

আমি না আপনার কথা কিছুই বুঝতে পারছিনা!

আলো সরলরৈখিক পথে চলে এবং যখন তা আমাদের চোখে আঘাত করে তখন সেই সম্পর্কে দর্শনানুভূতি জাগায়। এটা আলোর খুব সাধারণ নিয়ম। আলো কণাধর্মী, আবার আলো তরঙ্গধর্মী। কিন্তু এটাই সব সত্যি না। আলো আমাদের এতটুকুই জানার অধিকার দিছে। এর থেকে বেশি জানতে গেলেই আলো আমাদের নিয়ে যায়।

যাক বাবা আমি এর থেকে বেশি জানিনা।

তুমি জানো। আমিও জানি। আমি যেদিন জানতে পারি সেদিন থেকে তারা আমার পিছনে লেগে আছে। সেদিন থেকে তারা আর সরলরৈখিক পথে চলেনা। বক্রপথে চলে অনেক কিছু আমাকে দেখায়। সমাবর্তন, অপাবর্তনের স্বাভাবিক নিয়ম তারা আমাকে দেখায় না। আমার ২ বছরের বাচ্চাকে আলো পথ দেখায় পুকুরে নিয়া যায়।

আপনি তারা বলতে কাদের বুঝাইতেছেন? এখানে "তারা" কারা?

এত কিছু আমি নিজেও জানিনা। কিন্তু সব কিছু মিলিয়ে তারা আলো। সেকেন্ডে প্রায় ২৯৯৭৯২৪৫৮ মিটার চলে। এটা আসলে আমাদেরকে দেখানোর জন্য।

পৃথিবীতে এত এত নামকরা বিজ্ঞানী থাকতে আলো এই ব্যাপারগুলা আপনাকে বোঝাতে গেল কেন?

হয়ত অনেকেই বুঝতে পেরেছে। কিন্তু কেউ প্রকাশ করেনি। কোপারনিকাসের পরিণতি কেউ চায়নি।যিনি বলেছিলেন, পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরে আর সেটা বলার জন্য তাকে হত্যা করা হয়।

শুনুন, বিজ্ঞান এখন অনেক আধুনিক, ল্যাবরেটরী প্রমাণ ছাড়া বিজ্ঞান হয়না। জোর করে কথা বলার কোন মানে হয়না।

আমার ২ বছরের বাচ্চার নাম ছিল আলো। আলোরাই তাকে সৃষ্টি করেছে। আলোরাই তাকে নিয়ে গিয়েছে। কারন আলোদের গোপন ব্যাপার আমি ধরে ফেলেছি। এখন তুমি কিছু কিছু জানবা। তোমাকেও নিয়ে যাব। আমাকে নিতে দেরী করেছে কারন আমি কাউকে ব্যাপারটা বোঝাতে পারিনাই।

আমি নিজেই ব্যাপারটা বুঝিনাই আমি আর অন্যদের বোঝাব কী!!

আলো নিয়ন্ত্রন করা যায়। চেষ্টা করলে পারবা।

আমাকে বলার মত আপনার আর কিছু আছে?

না নাই। তবে আমি জানি খুব তাড়াতাড়ি তুমি আলো ব্যবহার করতে পারবা। তবে আলোর ব্যাপারটা পছন্দ হবেনা। যেই মুহূর্তে তুমি আলো ব্যবহার করা শুরু করবা আলোরা তোমার পিছনে লেগে যাবে।

আলো আমার সাথে আর কোন অস্বাভাবিক আচরণ করে নাই। আলোকে কীভাবে ব্যবহার করা যায় তাও জানিনা। গাও-গেরামের কেউ একজন বলবে আলোর সূত্র ভুল আর তার কথা শুনে বসে থাকতে হবে এমন মনে করার কোন কারন নাই। ২ মাস পরে কামাল ফুপার মৃত্যু হয়। স্বাভাবিক মৃত্যু। শুধু শুধু আলোকে দোষ দেওয়ার কোন কারন দেখিনা।

২০১৪ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কথা। ফাইনালে বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়া। খেলা হচ্ছে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ৬ রান, হাতে ১ উইকেট। বাংলাদেশের বোলার যে বলটা করল সেটা ফুলটস। অনায়াসে ছয় মেরে দিবে। আহা কোনভাবে যদি বলটা মিসটাইমিং হয়! ব্যাটসম্যান বলটা না দেখে! হঠাৎ আমার কাছে মনে হলো ব্যাটসম্যান বলটা নাও দেখতে পারে। কোনভাবে বলটা থেকে যে আলো বের হবে সেটা সরল রৈখিক পথে নেওয়া যাবেনা। বক্রপথে ব্যাটসম্যানের চোখকে আঘাত করবে। আমার কল্পনায় স্পেকট্রামের সব রং। একেকটা একেক তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের। ব্যাটসম্যান কোন কারনে ফ্লাইট মিস করেছে। বাংলাদেশ ২০১৪ সালের টি-টুয়েন্টি চ্যাম্পিয়ান। আমি কি সত্যিই আলোকে ব্যবহার করে ফেলেছি? আলোরা তাহলে এখন আর আমাকে ছাড়বে না!! নাকি পুরোটাই ভ্রম? যা হওয়ার তাই হয়েছে। আমাদের জিতার কথা ছিল জিতেছি। শুধু শুধু কামাল ফুপার কথা ভেবে লাভ নাই। আলো আসলে কিছুই না। আলো এক ধরনের শক্তি বা বাহ্যিক কারণ, যা চোখে প্রবেশ করে দর্শনের অনুভূতি জন্মায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ৮:২৬
২১টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×