somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবন নিয়ে জুয়া খেলার গপ্প!

০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার এই ব্লগটা লেখার আগে অনেক ভেবেছি! আমি জানি এখানে অনেক মেধাবী এবং জ্ঞানী ব্লগার আছেন যাদের সাথে আমার ব্লগটা হয়ত কিছুটা সাংঘর্ষিক হবে। তাদের প্রতি পূর্ন স্মমান রেখেই ব্লগটা লিখছি। পৃথিবীতে কিছু শ্রেণীর মানুষ থাকে, কেউ একাডেমিকে অনেক ভালো, কেউ জব লাইফে ভালো। এই ধরুন চমক হাসানের কথা; আমি চাইলেই কিন্তু চমক হাসান হতে পারবোনা। এখন অনেকে বলবেন, হুম চাইলে সবই সম্ভব। ঠিকঠাক পড়াশোনা করলে সবার পক্ষেই সব কিছু হওয়া সম্ভব। এই যে ঠিকঠাক পড়াশোনাটা করা সেটা করার ধৈর্য বা সামর্থ্য সবার থাকে না। কলেজ লাইফে ক্লাসের চেয়েও ভিবিন্ন রেস্টুরেন্টে আড্ডা দিয়ে বেশি সময় কাটিয়েছি। ক্যামেস্ট্রি স্যারের কাছে দুইদিন পড়ছি এরপর আর যাইনি, ম্যাথ, ফিজিক্স কোন ক্লাস বা প্রাইভেট পড়িনি। কারণ, আমার সেই ধৈর্য বা ক্যাপাবিলিটি ছিলোনা।

আমার কাছে ইন্টার সার্টিফিকেটটা ছিলো কোন একটা এয়ারলাইনসের টিকিট যেটা আমাকে শিক্ষাবোর্ড থেকে অর্জন করে নিতে হবে। আর আইইএলটিএস এক্সাম ছিলো বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট থেকে ডিপার্চার বোর্ডিং পাস। আমি কোন ভাবে শুধু এই দেশটা থেকে বের হয়ে পৃথিবীর অন্য যে কোন দেশে গিয়ে সেটেল্ড হতে চেয়েছি। আপনার হয়ত শুনতে অবাক লাগবে আমি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পর্যন্ত দেইনি। যদি জিজ্ঞেস করি, আপনার কাছে সফলতার মানে কি? কেউ হয়ত বলবেন ডক্টরেট লাগানো, কারো বা গুগলে চাকরি। কিন্তু আমার কাছে সফলতা মানে ছিলো টাকা! সত্যি বলছি, আমার কখনো বড় ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে এটা মাথায়ই আসেনি। ইঞ্জিনিয়ার হয়ে গেছি সেটা অন্য ব্যাপার, কিন্তু অলয়েজ আমার ইন্টেনশন ছিলো কিভাবে অন্তত কয়েক কোটি টাকা একাউন্টে রাখবো। নিজের লাইফটা সিকিউর করবো আর আমার ফ্যামিলির চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়ে অন্তত ফেসবুকে পোস্ট দিতে না হয়। ফেসবুকে পোস্ট দেয়াটাকে আমি খারাপ বলছিনা, বাট আমার জন্য যদি কখনো পোস্ট দিতে হয় তাহলে আমি মনে করবো এর চেয়ে আমার মৃত্যুই ভালো।

এই যে টাকার প্রতি তীব্র আকর্ষণ সেটা আমার ইন্টার লাইফ থেকেই। আর সেকারণেই যখন বিশ্বের সবচেয়ে শান্তির দেশ নিউজিল্যান্ডে গিয়েও আমার ভালো লাগেনি। সপ্তাহে ৬০০ নিউজিল্যান্ড ডলার আয় দিয়ে কোনমতে দিন আনে দিন খায় লাইফ লিড করা ছিলো আমার কাছে বিষের মত। আই হেইট দিস কাইন্ড অফ লাইফ। ওদের ইকোনমিটাই এত ছোট যে হিউজ ইনভেস্ট ছাড়া একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে লাক্সারিয়াস লাইফ লিড করা অসম্ভব। সারাজীবন সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা কাজ করেই কাটিয়ে দেয় এরা। অনেকে আমাকে বলে কানাডা যাবো কিনা! আমি বলি শান্তি দিয়া কি করবো পকেটে যদি পয়সা না থাকে??? তো যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই এক বড় ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয় যার কিনা চিন্তাভাবনা আমার সাথে মিলে যায়। আমরা ডিসিশন নিলাম ফাস্ট ইকোনোমির কোন এরিয়াতে মুভ করবো। অপশন ছিলো আমাদের হাতে দুইটা! এক ইউএসএ আর দুই সুইজারল্যান্ড!!! আমরা অস্ট্রেলিয়া ঘুরতে গেলাম! মাইগ্রেশানে ঝামেলা বেশি হওয়ায় ইউএস বা ইইউ এর কোন দেশই শেষ ভরসা।

সেই ভাই ইউএসের ভিসা পেলো! আমি পেলাম ইউরোপের ভিসা। সিদ্ধান্ত হলো উনি ওখানে গিয়ে টাকা কামিয়ে দেশে ব্যাক করবেন, কারণ গ্রীন কার্ড নেয়ার ধৈর্য ওনার নাই। নাই মানে সত্যিকার অর্থেই নাই!!! আর আমার সিদ্ধান্ত হলো যেহেতু আমেরিকা হয়নি। ইইউতে পাসপোর্ট নিবো এনি হাউ! তারপর সুইজারল্যান্ডে অথবা আমেরিকায় মাইগ্রেট হবো। ইইউ পাসপোর্ট নেয়ার লক্ষ্যই হলো যাতে যেকোনো একটাতে গিয়ে হিট করতে পারি! মজার ব্যাপার কি জানেন? গত ৫ বছর আমাদের সব সময়ই যোগাযোগ ছিলো! আলহামদুলিল্লাহ আমাদের যেই টার্গেট ছিলো দুজনেরটাই মোটামুটি সফল। ভাইয়া আগামী মাসে একেবারে দেশে চলে যাচ্ছে! গ্রীন কার্ড পায়নি, কিন্তু সাথে করে নিয়ে যাচ্ছে উত্তরাতে একটা গার্মেন্টস, যেটাতে ৫০০ শ্রমিক কাজ করে। গোপালগঞ্জে দুই একর জায়গার উপর বিশাল বিলাসবহুল বাড়ি, উত্তরাতে একটা সুপার শপ আর ৩কোটি টাকার এফডিআর!!! আমার কাছে এটাই সফলতা। কি করে এত টাকা কামালো???? ধরেন মাটি কাটছে, তাতে কি আসে যায়????

আমারটা কিছু বললামনা! শুধু বলবো!! এরপরের বার যখন দেশে যাবো লাল পাসপোর্টে একটা বাংলাদেশের এনভিআর(নো ভিসা রিকুয়ার্ড) স্ট্যাম্প থাকবে ইনশাআল্লাহ। আর আমাদের সাথের যারা এখনো নিউজিল্যান্ডে আছে তারা এখনো ওয়ার্ক ভিসা নিয়ে টিকে থাকার লড়াই করছে। ঘটনাটা কেন শেয়ার করলাম জানিনা! একবার মনে হচ্ছে ব্যাকস্পেস দিয়ে সব কেটে দেই। নাহ থাক আপনাদের শেয়ার করেই ফেলি! হুদাইত কত লেখা লেখি! আজ নাহয় আমার জীবন নিয়ে জুয়া খেলার গল্পটাই লিখালাম। জুয়া খেলা কেন বলছি??? কারণ যখন আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা জানতামনা আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে। আবার নিউজিল্যান্ডে ফিরে যাওয়ার অবস্থাও ছিলো না! পরিবারও চায়নি আমরা এমনটা করি। আমার পরিবারত বলেই দিয়েছিলো যেখানেই যাই তারা আর কোন সহযোগিতা করতে পারবেনা। সেই সামর্থ্যও তাদের ছিলো না আসলে। যদি কোন কারনে স্লিপ করতাম তাহলে এত নিচে পড়তাম, হয়ত সারাজীবন গর্ত থেকে আলোর মুখ খুজে পেতেই চলে যেতো।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:২০
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×