somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সরল বিশ্বাস

১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপনি যে নম্বরে ফোন করেছেন তা এই মুহূর্তে ওয়েটিংয়ে আছে!
.
আর কল দিবে না বলে তবুও কল দিতে থাকে ছেলেটি
.
আধা ঘন্টা পর ও একই শব্দ ভেসে উঠে,
.
আপনি যে নম্বরে ফোন করেছেন তা এই মুহূর্তে ওয়েটিংয়ে আছে
.
এভাবে ইদানিং প্রতিদিন গভীর রাতে ওয়েটিংয়ে থাকে মেয়েটি! সকালে কে ফোন করেছে জিজ্ঞেস করলে বলে মামা বাহির থেকে ফোন করে! ঐ দেশে দিন কিন্তু আমাদের দেশে গভীর রাত!
.
ঘন্টার পর ঘন্টা মামার সাথে কিসের কথা জিজ্ঞেস করলেই মেয়েটি রেগে গিয়ে বলতো, তুমি আমাকে অবিশ্বাস করো? ওকে ঠিক আছে! তুমি তোমার সন্দেহ নিয়ে থাকো! আমাকে আর ফোন দিবা না!
.
সম্পর্কে বিশ্বাস ই মূল কথা!
.
অতঃপর বিশ্বাসের উপর মেয়েটি বিশ মার্কসের রচনা লিখে ম্যাসেঞ্জারে সেন্ড করলো! ছেলেটি রচনাটি পড়ে ডাবল জিরো দিয়ে রিপ্লাই করলো!
.
ওহ্ নো! কিচ্ছু ভালো লাগছে না! এই মুহূর্তে রোদেলাকে ফোন করতে হবে! রোদেলা সেই মেয়ে যার সাথে কথা বললে মেয়েটি তিনদিন কথা বলা বন্ধ করে দিতো! ইভান অনেক করে বুঝিয়েছে রোদেলা তার জাস্ট ফ্রেন্ড!
.
জাস্ট ফ্রেন্ড হলেও তো রোদেলা তোমাকে লাভ করে তাই না সুতরাং তার সাথে কথা বললে আমার সাথে না! বলে দিলাম!
.
অনেক দিন হয়ে গেলো ইভান রোদেলার সাথে কোন যোগাযোগ করেনি!
.
হঠাৎ ইভানের ফোন পেয়ে রোদেলা জিজ্ঞেস করে বসলো, প্রেমিকার সাথে ঝামেলা চলছে নাকি! মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি!
.
এভাবে রোদেলার সাথে কথা বলে রোজ মেয়েটিকে ভুলে থাকার চেষ্টা করতে থাকে ইভান! এক পর্যায়ে সে উপলব্ধি করে রোদেলার মতো কেউ তাকে ভালবাসবে না! কিন্তু একটাই সমস্যা রোদেলা অনেকটা সাদামাঠা! দেখে ক্রাশ খাওয়ার মতো লুকিং নেই! হাসলে প্রেমিকার মতো টোল পড়ে না! রাস্তায় একসাথে হাঁটলে কেউ ওয়াও মেয়েটি কিন্তু সেই বলে কমেন্ট করে না!
.
তবুও রোদেলার মাঝে যেনো কিছু একটা আছে! অদ্ভুত কিছু একটা! একটু একটু করে টানে!
.
ইদানিং সকাল বিকাল সন্ধ্যা রাতে রোদেলার সাথে কথা বলে কখনো দেখা করে তার সময় কাটে! এরমাঝে রোদেলার বিয়ে ঠিক হয় কিন্তু ইভান আকারে ইঙ্গিতে বুঝায় রোদেলা ছাড়া তার চলবে ই না! রোদেলা ইভানের চোখের ভাষা বুঝে সম্পর্কটি না করে দেয়!
.
অনেকদিন পর একটি ভালো সম্পর্ক আসছিলো রোদেলার জন্য! তার বাবা শেষ বারের মতো বললো, দেখ মা! তোর জীবন তোর সিন্ধান্ত তবে এমন সম্পর্ক পাওয়া যায় না!
.
রোদেলার কাছে এখন পৃথিবীর সব সম্পর্ক ই তুচ্ছ!
.
রোদেলা একদিন ইভানকে জিজ্ঞেস করলো তোর প্রেমিকার সাথে কি যোগাযোগ হয়? ইভান বললো, না! সে ও ফোন দেয় না! আমিও না!
.
রোদেলা ইয়ার্কির সুরে বললো, আমাকে নিয়ে কিছু ভাবছো? জানি আমাকে বিয়ে করলে তোমার গায়েও কালো লাগবে! ইভান বললো, সেই কালি দিয়ে কপালে টিপ দিয়ে দিয়ো তাহলে তুমি ছাড়া কারো নজরে পড়বো না!
.
হঠাৎ একদিন ইভানের এক্স গার্লফ্রেন্ড ফোন করলো! বললো, তার খুব মন খারাপ! কান্না কান্না স্বরে বললো, আসলে আমি তোমার সাথে মিথ্যে বলেছি! ওটা আমার মামা ছিলো না! আমাদের আগের বাসার মালিকের ছেলে! যাকে দেখে প্রথম ক্রাশ খেয়েছিলাম!
.
আর কিছু বুঝতে বাকী রইলো না ইভানের! মেয়েটি দুই ফোঁটা চোখের জল ফেলে বললো, আমি জানতাম না ঐ ছেলে আমার বান্ধবীর সাথেও রিলেশন কন্টিনিউ করছে....!
.
আমি আবার তোমার লাইফে ফিরতে চাই বলে..... লাইন কেটে দিলো!
.
কিছুদিন পর ইভান ঐ মেয়েটিকে বিয়ে করে! তার অনেক কারণও আছে! সবচেয়ে বড় কারণ মেয়েটি তার প্রথম ক্রাশ!
.
রোদেলা সেটি বুঝতে পারলো! তাদের রিলেশনে ফিরে আসাকে নিজ থেকে কনগ্রেটজ করলো! একদিন তাদের ট্রিটও দিলো জমানো টাকা দিয়ে! বেশ হাসিখুশি ছিলো ওরা তিনজন!
.
ইভান ট্রিট শেষ রোদেলাকে উদ্দেশ্য করে বললো, তুমি যখন ছিলে না তখন রোদেলা আমাকে মানসিকভাবে স্ট্রং থাকার জন্য অনেক সাহায্য সহযোগিতা করছে!
.
হাসতে হাসতে রোদেলা বেরিয়ে গিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলো! আসার সময় ছোট বোনের জন্য রং পেন্সিল কিনে নিলো!
.
বাসায় ফিরে ছোট ভাইয়ের স্কুল টিউটোরিয়াল তৈরী করে দিলো!
.
এর মাঝে তার টিউশনির ছাত্রী বাসায় আসলো! আধা ঘন্টা পড়িয়ে বললো আজ ভালো লাগছে না কাল সকাল সকাল পড়তে চলে এসো!
.
কিছুদিন যাবত রোদেলার মা অসুস্থ! চুলোয় ভাত দিলো! ফ্রিজ থেকে রান্না করা মাছ গরম করে ভাই বোনদের খাওয়ায়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলো!
.
তারপর মুখে একটু ফেয়ার এন্ড লাভলী মেখে ঘুমিয়ে গেলো! আজ তার জীবনে অনেক কিছু ঘটে গেলো কিন্তু কেউ টের পায়নি! কাউকে কিংবা নিজেকেও তা বুঝতে দেয়নি! মধ্যবিত্ত ফ্যামেলির বড় মেয়ে বলে কথা!
.
আগামীকালের সূর্য তাদের জন্য উঠে! তাই সকালটা এতো সুন্দর......! বিশ্বাসের উপর তারা বিশ লাইনের একটি রচনা লিখে কাউকে পাঠায় না! সরল বিশ্বাস!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:২০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×