somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিন্দু ধর্ম ক্রমন্নয়ে রঙ্গলিলায় পরিনত হচ্ছে

১১ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সারদিন টা যেন ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিলাম একটু ও পড়াশুনার কথা না ভেবে , ঘুম থেকে যখন উঠি তখন ৫ টা বাজে , এখনো দিনের আলো মন্দিরের প্রদীপের মতো টিপটিপ করে আলো দিচ্ছে । সারাদিন ঘুমিয়ে শরীর টা কেমন যেন ম্যাচ ম্যাচ করছে , কোনো কিছু না ভেবেই চোখে মুখে জল দিয়ে ফটাফট প্যান্ট জামা পড়ে নিলাম , এখুনি এক কাপ গরম চা খুবই দরকার ,না হলে যেন ব্যাপার টা ঠিক জমছে না ।
স্যামবাঠির মোড়ে মাসির চায়ের দোকান ,সেকানেই রোজ সন্ধ্যা হলেই চায়ের আড্ডা বসে , মাঝে মাঝে পরিচিত বন্ধুরাও ওখানে চা খেতে আসে ।
রাস্তায় বেড়িয়েই যেটা প্রথমেই উপলব্ধি করলাম একদল মানুষ প্রচন্ড জোরে ডিজে বাঁজিয়ে এদিকেই আসছে , বুঝলুম মায়ের বিসর্জনের জন্য এতো আয়োজন । কিছুটা সামনে যেতেই ব্যাপার টা পুরোটাই পরিস্কার হয়ে গেলো ।
সবার সামনে কিছু তরুণী উন্মাদের মতো নাচছে , সেটা কে নাচ বলা যাই কিনা আমি ঠিক জানি না ,তবে অনেক গুলো দেহ ভঙ্গিমা মিশে যেমন নাচ হয় ঠিক তেমন ভাবেই । দেখে তো মনে হলো কেউ নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই, পাশেই একদল ছোকরা মানে বকাটে ছেলে মনে হলো দেখে বার বার নাচতে নাচতে মেয়েগুলোর দিকে আসার চেষ্টা করছে কিন্তু তাদের মাঝে কিছু দাদা কাকুরা আবার ঠেলে দিতছে , বুঝলাম এই দাদা কাকুরা মেয়ে গুলোকে এদের থেকে দুরে রাখার চেষ্টা করছে ।
তারপর একটা গাড়িতে মা দুর্গা আর তার সাথে আসা বাকিরা তার পরেই বিশাল মানুষের ভিড় , প্রথমে মেয়ে কাকিমা ,মানে মেয়েদের দল , তাদের পরেই এক উন্মাদ ছেলেদের আর কাকুদের দল । মাঝে অবশ্য একটা বাঁশ দিয়ে দুটো ভাগে ভাগ করে রেখেছে ,যাতে ছেলে কাকুরা মেয়েদের এদিকে না আসতে পারে ।
গানের এতো তেজ যে কানে হাত দিতে বাদ্ধ্য হলাম ,,,মুন্নি বদনাম হুই ও ডার্লিং তেরে লিয়ে ,আমি কলকাতার রসগোল্লা,,আঁখ মারে ,, লে সেলফি লে , বাপরে বাপরে বাপ । কি কলিযুগ এলো রে ।
না কোথাও আছে শ্রদ্ধা না ভক্তি , না ডাকের আওয়াজ শুধু আছে কান ফাটা এইসব গানের আওয়াজ সাথে মেয়ে ছেলেদের উন্মাদ নাচ ।
দেখে মনে হলো এ যেন এক রঙ্গলীলা মা দুর্গা তো শুধু মাত্র দেখানোর জন্য । এই সব দেখতে দেখতে গরম চায়ের কাপে এক চুমুক দিলাম । আহ ! এই অশান্তির মাঝেও যেন একটু শান্তি পেলাম ,কিন্তু ততক্ষণে মনের মর্ধ্যে একটা ভয় বাসা বাঁধতে শুরু করে দিয়েছে , এইসব দেখে মন আঁতকে উটেছে সব কিছু হারানোর ভয়ে , সব কিছুর ধ্বংসের ভয়ে ।
চায়ে চুমুক দিতে দিতে যেটুকু বুঝলাম যে , এইভাবে চলতে থাকলে খুব শীঘ্রই হিন্দু ধর্মের আর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না । হিন্দু ধর্ম আর ধর্ম থাকবে না , হিন্দু ধর্ম পরিনত হবে এক তামাশা এক উল্লাস এক জঘন্য রঙ্গলিলায় । হঠাৎ করেই মায়ের দিকে চোখ গেলো - মা যেনো আজ অসহায় এদের সামনে , লজ্জায় ঘৃণায় নিজের মুখটাকে হতাশায় ডুবিয়ে রেখেছে । আমার ঘোর কাটলো ওদের প্রচন্ড চিত্কারে ,,
"আসছে বছর আবার হবে ""আসছে বছর আবার হবে"


হ্যাঁ,আসছে বছর আবার হবে
মদ খেয়ে গাঁজা খেয়ে
মা দুর্গার সামনে উন্মাদ নাচ হবে ।
ঘরের মেয়ে লক্ষী সেতো
কুরুচি গানের তালে তাকে নাচতে হবে ।
আসছে বছর আবার হবে
বয়স্ক কাকিমা বৌদিদের
কোমরের দৌলায় রঙ্গলীলা হবে ।
হ্যাঁ,আসছে বছর আবার হবে
মাগো, তোমার প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি বিসর্জন দিয়ে
তোমাকে আবার অপমান করা হবে ।
জামা খুলে মত্ত পাগল
পা যে তার ঠিক চলে না ,
সে যদি হয় ঘন্টা খানেক ভক্ত তোমার
মাগো তুমি কি খুশি হবে না ?
আসছে বছর আবার হবে
মদ খেয়ে গাঁজা খেয়ে
মা দুর্গা তোমার সামনে উন্মাদ নাচ হবে !

আমার কাছে মা মানে
পরম ভক্তি শ্রদ্ধাময়,
তারই সামনে কি করে আমি
অরুচিপুর্ন্য গান চালায় ?
আমার কাছে বিসর্জন মানে
শঙ্খ বাজবে ঢাক বাজবে
ঘন্টা বাজবে তারই উপসনায় ।

আসছে বছর আবার হবে
মদ খেয়ে গাঁজা খেয়ে
মাগো তোমার সামনে উন্মাদ নাচ হবে ,
এদের কথা শুননা মাগো
এরা লালসায় লিপ্ত হবে
আর অজুহাতে শুধু তোমায় নেবে ।
মুখে জয় মা দুর্গা ধ্বনি দিয়ে
পাশে থাকা লক্ষীর দিকে নজর দেবে
আর শুধু অজুহাতে তোমায় নেবে ।
মাগো ছলছলনা কলকলোনা
ভালোবেসে তুমি আর এসো না
এমন অপমানের সময়তরে
আমি যে তোমায় পিষতে দেবো না ।
আসছে বছর আর এসো না !
আসছে বছর আর এসো না ।


সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:৫৭
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×