somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাইকোথ্রিলারঃ আয়, লাশটা গুম করে ফেলি

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-আয় হায়, এখন কি হবে? মাথায় হাত দিয়ে মাটিতে বসে পরে কামরুল।
-তুই শিওর? রক্তমাখা হাতটা গালে মুছতে মুছতে পালটা প্রশ্ন করে রসু।
-শিওর না হয়ে এমনিই হায় হায় করতেছি? এবার কামরুলের কন্ঠে বিরক্তি স্পষ্ট।
-হুম। বলতে বলতে বসে পরে রসু। পালস আর নিঃশ্বাস পরীক্ষা করে বোঝার চেষ্টা করে লোকটা বেঁচে আছে কিনা।লোকটা মনে হয় সত্যিই মরে গেছে।
-তো এতক্ষণ কি আর হিব্রু বলছিলাম? আমার এই সাধারণ কথাটা তোর গোবর ভরা মাথায় ঢুকতে এতক্ষণ লাগল?
অন্যসময় হলে রীতিমত রিএক্ট করত রসু, কিন্তু এখন শান্ত থাকারই সিদ্ধান্ত নিল। বলতো, কি করা যায়?
-আমি আর কি বলব? এতক্ষণতো যা করার, সবকিছু নিজের বুদ্ধিতেইতো করলি, আমার কোন কথা শুনেছিস? এখন আবার আমাকে জিজ্ঞেস করছিস কেন? কামরুলের কন্ঠে ভয়মাখানো বিরক্তি স্পষ্ট।
-ধুর্বাল, সারাক্ষণ মেয়েমানুষের মত প্যানপ্যান করবি না। ঘরে এমনিতেই বউয়ের জ্বালায় শান্তিতে থাকতে পারি না, এখন কাজের সময় তোর এইসব ঢং একদম ভাল্লাগতেছে না।
কামরুল আর কথা বাড়ায় না। আসলে কথা বাড়িয়েও কোন লাভ নেই, কি করলে কি হত-সেসব চিন্তা এখন অর্থহীন। এখন কি করা যায়-সেটাই ভাবতে হবে।
-লাশটা ঠিকানা লাগাতে হবে। মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলে রসু।
-কি করতে চাচ্ছিস? কামরুল বুঝতে পারে চিন্তার ঝড় চলছে রাইসুলের মাথায়। তাই এবার শান্ত কন্ঠেই ওর প্ল্যানটা জানতে চায়।
-এই গলির শেষ মাথায় একটা খাল আছে। রসু জবাব দেয়।
-তো?
-কোনভাবে লাশটা খালের মধ্যে ডাম্প করতে পারলেই আমরা নিশ্চিন্ত।
-পাগল হয়েছিস? লাশ ভেসে উঠবে না? এখন ফরেনসিক সায়েন্স যদ্দুর এগিয়েছে, একবার লাশ উদ্ধার হলেই আমরা দুজন ধরা পড়ব। তারপর ফাঁসি, এরপর কোন একটা মেডিকেল কলেজে কংকালটা টাঙ্গিয়ে দেবে। একটা কবরও পাব না।
-আহ, আগে আগে এত কথা বললে কিভাবে হবে? আগে পুরো কথাটা শোন। এই গলির মুখ একটা দেয়াল দিয়ে বন্ধ করা। সেই দেয়ালের ওপারে খাল।
-দেয়াল দিয়ে গলির মুখ বন্ধ করা? কেন?
-কারণ খালটা নোংরা, মজা। এককালে নাকি নদী ছিল, দুই পাড়ে ছিল সব কারখানা, দূষণ আর দখলে শেষ পর্যন্ত এটা বিষাক্ত খালে পরিনত হয়েছে। খালে কোন জলজ প্রানী নেই, মানুষও এই খালের পানি ব্যবহার করে না। ইনফ্যাক্ট, এই খালের আশেপাশেও কোন মানুষ আসে না। সারা শহরের যত ময়লা-আবর্জনা, সব নালা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত এই খালেই ডাম্প হয়।
-তোর প্ল্যানটা কি?
-খালের পানির ওপর সব প্লাস্টিক আর পলিথিন ভাসে। যদি কোনরকমে এই প্লাস্টিকের স্তুপের নীচে লাশটা চাপা দিতে পারি, আর কোন বাপের ব্যাটাও লাশ খুঁজে পাবে না।
-কিন্তু...
-তোর মাথায় আর কোন বেটার আইডিয়া আছে?
-না। কিন্তু ...
-কোন কিন্তু না। তাহলে এটাই ফাইনাল। ওর পকেটে কি আছে আগে দেখে নে। ছিনতাই করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত খুনই করে ফেললাম, এখন পকেটে দামী কিছু পাওয়া না গেলে পুরাই লস প্রজেক্ট।
কামরুল কোন জবাব দেয় না, নীরবে পকেট হাতাতে শুরু করে। এক ফাঁকে ছেলেটার চেহারা দিকেও একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। অল্পবয়সী ছেলে, বিশ-বাইশ বছর বয়স হবে হয়ত। চেহারা দেখে আর্থিক অবস্থা আন্দাজ করা যাচ্ছে না, তবে কোন স্বচ্ছল পরিবারের ছেলে এই রাতে এরকম এলাকায় আসবে বলে মনে হয় না।
-কত পেলি? আগ্রহ নিয়ে জানতে চায় রসু।
-শুধু একটা দশ টাকার নোট। ভোতা মুখে জবাব দেয় কামরুল।
-এএএ???!!! কি বলিস এসব? কোন ভাবেই কামরুলের কথা বিশ্বাস হয় না রসুর। সর তুই, আমি দেখি।
কামরুলকে সরিয়ে নিজের এবার পকেট হাতাতে শুরু করে রসু। অবশেষে প্যান্টের ভেতরে একটা গোপন পকেটের সন্ধান পাওয়া যায়।
-শক্ত কিছু হাতে হাতে লাগছে। মনে হয় দামী কিছু। উৎসাহী কন্ঠে বলে ওঠে রসু।
-তাড়াতাড়ি বের কর। দ্বিগুণ উৎসাহী জবাব দেয় কামরুল। যদি দামী কিছু পাওয়া যায়, তবে এই শীতের রাতে কারফিউ উপেক্ষা করে জান হাতে নিয়ে তাদের এই বের হওয়াটা স্বার্থক হবে।
অনেক কসরত করে প্যান্টের গোপন পকেট থেকে যেটা বেরোল সেটা একটা ধাতু-ই, তবে সেটাও এমন আহামরি দামী কিছু নয়। সামান্য একটা পকেট নাইফ!
-এই সামান্য জিনিসের জন্য এত এক্সাইটেড হয়ে পড়েছিলাম? কামরুলের কন্ঠে হতাশা স্পষ্ট।
-এই ব্যাটা এই রাতে পকেটে ছুরি নিয়ে এরকম এলাকায় ঘুরে কেন? আবার মাথা চুলকাতে চুলকাতে রসু প্রশ্ন করে।
-কি বলতে চাচ্ছিস?
-আমার ধারণা এই ব্যাটাও আমাদের মত ছিনতাইকারী।
-পাগল হয়ে গেছিস?
-পাগল কেন হব? সহজ লজিক, একটু চিন্তা করে দেখ। দেশের অর্থনীতির অবস্থা খারাপ, তার ওপর আর্মির শাসন, কোথাও কোন জবাবদিহিতা নেই। তোর আমার মত অনেকেই চাকরি-ব্যবসা হারিয়ে না খেয়ে আছে। এটা শহরের শেষ মাথায় একটা পরিত্যক্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন, আপরাধী আর ধান্ধাবাজ লোকজন ছাড়া কারও এদিকে চলাচল নেই বললেই চলে। তুইও জানিস, এই কারফিউর রাতে নিতান্ত ডেস্পারেট না হলে কেউ আর্মির গুলি খাওয়ার রিস্ক নিয়ে ঘর থেকে বের হবে না। আর ছেলেটার চেহারা দেখে মনেও হচ্ছে না সে এখানকার কোন ফ্যাক্টরির স্ক্র্যাপ চুরি করতে বেরিয়েছিল। আশেপাশে কোন বস্তিও নেই। তাহলে ছেলেটা এখানে কি-ইবা করতে এসেছিল?
কামরুল কোন জবাব দেয় না, আবার ছেলেটার শার্ট-প্যান্টের পকেট হাতাতে শুরু করে।
-কি খুঁজছিস? অধৈর্য রসু জানতে চায়। দামী কিছু নেই পকেটে, আমি ভাল মতই চেক করেছি।
-দামী কিছু না, আমি পকেট হাতড়াচ্ছিলাম কোন আইডি কার্ড খুঁজে পাওয়ার আশায়। কামরুলের শান্ত জবাব।
-পেলি কিছু?
কামরুল কোন জবাব দেয় না, নীরবে মাথা নাড়ে।
-তাহলে চল, যেটা করার কথা ছিল, সেটা-ই করি। বলে উঠল রসু।
-কি করার কথা ছিল?
-এরই মধ্যে ভুলে গেলি? লাশটা খালে ডাম্প করতে হবে, তারপর যার যার রাস্তায় সে সে। নাকি সারারাত এখানে লাশ নিয়ে বসে থেকে ভোরবেলা আর্মির গুলি খাওয়ার প্ল্যান করছিস?
-ওটা কিসের শব্দ? রসুর কথার জবাব না দিয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে বলে ওঠে কামরুল।
-শব্দ? কোথায়?
ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে রসুকে চুপ থাকতে বলে কামরুল। এরপর দুজনেই কানপেতে শব্দটা শোনার চেষ্টা করে। এখান থেকে দূরে, হয়ত দশ-পনের মিনিট কিংবা আধঘন্টা দূরের রাস্তায় একটা ট্যাংক যাওয়ার শব্দ হয়। সেনাবাহিনীর টহল ট্যাংক। এই নির্জন রাতে রুটিন টহল দিতে বেরিয়েছে। সেনাশাসনের এই দিনগুলোতে অতি সাধারণ ঘটনা।
-তাড়াতাড়ি করতে হবে। ট্যাংকের শব্দ শোনা যাচ্ছে মানে আর্মি বেরিয়েছে। ওরা কিছু দেখার আগের লাশ সরিয়ে ফেলতে হবে। রসু বলে ওঠে।
-লাশ নাহয় খালে ডাম্প করলি, মাটিতে যে রক্তের দাগ লেগেছে, তার কি করবি?
-আগে লাশটা খালে ডাম্প করি, ফেরার সময় খাল থেকে কিছু আবর্জনা নিয়ে এসে রাস্তায় ছিটিয়ে দেব। ময়লার নীচে রক্তের দাগ ঢাকা পড়ে যাবে, ময়লা-ই গন্ধ ছড়াবে, রক্তের গন্ধ কেউ পাবে না। তাছাড়া ময়লা আবর্জনা দেখলে কেউ ভুলেও এই রাস্তা মাড়াবে না।
-তোর কথা শুনে সামান্য কয়টা টাকার লোভে আর কি কি বিপদে পড়ব-কে জানে? তারচেয়ে আমার ওই পাম্প আপারেটরের কাজই ভাল ছিল।
-তা বাপু, কোন ফ্যাক্টরীতে তুমি আছ? যেটায় ছিলে, সেখান থেকে চুরি করে চাকরি হারিয়েছ, মনে পড়ে? তাছাড়া দেশে যে হারে কলকারখানা বন্ধ হচ্ছে, আগামীতে এই কোয়ালিফিকেশন দিয়ে কোন চাকরি পাবি না। বেকার বসে আছে, আবার ডায়লগ মারায়। বালের আলাপ বাদ দিয়ে মাথা ধর। আমি পা ধরতেছি।
কোন কথা না বলে কামরুল ছেলেটার কাধ ধরে, পা দুটো উঁচিয়ে ধরে রসু। ধীরে ধীরে খালের দিকে রওয়ানা দেয় দুজন। বাইরে থেকে দেখে ছেলেটাকে রোগা পটকাই মনে হয়, অথচ কি ওজন। বাপরে বাপ। দুজনের মিলে লাশ টানতে খবর হয়ে যাচ্ছে।
-কোন গুদামের চাইল খাইছে শালায়? গায়ে নাই দুই সের মাংস, এত ওজন লাগে কেন? নাকি সব ওজন ওর হাড্ডিতে? কোনরকমে লাশ টানতে টানতে বলে রসু।
-ছেলের ওজন ঠিকই আছে, না খেতে পেয়ে আমরাই দূর্বল হয়ে যাচ্ছি। আস্তে করে জবাব দেয় কামরুল।
রসু কোন জবাব দেয় না, পা দুটো ধরে ধীরে ধীরে টানতে থাকে।
এভাবেই কিছু সময় চলে যায়।
কতক্ষণ?
দুজনের কেউই জানে না।
হঠাৎ শব্দ শুনে দুজনেরই ইন্দ্রিয় সতর্ক হয়ে ওঠে।
-কিসের শব্দ? কন্ঠস্বর যথাসম্ভব নিচু করে জানতে চায় কামরুল।
-বুঝতে পারছি না। চিন্তিত কন্ঠে জবাব দেয় রসু।
-রিস্ক নেয়া ঠিক হবে না। আয় লুকিয়ে পড়ি।
-চল।
বলতে বলতে একটা দেয়ালের আড়ালে লাশটাকে শুইয়ে দেয় দুজন, তারপর নিজেদের মাথা যথাসম্ভব নীচু করে লাশের ওপরেই বসে পড়ে। উদ্দেশ্য এই রাতের আঁধারে নিজেদের লুকিয়ে রাখা, আর নিজেদের ছায়ার আড়ালে লাশটাকে লুকিয়ে রেখে নিজেদের পাপকে ঢেকে রাখা।
বোঁ বোঁ শব্দটা কাছে চলে এসেছে।
উৎকন্ঠিত চোখে দুজনেই চোখ রাখে সামনে রাস্তায়।
একটু পর দুজনেই বুঝতে পারে সামনে না, শব্দটা আসছে ওপর থেকে। অবাক হয়ে দুজনেই ওপরে তাকায়। ড্রোন!
-শিট। শিগগিরই ...
কথাটা কামরুল শেষ করতে পারে না, তার বাকিটা বুঝে নেয় রসু। গায়ে থাকা কালো চাদরটা দিয়ে ঢেকে ফেলে নিজেদের দুজনকে।
-শুয়োরের বাচ্চা আর্মিগুলা ...
এবার রসু মুখের কথা শেষ করতে পারে না, ঠোঁটের ওপর আঙ্গুল রেখে কামরুল চুপ থাকতে ইশারা করে। বাকি কথাটুকু গলা থেকে নিচের দিকে গিলে ফেলে চুপ হয়ে যায় রসু।
মনে হয় যেন দুজন শুধু শুনেই চলেছে ড্রোনের উড়তে থাকার শব্দ, ড্রোনটা বোঁ বোঁ করে চারদিকে চক্কর মেরে পুরো এলাকাটা কভার করছে, চাদরের নিচে লুকিয়ে থেকেও তারা বুঝতে ড্রোনটা কিছুক্ষণ পরপর আলো ফেলে কিছু একটা খুঁজে চলেছে।
-ড্রোন দিয়ে কি খুঁজে ওরা? প্রশ্ন করে রসু।
কোন জবাব দেয় না কামরুল, আবারও ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে রসুকে চুপ থাকার ইশারা করে।
নীরবে কেটে যায় কয়েকটি মিনিট।
-এভাবে আর কতক্ষণ লুকিয়ে থাকব? অধৈর্য হয়ে আবার ফিসফিসিয়ে ওঠে রসু।
-চুদির ভাই, চুপ থাকতে কি চুলকায়? সাপের মত হিসিয়ে ওঠে কামরুল।
কামরুলের রুদ্রমূর্তি দেখে চুপ হয়ে যায় রসু, তবে বুঝতে পারে তার আসলেই চুলকাচ্ছে। মশা!
-কামরুল ...
-একটা শব্দও বলবি না আর।
নীরব হয়ে যায় রসু, অস্থিরভাবে পা চুলকাতে থাকে।
এভাবে কতক্ষণ কেটে গেছে দুজনের কেউই জানে না, হয়ত কিছু মিনিট অথবা একটি ঘন্টা কিংবা আরও বেশি সময়। সময় ঠাহর করার মত অবস্থা দুজনের কারোরই থাকে না। ঠিক তখনই বোঁ বোঁ শব্দটা দূরে মিলিয়ে যেতে শুরু করে।
ড্রোনটা অন্যকোথাও চলে যাচ্ছে।
তবু সাবধানতার জন্য চাদরের নীচে আরও কয়েকটা মিনিট অপেক্ষা করে ওরা, তারপর একটা সময় নিশ্চিত হয়ে চাদরের নীচ থেকে বেরিয়ে আসে।
-ভাইরে ভাই, কামড়াইতে কামড়াইতে পুরা লাল করে ফেলছে। পুরো গা ঝাড়তে ঝাড়তে বলে রসু।
-কারফিউ দিয়ে, ট্যাংক নিয়ে টহল দিয়েও আর্মিগুলার মন ভরে না। এখন আবার ড্রোন দিয়ে টহল দেয়া শুরু করছে।
মশা নিয়ে আজাইরা আলাপের বিন্দুমাত্র ইচ্ছা এই মুহূর্তে নেই-কামরুলের কথা শুনে বুঝে নেয় রসু।
-আর্মির আর কোন উপায় নাই। নির্লিপ্ত কন্ঠে জবাব দেয় রসু।
-মানে?
-মানে সিম্পল। রিসেন্ট সময়ে বেশ কিছু আর্মি ক্যাম্পে হামলা হয়েছে। জানিস?
-খবরে দেখেছি কিছু।
-কারা হামলা করেছে?
-বলেতো বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।
-বিচ্ছিন্নতাবাদী আবার কি? এরা কি আলাদা রাষ্ট্র চায়?
-তো?
-এরা আলাদা রাষ্ট্র চায় না, যে দেশটাকে এদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে, সেটাকে ওরা ফিরে পেতে চায়। নিজের দেশ মানে নিজের ভোটাধিকার, নিজের নির্বাচিত প্রতিনিধি। এরা আর্মিকে গদি থেকে হঠাতে চায়, ব্যারাকে ফেরত পাঠাতে চায়। ওরা চায় আমরা কাজ করে নিজেদের পেট ভরাই, এভাবে রাতের আঁধারে চুরি চামারি করে নয়।
-এর সাথে ড্রোন সার্ভেইল্যান্সের কি সম্পর্ক?
-এরা মূলত আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকে, হঠাৎ হামলা করে এরকম পরিত্যক্ত, জনমানবশুন্য কিংবা কোন দূর্গম বনজঙ্গলে আশ্রয় নেয়। হিট এন্ড রান আরকি।
-তাহলে ওদেরকে ধরার জন্যই প্রতিরাতে এই কারফিউ আর সেনা টহল?
-এইতো বুঝতে পেরেছিস।
-বিদ্রোহীরা এই পরিত্যক্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনে আছে?
-মাঝে মাঝে এখানে এসে লুকিয়ে থাকে বলে শুনেছি। আমি নিজে অবশ্য কোনদিন দেখিনি।
-নিজে দেখিনি মানে কি? তুই এখানে আগেও এসেছিস রাতের বেলা?
-এসেছি কয়েক বার। ফ্যাক্টরীগুলো থেকে স্ক্র্যাপ ম্যাটেরিয়াল খুলে নিয়ে ভাঙ্গারীর দোকানে বেঁচে দিয়েছি। বুঝলি, এই কাজে লাভ নেই, দাম পাইনা।
-শুয়োরের বাচ্চা, তাহলে আজকেও তাই করতাম। দাম না পেলে নাই। এভাবে ছিনতাই করতে গিয়ে একটা ছেলেকে খুন করে উলটো নিজেরাই বিপদে পড়ে গেলাম। না পারছি লাশটা কোথাও ডাম্প করতে, না পারছি কারফিউর ভয়ে ঘরে ফিরতে।
-শশশ, আস্তে। ড্রোনটা চলে গেছে, কিন্তু যেকোন মুহূর্তে ফিরে আসতে পারে। এখন গালাগালি না করে চল লাশটা খালে ডাম্প করে আসি। ভোরবেলা কারফিউ শেষ হবে। তখন তুই তোর রাস্তায় আর আমি আমার। বাকি জীবনে কেউ আর কারও মুখ দেখব না।
বলতে বলতে রসু লাশটার কাধ ধরে ওঠায়, কোন জবাব না দিয়ে পা দুটো উঁচিয়ে ধরে কামরুল। একটা লাশ নিয়ে আবার দুজন হাঁটতে শুরু খালের দিকে।
-কামরুল ...
-কোন কথা বলবি না, হাঁটতে থাক।
রসু চুপ হয়ে যায়। আবার শুরু হয় ক্লান্তিকর নীরব পথচলা।
প্রায় মিনিট পাঁচেক চলার পর হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে কামরুল।
-কি হল? জানতে চায় রসু।
-শুনেছিস?
-কি?
-কারও হাঁটার শব্দ শুনলাম বলে মনে হল।
কামরুলের কথা শুনে চারদিকে সতর্ক দৃষ্টিতে তাকায় রসু। এদিককার অধিকাংশ ল্যাম্পপোস্ট নষ্ট, অল্প যে দুয়েকটা জ্বলছে, সেগুলোরও টিমটিমে আলো, শেষ সময় চলছে বাতিগুলোর। আলো আঁধারিতে কোন কিছু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না, তবে একটা মানুষের ছায়া ভালমতন বুঝতে পারবে বলে নিজের চোখের ওপর রসুর আস্থা আছে।
সতর্কভাবে কান পাতে রসু। নাম না জানা কিছু পোকা শব্দ করে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে।
-কিছু বুঝতে পারছিস? কামরুলের কন্ঠে উৎকণ্ঠা।
-আমিতো নিজের মত কিছু পোকার শব্দ ছাড়া আর কিছু শুনতে পাচ্ছি না।
রসুর জবাব শুনে হতাশ হয় কামরুল। আর কোন কথা না বাড়িয়ে আবার লাশের পা দুটো উঁচিয়ে ধরে হাঁটতে থাকে।
কয়েক মিনিট পর আবার দাঁড়িয়ে পড়ে কামরুল।
-কি হল? আবার দাঁড়িয়ে পড়লি কেন? অধৈর্য কন্ঠে জানতে চায় রসু।
-আমরা খালের কাছাকছি চলে এসেছি।
-সেটা গন্ধ শুকেই বোঝা যাচ্ছে। খালের যত কাছাকাছি যাবি, দূর্গন্ধ ততই বাড়তে থাকবে।
-সেটা সমস্যা না। আমার জীবনের বেশির ভাগ সময় বস্তিতেই কেটেছে, দূর্গন্ধ আমার নাকে লাগে না।
-তাহলে আবার থামলি কোন দুঃখে?
-তাকিয়ে দেখ।
এবার ভালমতন চারিদিকে তাকায় রসু। আসলেই ওরা খালের কাছাকাছি চলে এসেছে, গলির শেষ মাথায় দেয়ালটা দেখা যাচ্ছে। ওটা দিয়েই খালে যাওয়ার মুখ বন্ধ করা হয়েছে।
-এদিকে আমি আগে কখনো আসিনি, শুধু শুনেছিলাম। কম করে হলেও দশ-বার ফুট উঁচু হবে এই দেয়ালটা। এই দেয়াল পার করে লাশটা খালে ডাম্প করব কিভাবে? রসুর কন্ঠে বিস্ময় স্পষ্ট।
-ওরে বলদ, খালে ডাম্প করা পরের কথা, এই লাশ ওই দেয়ালের কাছে নিবি কি করে? দেয়ালের আশেপাশে কয়টা ল্যাম্পপোস্ট আছে, দেখেছিস? সব কয়টায় উজ্জ্বল আলো জ্বলছে। তার ওপর খেয়াল করে দেখ, কয়টা সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে? ননস্টপ চারিদিকে ঘুরছে ক্যামেরাগুলো। ওগুলো ফাঁকি দিয়ে এই দেয়াল পার হতে পারবি? তাও একটা লাশ নিয়ে?
রসু কোন জবাব দেয় না।
-চল। কামরুল তাড়া দেয়।
-কোথায়? বিস্ময়ের ধাক্কা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি রসু। পথের শেষে এরকম আলোর ঝলকানি আর সিসিটিভি সার্ভেইল্যান্স-কোনভাবেই আশা করেনি সে। এভাবে তীরে এসে তরী ডুববে-এখনো মানতে পারছে না।
-আরে যেখান থেকে এই লাশ এনেছি, সেখানে। এভাবে সারারাত একটা লাশ টানব নাকি?
-তো কি করবি? এই লাশ পেলে ডিএনএ ব্যাংক থেকে আমাদের দুজনের পরিচয়ই জেনে যাবে।তারপর কি হবে-ভাবতে পারছিস?
-পরেরটা পরে দেখা যাবে। আমি আপাতত এই গজব থেকে মুক্তি চাই। আজরাতে এখান থেকে বের হতে পারলে আমি আর এই অভিশপ্ত শহরে থাকব না, গ্রামে চলে যাব। চাষবাস করে খাব।
-চাষবাস করবি, তোর জমি আছে?
-চোপ, শুয়োরের বাচ্চা। তোর কথা শুনেই এই বিপদে পড়েছি। মাত্র দুরাত বেরোলেই পুরো মাসের জন্য নিশ্চিন্ত। এমন অবস্থায় পড়েছি এখন, একবার ধরা পড়লে সারাজীবনের জন্য নিশ্চিন্ত। কংকাল হয়ে মেডিকেল কলেজে ঝুলে থাকতে হবে। চল।
-কোথায়?
-লাশ নিয়ে বসে থাকবি? সামনে গেলে সিসি ক্যামেরার সামনে পড়বি, আর দাঁড়িয়ে থাকলে যেকোন মুহূর্তে ড্রোনের সামনে পড়তে পারিস। তারচেয়ে যে আলো আধারিতে ছেলেটাকে খুন করেছিস, সেখানেই লাশটা ফেলে রেখে পগার পার হই। আমি আর নিতে পারছি না।
এবার আর কোন তর্ক করে না রসু। দুজনে লাশটা নিয়ে ফিরতি পথ ধরে।
কয়েক মিনিট পর হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে রসু।
-কি হল? জানতে চায় কামরুল।
-ওই দেখ। আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে রসু।
রসুর আঙ্গুলের ডিরেকশান ফলো করে সেদিকে তাকায় কামরুল। আলো অন্ধকারে কয়েকজন মানুষের অবয়ব দেখা যাচ্ছে। গোল হয়ে দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে ফিসফাস করে চলেছে। নিজেদের দিকে তাকায় কামরল, একটা দেয়ালের আড়ালে দাড়িয়ে আছে ওরা। লোকগুলো একটু সামনে এগিয়ে না এলে ওদের দেখতে পাবে না।
-এরা কারা? জানতে চায় কামরুল।
-জানি না, তবে মনে হয় ধারণা করতে পারছি। রসুর ছোট্ট জবাব।
-কি ধারনা করতে পারছিস?
-এলাকার এই অংশে শুনেছি হিউম্যান অর্গানের কেনাবেচা হয়।
-হোয়াট?
-এত অবাক হওয়ার কিছু নেই। যেখানে দাঁড়িয়ে আছিস, সেটা অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য। পুলিশ আর আর্মির চোখ ফাঁকি দিয়ে যতরকম অপরাধ হয় এই শহরে, সব এই পরিত্যক্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয়। মনে হচ্ছে, অর্গান ট্রাফিকারদের এলাকায় ঢুকে পড়েছি।
-মানে?
-মানে এই পুরো এলাকাটাকে কয়েক ভাগে ভাগ করে নিজেদের মধ্য ভাগবাতোয়ারা করে নিয়েছে এই শহরের মাফিয়ারা। কোন অংশের নিয়ন্ত্রণ চোরাকারবারিদের দখলে, কোন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে কোন ড্রাগ লর্ড। যদ্দূর বুঝতে পারছি, এটা অর্গান ট্রাফিকারদের জোন।
-আর যেখানে এই ছেলেটাকে আমরা খুন করলাম?
-এমনভাবে বলছিস যেন খুন করার নিয়ত করেই ঘর থেকে বেরিয়েছিলাম। হিট অফ মোমেন্টে ছেলেটা মরে গেছে, আমি কি করব?
-প্রশ্নের জবাবতো দিলি না। কাদের এলাকায় আমরা খুন খারাপি করে এলাম?
-ওটা কারও এলাকা না, নিউট্রাল জোন। তোর আমার মত ছিচকে অপরাধীরা ওখানেই যায়।
-এখন কি করবি?
-মানে?
-মানে এই লাশ নিয়ে মুভ করার সময় যদি ওই লোকগুলোর চোখে পড়ে যাই?
-সমস্যা হবে না।
-এত কনফিডেন্ট হয়ে কিভাবে বলছিস?
-ওই লোকগুলোর মধ্যে একজনকে চিনতে পেরেছি।
-এত দূর থেকে, এত কম আলোর মধ্যে চিনে ফেললি?
-আর প্রশ্ন করিস না বাপ, এবার একটু অফ যা। তুই এখানে লাশটাকে নিয়ে একটু দাঁড়া, আমি ওর সাথে কথা বলে আসি।
-কি কথা বলবি?
কামরুলের এই প্রশ্নের কোন জবাব আর দেয় না রসু, আলো আঁধারিতে দাঁড়িয়ে থাকা ছায়াগুলোকে লক্ষ্য করে হাঁটতে শুরু করে। রসুকে ডাকতে গিয়েও থেমে যায় কামরুল, এই নির্জনতার মাঝে নূন্যতম শব্দও বিকট চিৎকার হয়ে উঠতে পারে।
লাশটা সাথে নিয়ে দেয়ালের আড়ালে অপেক্ষা করতে থাকে কামরুল, সময় যেন আর কাটতেই চায় না। মনে নানারকম আজেবাজে আশংকার কথা আসছে, জোর করে মন থেকে সেসব সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে সে। দোয়া দরূদ পড়তে গিয়ে হঠাৎ আবিস্কার করে বহুবছরের চর্চাহীনতায় আজ আর একটা দোয়াও তার মাথায় আসছে না।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়, ফিরে আসে রসু।
-কি খবর? প্রবল উৎকণ্ঠা নিয়ে জানতে চায় কামরুল।
-ভাল খবর আছে রে ব্যাটা। হাসি মুখে জবাব দেয় রসু।
-কি খবর? জলদি বল।
-একজন না, ওখানে দুজনকে চিনি আমি।
-তো?
-আমি যেটা ধারণা করেছিলাম, ওটাই ঠিক। ওরা অর্গান ট্রাফিকার।
-তাতে আমাদের কি লাভ? এখান থেকে বের হবার কোন ব্যবস্থা করবে ওরা?
-আহা, এত অধৈর্য হলে কিভাবে হবে? দম নে একটু, আস্তে আস্তে শোন।
-ঠিক আছে, আর কোন প্রশ্ন করছি না। তুই বল।
-ওদেরকে বলেছি, আমার কাছে ফ্রেশ বডি আছে। ওরা নিতে রাজি থাকলে, অল্পতেই ছেড়ে দেব।
-মানে কি?
-মানে এই লাশটা আমি ওদের কাছে বেঁচে দেব, ওরা ওদের প্রয়োজনমত চোখ, হার্ট, কিডনী, লিভার-যা যা কাজে লাগে সব এক্সট্র্যাক্ট করে নেবে আর বিনিময়ে আমাদের দেবে টাকা, নগদ টাকা।
-পাগল হয়ে গেছিস? তুই গিয়ে বললি তোর কাছে লাশ আছে আর ওরা নাচতে নাচতে লাশ নিতে রাজি হয়ে গেল? এত সোজা?
-তোর সমস্যা কি জানিস? কথা শুনিস অর্ধেক, বুঝিস তারও অর্ধেক। আগে পুরোটা শোন।
-ঠিক আছে, বল।
-আমি যখন ওদের কাছে গেছি, প্রথমে আমাকে পুলিশের চর ভেবেছিল, অনেকক্ষণ আমার দিকে বন্দুক তাক করেছিল। বললাম না, ওখানে দুজন আমার পরিচিত। ওদের সাথে এককালে অনেক চুরি চামারি করেছি, জেলেও গিয়েছি এক আধবার। বসকে ওরাই কনভিন্স করল। লোকটা লাশ নিতে রাজি হয়েছে।
-সত্যি?
-রাজি হয়েছে, টাকাও দেব, তবে কিছু শর্ত আছে।
-শর্ত? কিরকম শর্ত?
-তুইতো জানিসই, রাতের বেলা চুরি চামারি করার অভ্যাস থাকলেও দিনের বেলা আমি কসাইগিরি করি।
-তো?
-ওদের কথা হচ্ছে, লাশের চামড়া ছাড়িয়ে দিতে হবে, সেটা আমি করতে পারব। ওদের এক্সপার্ট সার্জন আছে সাথে, প্রয়োজনীয় অর্গানগুলো সে-ই এক্সট্র্যাক্ট করে নেবে।
-আর অপ্রয়োজনীয় অর্গানগুলো? ওগুলোর কি হবে? কোথায় ডাম্প করবে ওগুলো? খালে তো পারবে না, নিজেরাই দেখে এলাম।
-ওখানেই আসলে একটু সমস্যা হয়েছে। আমতা আমতা করে বলে রসু।
-কি সমস্যা? তীক্ষ্ণ কন্ঠে জানতে চায় কামরুল।
-ওগুলা ওরা নেবে না।
-না নিক। কোথাও ডাম্প করতে হবে তো।
-ওরা কোথাও ডাম্পও করবে না। জানিসইতো, ফরেন্সিক সায়েন্স এখন অনেক এডভান্সড। মিনিমাম ক্লু থেকেও অপরাধী ধরা পড়তে পারে। ওরা লাশের কোন ট্রেস রাখতে রাজি না।
-তো কিছু অর্গান নেবে, আর কিছু নেবে না। ট্রেস মেটাবে কি করে?
-তুই একটু মাথা ঠান্ডা কর আর মনযোগ দিয়ে আমার কথা শোন।
-ঢং না করে সরাসরি বল।
-লাশের বাকি অংশ আমাদের খেয়ে ফেলতে হবে। কাঁচা।
-হোয়াট?
-চিৎকার করিস না। এটা ভাল জায়গা না।
-তাই বলে মৃত মানুষের মাংস খাব? এটা কি পরিমাণ সিক একটা ব্যাপার, ভাবতে পারছিস?
-পুরোটা তোর একা খেতে হবে না, আমিও খাব। তাছাড়া ওরাও খাবে আমাদের সাথে। সবাই মিলে চেষ্টা করলে, ভোরের আগেই কাটাকুটি, খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ফ্রী হয়ে যেতে পারব।
কামরুল কোন জবাব দেয় না, অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে।
-এভাবে তাকিয়ে থাকার কোন দরকার নেই। একবার খেয়ে দেখ, ভাল লাগবে। অচেনা কন্ঠস্বর শুনে কামরুল পেছন ফিরে তাকায়, সেই ছায়ামূর্তিদের মধ্যে একজন তার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে।
-আপনি কে? কাঁপা কাঁপা কন্ঠে প্রশ্ন করে কামরুল।
-আমি কে, সেটা ইম্পর্ট্যান্ট না। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, আমরা এখন এই লাশটাকে হাওয়ায় মিলিয়ে দেব। গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কেটে নিয়ে ফ্রীজারে ঢুকিয়ে দেব, আর বাকি অঙ্গগুলোর কি হবে-সেটা তোমাকে রসু বুঝিয়ে বলেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, তুমি কি আমাদের সাথে আছ? তুমি চাইলে না বলতে পার। বুঝতেই পারছ, সেক্ষেত্রে কষ্ট করে হলেও আমাদের প্রত্যেককে ডাবল খাওয়া দাওয়া করতে হবে। ডাবল প্রাইজ পেতে হলে দ্বিগুণ কষ্ট না করে উপায় কি?
কি জবাব দেবে, কামরুল বুঝতে পারে না। শুধু বুঝতে পারে আঁধার রাতে সার্জিকাল নাইফ হাতে একদল ক্ষুধার্ত ছায়ামূর্তি তাকে গোল হয়ে ঘিরে ধরেছে।


========================================================================
আমার লেখা আরো কিছু সাইকো থ্রিলারঃ

১.সাইকোথ্রিলারঃ আমার সাইকোপ্যাথ বউ
২.সাইকোথ্রিলারঃ আমি অথবা সে কিংবা অন্যকেউ
৩.সাইকোথ্রিলারঃ আমাদের নতুন পুরানো ঘর
৪.সাইকোথ্রিলারঃ একশ তলায় আবার
৫.সাইকোথ্রিলারঃ রাতের আঁধারে
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:০৮
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×