somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবাধ্য সুর

৩১ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৩:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: ধর্মীয় বিষয় কষ্ট দিলে আন্তরিকভাবে অনুরোধ থাকবে আমার লিখা এড়িয়ে যাবার।


(ছবি নেট হতে নিয়ে এডিট করা)

প্রিয় মামনি,
সম্বোধনটা তোমার আব্বুর অনন্যতম আইকিউ থাকায় ধরতে পারলেও হয়তো অনেকের কাছেই দুর্বোধ্য মনে হতে পারে। তাই প্রথমেই বলি, তোমার ঠিকানা আমার জানা নেই তাই তোমার আব্বুর ঠিকানাতেই তোমাকে লিখতে হলো। জানিনা কাজটা কতোটা ঠিক করলাম। কারণ ঠিক-ভুল বিবেচনার মতো অবস্থাতে আমি নেই। তবুও এই অবস্থার ভেতরেই তোমাকে লিখছি কারণ তোমার আব্বুকে লিখার সাহস আমি পাচ্ছি না। আমি ব্লগ ছাড়াতে তোমার আব্বু আমার উপর যতোটা অভিমান করেছে তারচাইতেও বেশি কষ্ট পেয়েছে এটা তোমার আব্বুর পোস্ট পড়ে বুঝতে পেরেছি। তোমার আব্বু বহুবার উৎসাহিত করেছে কিন্তু আমি তার সঠিক মূল্যায়ণ দিতে পারিনি বিধায় আমার উপর রাগ করাই স্বাভাবিক। তাইতো তোমার আব্বুকে লিখার সাহস পেলাম না। যদিও সাহস করে তোমার আব্বুর সেই পোস্টে একটা কমেন্ট করেছিলাম তাও হয়তো তোমার আব্বুর অগোচড়েই রয়ে গেছে।

প্রিয় চাঁদমুখী,
জনিনা তোমাদের কি ধরণের পৃথিবী উপহার দিতে যাচ্ছি। কিন্তু যতোটা বুঝতে পারছি তোমাদের হয়তো ধর্ম, মায়া, মমতা, আবেগ, বিবেক, আর অনুভূতিশূণ্য এমন এক আধুনিক পৃথিবী উপহার দিতে যাচ্ছি যেখানে থাকবে শুধু আভিজাত্যের লড়াই। ন্যয়-নীতিহীণ দাম্ভিকতাই হবে সেই পৃথিবীর পরিচালক। তোমরা সেখানে এতোটাই স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে পারবে যে ন্যয়-নীতির ধার না ধেরে ইচ্ছেমত মনের খুশির জন্যে হাসতে-হাসতে অনেক কিছুই করতে পারবে স্বাধীনতার আস্তরণ গায়ে। কারণ তখন তোমাদের আবেগ-বিবেকের কোনো পিছুটান থাকবে না। কিন্তু আমাদের মতো ধর্মভীরুদের সমস্যা কোথায় জানো? অবাক করা বিষয় যে, এমন জামানার ভবিষ্যত বাণী আমাদের ধর্ম সহস্র বছর পূর্বেই করেছে। তাইতো সেই জামানা নিয়ে তোমাদের জন্য যতোটা ভয় হয় তারচেয়ে বেশি ধর্মবিশ্বাস শক্ত হয়। জানিনা এসব তোমাদের যুগ অনুযায়ী তোমাকে বলা কতোটা ঠিক হচ্ছে। তাছাড়া তুমি এসব কথার কোনো মর্ম হয়তো উপলব্ধি করতে পারবে না। বরং এসবকে পাগলের প্রলাপ বলে উড়িয়ে দেবে। আর আমিও সেটাই চাই।

প্রিয় মায়াবতী,
হয়তো কোনোদিন তোমার জানা হবে এভাবে একসময় মানুষ চিঠি লিখে মনের ভাব প্রকাশ করতো যা তোমাকে হতভম্ব করে দিবে। কিন্তু তুমি এর কোনো কূল-কিনারা খুঁজে পাবেনা। যেমন এখন তোমার আব্বুর শেকড়ের টান আছে বিধায় ভিনদেশে বসেও একটু দেশের পরশ গায়ে বুলাতে এখানে আসে। তোমাদের নিশ্চই এসব ছাই-পাশ পড়ার টান/সময় হবেনা। বরং আমি তোমাকে লিখেছি তা কোনদিন জানতে পারলে অবাক হবে যে আমাদের যুগে মানুষ কতোটা অকর্মা আর বেকার সময় পার করেছে যা দিয়ে অচেনা-অজানা কারো জন্যে এমন ছাই-পাশ লিখেছে। সত্যি বলতে মা এজন্যেই লিখালিখি হতে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। কারণ, আমাদের পূর্বের মহামানবদেরও আজ আমরা এভাবেই ট্রিট করে থাকি। ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় প্রতিনিয়তই তাঁদের অপমান করে চলি। কারণ, আমারা যে তাদের চাইতে অনেক উন্নত। তাই তোমরা আমাদের চাইতেও বেশি উন্নত হবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ, আমরা এখন এতোটাই উন্নত হয়ে গেছি যে ধর্ম এখন আমাদের কাছে মূল্যহীণ। বরং ধর্মের অবমাননাই আমাদের প্রশান্তির স্থান।

প্রিয় হীরামনি,
এসব আবোল-তাবোল ভাবনার কারণেই এখন আর লিখালিখি ভালো লাগেনা। কিন্তু এভাবে লিখা হতে দূরে সরে থেকে নিজেও যে খুব শান্তিতে থাকি সেটা বলবো না। কিন্তু সময়ের সাথে যে তাল মেলাতে পারিনা। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে আর কতদূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব? আর এভাবে খুঁড়িয়ে চলার জন্য কত কথা শুনতে হয় তারতো শেষ নেই। তাই এভাবে না চলে যাত্রা ভঙ্গ দেওয়াই কি উত্তম নয়? যদিও এভাবে যাত্রা ভঙ্গ দেওয়াটা তোমার আব্বুর মতো অনেক সহযাত্রীকেই সমব্যাথি করছে। কিন্তু কি করবো মা? সবার শক্তিতো আর এক না। অনেকেই পারে লাথি খেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে এমনভাবে সোজা হাঁটতে যেনো লাথি খাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। কিন্তু তবেতো আর পার্থক্য বলে কিছু থাকতো না। আর এজন্যে তোমার আব্বু আমার কি নাম দিয়েছে জানো? "বুদ্ধিমান বোকা ছেলে"!

প্রিয় শেরজাকণ্যা,
জানিনা বুঝবে কিনা যে কতোটা ভালবাসা থাকলে একজন অজানা-অচেনা মানুষকে চাহিবামাত্র নিজের মহামূল্যবাণ কণ্যার ছবি দেওয়া যায়। আমিও চাইনি সে ছবির অমর্যাদা হোক। তাই তোমার আব্বুর অনুরোধে তুমি বড় হয়ে পড়বে সে আশায় তোমায় নিয়ে লিখা কাব্য প্রকাশ রাখার পর তোমার মর্যাদার কথা ভেবে আবার লুকিয়ে ফেলেছি। হয়তো এই বিষয়টাও তোমার আব্বুর কাছে অপছন্দনীয় লাগতে পারে যে তোমার আব্বুর সাধ ছিলো তুমি বড় হলে সেই কাব্য তোমায় শুনাবে। কিন্তু আমি তা লুকিয়ে ফেলেছি। সেজন্য এই চিঠির সাথে সেই কাব্যটি সংযুক্তি হিসেবে দিচ্ছি যদি কভু তুমি জানতে পারো। তোমার আব্বুর প্রতি অনুরোধ থাকবে লিখাটি একান্তভাবে সংরক্ষণের। কেননা, হয়তো আমার লিখাগুলো আবার অচিরেই গায়েব হয়ে যাবে।

প্রিয় মা,
তোমার মূল্যবাণ অনেকটা সময় নষ্ট করার জন্য পারলে ক্ষমা করে দিও। সেইসাথে তোমার আব্বুকেও অনুরোধ করবো আমার মতো অথর্বকে ক্ষমা করার জন্য। কেননা, আমি আবেগের কাঙ্গাল। যেখানে আবেগ, বিবেকের ঠাঁই নেই সেই স্থান আমার নয়। তাই শত ইচ্ছে থাকলেও তোমার আব্বুদের সঙ্গে আগামীর পথে আর যাত্রা করতে পারলাম না। তাছাড়া খুঁড়িয়ে চলা কাউকে পাশে নিয়ে চলা যে কতোটা কষ্টের তা নিশ্চই তোমার আব্বুদের অজানা নয়। আগামী না জানুক আমার কথা, তবুও আগামীর দিন সুন্দর হোক এই কামনা রেখে এই পাগলের প্রলাপ এখানেই শেষ করছি।
তুমি সত্যিকারের সুখী হও মা।

সংযুক্তি
শুভ্র বসনা কইন্যা তোমায় দেখিয়া হইনু মুগ্ধ,
স্বর্গ হইতে নামিলে আজি মর্ত্যে লাগাইতে যুদ্ধ।
ওহে স্বর্গের অপ্সরা, এলে পঙ্খীরাজে চড়ি,
কোনবা দেশের রাজকন্যা তুমি? কোথায় তোমার বাড়ি?
তোমায় পাইতে নির্ঘাত যাবে শত কোটি প্রাণ বলি,
তারপরও কেউ পাবে কি তোমায়? নাকি যাইবে খালি?
তোমায় পাওয়ার মরণযুদ্ধে আমি এক অভাগা সৈণ্য,
যদি পাই তবে ভালবাসিতে করিবোনা কার্পণ্য।
ওহে পরী! তোমায় লইয়া, যাইবো তেপান্তরে,
দেবোনা কভু ব্যাথা লাগিতে, ঐ শুভ্র অন্তরে।
খেলিবো দুজনে লুকোচুরি আর কানামাছি একসাথে,
খেলায়-খেলায় কেটে যাবে দিন, হাত রেখে ঐ হাতে।
কি যাদু করিলা ওহে গুলুমুলু? কি মায়ায় রাখিলা বাঁধি?
শত জনমের চেনা তুমি মোর, পরিচয় যেনো আদি।
ওহে কালোকেশি! ওহে ঘনকেশি! ওহে শুভ্র অপরূপা!
দাওনা দেই চুলে বেঁধে আজ, বেলীফুল দিয়ে খোপা।

তোমায় লইয়া কতো সাধ মনে, কিন্তু ভয়ও আছে,
তোমার সাথে মোর ভাব হইলে, মানবে কি মহারাজে?
মহারাজেরে বড্ড ডরি, তাইতো মনে সদা ভয়,
শেরজা মহারাজ এসব জানিলে, কে জানে কি হয়!
এমনি মহারাজ তোমারে রাখে সাত কুঠরির ছায়,
লোক চক্ষুর অন্তরালে, যদি কভু নজর লেগে যায়!
তাইতো অনেক কসরত করিয়া দেখিতে হইলো তোমায়,
দোয়া করি যেনো ঐ চাঁদমুখে, কারো নজর না লেগে যায়!

যা বলছিলাম ওহে অপরূপা, সেই কথা করি শেষ,
দুজনে মোরা করবো ছুটাছুটি, খেলা হবে জম্পেস।
সারাবেলা করিয়া খেলা, ক্লান্ত দেহে শেষ বেলাতে,
ক্লান্তি নাশিতে ঘুমাইবো তোমার কোমল কোলেতে।
ঘুম হতে জাগি হইবো অবাক, চারিদিক জনশূণ্য,
কোথা গেলে অপ্সরা তুমি? খুঁজিবো হইয়া হন্য।
দেখিবোনা কোথাও পঙ্খীরাজ, কিংবা তোমার ছায়া,
চারিপাশ মোরে ঘিরিয়া রাখিছে শূণ্য অরণ্যের মায়া।
মুচকি মুচকি হাসিবো তখন তোমার কথা ভাবিয়া,
স্বপ্নে তোমার সাথে হওয়া দেখা, ছুঁয়ে যাবে মোর হিয়া।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৩:৪৫
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×