somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মের নামে অধর্মকে ঘৃণা করি, ধর্মকে নয়

০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে আপত্তি আছে। তারা লেখেন ধর্মের বিরুদ্ধে । হয়তো খুব যৌক্তিকভাবেই। কেউ লিখল বাংলাদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানো ওয়ায়েজদের শিরোমণি মুফতি ইব্রাহিমের স্বপ্নে পাওয়া করোনা ভাইরাসের তাবির নিয়ে যে কিনা স্বপ্নে করোনার ঔষধ পাওয়া নিয়ে এই দুঃসময়েও ধর্মীয় চেতনার ব্যবসা করে, কেউ লিখল বিজেপির আমলে ও ছত্রছায়ায় লালিত পালিত বজরং দল নিয়ে লিখল, যারা শেখায় - ইসলাম ধর্মে পেটে বেশী ক্ষুধা থাকলে মেয়েদের কাইটা রান্না করে খাওয়া জায়েজ। কেউ লিখল ধরেন আবার মায়ানমারের ওসামা বিন লাদেন খ্যাত ভিক্ষু অশ্বিন রিথুরে নিয়ে, যে বলে মুসলমানরা মায়ানমারে আফ্রিকান কার্পের মত বংশবিস্তার করছে। এদের ঝাড়েবংশে নির্মূল করলাম। কেউ নব্য নাজিবাদ, বা ক্লু ক্লাক্স ক্ল্যান নিয়ে লিখল - যাদের কেউ কেউ কখনো কখনো হাউশে সাউথ এশিয়ানদের টানেলের মধ্যে ট্রেনের নীচে আস্তে করে ঠ্যালা দিয়ে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে।

আপনি লিখলেন।

আমি লিখলাম।

আমরা লিখলাম।

ধর্ম নিয়া।

হয়তো মানবিক বিবেচনায়।

হয়তো প্রোপ্যাগান্ডায়।

যার যেরকম রুচি বা মতলব।

আমার এই লেখা, যারা প্রোপ্যাগান্ডা নিয়ে ধর্মের বিরুদ্ধে লেখে, তাদের প্রতি উৎসর্গিত।

যারা প্রোপ্যাগান্ডায় ধর্ম নিয়ে লিখি, তারা কি চিন্তা করি - যে বা যারা হিন্দুর বাড়িতে আগুন দেয়, যে মুসলমানদের গুলি কইরা নাফ নদীর এই পাড়ে পাঠায়, যে বৌদ্ধবিহার ভাংচুর করে, বা যে আস্তে করে ঠ্যালা দিয়ে ব্রাউন বা ব্ল্যাকদের ট্রেনের নীচে ফালায়, বা মসজিদে ঢুকে গুলি করে মানুষ মারে - এরা বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় আগ্রহী না? এরা মৌলবাদী, কারণ মৌলবাদী তারাই যারা মূলরে আঁকড়ায়ে থাকে, একরৈখিক চিন্তা করে। নিজের চিন্তার লাইনের বিপরীতে যায় এমন কিছু তারা আমলে নেয় না।

না ব্লগ। না বই।

উস্কানিমূলক ফেসবুক পোস্ট পড়ে হয়তো। উস্কানিমূলক ব্লগের লেখাও হয়তো পড়ে। ব্লাসফেমাস রিলেজিয়াস প্রিচারদের সারমন শুনে। গিয়া মানুষ মারে। কখনো আইসিস রূপে। কখনো আরএসএস রূপে।

এইতো গেলো একশ্রেণী, যারা অ্যানালাইটিক্যালি চিন্তা না করে মানুষ মারার এবং হিংসা ছড়ানোর নোংরা কাজটা এক্সিকিউট করে।

তারপর আছে আরেকশ্রেণী, যারা ছাপোশ শ্রেণীর মানুষ। প্রোপ্যাগান্ডা ছড়ানো ধর্মবিদ্বেষীরা কার্লমার্ক্সরে কোট করে বলবে - 'ধর্ম এদের কাছে আফিম'। যারা লেখাটি পড়ছেন, তাদের জেনে রাখা উচিৎ, কার্ল মার্ক্সের এই বাক্যাংশ একটা বড় বাক্যের শেষ পার্ট। মার্ক্সের পুরো উক্তি হচ্ছে - "Religion is the sigh of the oppressed creature, the heart of a heartless world, and the soul of soulless conditions. It is the opium of the people"

অর্থাৎ - "ধর্ম নির্যাতিতের দীর্ঘশ্বাস, হৃদয়হীন পৃথিবীর হৃদয়, রুহ ছাড়া পৃথিবীর রুহ, ধর্ম একটা আফিম।"

তার মানে কি মার্ক্স ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন?

ব্যাপারটা অমনো না। মার্ক্স বলতে চেয়েছেন, পুঁজিপতিদের নির্যাতনের স্বীকার এই সমাজের তলানিতে থাকা শ্রমিক শ্রেণীর মানুষের দীর্ঘশ্বাস হচ্ছে ধর্ম। যে হৃদয়হীন নিষ্ঠুর পৃথিবীতে শাসিত বাস করে তার অন্তর, তার রুহ হচ্ছে ধর্ম। যে অমানুষিক প্রেষণের মধ্যে দিয়ে শ্রমিক শ্রেণীর লোকেরা যায়, সে হৃদয় বিদারক বাস্তবতাকে ভুলে থাকার আফিম হচ্ছে ধর্ম।

তারপর মার্ক্স তার নিয়মিত পুঁজির সমালোচনায় ফিরে যান, এবং শ্রেণী বৈষম্যহীন একটি পৃথিবীর স্বপ্ন দেখানোর চেষ্টা করেন। মার্ক্সের শ্রেণীবৈষম্যহীন পৃথিবীতে হয়তো ধর্ম প্রাসঙ্গিক নয়। মার্ক্সের শ্রেণী বৈষম্যহীন পৃথিবীর আইডিয়া কি একটা ইউটোপিয়ান আইডিয়া কিনা, সে আলোচনা এড়িয়ে উল্লেখ করি যে - যেহেতু আমরা মার্ক্সের আকাঙ্খিত স্বর্গে বাস করছি না, কাজেই ধর্মের মত আফিম এখনো ইতিবাচকভাবেই প্রাসঙ্গিক। এটা সেই গাঁজা না - যেইটার গন্ধ্ সন্ধ্যাবেলায় সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে ভুরভুর করে আপনার নাকে প্রবেশ করে।

যারা উপরের ব্যাখ্যাটুকু বাদ দিয়ে আপনারে ধর্ম সংক্রান্ত মার্ক্সের বড়ি খাওয়াইতে আসবে, সে একজন প্রোপ্যাগান্ডিস্ট, ঐতিহাসিক মিথ্যাচারী।

যাক, দোয়া করি এমন কারো সাথে আপনার দেখা না হয়। মূল আলোচনায় ফিরে আসি আবার।

এখন ইতিবাচক অর্থে ধর্মের আফিমে মাতাল এই মুসলিম লোকটা, যে আপনার প্রতিবেশী, যে সারাদিন খাটাখাটনি করে বাসায় ফিরে এসে মসজিদে গিয়ে এশার নামাজে আল্লার কাছে দোয়া করে, যাতে তার শরীর ঠিক থাকে, চাকরির ক্ষয়ক্ষতি না হয় , বাচ্চাকাচ্চাগুলিকে ঠিকমত মানুষ করতে পারে; বা আমার গোপীবাগে থাকাকালীন পাশের বাসার হিন্দু ভদ্রলোক, যিনি সকালবেলা তুলসী গাছের গোঁড়ায় পানি ঢেলে সূর্য প্রনাম করে ঘরের যে ছোট মন্দির, বা একজন সাধারণ খ্রিস্টান, বা বৌদ্ধ - তাদের কাছে ধর্মের বিরুদ্ধে কোন প্রোপ্যাগান্ডামূলক লেখার কোন প্রাসঙ্গিকতা আছে? সে কোন দিন নিজের বিশ্বাসরে সমালোচনা করবে?

আরেক শ্রেণীর বিশ্বাসী, যাদের ধর্মবিশ্বাস স্পেসিফিক কোন প্রিচারের সারমনের মাধ্যমে তৈরি হয় নাই, যার ধর্ম বিশ্বাস প্রাথমিকভাবে নৃতাত্ত্বিকভাবে এবং পরবর্তীতে আত্মজিজ্ঞাসার মাধ্যমে তৈরি হয়েছে, যে নিজের একান্ত ব্যক্তিগত সংকটের মুহূর্তে স্রষ্টার সাথে - সুপার কসমিক পাওয়ারের সাথে - বা নিজের সাথে নিজের খুব একান্ত ব্যক্তিগত কনভারসেশনের মাধ্যমে যারা একটা স্পিরিচুয়াল বিয়িং এ পরিণত হয়েছে, তাদের কাছে ধর্মের প্রয়োজনীয়তাকে তুচ্ছ করে লেখা যুক্তিপূর্ণ বিষোদ্গার কোন মিনিং বিয়ার করে কী?

একজন চিন্তাশীল মুসলিম/ খ্রিস্টান আল্লাহর কাছে হেকমত চাইবে, একজন চিন্তাশীল হিন্দু/বৌদ্ধ চাইবে প্রজ্ঞা।

যেসমস্ত ধর্মীয় আচার তার অস্তিত্বের সাথে জড়িত, সে কী ঐ সমস্ত অ্যাক্টের সমালোচনা করবে কোন দিন?

একজন মুসলমানরে যদি জিজ্ঞেস করেন, কি ভাই হাওয়ার উপর সেজদা দাও, কার কাছে হাত তুলে মোনাজাত করো - যারে দেখা যায় না ছোঁয়া যায় না, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণ করা যায় না - সে যদি মাথা গরম মুসলমান হয়, তাহলে এ প্রশ্ন যে করেছে তারে মারতে যাবে, আর যদি হেকমত প্রাপ্ত মুসলমান হয় - তার কাছে এই তর্কে যাওয়াই অবান্তর বিধায় মুচকি হাসি দিয়ে হয়তো প্রশ্নকর্তারে জিজ্ঞেস করবে - কাজ নাই ভাই? ভাবীর সাথে ঝগড়া লাগছে? মনমেজাজ খারাপ?

একই রেসপন্স একজন চিন্তাশীল হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও হয়তো দিবেন।

যারা প্রোপ্যাগান্ডা করে ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ান, তারা তো অন্ধবিশ্বাসী না, যুক্তিবাদী। ধর্ম -অ্যাজ এ হোলের পুরোটা বা তার কোন আংশিক ক্রিয়াকর্মের সমালোচনা করে হাজার হাজার বছর ধরে বহতা নদীর স্রোতের মত প্রবাহিত হতে থাকা একএকটি আব্রাহামিক রিলেজিয়ন - ফুঁ দিয়ে উড়ায়ে দেয়া সম্ভব? তাদের যুক্তিতে কি বলে?

তবে ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপ্রসূত প্রোপ্যাগান্ডা যে একদমই কাজে লাগে না, বা ভ্যালুলেস, তাও না। যারা কাউন্টার প্রোপ্যাগান্ডিস্ট, যারা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে, যারা ধর্মের নামে অন্যের জায়গা জমি, অন্যের জান- মাল, ইজ্জত-আব্রুর দখল নেয়ার চেষ্টা করে তাদের কাছে এই ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপ্রসূত প্রোপ্যাগান্ডার মূল্য আছে। তারা এধরণের লেখাকে পুঁজি করে ধর্মকেন্দ্রিক পাল্টা বিদ্বেষ ছড়ানোর পলিটিক্স করে। এমন ধর্মব্যাবসায়ি বাংলাদেশেও আছে। এমন ধর্মব্যাবসায়ি পাশের দেশ ভারতেও আছে। কাজেই, যারা রিলেজিয়াস মেজরিটির ধর্মীয় সেন্টিমেন্টে খোঁচা দিয়ে লিখে মনে করেন বড় বীরত্বের কাজ করে ফেলেছেন, তারা আসলে উক্ত অঞ্চলের সংখ্যালঘুদের উপর নতুন করে নিপীড়ন চালানোর হাতিয়ার ঐ আগের পক্ষের ধর্ম ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেন। এইরকম 'বুদ্ধিমান' কলম/কীবোর্ড সৈনিকও বাংলাদেশে আছে। ভারতেও আছে। সারা পৃথিবী জুড়েই আছে।

আমার মনে পড়ে আমার প্রাক্তন কর্মস্থলে আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের আমার খুবই প্রিয় একছাত্র, যাকে ক্লাসরুমে আমি ইংলিশের কোর্স করিয়েছি, সে নাস্তিকও ছিল - একদিন ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ফেলল - "এই যে আজানের নামে ভাল্লুকের মত চিৎকার করে , এগুলির কি দরকার?"। আমার সারা ক্লাসের মধ্যে এই একটা ছেলের সাথে আমি কথা বলে আরাম পেতাম, কারন ও প্রথাবিরোধী ছিল। চিন্তা করতো। তার উপরে ও উক্ত ইউনিভার্সিটিতে আমার সাহিত্য ক্লাবের সদস্য, ও লোগো ডিজাইনার। স্নেহ কাজ করতো একটা।

সেই মাঝরাতে ফোন - "স্যার কি করবো"। ফেসবুকে গিয়ে দেখি, ইউনিভার্সিটির সাধারণ স্টুডেন্টরা ইভেন্ট খুলে ফেলসে পরের দিন ভার্সিটির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও ওর বিচার দাবী করবে। কাওকে দেখলাম ওকে মারতেও বেশ আগ্রহী।

আমি নিজে পরে ওকে ফেসবুকে ইনবক্সে একটা অ্যাপোলজি স্ট্যাটাস টাইপ করে পাস করে দিলাম, যাতে আপাতত প্রাণে বাঁচে। যদিও পরবর্তীতে অ্যাকাডেমিকভাবেও ওকে হ্যাপার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।

আমি জানি না ঠিক কি আবেগের বশবর্তী হয়ে ও এই ধরনের একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিল - কিন্তু এর পেছনে যে কোন সুচিন্তিত লক্ষ্য ছিল, এমনটা বলা চলে না। ও বেঁচে গিয়েছিল, কিন্তু ওর অনেকগুলো ব্যাচ সিনিয়র, সেই একই ইউনিভার্সিটির আর্কি ডিপার্টমেন্টএর আরেকজন ব্লগার কিন্তু প্রাণে বাঁচে নি। তাকে আততায়ীরা হত্যা করে, এবং এ নিয়ে প্রচুর লেখালিখি হয় একসময়।

তাই একজন সচেতন মানুষ হিসেবে যেকোনো ধর্মের বিরুদ্ধে আবেগে হোক, বা প্ল্যান করে হোক - যেকোনো প্রোপ্যাগান্ডামূলক লেখা দেখলেই আমার বিরক্ত লাগে। ধর্মের মত সেনসিটিভ ইস্যু নিয়ে লিখলে অবশ্যই আপনার আলট্রা সেনসিটিভ হওয়া বাঞ্ছনীয়। নইলে প্রোপ্যাগান্ডা আর নিজের দিকে টানা লাগবে না, নিজেই নিজের প্রোপ্যাগান্ডার স্বীকার হবেন। হয়তো আপনি হবেন না, আপনার স্বজাতিরা হবে। যারা অসহায়, যাদের কোন দোষ নাই।

এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল - সমালোচনা কি হবে না, ধর্মকে নিয়ে কেউ অধর্ম করলে?

এইটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে ধর্মকে ব্যবহার করে বহু ধর্ম ব্যবসায়ী হাজার হাজার বছর ধরে সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছে। সেটা প্রাক রেনেসাঁ রোমের পোপ হন, বা আধুনিক ধর্ম ব্যবসায়ী প্রফেশনাল ওয়ায়েজরা হোক। একদিকে মুসলমানের জন্যে চারটা বিয়ে শরিয়তে জায়েজ জেনে জোতদার মুসলমান আজ থেকে এক- দুই প্রজন্ম আগেও চারটা করে বিয়ে করতো, এটা ভুলে যে তখনই এই বিয়ে করার সম্মতি আছে, যখন উক্ত ব্যক্তি সবদিক থেকে পূর্ণ সমতা বজায় রাখতে পারবে নিজের স্ত্রীদের মধ্যে। ধর্মের নামে অধর্ম। আবার বিশ শতকের শুরুর দিকেও কুলীন ব্রাহ্মণরা গ্রামকে গ্রাম ঘুরে বেরিয়ে বিয়ের সেঞ্চুরি পূর্ণ করতো কেবল কন্যাদায়গ্রস্থ পিতাদের উদ্ধার করার জন্যে। বিয়ের রাতেই একসঙ্গে থাকা। তারপর বিয়ের পন নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে সেই যে হাওয়া , আর কোনদিন দেখা হত কিনা, কেউ বলতে পারে না। লেখার শুরুতেই খেয়াল করবেন - প্রতিবাদ হওয়া উচিৎ এমন কিছু সাম্প্রতিক ধর্মীয় ব্যক্তি/ সংস্থা/ সংগঠনের নাম উল্লেখ করেছি।

এগুলো ধর্মের নামে অধর্ম। এই ধরনের লালসালুর মজিদকে কি আমরা সমর্থন করতে পারি? আইনত না, নৈতিক ভাবে না, ধর্মীয় ভাবেও না। এদের বিরুদ্ধে লেখাও ধর্মীয় দায়িত্ব।

কিন্তু আমার মত হচ্ছে - এই সমস্ত ধর্ম ব্যবসায়ীদের সমালোচনার ভার বরং আমরা বিশ্বাসীরাই যেন তুলে নিই। অবিশ্বাসীর হাতে এ গুরুদায়িত্ব অর্পণ না করি। হি উইল নেভার বি দ্যাট মাচ সেনসিটিভ, অ্যান্ড দ্যাট মাচ আকুরেট। ধর্মবিশ্বাস কোন লেফাফার ভেতর থেকে বের করা নিয়মের ফর্দ না। বাংলা ধর্ম শব্দটি উদ্ভব হয়েছে ধৃ ধাতু থেকে, যার অর্থ ধারন করা। জীবনের পক্ষে যা কিছু ধারণযোগ্য সেই কাজই ধর্ম, কিংবা 'যুক্তির দ্বারা গ্রাহ্য মহত্তর নীতির অনুমোদিত কর্মই ধর্ম' (বিমলকৃষ্ণ মতিলাল, ১৯৮৭)। এ অর্থে ধর্ম একটি আচরি বিষয়বস্তু। আচরণের মাধ্যমে তা উপলব্ধি করা লাগে। একজন অবিশ্বাসী ধর্মের সারবত্তা বুঝতে কখনোই পুরোপুরি সক্ষম হয় না কারন সে বাইরে থেকে খণ্ডিতরূপে ধর্মীয় আচরণ দেখে এবং আলোচনা - পর্যালোচনা - সমালোচনা করে।

কাজেই আসুন, যদি নিজেকে একজন ধার্মিক মুসলিম মনে করেন তো ইসলামকে ঘিরে যারা ব্যাবসা করছে, যারা উঁচু উঁচু তখতে বসে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে - তাদের সমালোচনা করুন। যদি নিজেকে একজন প্রকৃত হিন্দু মনে করেন তোঁ হিন্দুধর্ম নিয়ে যারা ব্যাবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।

আমার পুরো লেখার সারসত্তা এক লাইনে এভাবে সাম আপ করতে পারি যে - একজন ধার্মিকের কাছে পৃথিবীর সব ধর্মের মানুষ নিরাপদ, কিন্তু একজন বকধার্মিকের কাছে তার নিজের ধর্মের মানুষও নিরাপদ না।





সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১১:০৪
১৮টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×