somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অমুসলিমদের কাছে কোরআন এবং বিজ্ঞান কী?

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ইসলাম কি? অমুসলিমদের কাছে কোরআন আর বিজ্ঞান কি? অমুসলিমদের বিশ্বাস কোরআন নয় বিজ্ঞানই হলো সব। তাদের বিশ্বাস বিজ্ঞান থেকেই কোরআন এসেছে। এখন আসল কথা হলো- “যে ব্যক্তি নিজের ইচ্ছাকে সৃষ্টিকর্তার উপর সম্পর্ণ করে সেই হলো প্রকৃতি মুসলিম”। অমুসলিদের সব থেকে বড় ভুল ধারনা হলো- তারা মনে করে ইসলাম একটি নতুন ধর্ম আর রাসূল (সাঃ) এই ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। কিন্তু তারা জানেনা যে ইসলাম পৃথিবী সৃষ্টিকাল থেকেই এসেছে। যখন থেকে মানুষ পৃথীবিতে পা রেখেছেন তখন থেকেই ইসলাম শুরু হয়েছে। "Islam is there since man set foot on this earth." আর রাসূল (সাঃ) হলেন ইসলামের সর্বশেষ এবং চূড়ান্ত রাসূল। আর পৃথীবিতে আসা ১০৪ খানা কিতাবের মধ্যে কোরআন হলো সর্বশেষ কিতাব। কোরআনের প্রতিটা আয়াত হলো প্রত্যেক মানুষের জন্য শিক্ষা বা ভিত্তি যা পৃথীবিতে এসেছে চোদ্দশত বছর আগে।



অমুসলিমরা বিশ্বাস করেনা যে একমাত্র কোরআনই হলো মানুষের জীবনের ভিত্তি। তারা বুঝতে চায়না যে, কি ভাবে মানবজাতির জীবন-সামগ্রীক, সকল দিক-নিনদের্শনা সাড়ে ১৪০০ শত বছরের পুরনো পবিত্র গ্রন্থে পেতে পারি। তারা বুঝতে চায়না যে, পবিত্র কোরআন হলো মানবতার প্রকাশিত ঘোষনার দয়া ও জ্ঞানের ভান্ডার। এই পবিত্র কোরআন হলো- “বিপদগামীদের দিক নিদের্শনা, অসর্তকদের সর্তক বানী, দ্বিধা গ্রস্থাদের জন্য নিশ্চয়তা, নিপীড়নদের জন্য শান্তনার বানী, এবং হতাশা গ্রস্থদের জন্য আসার আলো”। তাই কোরআন হলো পৃথীবির সবচেয়ে পবিত্র এবং সর্বশেষ্ট গ্রন্থ বানী। অমুসলিমদের মতো কোন বিজ্ঞান যদি বলে- যে পৃথিবী সমতল! তাহলে কি এ যুগে এসে কোন মানুষ এটা বিশ্বাস করবে? নিশ্চয় না।


তাহলে আজ আমরা দেখবো কোরআন কি আধুনিকতার ছোয়া নাকি বেমানান। নোভেল পুরুষ্কার বিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন (Albert Einstein) তিনি বলেছিলেন- ধর্ম ছাড়া বিজ্ঞান খোঁড়া, এবং বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম অন্ধ "Science Without Religion Is Lame And Religion Without Science Is Blind" তাই পবিত্র কোরআন কোন বিজ্ঞান বই নয়, এর মানি Science এর বই না। "The Quran is not a Book Of S-C-I-E-N-C-E, But it's a Book of S-I-G-N-S" কোরআন হলো সাইন এর বই। যার অর্থ এই বইয়ের আয়াত ছন্দে আবদ্য করা। আর এই পবিত্র কোরআনে রয়েছে ৬৬৬৬ "Signs" অর্থাৎ ছয় হাজার ছয়শত ছিষট্টিটি আয়াত যার মধ্যে এক হাজারেরও বেশি আয়াত বিজ্ঞান নিয়ে কথা বলেছেন মহান আল্লাহ তায়ালা। আসুন এবার দেখি পবিত্র কোরআনে বিজ্ঞান নিয়ে কিছু আয়াত।


Earth Theory, (পৃথীবি):
কয়েক যুগ আগে ধরুন ১৯৪৬ অথবা ১৯৭০ দশকের দিকে এক দল বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেছেন, তারা নোভেল পুরুষ্কারও পেয়েছেন।তাদের একসাথে বলা হয়- বিগ ব্যাং "Big Bang" এই বিজ্ঞানীরা বলেছেন পৃথীবি সৃষ্টি সম্পর্কে, অর্থাৎ মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব সম্পর্কে। তারা ব্যাখ্যা করেছেন- “প্রথমে এই বিশ্বজগত ছিল একটা বিন্দু, তারপর একটা বিস্ফোরণ হয়ে সব কিছু আলাদা আলাদা হয়ে যায়। এরপর সৃষ্টি হলো গ্রালাক্সি, নক্ষত্র, গ্রহ, সূর্য্য এবং পৃথীবি যেখানে আমরা বাস করি। আর এই দলের বিজ্ঞানীদের নাম হলো "Big Bang"। বিশ্বজগত বিন্দু থেকে বিস্ফোরণের কথা আমরা জানতে পেরিছি মাত্র ৪০/৫০ বছর আগে। কিন্তু পবিত্র কোরআনে এর সম্পর্কে লেখা আছে সেই চোদ্দশত বছর আগে। সূরা আম্বিয়া, সূরা নং ২১, আয়াত নং ৩০- “কাফেরেরা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশ ও পৃথীবি মিশে ছিল, আর আমি তা পৃথক করে দিলাম, পানি হতে সব প্রানী সৃষ্টি করলাম, তবুও কি তারা বিশ্বাস করবে না”। তাহলে বিজ্ঞান ৪০/৫০ বছর আগে যেটা বলল সেটা কি করে ১৪০০ শত বছর আগে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলে দিয়েছেন, কি করে? তারপরও কি করে অমুসলিমরা বলে কোরআন কোন মানুষের সৃষ্টি, কোরআনে যা আছে সে গুলো অনেক আগে থেকে বিজ্ঞান জানে! আশ্চর্য।


বহু যুগ আগের মানুষ মনে করতো পৃথীবি সমতল ভূমি। এরপর ১৫৭৭ শতাব্দীতে "স্যার ফ্রান্সিস ড্রেক", (Sir Francis Drake) তিনি জাহাজে করে পৃথিবীর চারপাশে ঘুড়ে আসলেন তখন তিনি প্রমাণ করলেন যে, “আমরা যে পৃথীবিতে বাস করি তা একটা বর্তুল আকারের”। কিন্তু পবিত্র কোরআনে এ কথাটি বলেছেন আল্লাহ সেই চোদ্দশত বছর আগে। পবিত্র কোরআনে আছে, সূরা না-যি-আ-ত্ সূরা নং ৭৯, আয়াত নং ৩০- “এবং তিনি পৃথিবীকে করেছেন ডিম্বাকৃতি বা বিস্তৃত” এখানে বলা হয়েছে পৃথীবি বলের মতো গোল নয় এটি আসলে পূর্বে এবং পশ্চিমে একটু চাপা আকৃতির। অর্থাৎ এটি দেখতে উটপাখির ডিমের মতো আর সেটাই বোঝায়। কারণ উটপাখির ডিমও কিন্তু বর্তুল আকারে পৃথীবির মতো।



আগেকার মানুষ ভাবতো চাদের আলো তার নিজস্ব আলো আছে। কিন্তু কিছু দিন আগে মানুষ জানতে পেরেছে যে চাঁদের কোন নিজস্ব আলো নেই। এটা একটা প্রতিফলিত আলো বা ধার করা আলো। হয়তো এটা বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছে ৫০ বছর, ১০০ বছর বা ২০০ বছর আগে। কিন্তু পবিত্র কোরআনে সূরা ফোরকান, সূরা নং ২৫ আয়াত নং ৬১- “তিনি কত মহান তিনি আকাশে সৃষ্টি করেছে রাশিচক্র, সেখানে স্থাপন করেছেন সূর্য্য, প্রদীপ যার নিজস্ব আলো এবং চাঁদ যার প্রতিফলিত আলো”। এই কথাটি পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন সেই চোদ্দশত বছর আগে।


আগেকার দিনের বিজ্ঞানীরা বলতেন- “সূর্য্য কক্ষ পথে প্রদক্ষিণ করে, তবে তার নিজ অক্ষের চারপাশে আবর্তিত হয় না”। তারপর মাত্র কয়েক দশক আগে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে পেয়েছেন- “একটি ঘূর্ণন সম্পন্ন করতে সূর্য প্রায় ২৫ দিন সময় নেয়।” (Sun Takes About 25 Days To Complete One Rotation.) পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন- সূরা আম্বিয়া, সূরা নং ২১, আয়াত নং ৩৩- “আর তিনিই রাত ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র সৃষ্টি করেছেন; যারা প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে”। যা সাড়ে চোদ্দশত বছর আগে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলে দিয়েছেন তা কি করে মাত্র কয়েক দশক আগে বিজ্ঞান বলে। আর অমুসলিমরা বলে যে এসব কিছু কোরআনের আগে বিজ্ঞান বলেছে।


এখন অমুসলিমরা বলবে যে, আরবরা বা খ্রিষ্টানরা জ্যোতি বিদ্যায় খুবই শক্তিশালী। তারা জ্যেতিবিদ্যার দিক দিয়ে খুবই উন্নত। হতে পারে তারা খুবই উন্নত, তারা খুবই শক্তিশালী। কিন্তু অমুসলিমদের জানা উচিত যে, তারা যে জ্ঞান অর্জন করেছেন তা কোরআন নাজিল হওয়ার কয়েক শত বছর পরে। আরবরা কোরআন নাজিল হওয়ার পর কোরআন থেকে জ্যোতি বিদ্যা সম্পর্কে জানতে পেরেছে।


Hydrology (পানিচক্র)
আমরা পানিচক্র সম্পর্কে পড়েছি বিজ্ঞান বইতে যে- “সমুদ্র থেকে পানি বাষ্প হয়ে উপরে উঠে মেঘে পরিনত হয় তারপর একসময় সেটা বৃষ্টি হয়ে মাটিতে পরে। প্রথম বারের মতো পানিচক্র সম্পর্কে বর্ননা দেন “স্যার বার্নার্ড প্যালিসি” (Sir Bernard Palissy) তিনি ১৫৮০ সালের দিকে পানিচক্রের বর্ননা করেন। কিন্তু পবিত্র কোরআনে সেই চোদ্দশত বছর আগে বলা আছে- “সমুদ্রের পানি বাষ্প হয়ে উপরে উঠে মেঘে পরিনত হয় মেঘগুলো একেত্রীত হয়ে আকাশে ভেসে বেড়ায় তারপর বৃষ্টি হয়ে পড়ে যায়” পানিচক্র সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে অনেকগুলো সূরার আয়াতে আছে। যেমন সূরা রুম, আয়াত ২৪, সূরা জুমার আয়াত ২১, সূরা মুমিনুল আয়াত ১৮ সূরা হিজর আয়াত২২, সূরা সুরা আয়াত ২৪, সূরা আরাফ আয়াত ৫৭, সূরা রদ আয়াত ১৭, সূরা ফোরকান আয়ত ৪৮-৪৯, সূরা ফাতির আয়াত ৯, সূরা কাফ আয়াত ৮-৯, সূরা ওয়াকিয়া আয়াত ৬৮-৭০, সূরা মূলক আয়াত ৩০, সূরা তারিক আয়াত ১১, এরকম আরো অনেক সূরায় আছে পানিচক্র সম্পর্কে।



Oceanography (সমুদ্রবিদ্যা):
সমুদ্রবিদ্যা সম্পর্কে কয়েকদশক আগে বিজ্ঞানীরা বলেছেন সমুদ্রের পানি নোনা ও মিষ্টি। কিন্তু পবিত্র কোরআন এটা চোদ্দশত বছর আগে মহান আল্লাহ বলেছেন- সূরা ফোরকান, সূরা নং ২৫ আয়ত নং ৫৩-“এবং তিনিই দু’সমুদ্রকে মিলিত ভাবে চালিত করেন; যার একটি মিষ্টি-তৃপ্তিকর অন্যটি নোনা-লবনাক্ত খর উভয়ের মাঝে অন্তরায় ও ব্যবধান রেখেছেন”। তাহলে অমুসলিমরা কিভাবে বলে যে কোরআন এর আগে বিজ্ঞান বলেছে।


Biology (জীববিদ্যা):
জীববিদ্যা সম্পর্কে আরবের সেই শুষ্ক মরুভূমিতে কে বলল যে, সমস্ত প্রাণীকুল পানি হতে সৃষ্টি। অমুসলিমরা বলে এসবই বিজ্ঞান বলেছে। কিন্তু বর্তমান বিজ্ঞান তো মাত্র কিছু দিন আগে বলেছে যে, সকল প্রাণীকুল পানি হতে সৃষ্টি। আর আল্লাহ বলে দিয়েছেন পবিত্র কোরআনে সেই চোদ্দশত বছর আগেই। সূরা আম্বিয়া, সূরা নং ২১, আয়াত নং ৩০- “পানি হতে সব প্রানী সৃষ্টি করলাম, তবুও কি তারা বিশ্বাস করবে না। মাত্র কিছুদিন আগে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছে যে প্রত্যেকটি জীবের শরীরের মধ্যে কোষ থাকে আর কোষের একটি মূল উপাদান হচ্ছে সাইতপ্ল্যাজ্ম (Cytoplasm)। তবে এখন বিজ্ঞান বলে প্রত্যেক জীবের শতকরা ৫০% থেকে ৯০% ভাগই রয়েছে পানি। সকল প্রাণী (প্রায় 80% জল ধারণ করে, Contains about 80% water) । তারপরও অমুসলিমরা কি ভাবে বলে যে কোরআন ভুল আর বিজ্ঞান সঠিক। বিজ্ঞান তো তৈরি হয়েছে কোরআন থেকেই। এটা কেনো তারা অবিশ্বাস করে আমি বুঝতে পারি না।


Botany (উদ্ভিদবিদ্যা):
উদ্ভিদবিদ্যা সম্পর্কে মহান আল্লাহ কোরআনে বলেছেন- সূরা তোয়াহা, সূরা নং ২০, আয়াত নং ৫৩-“এবং তিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষালেন; অতঃপর আমি তা দ্বারা বিভিন্ন উদ্ভিদ উদগত করাই”। এরকম আরো কিছু আয়াত আছে কোরআনে। বিজ্ঞানীরা উদ্ভিদবিদ্যা সম্পর্কে বলেছে যে গাছ-পালারও স্ত্রী এবং পুরুষ লিঙ্গ আছে। বিজ্ঞান তো বলেছে মাত্র কয়েক দশক আগে। আর কোরআনে তো আল্লাহ তায়ালা সেই চোদ্দশত বছর আগে বলে দিয়েছেন। তারপরও কি অমুসলিমরা বলবে এটাও তাদের বিজ্ঞান বলেছে!


Zoology (প্রাণীবিদ্যা):
আগেকার মানুষ জানতো না যে, মানুষের মতো সকল প্রাণী বিচরণশীল বা দলবন্ধ ভাবে চলে। কিন্তু বর্তমান যুগের বিজ্ঞান বলে মানুষের মতোই সকল প্রাণীরা বিচরণশীল বা দলবন্ধ ভাবে চলে ও বসবাস করে। কিন্তু এই কথাটি আরো চোদ্দশত বছর আগে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলে দিয়েছেন, সূরা আন্’আম্, সূরা নং ৬, আয়াত নং-৩৮- “সমগ্র জগতে যত প্রকার বিচরণশীল জীব বা ডানার সাহায্যে উড়ন্ত পাখি তারা সকলেই তোমাদের মতই একেকটি শ্রেণী”।


কোরআনে আল্লাহ তায়ালা মৌমাছি সম্পর্কে বলেছেন- সূরা নাহল্, সূরা নং ১৬ আয়াত নং ৬৮ থেকে ৬৯, “আর আপনার রব মৌমাছিকে ইংগিত দিলেন, পাহাড়ে, বৃক্ষে এবং মানুষ যে সকল গৃহ নির্মণ করে তাতে মৌচাক তৈরি করতে। ৬৮ অতপর চোষণ করে নেও প্রত্যেক প্রকার ফল হতে, তৎপর তোমরা রবের সহজ সরল পথে চলতে থাক; আর তার উদর হতে নানা বর্ণের পানীয় (মধু) নিগর্ত হয়, যাতে মানুষের জন্য আরোগ্য রয়েছে। নিশ্চয় এর চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নির্দেশন। কোরআনে মাকড়সার জীবনপ্রণালীর কথা বলা হয়েছে, সূরা আনকাবূত, সূরা নং ২৯, আয়াত নং ৪১। কোরআনে পিপড়ার জীবনপ্রণালীর কথা বলা হয়েছে সূরা নামল, সূরা নং ২৭ , আয়াত নং ১৮ আর কিছুদিন আগে বিজ্ঞান জানতে পেরেছে আমরা যে মধু খাই সেটা মৌমাছির পেটের মধ্যে প্রক্রয়া হয়ে মধু সৃষ্টি হয়। আর এখনকার বিজ্ঞানীরা বলে যে, আমরা “মধুতে মাঝারি মাত্রায় এন্টিস্পেটির এর গুনাগুন রয়েছে” (There are mild Antiseptic properties in honey) আর সেটা মানুষের শরীরের ওষুধের মতো কাজ করে। কোথাও পেলো এই কথাটি আজকের বিজ্ঞান? কোরআন ছাড়া।


Physiology, (দেহতত্ব):
কোরআন নাজিল হওয়ার ৬০০ বছর পর ইবনে আল-নাফিস প্রথম মুসলিম সাইন্স ফিকশন রচয়িতা কারক। তিনি জীবদের রক্ত সংবহন ও দুধ উৎপাদনের ব্যপারটা পৃথীবির সামনে তুলে ধরেন। এর পর ৪০০ বছর অর্থাৎ কোরআন নাজিল হওয়ার ১০০০ বছর পর উইলিয়াম হার্বে পশ্চিমা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেন একই ব্যাখ্যাটি। কিন্তু কোরআনে কি ভাবে সেই চোদ্দশত বছরে আগে এই কথার ব্যাখ্যা আসলো এটা কি অমুসলিমরা জানে না। সূরা নাহল, সূরা নং ১৬, আয়াত নং ৬৬- “নিঃসন্দেহে তোমাদের জন্য রয়েছে শিক্ষা চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে। তাদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য হতে তোমাদেরকে পান করাই খাটি দুগ্ধ যা পানকারীদের পরিতৃপ্তি দান করে। রক্ত সংবহন এবং দুধ উৎপন্নের কথা বর্ননা করে মহান আল্লাহ তায়ালা সেই চোদ্দশত বছর আগে, তবুও অমুসলিমরা কেনো মিথ্যে বলে যে বিজ্ঞান তাদের জীবনের সব।


Embryology, (ভ্রূণতত্ত্ব):
ভ্রূণতত্ত্ব সম্পর্কে কোরআনে বিভিন্ন পর্যয়ে, স্থরের কথা একেবারে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করেছেন। সূরা মুমিনুর, সূরা নং ২৩ আয়াত নং ১২ থেকে ১৪ “১২-আর আমি তো মানুষকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছি ১৩- তারপর তা শুক্রবিন্দুরুপে নিরাপদ স্থানে রাখি। ১৪- পরে শুক্রবিন্দুকে জমাট বাঁধা রক্তে পরিনত করি, তারপর ওই জমাট বাঁধা রক্তকে মাংস পিণ্ডে পরিনত করি, ওই মাংস পিণ্ডকে অস্থিতে, পরে অস্থিকে গোসত দ্বারা ঢেকে দিয়েছি। তারপর তাকে গড়ে তুলি সতন্ত্র সৃষ্টি। মহান আল্লাহ যিনি উত্তম স্রষ্টা”। এর মানি প্রথমে ছিল (লুতফা, তারপর আলাক, তারপর মুগদা এরপর ইজমা)। অর্থাৎ প্রথমে মানুষ জোকের মতো দেখতে হয় তারপর সেটা হয় চিবানো মাংসের মতো তারপর সেটা হাড়গোরে পরিনত হয় তারপর হাড়গোর ঢেকে দেয় মাংসের মধ্যে। মানুষ তুচ্ছ শুঙ্কানু হতে সৃষ্টি হয়েছে, এটা এক অন্যান্য সৃষ্টি। এরপর বিজ্ঞান ১৯৮০ দশকের প্রথম দিকে এই আয়াতগুলো দেখানো হয়েছে ড. কিথ মুরকে (Dr. Keith Moore) যিনি সে সময়ের বিখ্যাত শরীরবিদ্যা ও ভ্রূণতত্ত্বের সেরা একজন বিষেজ্ঞতা ছিলেন। তিনি তখন ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোতে বিভাগীয় প্রধান ছিলেন।


ড. কিথ মুরকে (Dr. Keith Moore) পবিত্র কোরআনের এই আয়াতগুলো দেখে তিনি বলেছিলেন- আধুনিক বিজ্ঞানের ভ্রূণতত্ত্বের বিস্তারিত এর চেয়ে অনেক বেশি বিস্তারিত পবিত্র কোরআনের আছে। তিনি বলেছেন এই কথাগুলো কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব না বলা, এক মাত্র আল্লাহ ছাড়া। তাই একমাত্র আল্লাহ তায়ালার পবিত্র এই বানী, আর তার প্রিয় রাসূল হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে মানতে আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু আজকের বিজ্ঞান কোরআন থেকে এতো কিছু জানার পরও তারা অবিশ্বাস করে পবিত্র কোরআনকে।


অমুসলিমরা বলে যে, আমরা যখন মারা যাবো, হাড়গোর সব আলাদা হয়ে যাবে মাংস পচে যাবে। তাহলে আল্লাহ কি ভাবে মৃত্যুর পর আমাদের পচে যাওয়া মাংস আর হাড়গোরগুলোকে একত্র করবে, তারা বলে এটা কি করে সম্ভব! শেষ বিচারের দিনে আল্লাহ কি করে মানুষকে আবার পুনরায় সৃষ্টি করবেন, নাউযুবিল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এর উত্তর সুন্দর ভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন, তিনি বলেছেন- সূরা ক্বিয়ামাহ, সূরা নং ৭৫ আয়াত নং ৩ থেকে ৪ “মানুষের কি ধারণ যে, আমি তার অস্থিসমূহ কখনো একত্র করবো না? অবশ্যই আমি একত্রিত করবো, আমি আঙ্গুলের কর কেও সংস্থাপন করতে সক্ষম”। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের এই আয়াতে সুন্দর ভাবে বলে দিয়েছেন আমি শুধু জীবত না, অস্থিতগুলোই শুধু একত্রিত করবো না, আমি প্রতিটি মানুষের আঙ্গুলের আগ্রভাগকেও জোড়া লাগিয়ে দিবো। যেটাকে আজকের বিজ্ঞান ফিঙ্গারপিন বলেন। আর ফিঙ্গারপিন সম্পর্কে পৃথীবিতে এমন কোন মানুষ নাই যে না জানে। পৃথীবিতে যদি ৮০০ (আটশত) কোটি মানুষ থাকে তাহলে তাদের প্রত্যেকের ফিঙ্গারপিন আলাদা আলাদা, কারো সাথে কারোটা মিলে না।



১৮৮০ সালের দিকে স্যার ফ্রান্সিস গ্যাটন, (Sir Francis Gatton) তিনি আঙ্গুলের ছাপের নিয়ম আবিষ্কার করেন। তিনি তখন বলেছিলেন একজন মানুষের আঙ্গুলের ছাপের সাথে অন্য আরেকজন মানুষের আঙ্গুলের ছাপ কখনোই মিলবে না। তাই বর্তমানে এই আঙ্গুলের ছাপ দিয়েই প্রকৃত অপরাধীকে খোজে পাওয়া সহজ। আর এটা কে বলে দিয়েছে বিজ্ঞানীদের? অমুসলিমরা কি জানে না যে, এটা কোন বিজ্ঞানের কাজ নয়, এটা সেই চোদ্দশত বছর আগে আরবের এক নিরক্ষক সর্বশ্রেষ্ট মানুষ ও রাসূলের নিকট ওহী রুপে পাঠিয়েছেন মহান আল্লাহ তায়ালা।



ফ্রান্সিস বেকন (Francis Bacon) তিনি একজন বিখ্যাত দার্শনিক, তিনি বলেছিলেন- “বিজ্ঞান সম্পর্কে সামান্য জ্ঞান একজন মানুষকে করে তুলে নাস্তিক। তবে বিজ্ঞান সম্পর্কে বেশি জানলে মানি ১০০% জানলে সে হয় সত্যিকারি একজন বিজ্ঞানী আর সঠিক ধার্মিক। অর্থাৎ আল্লাহ ও তার সৃষ্টির প্রতি তার অদম বিশ্বাস থাকে। তাই অনেক বিজ্ঞানীরা বালিত করেছেন আল্লাহর প্রতিমূর্তিকে, বাতিল করেছেন মূর্তিপুজারীদের, বাতিল করেছেন আল্লাহ ব্যতিত কোন উপসনাকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৩২
২৯টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×