পুরুষ প্রকাশ্যে সিগারেট খায়, সেজন্য এখন মেয়েদেরও প্রকাশ্যে সিগারেট খেতে দিতে হবে?
তাহলে তো সমান অধিকারের যুক্তিতে মহিলাদেরও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উপরের অংশ খোলা রেখে ঘুরে বেড়াতে দেয়া উচিত।
ভারত বা এ্যামেরিকা-পৃথিবীর কোন দেশে সেটা হয় ?
মদ বা সিগারেট খেলেই নারী বা পুরুষ কেউ জাতে উঠে যায় না। উপরে উঠতে হয় নিজের মেধা আর যোগ্যতা দিয়ে।
সারাজীবনই চারুকলার সামনে কিছু মেয়েকে সিগারেট খেতে দেখেছি। এখন রমনা উদ্যানে যাওয়ার সময় মন্ত্রীপাড়ার রাস্তার উপরে বসে অনেক মেয়েকে খেতে দেখি। এইসব মূর্খ মেয়েগুলি মনে করে,ছেলেদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে সিগারেট খেয়ে বিরাট কিছু হয়ে গেলো!!! অথচ এরা জানে না, সম্পত্তি,বিয়ে-বিচ্ছেদ আর সন্তানের উত্তাধিকারের ক্ষেত্রে তারা কিভাবে বৈষম্যের স্বীকার। এরা আবার নীপিড়ণ বা ধর্ষণের স্বীকার হলে সমাজের লজ্জার ভয়ে সেটা গোপন করে যায় এবং থানা বা পুলিশের কাছে যায় না।
বাংলাদেশ কোনো দিক দিয়েই ইউরোপ-এ্যামেরিকা-ক্যানাডা-অষ্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডের সমান না। আগে জনগণের নীতি -আদর্শ-দেশপ্রেম আর আইন মেনে চলার ক্ষেত্রে ওই দেশগুলির মতো হোক। শুধু ওই দেশগুলির মেয়েদের মতো সিগারেট খাওয়া নকল করলে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে না।
নিজে চা-সিগারেট-মদ কোনোটাই খাই না। নারী বা পুরুষ -কারো খাওয়াটাও সমর্থন করি না।
একটা সময় মেয়েরা নির্যাতিত ছিলো। এখন আর আগের মতো অবস্থা নাই । এখন ক্ষমতা থাকলে এমন কোনো অপরাধ নাই যেটা মেয়েরা করে না। কুড়িগ্রামের মহিলা ডিসি তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লেখায় রাতের বেলা সাংবাদিকের বাড়িতে ঢুকে তাকে পিটিয়ে কারাগারে ঢুকিয়েছে। পাপিয়া ওয়েষ্টিন হোটেলে ক্ষমতাবানদের জন্য রংমহল বানিয়েছে।
আমি দীর্ঘদিন ধরেই মেয়েদের সন্মান,মযার্দা আর সমান অধিকারের জন্য লড়াই করছি।
১৯৯২ সালে জীবনের প্রথম লেখাটাই লিখেছিলাম নারী অধিকারের পক্ষে। জীবনে কতো মেয়েকে যে বখাটে আর লম্পটদের খপ্পর থেকে রক্ষা করেছি,সে হিসাব আমারো মনে নাই। গণমাধ্যমে কাজ করার সুযোগ আর নায়িকা মডেল বানানোর লোভ দেখিয়ে তাদের অন্ধকার পথে নিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি জগতের একনামে পরিচিত কূখ্যাত অপরাধীদের বিরুদ্ধে বই লেখায় বইমেলা থেকে নিষিদ্ধ হয়েছি। কিন্ত কোনোদিন কোনো মহিলা এজন্য আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানায়নি। বরং মাত্র ১৫ দিন আগে নষ্টা এক চিকিৎসক নারী তার কুকীর্তির কথা জেনে যাওয়ার মিথ্যা অভিযোগ করে দলবল নিয়ে ফেসবুকে আমাকে হেনস্তা করেছে।
তারপরও তাদের সন্মান রক্ষার জন্য লড়াই করে যাচ্ছি।
কিন্তু মদ-মাদক আর সিগারেট খাওয়া আমি মেয়েদের সমান অধিকার বলে স্বীকার করিনা। দেশ থেকে এগুলি নিষিদ্ধ হওয়া দরকার। দেশের উন্নয়ণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার জন্য যখন সবধরনের মদ-মাদক ও নেশার বিরুদ্ধে আন্দোলন করা প্রয়োজন, তখন এরা দেশের সব মেয়েকে সিগারেট খাওয়াতে উৎসাহিত করছে কেনো?
এদের উদ্দেশ্য শিয়ালের মতো মুরগির স্বাধীনতা চেয়ে তাকে বাইরে এনে উদরস্থ করা। যেভাবে নারী স্বাধীনতার নামে সারা পৃথিবীতে সুন্দরী প্রতিযোগিতাগুলির মাধ্যমে তাদের পেশাদার পতিতায় পরিণত করা হয়।
সমান অধিকারের নামে এসব বিকৃতি প্রচার করে যারা দেশ-জাতি-সমাজ নষ্ট করতে চায়,তারা কোন জাতের আর কোন দেশের দালাল,সেটা তদন্ত করা দরকার।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৪৩