somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন আহমেদ জী এসে'র শায়েরী

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ব্লগ ওপেন হ'য়েছে। অনেকেই সুন্দর করে পোস্ট দিতেছেন। অভিনন্দন বার্তা আসছে। অনেকের পোস্ট ও মন্তব্য নিয়ে অনুযোগ ও অভিযোগ আছে। বলা হচ্ছে অনেক নতুন ও পুরাতন ব্লগার ফেইসবুক স্টাইলে লেখা ও মন্তব্য দিতেছেন। তাহলে কথা হলো ফেইসবুক ও ব্লগের মধ্যে পার্থক্যটা কি? আমার মতে ফেবু ও ব্লগের মধ্যে একটা সুক্ষ পার্থক্য আছে। লেখালেখির জগৎ কে যদি একটি কলসির সাথে তুলনা করি তবে ফেবু হচ্ছে ফাঁকা কলসি আর ব্লগ হচ্ছে ভরা কলসি। আর ব্লগের ভরা কলসে আছে জ্ঞান যা আপনাকে যোগাবে পরিমিত পুষ্টি। আপনাকে সয়য় নষ্ট নয় বরং কিছু একটা শেখাতে সাহায্য করবে ব্লগ যেখানে অনেক বিদগ্ধ লেখক পোস্ট ও মতামত প্রদান করেন। আর এদের মধ্যে যার মন্তব্য আপনাকে পুষ্টি যোগাবে তিনি একজন খাঁটি লেখিক ও মন্তব্যের শায়ের। জ্বি বলছিলাম ব্লগিং জগতের একজন আইকন। সবার কাছে সম্মান ও শ্রদ্ধার আসনে আছেন যেমন লেখা তেমনি সহ ব্লগারদের পোস্টে তার শায়েরী মন্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে। তিনি কারো কাছে অসাধারণ ব্লগার হলেও সেটা তিনি বিনয়ের সাথে বলেছেন,
পুরোপুরি একজন অতি সাধারন মানুষ । আমি যা আমি তাই ই। শয়তানও নই কিম্বা ফেরেশতা । একজন মানুষ আপনারই মতো দু'টো হাত, চোখ আর নিটোল একটা হৃদয় নিয়ে আপনারই মতো একজন মানুষ । প্রচন্ড রকমের রোমান্টিক আবার একই সাথে জঘন্য রকমের বাস্তববাদী... তিনি যে চরম বাস্তববাদী তা তার বিখ্যাত কবিতা থেকে বুঝা যায় - মৃত্যু.... শুধু মুছে ফেলা নাম !

পৃথিবী কি থেমে যায় কখনও ?
এই যে মাত্র আলম সাহেবের জানাজা শেষ হলো
কেউ কি থেমে গেলো কোথাও ! থমকে কি গেলো
কাকেদের ওড়াউড়ি ? পার্কে মানুষের হাত ধরাধরি ?

বসে থাকা ভিখিরীও কি চুপ করে আছে
হাত না পেতে ! যে দু’টি কিশোরী ছড়াচ্ছে
বাদামের খোসা, একজোড়া কপোত-কপোতী ওড়াচ্ছে
স্বপ্নের ফানুস , সব কি থেমে গেছে ?

রিক্সার ক্রিং ক্রিং ভেসে আসে
ভেসে আসে হট্টগোল মেছো বাজারের,
যেসবে কান পেতে রাখা দায়
তাও কি খানিক থমকাবে মনে হয় ?

গুটিয়ে যাবে কি পৃথিবীর সব কাজ ?
যতো ধড়িবাজ , মাগীর দালাল, কোর্টের মহুরী,
ঘাটের ইজারাদার , বাস ড্রাইভার
থামাবে কি আজ সব বেলেল্লাপনা তার !

কিছুই থামেনা , না সূর্য্য - না পৃথিবী
না থামে বাতাস , না তুমি - না আমি
থামেনা কিছুই , শুধু বয়ে চলে ধরাধাম
কেবল একজন থেমে যায় , মুছে ফেলে নাম !


আহমেদ জি এস ও শায়েরী ---এই আধুনিক যুগে মানুষ শায়রীর মিষ্টি ও চিরস্থায়ী মর্ম ভুলেছে । এক দু' লাইনের শায়েরী অনেকটা জাদুর মতো সবাইকে মুগ্ধ করতে পারে । রোমান্টিক শাইনারি দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পূর্বপুরুষদের দ্বারা ব্যবহৃত একটি পরিপূর্ণ পদ্ধতি। শায়েরি দিয়ে অল্প কথায় মনের ভালবাসা প্রকাশ করা হয়।যদিও ইন্টারনেটের কল্যাণে বিভিন্ন সাইট থেকে বাংলা ও হিন্দিতে কিউট, রোম্যান্টিক, মজার এবং ইমোশনাল শায়েরী পেতে পারেন । তবে জীবন্ত শায়েরীটি পাবেন আহমেদ জি এস'র মন্তব্য থেকে।

শায়ারি জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় শাওয়ারের মধ্যে রয়েছেন মির্জা গালিব। মির্জা গালিব তাঁর শায়রী যেমন প্রেম, জীবন, দুঃখ, হৃদয়স্পর্শী শায়রীর জন্য সুপরিচিত ছিলেন । মির্জা গালিব শাইয়ারি শুধু গ্রহণযোগ্য শ্যার ছিলেন না তার সঙ্গে প্রশংসনীয় ও শক্তিশালী হিসেবে বিবেচিত হয় । তেমনি পাকিস্তান ও ভারতের বিখ্যাত শায়রীরা জীবনের সব ক্ষেত্রের মানুষের ,প্রেম আসক্তি আছে। যে কোন শায়ের লেখকের অনুভূতি প্রেমিক ও পাঠকদেরকে জটিল ও মধুর পরিস্থিতির মধ্যে প্রবেশ করার মতো হৃদয় নিংড়ানো দোলা দেয়। আহমেদ জি এস যা মন্তব্য করেন তাকে সহজ কথায় শায়েরী বলা যায়। অনেক সময় পুরো লেখার ভাব তিনি দু লাইনে বলে দেন। যা আপনাকে শেখার ও ভাবার খোঁড়াক যোগাবে।

আমার পোস্টে আহমেদ জি এসে'র ১০ টি শায়েরী মন্তব্য দিলাম।

১) সারাবেলা কারো জন্যে জেগে থাকা অন্তহীন বিশ্বাসের নামই যে ভালোবাসা! এই যদি হয়, তবে সমুদ্রের গভীরতাও পারেনা তাকে ছুঁতে। দুরত্বের ব্যবধান আকর্ষন বাড়ায়, মেঘের ভেলায় চলে তারই অভিসার।

২) উচাটন মন ঘরে রয়না। তাই তো মন বেদুইন হয়ে ঘোরে পথে পথে শীতল ভালোবাসার খোঁজে। এ কেমন বেদুইন, যে ভালোবাসায় উষ্ণতা খোঁজেনা !

৩) উৎকৃষ্ট আত্মা যখন জীবনের সকল বোঝা টেনে টেনে সময়ের স্রোতে প্রেতাত্মা হয়ে যান তখন কে রাখে তাহারে মনে ! তখন সেই পূণ্যাত্মার জায়গা তো আস্তাকুঁড়ে........

৪) এমন ভালোবাসা থাকলে পরে-এ সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে মন যেতে নাহি চায়, তবু ও মরন কেন ডেকে নিয়ে যায়, কে জানে কোথায়.

৫) প্রতিকূলতা থাকলেই বরং সকল ধান্দাবাজদের পকেট ভারী হয়- বিদেশের মাটিতে আমাদের এই লাখো লাখো সহজ-সরল- অসহায় মানুষগুলির তথাকথিত "জনশক্তি রপ্তানী" নামের নরকটি থেকে উদ্ধারের দায়টি কার

৬) কোনও না কোনও একটি ঘটনার সামনে পড়ে গেলে মানুষকে পিছে ফিরে দেখতেই হয় - কতোটা পথ পেরিয়ে এসেছে সে- যেতে হবে আরো কতদূর! এই অনুভব মানুষকে মানুষ করে।

৭) নারীর মন- সে তো ভগবানের কাছেও অবোধ্য --- সংসারটা ঠেলা ধাক্কারই, সামলে চলতে হয়।

৮)সব স্পর্শেই সুখ মেলেনা, তেমন স্পর্শেই মেলে!

৯) দিকহারা কবির মনে জটিলতার ঘনঘটা! নইলে মেঘ মল্লিকার দেশে ঘর বাঁধে যে কবি, সে কেন কৃশকায় দেহে জড়িয়ে নেবে মর্ত্যবাসী কষ্টদের!
১০) বসন্ত আসি আসি, এবারে ভালোবাসার বসন্ত এসে হাওয়া দিক কবির বাতায়নে।

আরো যাদের তীক্ষ্ণ, তিক্ত, ঝাঁজালো, রসালো মন্তব্য আপনাকে পুষ্টি যোগাবে ---

সোহানী
জুন
করুণাধারা
খায়রুল আহসান
ডঃ এম এ আলী
চাঁদগাজী
বিদ্রোহী ভৃগু
পদাতিক চৌধুরি
কাওসার চৌধুরী
নীল আকাশ
ঠাকুরমাহমুদ
রাকু হাসান
আখেনাটেন
ভুয়া মফিজ
মা.হাসান
ঢাবিয়ান
বিচার মানি তালগাছ আমার
প্রমুখ.....

শুভ্র ব্লগিং।।
এই পোস্টে মন্তব্য আকারে আপনার ভালোলাগার আহমেদ জি এসের মন্তব্য লিখুন, সেটা হোক আপনার পোস্টে অথবা সহ-ব্লগারের পোস্টে।
সর্বোচ্চ সংগ্রহকারীকে দেয়া হবে "গোল্ডেন কি অব নলেজ"।।।
আহমেদ জী এস

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৩৮
৪৭টি মন্তব্য ৪৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×