সব পথ হারিয়ে যাওয়ার পর গুহাবাসী না হয়ে উপায় কি?
শেষ কোনদিন একটা কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে আপনজনদের সাথে হাত নেড়েনেড়ে গল্প করেছি সেটা বলতে হলে কিছুক্ষণ ভাবতে হবে। কোনো আড্ডায়, এমনকি বাসে বসেও কারো সাথে কথা বলতে পারি না। মানুষ বড় বেশি পারসোনাল হয়ে যায়। শুরুটাই হয় এভাবে,
"আপনার বাচ্চা কয়জন?"
"কি বলেন...বাচ্চা নাআআইইই?"
"বাচ্চা তো দরকার"।
"ডা. অমুককে দেখান..."।
কতো সহজেই না মানুষ অন্যের শরীরের চামড়া কেটে সেখানে লবণ মাখিয়ে দিতে পারে!
আমার জন্মদিনে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বয়সে ছোট, সমবয়সী, বয়সে বড় বান্ধবীরা বাসায় আসতো। কোনো পার্টি বা অনুষ্ঠানের আয়োজন হতো না, যার যার মর্জিতেই আসতো। আমার যে কতোরকমের বন্ধু ছিল। পাশের বাসার আপা, আরেক বাসার খালাম্মা, বান্ধবীদের মা, গৃহকর্মী, পরিবারের এবং আশপাশের বাচ্চাকাচ্চা ইত্যাদি সবার সাথেই সখ্য ছিল। রাতের ঘুম ছাড়া সারাক্ষণই সচল আমি। অথচ সেই আমাকেই অচল করে দেয়া হলো। মাধ্যমিকে পড়ার সময় থেকেই প্রিয়জনদের পাশে থেকেছি। কতো মেয়ের চোখের পানি যে মুছে দিয়েছি, সেই আমার চোখে পানি এনে দেয়া হয়। এভাবে একা থাকাটা শিখে গেছি। নিজের সঙ্গই আমাকে আনন্দ দেয়। তবু কি আর শান্তি আছে? একা থাকি শুনলেই কেউ কেউ বাসায় চলে আসতে চায়। উহু, একা আসবে না, স্বামীকেও আনবে না, প্রেমিক নিয়ে আসবে। বাসাটাকে "লিটনের ফ্ল্যাট" ভাবতে চায়।
বৃষ্টি নিয়ে ফেসবুকে হাঙ্গামা...
সেইরাতের কথা আমার স্পষ্ট মনে আছে। কলকাতার "হইচই" দেখছিলাম। সিদ্দিকীকে চ্যাটে সেটা জানাতেই বলল, "পাওলি আপার মুভি মানেই খোলামেলা দৃশ্য"।
"ছবির গল্প পড়ে সেটা মনে হয়নি। থিয়েটার কর্মীদের নিয়ে...কি আর দেখাবে...আচ্ছা দেখা যাক"।
মধ্যরাত। ছবিটা দেখতে ভালোই লাগছিল। মাঝামাঝিতে আসার আগেই বিদ্যুৎবিভ্রাট। বৃষ্টি নেমেছে। বারান্দায় যেয়ে "এই মেঘলা দিনে একলা, ঘরে থাকে না তো মন..." গাইলাম। আসলে সময় পার করার জন্যই বেসুরো গলায় এতো সুন্দর একটা গানকে নাজেহাল করলাম। কোনো একটা ছবি মাঝপথে রেখে দিতে ভালো লাগে না।...যাইহোক, সেটা ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ। অথচ ফেসবুকে কাল রাতের বৃষ্টিকে নানাজন "প্রথম বৃষ্টি" বলে পোস্ট দিচ্ছিলো। তাহলে সেই রাতের বৃষ্টিটা কি ড্রেস রিহার্সেল ছিল?
'এডাল্ট' কেন বলা হচ্ছে এটাই বুঝতে পারি না
বেশ কয়েকবছর ছবি, গান ইত্যাদি বিলাসী ভালোলাগা থেকে দূরে থাকতে হয়েছে। সিদ্দিকীর সাথে সংসার করতে এসে স্থিরতায় এলাম। নিজের মাঝে ফিরতে শুরু করি। রোজ রোজকার গ্লানি, ক্লান্তি আর অপমান থেকে নিজেকে মুক্ত করার সাহসও পাই অর্থাৎ চাকরিটা ছেড়ে দিলাম। ...সিদ্দিকীর টু টেরাবাইটের হার্ডডিস্কে অসংখ্য ছবি, টরেন্ট থেকে অনেক ছবি নামিয়ে কম্পিউটারে রেখেছে। কিন্তু আমি দেখতে চাই বোমকেশ বক্সী, রহস্য মুভি, শর্টফিল্ম, কলকাতার অন্যধারার ছবি। সাধারণ মানুষের সাধারণ পছন্দ। তাই ইউটিউবেই চোখ রাখি। প্রথমদিকে "এডাল্ট" লেখা দেখলে ওটা বাদ দিতাম। কিন্তু কোনো কোনো ছবির গল্প পড়ে মনে হতো এটা এডাল্ট হবে কেন? ছবিতে বেডসিন বা গানের দৃশ্যে খোলামেলা পোশাক এসব তো আকছার হচ্ছে। গোটা ছবি পরিচ্ছন্ন কিন্তু লিখে দিচ্ছে এডাল্ট। কোনো মানে হয় না।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



