somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

আইয়ামে তাশরিকের দিনগুলোর পরিচয় এবং তাকবিরে তাশরিক পাঠের নিয়ম

১০ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আইয়ামে তাশরিকের পরিচয়:

আজ ৮ ই জ্বিলহজ। আগামীকাল ফজরের নামাজের পর থেকে শুরু হবে তাকবিরে তাশরিক। চলতে থাকবে ১৩ ই জ্বিলহজ আসরের নামাজের পর পর্যন্ত। ৯ই জিলহজ্ব ফজর থেকে ১৩ই জিলহজ্ব আছর পর্যন্ত পাঁচদিন হলো আইয়ামে তাশরিক। এ দিনগুলোতে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর বিশেষ তাকবীর পাঠ করতে হয়। এই তাকবীরকে বলা হয় তাকবীরে তাশরীক। তাকবীর একবার বলা ওয়াজিব। একবার পাঠ করলেই ওয়াজিব আদায় হয়ে যায়। এ তাকবীর নারী, পুরুষ নির্বিশেষে সকলকেই পড়তে হয়। জামাআতে বা একাকী আদায়কৃত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরেই পড়তে হয় এই তাকবির।

তাকবীরে তাশরিক:

আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।

তাকবিরে তাশরিকের গোড়ার কথা:

সহিহ বুখারি শরিফের অন্যতম ভাষ্যকার ইমাম বদরুদ্দিন আল-আইনি রহ. এ সম্পর্কে বলেন, ‘সাইয়্যেদুনা হজরত ইবরাহিম আলাইহিসালাম আল্লাহ তাআ'লার পক্ষ থেকে আদিষ্ট হয়ে স্বীয়পুত্র হজরত ইসমাইল আলাইহিসালামকে যখন জবেহ করতে পূর্ণ প্রস্তুত হলেন, তখন হজরত জিবরাইল আলাইহিসালাম আল্লাহর নির্দেশে বেহেশত থেকে হাবিলের কুরবানি করা দুম্বাটি নিয়ে রওনা হলেন।

তার সন্দেহ হচ্ছিল, হয়তো তিনি জমিনে পৌঁছানোর আগেই হজরত ইবরাহিম আলাইহিসালাম জবেহের কাজ সম্পন্ন করে ফেলবেন। তাই তিনি আকাশ থেকেই উচ্চ স্বরে আওয়াজ দিয়ে বললেন, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’। হজরত ইবরাহিম আলাইহিসালাম তার কণ্ঠ শুনে আকাশপানে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে দেখলেন, হজরত জিবরাইল আলাইহিসালাম স্বীয় ছেলে ইসমাইলের পরিবর্তে বেহেশত থেকে একটি দুম্বা নিয়ে আসছেন।

ফলে তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলে উঠলেন, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আল্লাহু আকবার।’ বাবার মুখে আল্লাহর একত্ববাদ ও বড়ত্বের বাণী শ্রবণে ছেলে ইসমাইল আলাইহিসালামও আল্লাহ তাআ'লার জালাল ও হামদ পেশ করে বললেন, ‘আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’

তাকবিরে তাশরিক পড়া কি?

আরাফার দিন, অর্থাৎ ৯ যিলহজ ফজর থেকে ১৩ যিলহজ আসর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পর একবার তাকবিরে তাশরিক তথা— ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, ওয়ালিল্লাহিল হামদ’ বলা ওয়াজিব।

কারা পড়বেন?

এটা ফরয নামাযের পর প্রত্যেক বালেগ পুরুষ, নারী, মুকিম, মুসাফির, গ্রামবাসী, শহরবাসী, জামায়াতের সঙ্গে নামায পড়ুক বা একাকি পড়ুক— প্রত্যেককেই একবার করে পাঠ করতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে শামী, বাহরুর রায়িক)

কতবার পড়বেন?

পূর্ণ তাকবিরে তাশরিক তিনবার পড়ার কোনো বর্ণনা খুঁজে পাওয়া যায় না। ফিকহবিদরাও তিনবার বলার প্রতি গুরুত্ব দেননি। অবশ্য কেউ যদি সুন্নত মনে না করে এমনিতেই তিনবার বলে তবে সেটাকে বিদআত বলাও উচিত নয়। (আলআওসাত, হাদীস: ২১৯৮; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস: ৫৬৯৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৭৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬৫)

এই তাকবির তিনবার বলা সুন্নত বা মুস্তাহাব নয়। সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমগন কীভাবে তাশরিকের দিনগুলোতে তাকবির বলতেন, তা হাদীসের কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। সেখানে একাধিকবার তাকবিরের কথা উল্লেখ নেই। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস: ৫৬৯৮, ৫৬৯৯; আলআওসাত, হাদীস: ২১৯৮, ২২০০)

তাকবিরে তাশরিক সম্পর্কে আরো কিছু জ্ঞাতব্য বিষয়:

এক. নামাজের সালাম ফেরানোর পরে ইমাম তাকবির বলতে ভুলে গেলেও মুক্তাদির তাকবির বলা ওয়াজিব। (ফাতওয়ায়ে শামী ১ম খণ্ড ৭৭৭ পৃষ্ঠা)

দুই. পুরুষেরা উচ্চ-মধ্যম স্বরে আর নারীরা অনুচ্চস্বরে তাকবির বলবে। পুরুষ উচ্চস্বরে না পড়ে আস্তে আস্তে পড়লে ওয়াজিব আদায় হবে না।

তিন. মাসবুক ব্যক্তি তার ছুটে যাওয়া নামায আদায় করে তাকবির বলবে। (ফাতাওয়ায়ে শামী ১ম খণ্ড-৭৮৬পৃষ্ঠা )

চার. যদি মুসল্লি ফরয নামাযের পর তাকবির বলতে ভুলে যায় এবং কিছু কাজ করে ফেলে যার দ্বারা নামায নষ্ট হয়ে যায় (যেমন মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া, অথবা ভুলে বা ইচ্ছায় কথা বলা অথবা ইচ্ছা করে অজু ভঙ্গ করা), তবে তার উপর থেকে তাকবির বলা রহিত হয়ে যাবে। (ফাতাওয়া শামী ১ম খণ্ড, ৭৮৬ পৃষ্ঠা

হাদিস থেকে তাকবিরে তাশরিক পাঠের দলিল-

عن جابر بن عبد الله رضى الله عنه قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا صلى الصبح من غداة عرفة يقبل على أصحابه، فيقول: على مكانكم، ويقول: “الله أكبر الله اكبر، لا إله إلا الله، والله أكبر الله أكبر ولله الحمد” فيكبر من غداة عرفة إلى صلاة العصر من آخر أيام التشريق، (سنن الدار قطنى، باب العيدين-2/38، رقم-1721)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আইয়্যামে তাশরিকের ওয়াজিব আমল এই তাকবিরাত যথাযথভাবে আদায়ের তাওফিক আমাদের দান করুন।

সংকলিত।

ছবি: অন্তর্জাল।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৬
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×