দুই শুক্রবার আগে আচমকা মনে হলো বছরের পর বছর সপ্তাহের ছুটির দিনটায় ঘরবন্দী হয়ে আছি এটা কেমন কথা! সিদ্দিকীকে বললাম, চলো যমুনায় যাই (ওটাই কাছাকাছি কোনো প্রেক্ষাগৃহ), যে মুভিটা সামনে পাবো সেটাই দেখবো। সিদ্দিকী খুশিই হলো। ...তখন 'আয়নাবাজি' চলছে, ১০ মিনিট হয়ে গেছে, ওটাই দেখবো ঠিক হলো। ...যখন ঢুকলাম তখন আয়না মানে চঞ্চল চৌধুরী কালি বাউস মাছ নিয়ে কথা বলছে। ...গোটা ছবিটা দেখার পর আমি এক টুকরো মেঘ হয়ে গেলাম। মুভি বিশারদদের মতো ব্যাখ্যা করতে তো পারবো না, অতোশত বুঝিও না...দুইটা বিষয় অবাক করলো। ঢাকা বিশেষ করে পুরান ঢাকা এতো সুন্দর তা এই কয় বছরেও বুঝতে পারিনি...ঢাকাকে দেখছিলাম আর মনে হচ্ছিল পর্দা থেকে দৃশ্যগুলো ধরে এনে কপ কপ গিলে ফেলি। আর দ্বিতীয় হলো একজন অভিনেতার ক্ষমতা। চঞ্চলের বিভিন্ন রূপে উপস্থিত হওয়াটা হা করে দেখার মতো। পরদিন পর্যন্ত একটা ভালো মুভি দেখার রেশ রয়ে গেল।
কাল ছিল আরেক ছুটি। দুপুরে মূলার শাক ভাজা আর বাচ্চা পাবদার ঝোল দিয়ে ভাত খাওয়ার পর ইউটিউবে 'অজ্ঞাতনামা' দেখতে বসলাম। তৌকির পুরো শ্বশুর বাড়িকে তুলে এনেছে। মোশাররফ যথারীতি "মেরি হ্যাড আ লিটল ল্যাম্ব"...তার সাথে লিটল ল্যাম্ব বউও আছে...প্রথম ৩০ মিনিট দেখার পর বিরক্ত লাগতে শুরু করে। আধা ঘণ্টা বাকি থাকতেই বন্ধ করে দিলাম। তৌকির নিজে যেমন হ্যাবলা ঢিলা তার মুভিও তেমন। শহীদুজ্জামান সেলিম আর শতাব্দী ওয়াদুদ ছাড়া বাকি কেউই টানতে পারলো না।
জয়ললিতা আম্মাজি আর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাকিলের মৃত্যু কাছাকাছি সময়ে হলো। শাকিলের মৃত্যু নিয়ে যত যা ফিসফাস শোনা যাচ্ছিল, তা তার দাফনের পরই শেষ। তারপর দেশ আর দেশের বাইরে থেকে শোকসভা টাইপের খবর ছাড়া আর কোন আওয়াজ নেই। ওইদিকে, আম্মা বিষয়ক আলোচনা বহাল থাকলো। মানুষজন ঝপাং ঝপাং আত্মহত্যা করতে শুরু করলেন। স্বেচ্ছা মৃত্যুর সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়ে যাওয়ার পরও এই খবরে ক্লিক করার ইচ্ছা হয়নি। ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, আম্মার ৯০ কোটির বাংলো, গয়নাসহ বিশাল সম্পদের কি হবে তা নিয়ে নানা খবর দিচ্ছে অনলাইন পোর্টালগুলো। এখন আবার বলা হচ্ছে আম্মার মৃত্যু নাকি রহস্যজনক...। আমাকে কেন জানি জয়ললিতা নামক মাখনের টুকরো নারী টানতে পারে না। একদমই না। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমাকে অনেক দূরের শহরে থাকা ৮১ বছর বয়সী মাকে নিয়ে ভাবতে হয়, চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পরিবারের সদস্য, স্বজন, বান্ধবী, প্রতিবেশি, গৃহকর্মী, অফিসের পরিচ্ছন্নতা কর্মী এদের নিয়ে ভাবতে হয়। জয়ললিতার মতো উচ্চ পর্যায়ের মানুষকে নিয়ে ভাববো কীভাবে?
দেশের মানুষ এখন রোহিঙ্গা নিয়েও সোচ্চার। সু চি কিন্তু রোজ চুলে তাজা ফুল পরেই যাচ্ছে...!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



