পযবেক্ষনশীল মানুষের চোখে বিগত অবৈধ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত অবৈধ নির্বাচনটি ছিল পাতানো।তারই ধারাবাহিকতার প্রমান মেলে উপজেলা নির্বাচনে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের ভেতেরে ও বাহিরে শব্দের বাহারি গোলক ধাধায় যে কটি বিষয়ে ইঙ্গিত ছিল সেগুলো হলোঃ ক)অবৈধ ফখরুদ্দিন সরকারের সকল অবৈধ কাজের বৈধতা দান খ)ভারতকে ট্রানজিটের নামে করিডোর প্রদান গ)চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর এশীয়দের জন্য উন্মুক্ত করার উছিলায় ভারতের জন্য উন্মুক্তকরন ঘ)মার্কিন খবরদারি জোরদারের জন্য সোফা চু্ক্তির ন্যায় টিফা চুক্তি বাস্তবায়ন ঙ)ইসলামপন্থীদের দমনের উদ্দেশ্যে এবং ভারত-মার্কিন সামরিক স্বার্থে সন্ত্রাসবিরোধী দক্ষিন এশীয় টাস্কফোর্স গঠন ও তথাকথিত যুদ্ধপরাধী বিচার।
যদি বলা হয় মোটাদাগের এই পাচটি কাজ সংঘটনের জন্য শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে তাহলে বোধহয় সত্যর অপলাপ হবেনা। আর এসব কারনেই চারদলের নির্বাচনী শ্লোগান ছিল, “দেশ বাচাও,মানুষ বাচাও”।
চরম বিপজ্জনক ও অদক্ষ এক মন্ত্রীসভা নিয়ে শেখ হাসিনা এই ৫ বিষয় বাস্তবায়নে কোমর কষে লেগেছেন।যে সুনির্দিষ্ট এসাইনমেন্ট দিয়ে তাদের ক্ষমতায় বসানো হয়েছে তার দ্রুত বাস্তবায়নে তাদের বদ্ধপরিকর বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।মন্ত্রীসভায় সংস্কারপন্থী সুরন্জিত,আমু,রাজ্জাক,তোফায়েলরা স্থান পায়নি,কারন তারা ফখরুদ্দিনপন্থী ছিলেন।খুব ভালো কথা,তাহলে ফখরুদ্দিনের রোষানলে পতিত আব্দুল জলিল,সেলিম,নাসিম,ওবায়দুল কাদেররা কেন মন্ত্রীত্ব পাননি?কারন নাকি তারা দূর্নীতির কারনে জেলে গেছেন!ভালো কথা, তাহলে শেখ হাসিনা কেন প্রধানমন্ত্রীত্ব পেলেন? আর জেলে যেতে হয়নি এমন সৎ লোকেরা (?)কেন মন্ত্রীত্ব পায়নি?আসলে পরস্পর স্ব-বিরোধী এইসব কুযুক্তির আড়ালে প্রকৃত যে সত্যটি লুকায়িত তা হলো, যাদের পিঠে মেরুদন্ড নাই তাদেরই মন্ত্রীত্ব দেয়া হবে।তাই আমরা দেখছি জামানত বাজেয়াপ্ত লোকটিও মন্ত্রীত্ব পান।শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে না পারা লোকটিও মন্ত্রীত্ব পান।যে লোকটি সংসদ নির্বাচনে নমিনেশন পেতেই হিমশিম খান, মেঘ না চাইতেই বৃষ্টির মত তিনিই মন্ত্রী হয়ে যান।সুতরাং ১/১১,ফখরুদ্দিন,মইন ইউ আহমেদ,শেখ হাসিনার পররাষ্ট্র নীতির প্রতি তার কৃতজ্ঞতা ও আনুগত্যের শেষ কোনদিন হবেনা।তাকে দাড়াতে বললে দাড়াবেন,বসতে বললে বসবেন,চুক্তি সই করতে বললে করবেন।চোখ তুলে কোন প্রতিবাদ করবেন না।এমন মন্ত্রীসভায় ঠাসা এবারের মন্ত্রীপরিষদ।সংসদে বসে কানে হেডফোনটি তাই তারা উল্টা করে লাগান।সম্পূরক প্রশ্ন কি তা জানেনা। মাইকে হাস্যকর ভাবে ফু দেন।বাংলাদেশকে বাফার স্ট্যাট বললে মযাদাহানি হয়না।প্রধানমন্ত্রী ও তার মরহুম পিতার তোষামোদে কেটে যায় মন্ত্রী,এমপিদের বক্তব্যের নব্বই ভাগ।আসলে এমন মন্ত্রী সভা না হয়ে যদি মন্ত্রীসভায় শেখ সেলিম,ওবায়দুল কাদের,মহিউদ্দিন খান আলমগীর,আবদুল জলিলরা আসতেন তাহলে কি মইন ইউ আহমেদরা এত আয়েশে লেখক হতে পারতেন?উপরোক্ত চুক্তিগুলোর ব্যাপারে দাদারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারতেন?কখনোই না।
বানিজ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক লম্ফ-জম্ফ দেখে মনে হচ্ছে তিনি বুঝি ট্রানজিটের নামে করিডোর চুক্তি সই করার জন্যই নির্বাচিত হলেন।তিনি আমাদের সংকীর্নতা ত্যাগ করে ট্রানজিট প্রদানের বিরোধীতা না করার জন্য এবং আরো পড়াশুনা করার পরমর্শ দিয়েছেন।নিশ্চয় আমরা পরিধেয় বস্ত্র ফেলে দেওয়ার মত উদার কিংবা টিআইবির মোজাফফর আহমেদের মতো শিক্ষিত হতে চাইনা।আমরা জানি যার স্বার্থ থাকে সেই আগ বাড়িয়ে আসে।ট্রানজিট যদি আমাদের উপকারেই আসত তাহলে প্রিয়াংকা গান্ধী,প্রণব বাবুরা কেন আগ বাড়িয়ে আসলেন?আসলে আমাদের ভারত প্রেমিক পেপারগুলো এবং ভারত প্রেমিক রাজনীতিকরা যাকে ট্রানজিট বলছে তা তো করিডোর।করিডোর যে আমাদের জন্য বিপজ্জনক তা শব্দচুরির ভেতর দিয়েই আচ করা যায়।হিটলার অন্যর দেশ দখল করার জন্য এরুপ ট্রানজিট ব্যবহার করতেন।বর্তমান বিশ্বে কোথাও করিডোর ব্যবস্থা আছে কিনা আমাদের জানা নেই তবে ট্রানজিট আছে এবং তা আছে সমমান ও সমমনা দেশদ্বয়ের মধ্যে সমতার ভিত্তিতে।বাংলাদেশ,ভারতের মতো সকল ক্ষেত্রে অসম ও শত্রুভাবাপন্ন দেশের মধ্যে নিশ্চয় নয়।ভারত আমাদের নেপালে বানিজ্যর জন্য মাত্র ১৮ কিলোমিটার করিডোর দেয়নি,চুক্তি আগ্রাহ্য করে তিন বিঘা করিডোর দেয়নি।একই দেশের নাগরিক সত্ত্বেও বাংলাদেশী ছিটমহলের নাগরিকরা বন্ধী।তারা যাতায়াতের জন্য কোন রুট পায়নি।
আসলে ভারত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দিন থেকেই আমাদেরকে ঠকাচ্ছে।শান্তি বাহিনী,কাটাতারের বেড়া,তিস্তা বাধ,ফারাক্কা বাধ,চাল নিয়ে চালবাজি, চোরাচালান, সীমান্তে মানুষ হত্যা,মিথ্যা অপপ্রচার ,সাংস্কৃতিক আগ্রাসন,বানিজ্য ঘাটতি,ইসলাম বিদ্বেষ এমন কোন বিষয় নাই যা তারা আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে না। এই সমস্যাগুলোর কোনটার সমাধানের আশ্বাসে আওয়ামী সরকার তাদের ট্রানজিটের নামে করিডর দিচ্ছে?কোনটাই না।তবু আমরা নাকি সিঙ্গাপুর হয়ে যাব ট্রানজিট দিলে!তবে হ্যা, এটা সত্য যে, কিছু রাজনীতিক এবং কিছু বুদ্ধিজীবী ট্রানজিটের সুবিধায় সিঙ্গাপুর হয়ে যাবে।
ভারত ও আমেরিকা সমর্থিত ফখরুদ্দিন সরকারও এইসব দেশবিরোধী চুক্তির উদ্যোগ নিয়েছিল তবে পরে তা স্থগিত রেখে তাদের উত্তরসুরী শেখ হাসিনা সরকারের জন্য রেখে যায়।পূর্ববর্তী সরকার কাজটা করে গেলে আওয়ামী সমর্থরাও কেউ কেউ চুক্তিটির বিরোধীতা করত।সম্ভবত তাদের সমর্থন আদায়ের জন্যই চুক্তিগুলো শেখ হাসিনার সরকারের মাধ্যমে ঘটতে যাচ্ছে।সরকার গঠনের পর পরই এইসব চুক্তির উদ্যেগ দেখে মনে হচ্ছে,আরেকটি সংসদ নির্বাচনের আগে আগেই পাবলিক আবার ট্রানজিট সংক্রান্ত তাদের শোকটি কাটিয়ে ওঠবে।তখন যুদ্ধপরাধ-টরাধ বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে মাঠ গরম করা আবার সহজ হবে।
১২/০২/০৯
Email: [email protected]
Mob: 01670495397

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



