বড্ড চুপচাপ রাত নেমে আসে আজকাল
ছিমছাম গুছিয়ে রাখা বিছানার মত;
পরিপাটি নিকানো রান্নাঘরের মেঝের আদলে
নি:শব্দে লতিয়ে উঠা ড্রয়িং রুমের মানিপ্ল্যান্টের ছেয়ে উঠায়।
প্রতি সন্ধ্যায়, অভিমানী ঝড় উঠে
মিঠাই রঙা বাগান বিলাসে ঘূর্নী ছোটায়
একটু সাহসী ছোট্ট ছানাটি ও মা পাখিটার কাছে মিশে থাকে
অক্ষম আক্রোশের বিজলী, হেচকী তোলা কান্না বর্ষায়।
ঠিক সে সময় কেমন এক অশ্রাব্য উচ্চারনে
দিনের একমাত্র মালগাড়ির ট্রেন টা স্টেশন ছোঁয়
পাড়ার বখাটে ছেলেটার হলদে হয়ে উঠা দাঁতের রঙ নিয়ে;
হয়ত কোনদিন মা মাসি' র যত্ন সোহাগে সেও ছিলো কাঠ বাদাম গাছের চকচকে পাতার আহলাদে,
অগুনিত যাত্রীর আরাধ্য হয়ে।
আজকাল সন্ধ্যের লালিমাটুকু ছুঁয়ে দেয়াই ভার!
ঝপ করে চলে যায় রাতের কোলে,
মিহি বাতাসে যেমন আঁচলে ঢেকে নেয় মা
বেশ জানি চন্দ্রিমা স্নানে যাবে বলেই না
বুক পকেটে চিঠির ঘ্রাণ নিয়ে আসে সে শরত বিকেলে।
যাপিত জীবনে ভিজে থাকা মনে,
বাসী বকুলের স্মৃতিকাতরতার বাস
মৌসুমের আদ্রতা গায়ে মেখে আছে
ফুলকাটা পিঠের মাখোমাখো চিনির রস
যেমন থাকে আশ্বিনের ঘ্রাণের তীব্রতা ঝাঁঝালো রৌদ্রে।
খুব চাই এইসব বেহিসাবি সময়ে দিনমান-
তোমার পছন্দের ফুলের ঘ্রাণ হয়ে মিশে রবো
রো’দে পোড়া ঘাসের যন্ত্রণা বুকে নিয়ে।
ব্যাল্কনিতে পরে থাকা নিউজ পেপারের আদলে।
সকালে' র পায়ে চুমুখায় ছাতিম সুবাস যত
চা' য়ের রঙ, ধোঁয়াউঠা পাঁচফোড়নের সবজি
ডানা মেলা ব্লুডেইজ আর অপরাজিতার ঢঙে আনন্দরত
পাবদা পিয়াজ, সর্ষে কিংবা ইলিশের তেলেমাখা।
উসকে দ্যায় ফেলে আসা দিন সেই মা মা ডাকা রোদ্দুর রঙে লেখা ।
আসে তেজপাতা লবঙ্গ এলাচ, একটা দোলন চাঁপায় সাজে ফুলদানী
আর মনে মনে ভাবি, আমি কি আমাকে আজ চিনি !
রোদপরে আসা বিকেলের হলদে মায়ায় যদি, ভুলে থাকো অভিমান
টুপ করে খুব ভোরে শবনম শিউলি হয়ে ঝরবো মন উঠোনে অবিরাম।
মনিরা সুলতানা
৪' অক্টোবর ২০২০
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫২