২০০৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্র, শিক্ষক ও সেনা সদস্যের মধ্যে সৃষ্ট সহিংসতার পরবর্তী নির্যাতনের দায় এড়াতে চাইছেন বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দীন আহমদ ও সাবেক সেনা প্রধান মইন উ আহমেদ। এমনটাই মনে করে ওই ঘটনা তদন্তে গঠিত সংসদীয় উপ-কমিটি।
এই বৈঠকের আগে বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওই দুই প্রধান কুশীলবের পাওয়া চিঠি এবং বৈঠকে তৎকালীন ডিজিএফআই প্রধানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের বক্তব্য সাংঘর্ষিক হওয়ায় উপ-কমিটি এমনটা মনে করছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে দুজনই (ফখরুদ্দীন ও মইন) দায়িত্ব অস্বীকার করেছেন। তারা উপর মহলের নির্দেশ পেয়েই সব করেছেন। তাদের সঙ্গে ড. ফখরুদ্দীন ও মইন উ আহমেদের বক্তব্যের মধ্যে স্ব-বিরোধিতা বিদ্যমান। তিনি জানান, ড. ফখরুদ্দীন তার মেইলে বলেছেন, নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে যা কিছু হয়েছে তা তিনি করেছেন। কিন্তু অপারেশনের লেভেল-এ যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তার জন্য নিম্ন পদস্থ কর্মকর্তারাই দায়ী। ফখরুদ্দীন দাবি করেছেন, কোনো প্রকার নির্যাতনের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না। এ ধরনের ঘটনা তিনি এপ্রুভ করেননি, কন্ডেমও করেননি। ওই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় পদ্ধতিতেই গ্রেফতার, বিচার ও শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। সেখানেও তিনি কোনো হস্তক্ষেপ করেননি। তাই এ ব্যাপারে তার কোনো কিছু বলার নেই। অপরদিকে, মইন উ বলেছেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে মাত্র ১০ দিন আগে তার একটি সার্জারি হয়েছে। বর্তমানে তিনি ডাক্তারের পরামর্শে হাসপাতালে শয্যাশায়ী আছেন। তিনিও নির্যাতনের দায়িত্ব অস্বীকার করে বলেছেন- হায়ার লেভেল থেকে এ ধরনের কোনো ইন্সট্রাকশন ছিলো না। আগামীতে ই-মেইলের মাধ্যমে এই উপ-কমিটির প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি আছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। কমিটির বৈঠকে ডিজিএফআই'র তৎকালীন প্রধান মেজর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ, রাজশাহী অঞ্চলের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সামছুল আলম খান (শামস) ও র্যাব-৫ কর্মকর্তারা বলেছেন, নীতি-নির্ধারণী মহলের নির্দেশনার বাইরে তারা কিছুই করেননি। উপরের নির্দেশেই সব করা হয়েছে।
এসব বক্তব্যের প্রেক্ষিতে উপ-কমিটি মনে করছি- ওই সময়কার গ্রেফতার-নির্যাতনের সাথে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ই জড়িত ছিলেন। এ জন্য তারা (ফখরুদ্দীন ও মইন) সশরীরে হাজির হয়ে আলোচনায় অংশ নিলে ভালো হত। তিনি বলেন, কমিটি মনে করে বিষয়টি আরো খোলাসা হওয়া প্রয়োজন এবং এটা খোলাসা করার জন্য আমরা তাদের বেশকিছু প্রশ্ন দেবো। যদি তারা এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে নিজেদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো খণ্ডন করতে চান, তবে আমাদের সঙ্গে মেইল বা টেলি-কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হবে। আর তারা যদি যোগাযোগ না করেন, তবে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের ধরে নিতে হবে, তাদের বিরুদ্ধে যে বক্তব্যগুলো এসেছে তাই সঠিক এবং নির্যাতনের ঘটনার সাথে তাদের সমপৃক্ততা রয়েছে। কমিটির পরবর্তী বৈঠকে এ তদন্তের আহ্বান জানানো ৬ নাগরিককে ডাকা হবে। ওই বৈঠকের পরই তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হবে। ফখরুদ্দীন ও মইনকে তার আগেই এ কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



