আগামীর বাংলাদেশ গড়ার জন্য যে লোভ, হিংসা, অহংকার ত্যাগ করতে হবে আমি জানি তা কেবল একনিষ্ঠ শিবির কর্মীদের দ্বারা সম্ভব। শিবিরের এই আত্মপ্রকাশকে আমি সাধুবাদ জানাই। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজে শিবিরের কলেজ শাখার দায়িত্বশীল ছিলাম। আমি নিজে আমার স্কুল শিক্ষকদের থেকে বায়তুল মাল কালেক্ট করতাম। মাসিক রিপোর্ট মেইনটেইন করতাম। চবি ক্যাম্পাসে শিবিরের একটি বিল্ডিং ছিলো। এসআরসি ভবন নামে জানতাম। ওখানে শিবিরের একটা লাইব্রেরী ছিলো। আমি সেই লাইব্রেরীর চাবির দায়িত্ব নিয়েছিলাম। তারপর একটা একটা করে সব বই এক প্রকার চুরি করে আমার বাসায় নিয়ে এসেছিলাম। ঘটনা এখানে শেষ না। একদিন ক্যাম্পাস শাখার দায়িত্বশীল আমার বাসায় বস্তা নিয়ে চা খেতে এসেছিলো। আমার সন্দেহ হচ্ছিলো। এমন হবে আগেই অনুমান করেছিলাম। তাই বইগুলো উল্টিয়ে রাখছিলাম সব। কিন্তু সব জল্পনার অবসান করে দায়িত্বশীল ভাই চা পান শেষে বস্তা ভরে সব বই নিয়ে চলে গেছে। সুতরাং হয়তো ২০০৬/২০০৭ সালে শিবিরের কাছে আমি ছিলাম একজন চোর। বই চোর।
মজার বেপার হলো তারাই আমাকে কলেজ শাখার দায়িত্বশীল করেছিলো। সাথী করার জন্য তারা আমাকে হয়তো অনেকভাবে চেয়েছে। আমি কেনো জানি পালিয়ে থাকতাম।
একদিন শহীদ আব্দুর রব হলে শিবির নবনির্বাচিত কমিটি ঘোষণা হবে। আমিও গেলাম। জানতাম না আমাকে পোস্ট দেওয়া হবে। একপাশে গিয়ে বসলাম। হঠাৎ করে একজন একজন করে সভাপতি সেক্রেটারি ঘোষণা করা হচ্ছিলো। ওখানের প্রায় ভাই আমার পরিচিত ছিলো তখন। আমি মনে হয় সবার ছোট ছিলাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে পড়ি জাস্ট। বাকীরা প্রায় সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বভাবতই আমি ভাইদের খুশির খবরে তালি মারতে যাবো এমন সময় পাশ ফিরে দেখি সবাই হুহু করে কান্না করতেছে। আল্লাহর কসম, ওরা এই দায়িত্ব পালন করতে পারবে কি না তা ভেবে বাচ্চাদের মতো কান্না করতেছিলো। আর এটা হলো শিবির।
সেদিন থেকে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার মতো ফাজিল আর যা করুক শিবিরে টিকে থাকতে পারবে না। কিন্তু আমি যতদিন বেঁচে আছি ওদের মুখপাত্র হিসেবে থাকবো। কারণ আমি ওদের কাছ থেকে দেখেছি।
কিন্তু মাস্টার্সে অর্থনীতির ক্লাশে অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম স্যার কিছু তথ্য উপস্থাপন করে বলেছিলো, সীমান্তের কিছু ইলিগ্যাল ব্যবসার সাথে জামায়াত জড়িত। স্যার এতো শ্রদ্ধেয় যে আমি এখনো সীমান্তের কাউকে পেলে জিঞ্জেস করি, তাদের কাছে কোন প্রমাণ আছে কি না! জানিনা সত্য মিথ্যা।
একাত্তরে তাদের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা আমাকে এখনো ভাবিয়ে তুলে। হুহু করে কাঁদা একটি দল কিভাবে মা বোনদের ইজ্জত নিবে?
তবুও শিবির আমার কাছে যৌবনের প্রথম প্রেমের মতো। যাদের অন্তত পদ পদবীর লোভ নেই।
পরে যখন আমি জাসাসের যুগ্নআহবায়ক হয় ঘটনাচক্রে তখন আবদুল্লাহ আল নোমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিবিদ এবং সাবেক সংসদ সদস্য, মৎস্য মন্ত্রী এবং খাদ্য মন্ত্রী তিনি খসরু সাহেবের প্যানেল হওয়ায় আমাদের ফুল পর্যন্ত গ্রহণ করেননি। পদ পদবী ওদের কাছে আকাশের চাঁদের মতো।
অন্যদলগুলোর সাথে জামায়াত কিংবা শিবিরের এখানেই যোজন যোজন পার্থক্য।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


