বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে দেয় জ্বলন্ত আগুনে। হাসিমুখ, মনে অতৃপ্তি, ইচ্ছেগুলো গোপন গোপন হোলি খেলে বুকের উঠোনে।
কথার ভুল, কাজের ভুল, হাসিতে ভুল, নারীর কান্নাতেও যেন ভুল। বুকের গহীনে কত যে কান্নার ঢেউ, সেকি! জানলো কেউ?
আত্মজদের মুখে ফুটাতে হয় হাসি, কর্তার চোখে এনে দিতে হয় মুগ্ধতা। ফরমায়েশের সুতোয় বাঁধা নারী, ভাঙা স্বাধীনতার ডানা। ওড়তে গিয়েও ফিরে আসতে হয় পিছুটানে।
নারী রোজগারের কড়িতেও স্বাধীনতা হারিয়ে সাঁতার কাটে অবহেলার নদীতে। তুচ্ছ তাচ্ছিল্যেতার সীমায় পা রেখেও ঠোঁটে হাসি, যেন সংসার পেয়েই তার পাওয়া হয়ে গেল একশত সাত সমুদ্দুর সুখ।
বাঁধা বিপত্তির মুখে ছাই ছুঁড়ে কোন নারী স্বাধীনতার উঠোনে পা রাখলেই তার কপালে বেহায়াপনার লাগে তকমা।
মুখ গুঁজে কথার অপমান সয়ে কত কত নারী টানছে নিরবে সংসারের ঘানি। কয়টা নারী পেয়েছে শুনি, এক গুচ্ছ ফুল, এক গাঁছি কাঁচের চুড়ি, বেলীর মালা অথবা বর্ষার কদম?
কয়টা নারী পেয়েছে সহসা সারপ্রাইজ! বলে বলে না পেয়েই নারী ইচ্ছেগুলোর মুখে ছিপি লাগিয়ে করে যায় সুখে নৈমিত্তিক কর্ম। নারীর ইচ্ছের মূল্য এক আনা দুই সিকি, অচল অচল অচল।
নারীর রক্ত ছোঁয়া স্বজনদের রাখা হয় অবহেলার পাত্রে। মূল্যহীন স্বজন'রা বুঝেও না বুঝার ভান ধরে হাসিমুখে বরণ করে নেয় অবহেলা।
পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজ, নারীরা হলোই বা শাসক। পুরুষ হওয়ার দম্ভ থামাতে কে পেরেছে আর!
এ করো না,ও করো না, এখানে যেয়ো না, লিখো না, করো না সাহিত্য চর্চা, কত শত বিপত্তি নারীর চলার পথে, এমন পথ কতজন আর পেরেছে ডিঙাতে!
তবুও কত নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প। সে গল্প নারী একাই পড়ে সুখে হয় আত্মহারা। একদিন অতল গহবরে তলিয়ে যেতে যেতেও নারী হেসে ওঠবে খিলখিল, বলে যাবে তার পরাধীনতায় বেঁচে থাকার গল্প। সে গল্প শুনে কী পুরুষ অনুতাপে পুড়বে?
©কাজী ফাতেমা ছবি
০৭/১১/২০২২