somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বপ্ন

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৫:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চারদিক অন্ধকার নেমে এসেছে। রিক্সা এত আস্তে চলে কেন?
'তোমার টেনশন হচ্ছে?'
'বাসায় যাওয়া দরকার.....।আজকে দেরী হয়ে গেলো'
'এইতো চলে এসেছি'

বাসস্ট্যান্ডে অনেক মানুষ।
'তুমি দাড়াও তোমার রিক্সা ঠিক করে দেই'

হঠাৎ হাতটা খামচে ধরলাম।
' দেখো জান্তির আব্বু'
'কই?'
'এই যে সামনের রিক্সা ঠিক করছে! দেখলে কি ভাববে?'
'তাতে কি? চিনে তো আমাদের।'
তার কথা বলার আগ্রহ দেখে শার্টের হাতা ধরে টেনে আনি পিছনে দোকানের সামনে। হাতটা ছুটিয়ে বলে 'কথা বলে আসি।'
প্রথমে পিছন ঘুরে থাকলেও পরে ফিরলাম।
আংকেলের কথা কানে আসে আমার 'এইটুকু আসতে পারো আর বাসায় যাও না।?'
আমি তার পিছনে কাঁধের পাশ থেকে মুখটা একটু বের করি অপরাধীর মত।
সে হ্যান্ডসেক করতে করতে হাসিমুখে পরে যাবে কথা দেয়।
এইটা কি হলো! দেখল!

'শুনো?'
'হুম! কি বলো?'
'আমি ব্রীজ দিয়েই পার হই। তুমি চলে যাও। রিক্সা আমি নিয়ে নিবো।'
'আচ্ছা আমি দাড়াই'

আর কথা বলার সময় নেই। ছুটতে ছুটতে ব্রীজ পার হই আমি। বাস এসেছে খালি। মানুষের ভীর.....বাস ধরার জন্য

ভয় আর খারাপ মেজাজ নিয়ে রিক্সা খুজি
'কত্তগুলা জিনিশ ধরিয়ে দিলো!!' হাতে থাকে প্যাকেট গুলো সামাল দিতে দিতে
রিক্সা ঠিক হলো। আমি একাই না, একই রাস্তা বলে আরও একটা মেয়ে উঠলো।
'ভাই এখানে নামান....' তারপর আমার দিকে তাকিয়ে 'তুমি তোমার পা টা একটু সরাবে? আমি নামবো'
আমি পা সরাই
'আপা ঐদিকে নামাই।' জায়গাটা অন্ধকার! নিষেধ অমান্য করে সেখানেই নামিয়ে দিলো।
আমাকে আবার রিক্সা ধরতে হবে। ছিনতাইকারীর ভয় হচ্ছিল। যাহ: ব্যাগটাও ছিড়লো! নিচু হয়ে ব্যাগ তুলতেই এক মহিলাকে দেখি অন্ধকার আমার দিকে চেয়ে আছে। পোকা খাওয়া দাত বের করে
হাসছে 'খিক খিক'!
'ব্যাগ ধরতে টাকা লাগবো'
আমার প্রয়োজনটা সে বুঝে গেছে 'যা লাগে দিবো.....' একটা রিক্সা পর্যন্ত শুধু।
'আরেকটা জিনিশ লাগবো'
'কি?'
'এখানে আসেন'
রাস্তার সাথেই একটা বাসায় ঢুকলাম। আমাকে প্যাকেট বদলে দেয়া হলো। এইবার নিতে সহজ হবে, একাই পারবো।
আমি বাইরে দাড়িয়ে। সে বোধহয় জানত, আমি বলার আগেই ' একটা জিনিশ দেয়া লাগবো'
'কি?'

খপ করে আমার হাতটা ধরে সে, আরেক হাতে চকচক করে সেভিং ব্লেড। ভয় পেয়ে যাই।
উপরের বাসার বারান্দা থেকে এক মহিলা মাথা বাড়িয়ে তিরষ্কার করলো আমাকে 'খুব শখ ব্যাগ ধরবে! দিয়ে আসবে!'
ব্লেডটা আমার হাতে লাগতেই হ্যাচকা টানে হাত ছাড়ালাম এক দৌড়ে ভিতরে আবার।
সে আমার পিছু পিছু......শুধু একটা পোচ দিবে হাতে.....শুধু একটা! রক্ত দেখবো একটু.......একটু!
মাথা খারাপ!!! আমি ছুটে যাই....।


তারপর কি হলো জানি না.......হঠাৎই দেখলাম
তার গায়ের শাড়ি দিয়েই তাকে পেচিয়ে বাঁধছি.....বাড়ীর কাজের মেয়ে ভয়ে ভয়ে আমার ডাক শুনে সামনে এসে দাড়ায়। 'দড়ি নিয়ে আসো। বাঁধবো।'
দৌড়ে দড়ি এনে দিলো আমি বাধলাম। সাইজটা দেখতে একটা পুটলির মত হলো যা আমি হাতেই রাখতে পারি। সেটা আরও ছোট হতে লাগলো লিক হয়ে যাওয়া বেলুনের মতো আর ঐ মেয়ের চোখ জোড়া বড় বড় হয়ে গেলো। বিড়বিড় করছে সে 'বের হয়ে গেছে আবার!'

আমিও বুঝেছিলাম.....ব্যাগ কাঁধে নিয়ে দৌড়াচ্ছি। এইতো সামনেই গেট.....পার হলেই মুক্তি!
পেছনে গলা শুনলাম আমি মেয়েটার 'আপা! আসছে! চলে আসছে!!'
চোখের কোণ দিয়ে নগ্ন বৃদ্ধার শুকনো শরীরের ছায়া দেখতে পেলাম......আমার অন্তর আত্না কেঁপে উঠলো!

আরেকটু গেলেই মুক্তি! আমি ছুটছি......এইতো আরেকটু গেলেই মুক্তি!

-----------------------------
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:১৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×