somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইতালিয়ান অনুবাদ গল্প - মৃত্যুর ঘ্রাণ ( বেপ্পে ফেনোজিলো)

০৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



একহাতের সবগুলো আঙ্গুল দিয়ে অন্যহাতের উল্টো পীঠে লম্বা একটা সময় জোরে জোরে ঘসবার পর ঘসাখাওয়া ত্বক নাকের ডগায় ঠ্যাকালে যে ঘ্রাণ পাওয়া যায়, ওটাই মৃত্যুর ঘ্রাণ।

কার্লো এটা শিখেছিল একদম ছেলেবেলায়, সম্ভবত বাড়ির উঠোনে মা আর অন্যান্য মহিলার আড্ডায়, অথবা গ্রীষ্মের রাতে জমায়েত বাচ্চাদের খেলার ফাঁকে ফাঁকে, যেখানে বয়সে একটু মুরুব্বীটাইপ ছেলেদের কাছ থেকে সাধারণভাবে জীবন সম্পর্কে, এবং বিশেষভাবে নারী - পুরুষের সম্পর্ক নিয়ে অনেকানেক জ্ঞান লাভ করা যায়।

ফেলে আসা নির্দোষ সে সকল গ্রীষ্মের আরও অনেকগুলো গ্রীষ্ম পেরিয়ে এসে, এক সাঁঝবেলায়, যখন কার্লো এক পুরোদস্তুর ব্যাটামানুষ, সে আবারো পেল সে বিশেষ ঘ্রাণ, নানারকম প্রমাণ সূত্রে যাকে মৃত্যুর গন্ধ বলে চিহ্নিত করতে কোন বেগ পেতে হয় না।

সে সন্ধ্যায় কার্লো অপেক্ষা করছিল রাস্তার শেষ মাথায় দাঁড়িয়ে - যেখানে রয়েছে সান লাজ্জারো হাসপাতাল, এবং যার উল্টোপাশে, রেলরোড স্টেশনের ঠিক বাইরেই এক গ্রেডক্রসিং অবস্থিত। আগের ট্রেনটা মাত্রই স্টেশন ছেড়ে চলে গিয়েছিল, সাঁঝের আকাশে কালো ধোঁয়া ওড়াতে ওড়াতে, এবং চারপাশে কয়লা আর কম্পনরত ইস্পাতের সুন্দর এক মিশ্র গন্ধ ছড়াতে ছড়াতে; তার জানালার আলো ছিল হলদে, বড়ই নরম এবং মিষ্টি, ঠিক যেন মানুষের বাড়ির আলোকিত জানালা। আটটা পনেরো বাজে, সে বিড়বিড় করলো আপন মনে। লাইনম্যান তখন রেললাইনের পাশে হাতল ঘুরিয়ে রেলপথের দু'পাশ আগল দিয়ে রাখা ডান্ডিটা তুলছে ওপরে।

যে বাড়ির কোনায়, দেয়ালে সে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, তার ভেতরে কার্লোর মায়ের বয়েসি এক মহিলা (কণ্ঠ থেকে অনুমান করা), তার যুবতী বয়সের এক গীত গাওয়া শুরু করলেন -

মাম্মা মিয়াঁ, দাম্মে কেন্টো লিরা
চে ইন অ্যামেরিকা ভগিলো আন্দারে ...
আম্মাগো আম্মা, আমারে একশো লিরা দেও
কারন, আমি অ্যামেরিকা যাইবার চাই ...

ভালোই তো হত অ্যামেরিকা যেতে পারলে, ভাবে সে। বিশেষ করে হলিউডে। কিন্তু আজ রাতে নয়, হুহু বাবা! আজ রাতে আমি আমার দেশের মাটিতেই ভালোবাসাবাসি করবো। তার মুষ্টিবদ্ধ হাতজোড়া সে প্যান্টের পকেটে শক্ত করে ঠুসে ভরে রাখে।

কার্লো অপেক্ষা করছিল তার আঠারো বছর বয়েসি প্রেমিকার জন্য, যে আসা মাত্র তাকে নিয়ে সে হারিয়ে যাবে সামনের বিস্তীর্ণ ময়দানের কোথাও, যেখানে একবার হারিয়ে গেলে তাকে আর বাসনার চুলায় হাঁপরের বাতাস দেয়া লাগবে না, চিন্তা করা লাগবে না স্টেশনে ঝুলে থাকা ঐ ঘড়ির খোমার ওপর প্রতিফলিত আলোর প্রবাহ নিয়ে। এখন কথা হল, মেয়েটার চুলের ডগাও তো দেখা যাচ্ছে না দূরদূরান্তে।
জীবনের এ অসহ্য দিনগুলিতে, এই কমবয়সী প্রেমিকার শরীরের চে দামী আর কোন সম্পত্তি তো তার আয়ত্তে নেই। মেয়েটা যদি আজ সন্ধ্যেবেলায়ও না আসে, তবে আবার আরও একটা সপ্তাহ দারুণ উদ্বিগ্নতায়, অপেক্ষার আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাই হতে হতে কাটানো লাগবে।

মেয়েটার উপস্থিত হবার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও, সব আশাভরসা ত্যাগ করে ফিরে যেতে কার্লোর মন সায় দিচ্ছিল না। সে আগের জায়গাতেই দাঁড়িয়ে রইলো কিছুটা খুঁতখুঁতে মন নিয়ে, যেন সে একবার জিটকা দিয়ে এখানে দাঁড়িয়ে গেলে মেয়েটার দেখা না দিয়ে আর কোন উপায় থাকবে না। কিন্তু এখন ঘড়ির কাঁটায় আটটা চল্লিশ, চারপাশে কেবল বুড়ো বেটাবেটিদেরই পাবলিক পার্কের বেঞ্চিতে জমে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। এদের অর্ধেকই আবার আঁধারের পেটে সেঁধিয়ে গিয়েছিল প্রায়, তবে আন্ধারে বসে যে কয়টা বুড়ো কিংবা বুড়ি বিড়ি ফুঁকছিল, তাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ বিড়ির আগুনরঙা পাছা তাক করে রেখেছিল কার্লোর দিকে। আর এতক্ষণ যে বেটি গান গাইছিল, হ্যাঁ , সে নিশ্চিত, যে বেটি গান গাইছিল, ঐ বেটিই, এখন বারান্দায় এসে কার্লোর চাঁদির দিকে কুতুরে চোখে তাকিয়ে আছে।
শহরের বেল টাওয়ারে নয়টা বাজার ঘণ্টা তার কানে ভেসে এলে সে হাঁটা শুরু করে শহরের কেন্দ্রের দিকে, যেখানে পিজ্জার দোকানে, বা ক্যাফেতে তার বয়সী লোকজন ভিড় জমায়, এবং মাথার মধ্যে ভনভন করতে থাকা মাগীদের চিন্তা মাছি তাড়ানোর মতো করে তাড়ায়।

সে প্রতি পাঁচ কদম পরপর ফিরে ফিরে তাকাতে আরম্ভ করলো পেছনে ফেলে আসা রাস্তার সে কর্নারটার দিকে। এভাবে গোটা দু' তিন দম্পতির সঙ্গেও দেখা হয়ে গেলো, যারা রাস্তার একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত কিছুটা মাতলামো করতে করতে হেঁটে বেড়াচ্ছিল, আর মাথার ওপর ল্যাম্পের আলো আছে না নেই - এটার ওপর নির্ভর করে একবার একে অপরের সঙ্গে চিপকে যাচ্ছিল, আবার দূরে সরে যাচ্ছিল। এদের দেখে কার্লোর মনে কিছুটা ঈর্ষা জাগে, কিন্তু পরক্ষনেই সে নিজেকে বোঝায়ঃ এরা সম্ভবত সেটা করতে পারবে না, যেটা আমার ডার্লিং আজ দেখা দিলে ও আর আমি করতাম। অতয়েব, এদের ঈর্ষা করার কিছু নেই।

ইতোমধ্যে সে গতিপথ খানিকটা বদলে, ঘুরে এসে শহরের ফোয়ারার পাশে এসে দাঁড়ায়, পানি পান করবার জন্য। সে পেটপুরে পানি খায়, তারপর ঘাড়খানা বাঁকিয়ে শেষবারের মতো পেছনে ফেলে জায়গাটিকে দেখে, এবং এক লম্বা মেয়েকে সে জায়গায় আবিষ্কার করে, যার গায়ে ছিল ক্যানেরি পাখির মতো হলুদ রঙা ধোপদুরুস্ত এক জ্যাকেট। মেয়েটা হাঁটছিল দ্রুতগতিতে, গ্রেড ক্রসিং এর দিকে।

কার্লো ছুটে সরে এলো সেই ফোয়ারার কাছ থেকে, তারপর পার্কের রাস্তা ধরে ছুটতে ছুটতে মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করে এক লম্বা শীষ বাজালো। পার্কের বেঞ্চিতে বসে রাস্তার ওপর আরাম করে পা ছড়িয়ে রাখা বুড়ো মানুষগুলো দ্রুত যে যার পা টেনে বেঞ্চের আড়ালে নিয়ে লুকোতে বাধ্য হোল। কার্লো তখন আরও একবার শিষ বাজিয়ে ছুটে চলছে মেয়েটার দিকে।

মেয়েটা থামলোও না, কার্লোর দিকে ঘুরে তাকালোও না একটিবারের জন্য; সে বরং তার হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিলো। কার্লোও ছুটতে ছুটতে ধাক্কা খেলো লাইনম্যানের ওপর, যে রেললাইনের ওপর ব্যারিকেড ফেলার কাজে ব্যস্ত ছিল; তারপর সে প্রায় ধরে ফেললো মেয়েটিকে পেছন থেকে।

মেয়েটার হাঁটার ভঙ্গীতে ছিল এক ধরনের জড়তা, তবে ঐ জড়তা নিয়েই সে খুব দ্রুতপায়ে হেঁটে কয়লার গ্যাসের কারখানাটা পার করে গেলো। ততক্ষণে কার্লো ছোটা থামিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে। সে এটা উপলব্ধি করেছে যে, একই শারীরিক কাঠামো, এবং একই ধরনের জ্যাকেটের মালেকিন হলেও, এই মেয়েটা আসলে তার প্রেমিকা না। তবে তার এ উপলব্ধি পোক্ত হবার আগেই সে তৃতীয়বারের মতো শীষ বাজিয়ে ফেলেছিল, ফলশ্রুতিতে মেয়েটা হাঁটা থামালো না বটে, তবে ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকিয়ে কার্লোকে আবিষ্কার করলো তার মর্তমান দু'খানা হাত দু'দিকে ঝুলিয়ে মাঝরাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়। তারপর, তীরগতিতে হেঁটে সে মিশে গেলো রাস্তার শেষমাথার আঁধারে।

ততক্ষণে কার্লোর নিজের দমও প্রায় ফুরিয়ে এসেছে, ফলে রেললাইনের পাশে দাঁড়ানো লাইনম্যান - যে লোকটাকে রেললাইন আগলে দাঁড়িয়ে থাকা ডান্ডির নীচে মাথা গলিয়ে কার্লোর দিকে তেড়ে যেতে দেখলো, কার্লো নিজে তাকে তৎক্ষণাৎ দেখতে পেলো না। কিন্তু কার্লোকে পেছন থেকেই আঘাত করার বদলে সে অর্ধ চন্দ্রাকৃতিতে ঘুরে এসে কার্লোর মুখোমুখি দাঁড়ালো, এবং মুখ দিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ না করে তার হাড় জিরজিরে আঙ্গুলগুলো দিয়ে কার্লোর হাতের পেশী খপ করে চেপে ধরল।

লোকটার নাম আত্তিলিও, সে কাজ করেছে গ্রিসের সৈন্যবাহিনীতে, জার্মানির জেলে বন্দীও ছিল কিছুদিন, সবশেষে যক্ষ্মা বাঁধিয়ে দেশে ফিরেছে - এতটুকুই ছিল লোকটার ব্যাপারে কার্লোর জানাশোনা।

কার্লো নিজেও তার মুক্ত হাতটি দিয়ে লোকটার একটি হাত চেপে ধরল, ফলে শুরু হয়ে গেলো দু'জনের মাঝে ধস্তাধস্তি। আত্তিলিওর কাঁধের ওপর দিয়ে তখনো মেয়েটাকে দেখা যাচ্ছে, যার যারপরনাই চেষ্টা ছিল ওখানে এক দরজার ফাঁকে নিজেকে লুকিয়ে ফেলার, কিন্তু তার গায়ের হলদে জ্যাকেট সে পরিকল্পনায় আড়ঠ্যাকা দিয়ে বসেছিল।

আত্তিলিও তাকে আক্রমণ করলেও, একবারও সে কার্লোর মুখের দিকে চায় নি; তার চেহারা ছিল কার্লোর বুকের ওপর আড়াআড়ি চেপে রাখা, আর তার চুলগুলো কার্লোর চিবুক ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছিল কিছুক্ষণ পরপর। তারা দুজন সমানে ধস্তাধস্তি চালিয়ে গেলেও, কার্লো একটিবারের জন্যও মুখ খুলে চেঁচিয়ে উঠতে পারল না যে - কি বালটা ফেলছিস তুই আমার সাথে? তোর মাথা কি চোদ খেয়ে গেছে?

তবে সে বলতে পারল না কিছুই, কারন, ততক্ষণে তার নাকে নোংরা সাদা ধোঁয়ার মতো কি এক বস্তু ঢুকে গেছে, খালি চোখেই যে ধোঁয়া সে দেখতে পেল, যাকে মৃত্যুর গন্ধ হিসেবে চিহ্নিত করতে কার্লোর বেগ পেতে হয় একমুহূর্তও। মৃত্যুর সে গন্ধ, যাকে এই গল্পের শুরুতে বয়ান করা পন্থা অবলম্বন করে যে কেউ চাইলেই পুনরুৎপাদন করতে পারে, তীব্রতায় সে গন্ধ খানিকটা হালকা হলেও। কাজেই সে ঠোঁট কামড়ে মুখ বন্ধ করে রাখে। ধস্তাধস্তির তীব্রতা বাড়লে যখন তার পক্ষে শ্বাস নেয়াও কঠিন হয়ে পড়ছিল ক্রমশ, কার্লো এমনভাবে তার মাথাটা ঘুরিয়ে নিল যে, তার এই প্যাঁচে আত্তিলিওর ঘাড় মটকানোর আওয়াজ স্পষ্ট শোনা গেলো। এই মাথা ঘোরানোর ফাঁকেই কার্লো লাইনম্যানকে দেখতে পেল, যে কোনরকমের অংশী হবার ইচ্ছে ছাড়াই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের দুজনের লড়াই উপভোগ করছিল। কার্লো ভাবলো - লোকটা কি বুঝতে পারছে না যে, তারা দুজনে আসলে একে অপরের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে থাকা হদ্দ মাতাল নয়, বরং তারা একে অপরের জান কেড়ে নেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত? সম্ভবত, তারা দু'জন কীভাবে একে অপরের পেশীকে খাবলে ধরে আছে - এটাই লোকটা বুঝতে পারছিল না। কার্লো এ পর্যায়ে খানিকটা বিস্ময় নিয়ে ভাবা শুরু করলো যে, তার জম চাপে ভর্তা হয়ে যাওয়ার বদলে আত্তিলিওর এই ভয়াবহ কঙ্কালসার হাতদুটো এখনও টিকে আছে কীভাবে? প্রকৃতপক্ষে আত্তিলিওর হাতের মুষ্টিও ছিল দারুণ শক্তিশালী, যদি মৃত্যুর গন্ধে কার্লোর নাক মুখ বন্ধ না হয়ে আসতো, তবে এতক্ষনে কার্লো নিজেও চেঁচিয়ে উঠত দারুণ যন্ত্রণায়।

সে ততক্ষণে আত্তিলিওর এহেন আক্রমনের হেতু বুঝতে পেরেছে, এবং বিস্ময়কর হলেও, তার এ আক্রমণ এখন আর তার কাছে অদ্ভুত, কিংবা জানোয়ারের মতো কোন আচরণ বলে মনে হচ্ছে না। আত্তিলিও যখন তার শরীরের সব শক্তি এক করে তার হাত ভাঙ্গার চেষ্টায় রত, কার্লো ঠিক সে মুহূর্তেই পরিপূর্ণভাবে বুঝতে পারল ওকে।

কার্লো এ পর্যায়ে পুনরায় তার মাথা উঠিয়ে একপাশ করা মাত্রই দেখতে পেল যে লোকটার চোখদুটো একদম টেঁসে বন্ধ করা, তার চিবুকের হাড্ডি এমন ঝকঝকে যেন কেউ ওয়াক্স করে গোঁফদাঁড়ি সব তুলে এনেছে, তার মুখ এতোখানি হাঁ করা, যার মধ্য দিয়ে সহজেই মৃত্যুর গন্ধ ভকভক করে বেরিয়ে আসছে। এ পর্যায়ে এসে কার্লো নিজেও তার চোখ বন্ধ করে ফেলে, আত্তিলিওর হাঁ করে রাখা মুখগহ্বরের দিকে তাকিয়ে থাকা আর সহ্য হচ্ছিল না তার। সে পুরো মনঃসংযোগ স্থাপন করে মাটির ওপর তার পা গেড়ে রাখা, আর দু'হাতের বজ্রমুষ্টি এঁটে রাখার ওপর।

ক্রমাগত বেজে চলা স্টেশনের ঘণ্টির মাঝেও সে আত্তিলিওর হৃদপিণ্ডের ধুকপুকানো স্পষ্টতই অনুভব করতে পারছিল তার নিজের পাঁজরের হাড়ের বিপরীতে, যেন মিসাইলের মতো ছুটে এসে যেকোনো মুহূর্তে হৃদপিণ্ডটা পতিত হবে কার্লোর ওপর, আর তাকে টুকরো টুকরো করে ফেলবে।

সে ঠিক করলো, এ খেলা এখন শেষ করতে হবে। গন্ধটা সে এখন উপর নীচ ডান বাম - সবদিক থেকেই সমানে পাচ্ছে। তার নাক, মুখ, চামড়ার ওপর প্রতিটি লোমের ডগা দিয়ে সমানে সে গন্ধ ঢুকছে ভকভকিয়ে। আত্তিলিওর প্রচেষ্টা যেমন মরিয়া, তার মৃত্যুগন্ধও ঠিক তেমনি বেপরোয়া। এতোক্ষনে বোধয় সে গন্ধ কার্লোর মস্তিষ্কের দখল নিয়ে নিয়েছে, কারন তার ভেতরটা পাগল পাগল লাগছে। কার্লো একটা পা সামনে বাড়িয়ে প্যাঁচ কষে আত্তিলিওকে আছড়ে ফেললো তার পাছার ওপর। বদলে যাওয়া পজিশনে আত্তিলিওর মাথা পিছলে এসে আস্তে করে ঝুঁকে পড়লো কার্লোর পেটের ওপর, তার হাতের মুষ্টি ঢিলা হয়ে এলো ক্রমশ, কার্লোর হাতের পেশীর বদলে এখন তার মুষ্টিতে ছিল কেবল কার্লোর দু'হাতের কবজিদু'টি। তার টেনে টেনে নেয়া শ্বাস কিম্ভূতকিমাকার এক শব্দ উৎপাদন করছিল। একপর্যায়ে সে কার্লোর হাতের কবজিও ছেড়ে দিলো, এবং কার্লোর কোন ধাক্কা দেয়া ছাড়াই সে ধপাস করে বসে পড়লো রাস্তার উপর। তার মাথা বেকায়দায় পেছন দিকে হেলে পড়লে তার পুরো শরীরটাই মাথাকে অনুসরণ করে, এবং সে রাস্তার ওপর টান হয়ে শুয়ে পড়ে।

কার্লো তাকে টেনে তোলা, বা কয়লার গ্যাস স্টেশনের দেয়ালে হেলান দিয়ে বসিয়ে রাখা - এসব কোনকিছুর মধ্য দিয়েই গেলো না, কেননা সে আসলে ঐ গন্ধটা আর সহ্য করতে পারছিল না একদমই। আত্তিলিও যখন রাস্তার ওপর টান হয়ে শুয়ে, তখন সে এটা ভুলে গেলো যে কার্লো আসলে আত্তিলিওর সমস্যাটা বুঝতে পেরেছিল, এবং প্রায় চিৎকার করেই উঠছিলো যে - তোর মাথাটা কি চোদ খেয়ে গিয়েছিল রে হারামজাদা? কিন্তু সে মুখ বন্ধই রাখল শেষমেশ।

অপর ট্রেনটা ততক্ষণে কাছাকাছি এসে পড়েছে, তার শব্দ শুনলেই সেটা বোঝা যাচ্ছিল, সম্ভবত ব্রিজের পাশ দিয়ে ছুটে চলছিল বাহনটা এখন। সে রাস্তার শেষমাথায় উঁকি দিলো আবারো মেয়েটাকে খুঁজবার জন্য। মেয়েটা ততক্ষণে দরজার নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে মাঝরাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছে। সে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল সাদাকালো বস্তার মতো স্তূপ হয়ে রাস্তার ওপর পড়ে থাকা আত্তিলিওর শরীরের ওপর। তারপর, খুব ধীরপায়ে হেঁটে সে কার্লোদের পাশে এসে দাঁড়ালো।

এখন কার্লো চাইলে চলে যেতে পারে; সে আত্তিলিওকে পেছনে ফেলে গ্রেড ক্রসিং এর দিকে পায়ে পায়ে হাঁটা শুরু করে। লাইনম্যানকে দেখে মনে হচ্ছিল যে ব্যাটা পুরো মনোযোগ দিয়ে রেললাইনের দিকেই তাকিয়ে আছে, যার ওপর যেকোনো সময় ট্রেন এসে হাজির হতে পারে। তবে সে যে আড়চোখে কার্লোর দিকেই তাকিয়ে ছিল, সেটা কার্লো টের পাচ্ছিল। লাইনম্যান তাকে কিছুই বলল না, এমনিতেও যখন দরকার ছিল, তখন সে চেঁচায় নি মোটেও। কার্লোর ওপর ট্রেন তার সমস্ত আলো নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ট্রেনের জানালার পাশে বসা যাত্রীগুলো কার্লোর মুখের দিকে ঠায় তাকিয়ে থেকে, কার্লোর চেহারা থেকে তারা কি ভাবে, বা কি পাঠ গ্রহণ করে - সে তারাই ভালো জানে।

কার্লো হাঁটতে থাকলো। বুকের ওপর দু' হাত ভাঁজ করে হাঁটতে হাঁটতে সে নিজের দু'হাতের পেশী টিপে টিপে দেখে। আত্তিলিও লোহার বেড়ির মতো দু' হাতের চাপ খেয়ে জায়গায় জায়গায় এখনও ব্যাথা। তার চোখের সামনে ভাসমান আত্তিলিওর ফ্যাকাশে মরা চামড়া। সে বুঝতে পারছিল, আত্তিলিওর সাথে এই মারামারির পর তারপক্ষে আর কখনোই আগের সে মানুষটি হওয়া সম্ভব নয়। সে রাস্তার আঁধারঘেরা পথ ঘেঁষে হাঁটতে থাকলো, তার চোখের পাপড়ি, মুখাবয়ব, হাঁটু তখনো কাঁপছিল তিরতির করে। স্নায়ুর ওপর কোপটা গিয়ে পড়েছে তার। সে ভাবছিল, আত্তিলিওর হাতের চাপ খেয়ে তার স্নায়ুতন্ত্র মোটের ওপর ভোগলা হয়ে গেছে, ফলে স্নায়বিক চাপ থেকে সে আজীবনের তরে মুক্তি পেয়েছে।

কিন্তু কিসের কি? তার চোখের সামনে পর্দার মতো বারবার ভেসে উঠছিল সে ফ্যাকাসে ত্বক। মাথা থেকে ছবিটাকে তাড়ানোর জন্য সে পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে তার প্রেমিকার ন্যাংটো, ভারী, কামনা উদ্রেককারী শরীরখানার কথা ভাবার চেষ্টা করে। কিন্তু তা কিছুতেই একটা আকৃতিতে পৌঁছায় না, বরং একটুকরো সাদা মেঘের মতো ভেসে থাকে তার মস্তিষ্কে, আর মেঘের সে সাদা রং গিয়ে মেলে আত্তিলিওর শরীরের মরা সাদা চামড়ার সঙ্গে।

কার্লো রেলরোড স্টেশনের শুঁড়িখানায় গিয়ে হাজির হয়, কিন্তু ভিতরে ঢোকে না; সে পরিবেশককে দরোজায় দাঁড়িয়েই ইশারায় বলল তাকে ব্রাণ্ডি দিতে, ওষধি ব্রাণ্ডি - যদি থেকে থাকে।

ব্রাণ্ডির জন্য অপেক্ষা করতে করতেই কার্লো দেখল, পার্কের ভেতরের রাস্তা ধরে একটা হলুদ জ্যাকেট হাওয়ায় ভেসে এগিয়ে আসছে তার দিকে। আত্তিলিওর সে প্রেমিকা, আগের চে তার হাঁটার গতি এবার অনেক ধীর। সে কার্লোকে আবিষ্কার করলো শুঁড়িখানার সামনে, কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি যেন ভাবল, তারপর পুনরায় হেঁটে এগিয়ে এলো কার্লোর দিকে, নতমস্তকে, মাপা পদক্ষেপে। এই ফাঁকে কার্লো মেয়েটার পুরো শরীরটাকে চোখে মেপে নিতে পারল। খুবই সাধারণ একটা শরীর, কিন্তু তা কেবল দামড়া, গাঁট্টাগোট্টা এক ব্যাটামানুষের শরীরেই তৃপ্ত হবে।

মেয়েটা একদম তার কাছে এসে দাঁড়ালো। তার নীল চোখ কার্লোর চোখে বিঁধিয়ে দিয়ে রুক্ষকণ্ঠে বলল, "শুকরিয়া, ওকে সরাসরি ঘুষি মারেন নি, তাই,"
"ব্রাণ্ডি" কার্লোর পেছন থেকে পরিবেশনকারী চেঁচিয়ে বলে। কার্লো ঘুরে দেখল না। একটু পর তার কানে ভেসে এলো বাইরে পেতে রাখা টেবিলের ওপর ব্রাণ্ডির গেলাস রাখবার ঠকাঠক আওয়াজ।
মেয়েটা তাকে বলল, "আপনি তো এসব আগে থেকেই প্ল্যান করে রেখেছিলেন, তাই না?"
কার্লো বলল, "এতক্ষণে আপনার বুঝে যাওয়ার কথা যে আমি একটা ভুল করেছি, আমি আপনাকে অন্য একজনের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছি। দুঃখের বিষয় হোল, ঐ বেকুবটা সেটা বুঝতে পারে নি।"
জবাবে মেয়েটা কাঁধ শ্রাগ করে দূরে কোথাও তাকিয়ে রইল। কার্লো এবারে মেয়েটাকে প্রশ্ন করলো, "মাফ করবেন, কিন্তু আত্তিলিও এই ধারনাটা পেলো কোথা থেকে যে কেউ আপনাকে ওর কাছ থেকে কেড়ে নিতে চায়?"
"কারন, এমন কেউ আসলেই আছে,"
"এমন কেউ ... খুব দামড়া সাইজের নাকি?"
"হ্যাঁ, অনেক পেটা শরীর তার। তো, এতে দোষ কোথায়? আত্তিলিও চাইত যে আমি আবার আগের মতো হয়ে যাই, যেখানে ও নিজেই আর আগের মতো ছিল না। এছাড়া আমার পরিবারেরও আর অনুমতি নেই ওর সঙ্গে এ সম্পর্কে।"
"এখন আছে কেমন সে? বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিলেন?"
হ্যাঁ, মেয়েটা জানায় যে সে সেটা করেছে, কিন্তু আত্তিলিওর অবস্থা এখন খুব খারাপ। আত্তিলিওর মা মেয়েটাকে পাঠিয়েছে দ্রুত যেখান থেকে পারে একটা ডাক্তার ধরে নিয়ে আসতে। কার্লো স্পষ্টতই বুঝেছিল, এই সাঁঝের ব্যস্ত সড়ক ডিঙ্গিয়ে ওর মতো মেয়ের পক্ষে দ্রুত কোন ডাক্তার ধরে আনা সম্ভব হবে না।
"ডঃ ম্যানজন কই বাস করে জানেন? ভিয়া কাভ্যরে?"
"হ্যাঁ, ভিয়া কাভ্যরের মুখেই।"

মেয়েটা এককদম পিছিয়ে আসে; বিদায় নিয়ে ঘুরে হাঁটা শুরু করবে ঠিক এমন সময় কার্লোর ভেতরে এক তীব্র কৌতূহল সঞ্চারিত হয়। সে মেয়েটাকে থামানোর জন্য একটা হাত প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বাড়িয়ে দেয়। তার আসলে একবার এ প্রশ্নটি করবার ইচ্ছে হচ্ছিল যেঃ ক্ষমা করবেন, আপনি তো দীর্ঘদিন ধরেই ওর সঙ্গে আছে, আপনি কি ঐ গন্ধটা কখনো পেয়েছেন ওর শরীরে ...? কিন্তু তা আর বলা হয়ে ওঠে না। হাত নামিয়ে সে শুধু তাকে শুভরাত্রির সম্ভাষণই জানাতে পারে। মেয়েটা আস্তে আস্তে হেঁটে চলে যায়।

ব্রাণ্ডি শেষ করে সে বাড়িতে ফিরে আসে। পানির কলের নীচে একদম ন্যাংটো হয়ে দাঁড়িয়ে সে এতোটা উৎসাহ নিয়ে এবং দীর্ঘসময় ধরে গোসল করে যে তার মা'র ঘুম ভেঙ্গে যায়, এবং নিজের কামরা থেকে সে চেঁচিয়ে কার্লোকে সাবধান করে, গোসলে বেশী সাবান ক্ষয় করে পয়সার খরচ না বাড়াতে।

সে রাতে কার্লো আত্তিলিওর সাথে তার মারামারির ঘটনাটা স্বপ্নে দেখে, আর সকালবেলা কর্মসংস্থান অফিসে গিয়ে সে শুনতে পায়, আত্তিলিওকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।

"জার্মানি," কার্লোর মতোই এক হদ্দবেকার বলে ওঠে।

"কাকে নিয়ে কথা বলছ?" কে যেন মাত্রই ভেতরে প্রবেশ করলো। "এই আত্তিলিওটা কে? তোমাদের পরিচিত কেউ?" নতুন লোকটা কার্লোকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়।

"পরিচিত কিনা? কে জানে, তবে আমি ওর শরীর থেকে ভেসে আসা মৃত্যুর গন্ধ শুঁকেছিলাম," কার্লো উত্তর দেয়। লোকটা কার্লোর মুখোমুখি হয়ে তাকে কিছু বলতে চাইছিল, কিন্তু তখনি ভেতর থেকে কেউ তার নাম ধরে ডাকে, ফলে তার ঘুরে দাঁড়িয়ে নাম ডাকা কেরানীর দিকে পাল্টা চেঁচিয়ে বলা লাগে - "এই যে আমি,"

তিন সপ্তাহ বাদ সে আবারো আত্তিলিওর সঙ্গে তার ধস্তাধস্তির স্বপ্ন দেখে। সেদিন সকালেও ঘুম থেকে উঠে সে প্রতিদিনের মতো রওনা হয় কর্মসংস্থান অফিসে। পথিমধ্যে এক কুয়ার পাশে সে দাঁড়ায় এবং রান্নাঘরে ব্যবহৃত একটা ম্যাচের বক্স থেকে কাঠি নিয়ে সেটা ঠুকে জ্বালায়। এর থেকে দামী ম্যাচ তার পক্ষে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। এই করতে করতে সে হঠাৎ আবিষ্কার করলো, একটা ঝুলন্ত শোক - ব্যনারে, বড় বড় কালো অক্ষরে আত্তিলিওর শেষকৃত্যের সংবাদ টাঙ্গিয়ে রাখা।

(জন শেপ্লেই - এর ইংরেজি অনুবাদ থেকে সাজিদ উল হক আবিরের বঙ্গানুবাদে)
বাংলা ট্রিবিউন ঈদ সংখ্যায় প্রকাশিত
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৬
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×