অন্তরগাঁয়ের জমিদার
- ১৩/১২/৯৮
যাত্রা শ্যাষ কইরা রেলের গাড়ী থামল হৃদয়নগর জংশন,
জংশনের ভাঙ্গা পোড়া পুরনো দালানের দক্ষিনে বেলতলা।
গরুর গাড়ী চইড়া বেলতলা থিক ফের চলা শুরু -
বুকের মধ্যে ধক ধক কাপুনি দিয়া হৃদয়নগরের
সীমানা ছাড়াইয়া গাড়ী চলে আর চলে।
সেই চলার পথে বয়োঃসন্ধিগঞ্জও ছাইড়া গেলাম –
তারপরও কেবলই চলা, মাঠ প্রান্তর ছাইড়া চলা,
সব ছাড়াইয়া বয়ঃক্লান্ত আমি যৌবনপুরের হাটে
থাইমা গেলাম হঠাৎ।
তৃষ্ণায় ভালবাসার সওদা করতে
হাটে গিয়া দেখি, সমস্ত হাটে দখল দিয়া
তুমি একলা ব্যপারী।
দারুন কড়া কন্ঠে আমারে
সওদা দিবার অস্বীকার করলা।
কি করি কও?
মরন তৃষ্ণা লইয়া মরতেও পারিনা
আবার যাত্রাও আমার শুদ্ধ হয়না।
বুঝিনা আমি,
উপযুক্ত বিনিময় পাইয়াও ক্যন তুমি
আমারে সওদা দিবার চাওনা?
সামর্থ্যেরে আটকাইয়া ক্যান তুমি
কিছু বুঝবারও চাওনা?
আশা হারাইয়া, সামর্থ্যেরে জামানত রাইখা-ই
আমি অন্তরগাও গেলাম নিজের ভিটায়।
ঐখানেও তোমার পেয়াদা ঢ্যটরা দিয়া
আমার ভিটা নিলাম করে। বুঝলাম,
তুমি হাটের সাধারন ব্যপারী নও,
মস্ত বড় সওদাগর তুমি,
জমিদারীতেও দখল দিছো।
তারপর ...
সামর্থ্যরে ফেরত না পাইয়া অক্ষম
আমি ঘূর্নিপাক খাই তোমারই চতুর্দিকে।
বসত বাটি হারাইয়া সামর্থ্যহীন আমি
আইজও তোমার সওদার আশায় কান্দি।
আমারে তুমি কানবারও দেওনা,
আবার হাসলেও টুটি চাইপা ধরো।
ধিকৃত উপহাসে বিরহ দিয়া
যে তুমি এত সুখ পাও -
বুকের কসম দিয়া কও দেহি,
তোমার ভিটায় এতটুকু দখল
আমারে দাও নাই কোনদিন?
তবুও কিছুই কইনা আমি -
সওদা তুমি নাইবা দিলা,
এতবড় সওদাগর;
জমিদার তুমি,
অন্তত
তোমার জমিদারীর
এক নগন্য, প্রজা কইরা হইলেও
বাঁচতে দিও।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



