©কাজী ফাতেমা ছবি
=ভালোবাসি আল্লা'র সৃষ্টির সবকিছু=
ঝুলানো ফুল ফুটবে বলে, হাসছে রোদে ঝুলে
পাপড়ি মেলে ফুটবে কী সে? গেলাম বেভোল ভুলে!
রং কমলা থোকা থোকা, ফুটে থাকে বাগে
মৌ'পোকারা খেলছে ফুলে, রাগে অনুরাগে!
বাজছে বাজনা গুঞ্জন সুরে, হল্লা চারিদিকে
রোদ্দুর জ্বলছে তাইতো ফুলের, রঙ হয়েছে ফিকে!
(অসমাপ্ত)
০২। ©কাজী ফাতেমা ছবি
=আয় না বন্ধু এই প্রহরে=
রঙ বসন্ত মনের মাঝে, বারোমাসই থাকে
সুখের উর্মি উথাল পাথাল, হৃদয় বাঁকে বাঁকে।
হলুদ শাড়ী পরেছি আজ, হাতে হলুদ চুড়ি
ইচ্ছে আঁচল দেই উড়িয়ে, আমি ইচ্ছে ঘুড়ি।
হলুদ ফুলের মালা গেঁথে, খোঁপায় দিলাম তুলে
আজ হারাতে ইচ্ছে আমার, হাওয়ায় বেভোল ভুলে।
হাতের বালা বানিয়েছি, চাঁদ মল্লিকা ফুলে
বন্ধু যদি আসে পাশে, দেবো খোঁপা খুলে।
(অসমাপ্ত)
০৩। ©কাজী ফাতেমা ছবি
=প্রজাপতি মন=
বেগুনী রঙ শিম ফুল দেবে, দেবে খোঁপায় গুঁজে
রঙবাহারী বুনোফুল ঐ, দাও না এনে খুঁজে!
কানের ঝুমকো, হাতের বালা, দাও সাজিয়ে ফুলে
দাও না তুমি আঁচল ভরে, শেফালী ফুল তুলে।
শেফালী ফুল যাবে ঝরে, ঘ্রাণ হারানো বেলা
ভাল্লাগে না আমার এমন, মনে ঝরার খেলা।
ঝরবে পাতা এই হেমন্তে, শুকনো হাওয়ার টানে
খালি পায়ে মর্মর গানে, তুলবে কী সুর প্রাণে।
(অসমাপ্ত)
০৪। ©কাজী ফাতেমা ছবি
=গোলাপ কাব্য=
এই যে গোলাপ রং কীরে তোর! কমলা-গোলাপী?
পাপড়ি মেলে আছিস ফুঁটে, সদা প্রেম আলাপী!
কার সনে তুই বলিস কথা, কার সঙে যে থাকিস
মৌ ভ্রমরদের নিয়ে বুঝি, সুখের ছবি আঁকিস।
তোর প্রেমে যে আছি পড়ে, মাতাল করিস আমায়
ঘ্রাণের হাওয়া তোর পথেই, নিয়ে আমায় থামায়।
তোর গায়ের রঙ-দেখে আমার, হিংসে মনে লাগে
পাপড়ি মেলে তোর মত যে, ফুটতে ইচ্ছে জাগে!
(অসমাপ্ত)
০৫।
©কাজী ফাতেমা ছবি
=সেই সব দিনগুলো কাছে টানে কেবল=
কুয়াশার আবরণ ভেদ করে বিকেল সময়গুলো হয়ে উঠতো উচ্ছ্বল
ভাই-বোনদের একেকটি বিকেল, একেক রকমের খেলার আয়োজন;
স্মৃতিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠে চোখের আয়নায়,
এই তো সেদিন পায়ে পায়ে বল নিয়ে শক্ত উঠোনে দৌঁড়ঝাপ দিন
কেমন করে আঙ্গুলের ফাঁকে চলে গেলো, টেরই পাইনি!
এখনো বলের গড়াগড়ি দেখলে পা নিশপিস করে উঠে,
ইচ্ছে হয় ফিরে যাই শৈশবে, যেখানে নেই কোনো লিঙ্গ বৈষম্য
যেখানে নেই সাংসারিক ভাবনা, নেই ব্যস্ততার হাজার পেরেশানি!
স্বাধীনতার অন্য নাম শৈশব, প্রজাপতির অন্য নাম কৈশোর
ফড়িং এর অন্য তারণ্য, ধাপে ধাপে এখন কচ্ছপ জীবনের দোরে,
স্মৃতি কড়া নাড়ে, দোর খুলে ঝাপসা আলোয় দেখি
লেজ গুটিয়ে স্মৃতি পালাচ্ছে আর
রেখে যাচ্ছে শক্তি হারানো একেকটি দিন।
(অসমাপ্ত)
০৬।
©কাজী ফাতেমা ছবি
=এই তো আমার গ্রাম বাংলা এই যে আমার দেশ=
হেমন্তের সোনা রোদ ঝলমলিয়ে উঠে ফসলের ক্ষেতে,
ভেজা মাটির সোঁধা ঘ্রাণ নাকে টেনে শুরু হয় একটি আলোর প্রহর
কত বিত্ত বৈভবে মুড়ানো দেশ আমার, সুখ তুলে নেই আঁচল পেতে,
এখানে বয়ে যায় পাতায় পাতায় আর ধূলোয় স্নিগ্ধতার লহর।
(অসমাপ্ত)
০৭।
©কাজী ফাতেমা ছবি
=ক্ষমা করে দাও প্রভু=
তাঁর কোন নেয়ামত তোমরা করতে পারো অস্বীকার
তাঁর সৃষ্টির কোন রূপ অসৌন্দর্য আর বেকার!
এই যে গাছে ফল, পাশে বসে থাকা পাখি, ঝুলে থাকা ফুল
নেয়ামতের ধারা বৃষ্টি, ফুলের ঘ্রাণ, কোথায়-কোথায় আছে একরতি ভুল!
এই প্রকৃতি ঝর্নাধারা, নদী-নালা, পাহাড় পর্বত
এই আকাশ, নি:শ্বাসে টানা অক্সিজেন হাওয়া,
ঢুকে ঢুকে গিলি তাঁর রহমতের শরবত!
সারি সারি গাছ, গাছের ছায়া, সাঁই সাঁই, শনশন বয়ে যাওয়া হাওয়া
কালো সাদা মেঘ, গোধূলীয়া ক্ষণ, এইসব নয় কী পরম পাওয়া!
সবুজ পাতাদের বুকে ফুঁটে থাকা দুধসাদা ফুল, পাখির পালক
প্রশস্ত মাঠে পাতার বাঁশি বাজানো রাখালিয়া বালক!
(অসমাপত্ত)
০৮।
©কাজী ফাতেমা ছবি
=তুমি বাঘ নও নর, মানুষ হও=
কেবল হুংকার ছাড়লে কথায় কথায়, ওরে বাপ!
গর্জনে গর্জনে ঝরে আগুন, জ্বলে যাই, ওরে তাপ!
নর তুমি বাঘ নও-তুমি মানুষ
আমার মনাকাশে ওড়াও রাগের ফানুস!
ভাবছো ভয়ে থাকি আমি সিঁটিয়ে?
তাই বুঝি ঝাল ঝাড়ো মনের স্বাধ মিটিয়ে!
০৯।
©কাজী ফাতেমা ছবি
=নয়ন তারা=
পাঁচটি পাপড়ি রঙ গোলাপী, নাম যে নয়নতারা
নীল আকাশে ফুটে না সে, জমিনে তার চারা,
স্নিগ্ধ সবুজ পাতার ফাঁকে, পাপড়ি মেলে উঠে
রোজ সকালে রোদ হাসিতে, নয়নতারা ফুটে।
কত রঙের নয়নতারা, ফুটে থাকে গাছে
একটুখানি মাটি পেলেই, নয়নতারা বাঁচে।
(অসমাপ্ত)
১০।
নিমন্তন্ন রইলো-আইসো=
রাজা হাঁসের ডিম খাওয়াবো, আইসো বন্ধু আমার বাড়ি
চড়ে এসো ঝকঝকাঝক, লম্বা মতন রেলের গাড়ি!
নিমন্তন্ন রাখো যদি, বসতে দেবো শীতল পাটি
ছুঁতে দেবো সোঁধাগন্ধের, আমার গাঁয়ের ধূলো মাটি।
কলাগাছের পাকা কলা, সঙে দেবো মুড়ি মুড়কি
ছেড়ে আসো যন্ত্রের শহর, যেথায় কেবল ইটের সুড়কি।
বটবৃক্ষের ছায়া বন্ধু, শান্তির নি:শ্বাস পারবে নিতে
নিয়ে এসো সঙ্গে করে, আমার জন্য রঙিন ফিতে!
অসমাপ্ত
১১।
©কাজী ফাতেমা ছবি
=ওড়ে যায় সময় কাশফুলের মতন=
ঝরে পরা ঋতু ফিরে আসে বছর ঘুরে
অথচ বয়স গড়িয়ে পড়ে ধূলোয়
সে আর ফিরে আসে না।
কাশফুল'রা যেমন নুয়ে পড়েছে বয়সের ভারে
ধূলো জমেছে নরম পাপড়িতে...
পাপড়িগুলো ওড়ে যাবে হাওয়ায়, মিশে যাবে ধূলোয়,
পুনর্জনমের আশায় রয়ে যাবে চুপ মাটিতে।
কিন্তু মানুষ আর আসে না ফিরে তার ভিটে মাটিতে
যেখানে সে গড়ে নিয়েছিলো দু'চালা টিনের ঘর
ঠিনের ঘরের উপর কইতরের কুপ;
ঘরের এক কোণে পুঁই লতা,
উঠোনের কোণে মাতাল করা কামিনীর চারা।
(অসমাপ্ত)
১২।©কাজী ফাতেমা ছবি
= ফেলে আসা স্কুল স্মৃতি, ঝাপটে ধরে আমায়=
একদিন এখানে বসতো দুষ্টকিশোরীদের মেলা,
মাঠজুড়ে হইহল্লা, স্কুল ইউনিফর্মে আমরা দুষ্ট মেঘপাখিদের দল!
ছুটোছুটির দিন পেরিয়ে ভারিতিরি জীবনে বসে দেখি পিছনের প্রতিচ্ছবি,
দল বেঁধে ছুটে চলা পথ, স্কুল পালানো আর ব্যাগভর্তি দুষ্টুমি ভরে আমরা
ছুটে যেতাম স্কুলের সেই সবুজ মাঠটাতে।
মেডামদের তীক্ষ্ণ চিৎকারে ক্লাসরুমে দৌঁড়ার সেই চিত্র
এখনো চোখের আয়নায় দেখি, আর আনমনা হই-হেসে দেই অজান্তে।
(অসমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪০