somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

সংবেদনশীলতা

২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ভয়ানক রকম বিকৃতি ঘুমিয়ে আছে। বর্বর মনো ভাব বিরাজ করে নিরবে। সুযোগ পেলেই সে সব বিকৃত অমানবিক মনোভাব বেরিয়ে আসে।
সেটা হতে পারে একা একা । বন্ধুদের আড্ডায় বন্ধুদের সাথে। একজন দুজন সঙ্গী সাথে নিয়ে। অথবা পরিবারে, সমাজে, অফিসে, রাস্তায়। গোত্র বর্ন লিঙ্গ বৈষম্য অবলম্বন করে।
আজকাল ফেসবুকে অনেক প্রতিবাদ দেখি। নানা রকম খবর ভাইরাল হয় মানুষের বিকৃত স্বভাবের কাজ কামের। কিছু খবর দেখে শোনে আতকে উঠি, আতংকগ্রস্ত হই, শিউরে উঠি। যারা এসব খবর দেখে প্রতিবাদ করেন তাদের মধ্যেও অনেকে গোপনে এসব কর্ম মনে মনে হয় তো ভাবেন, করেন । জানা যায় না কিছুই যতক্ষণ পর্যন্ত ভয়াবহ ভাবে কিছু না করে ধরা পরে।
মানুষের মনো জগতের খবর আমরা জানতে পারি না সহজে। যতক্ষণ না সে মানুষটি তার নিপাট ভালো মানুষের চরিত্রটি উন্মোচণ করে তার আচরণে। ধরা পরে অপরাধী হয়ে।
আশে পাশের বহু মানুষের মাঝে যে বিকৃত স্বভাব একজন থাকে, তা কাছের মানুষটিও অনেক সময় বুঝতে পরে না। যেমন নিজের স্বামী বা স্ত্রী যখন লুকিয়ে পরকিয়া করে নিজের স্ত্রী বা স্বামী, সন্তান তা বুঝতে পারে না। আত্মিয় স্বজন বিশ্বাস করে না। আবার অনেকে জেনে, লুকিয়ে হাসে, মজা নেয় ব্যাপারটি নিয়ে। পরিবারে বাচ্চা বলৎকার, ধর্ষণের শিকার হয় কাছের আত্মিয় দ্বারা, অনেক অভিভাবক সে খবর জানেন না।
ঘর থেকে বেরিয়ে যায় যে ভালো মানুষ ঘরে ফিরে আসে ভালো মানুষ তার মাঝের সময় কতটা খোলামেলা পরিবারের কাছে। স্ত্রী সন্তানের কাছে বা স্বামী/ স্ত্রীর কাছে। অনেক কিছু গোপন থাকে পরিবারের মাঝেও। গোপন থাকে পারিবারিক গণ্ডিতে। নানা রকম লোক লজ্জা এবং অর্থনৈতিক অনিরাপত্তার মাঝে।
যে সব ভালো মানুষ বিকৃত ভাবে তাকায় রাস্তার নারীর দিকে। গায়ে হাত দেয় সুযোগ পেলেই যে কোন অবস্থায়, তাদের জীবন যাপন সবার কাছে কিন্তু খুব সুন্দর।
তাদের মুখোশের আড়ালের অন্তরের ভিতরের খবর কেউ জানে না।
এ সব বিকৃত মনোভাব পুরুষ, নারী জন্মগত ভাবে কিছু বিকৃত মানসিকতা নিয়েই জন্মায়। তাদের অনেক ভালো করার চেষ্টা করেও ভালো করা যায় না। কোন এক পূর্ব পুরুষের জিন তাদের কুক্ষিগত করে রাখে তাড়িয়ে বেড়ায়। জন্মগত স্বভাবের এদের সংখ্যা খুব বেশি না।
এছাড়া অনেকে খারাপ আচরণ করে নিজের বেড়ে উঠা পরিবেশের কারণে। ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে অমানবিকতা পরিবেশের প্রভাবে।
মানুষকে অমানবিক ভাবে পারিবারিক নির্যাত করা এসব দেখে দেখেই শিশুরা বড় হয়। ঘরে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে নানা রকম অশান্তি। দেনা পাওনার টানাপুড়েন। চাহিদা পুরণের জন্য অমানবিক ব্যবহার। মা, বাবার মতানৈক্য, সন্তানকে কড়া শাসন। এছাড়া কাজের লোকের সাথে খারাপ ব্যবহার ছাড়াও পরিবারে আত্মিয় স্বজনের সাথে নানা রকম বিরোধ সব সময়ই লেগে থাকে অনেক পরিবারে। কেউ কাউকে দেখতে পারে না। আত্মিয় যে মানুষটির কাছে সন্তান অনেক ভালোবাসা পায় হঠাৎ তার সাথে কথা না বলার আদেশ যেমন পায়, তেমন তাদের আর কখনো দেখা হওয়ার সুযোগও বন্ধ করে দেন অভিবাবক। সন্তানের উপর এর প্রতিক্রিয়া প্রভাব কেমন হয় তা কিন্তু কেউ ভাবেন না। নিজেদের প্রয়োজন নিজেদের অবস্থা নিয়েই ব্যাস্ত অভিভাবক।
সামাজিক স্ট্যাটাস, ধর্মের বৈষম্য প্রত্যেক মানুষ নিজে ছাড়া আর বাকি সব মানুষদের নিচু শ্রেণীর ভাবার মনোভাব। শিক্ষা থেকে অফিস, রাজনীতি সব জায়গায় নানা ধরনের বুলি, বৈষম্য, অশালীন আচরণের সম্মুখিন হয় মানুষ প্রতি নিয়ত।
বাড়িতে, ঘরের বাইরে, স্কুলে, কাজে, চলার পথে অপমানিত হয়ে তার শোধ উঠানোর জন্য নিজের চেয়ে নিচু ভাবা মানুষকে বেছে নেয় মানুষ অবচেতন মনে। একের উপর অন্যের রাগ. বকা, মার দেখার সাথে শিশু বয়সের নরম কোমল মনোভাব, সহানুভুতিশীল মন, নষ্ট হয়ে যায়।
সাথে যোগ হয়েছে, বুঝে না বুঝে যথেচ্ছা ভাবে অর্ন্তজালের ব্যবহার করে পর্ণ, যৌনতায় আকর্ষণ হওয়া। যার সফলতা পাওয়ার জন্য যে কোন মানুষকে বেছে নেয়ার ভাবনা চিন্তা চলতে পারে ভিতরে ভিতরে পরিশুদ্ধ না হওয়া মনে।
এই ভাবনার সাথে দারিদ্রতা, নীচুতার সাথে থাকা অনেক মন, নিজেকে উপরে উঠানোর চেষ্টায় যে কোন ভাবে অর্থ রোজগারের ধান্দাও করে। এরা এক সময় অর্থর জোড়েই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় সমাজে বেশ পাকাপোক্ত ভাবে। কোনরকম খারাপ কাজকে এরা খারাপ মনে করে না নিজেদের বেলায়। এমন মানুষরা আবার বেশ ভালো অবস্থানে থেকে অন্যদের শাসন শোষণ করারও সুযোগ পায়।
সেই সাথে স্কুলে ধমক, বেত্রঘাত, শাসন দিয়ে শিক্ষা দেয়ার পদ্ধতি এখনো চলছে। যদিও অনেক বছর আগে। শাসন করা মার দেয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় ভাবে।
শিক্ষকরাও তো, এক একজন এই সব প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে, এই সামাজিক অবস্থান থেকে এসেছেন এবং আছেন নানা রকম জটিল অবস্থার মাঝে।
খুব অল্প মানুষ সক্রিয় ভাবে মননশীল মানবিকতার চর্চা করেন। সব জায়গায় তার ব্যবহার করেন। এরা আবার নানা রকম বুলির আওতায় পরেন। তাদের মার্জিত স্বভাবের জন্য।
এখনো ছোট বেলা থেকে মানুষের প্রতি সম্মান ভালোবাসা দেখানোর অনুভুতি না শিখালে। প্রকৃতিগত ভাবে শিশুদের মধ্যে থাকা, মানবিক সেন্সেশন নষ্ট না করে বরং তার যত্ন নিয়ে মানবিক অনুভুতির উন্নতি করার প্রতি জোড় দেয়া খুব দরকার। নয়তো এক সময় বর্বতার ভয়াবহ রূপ আরো বেশি দেখতে হবে।
অনেক বইয়ের ভাড়ে শিশুদের মন মানসিকতা, মাথা, মেরুদণ্ড, নুইয়ে না দিয়ে বরং শিশুদের মানবিক বিকাশে সাহায্য করা জরুরী হয়ে উঠেছে। এ জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে প্রয়োজন পারিবারিক ভাবনা চিন্তার পরিবর্তন।
পরিবারের মানুষ প্রত্যেকের আলাদা ভাবে স্বয়ং সম্পন্ন হওয়ার জন্য বেশি চেষ্টা করা দরকার। পরিবারের একজনের আয়ের উপর নির্ভর না করে। আঠারো বছরে সাবলম্বী হয়ে নিজের ভাবনা নিজের হলে, কাজ করে আয় করে, চলার মধ্যে দিয়ে অনেক কিছু শিক্ষা হবে। একজনের থেকে অর্থ নিয়ে আরামসে ব্যয় করার চেয়ে।
বিদেশ থেকে পাঠানো টাকার উপর যে সব সংসার চলে, তারা কখনো জানে না হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমের খবর। কিন্তু তারা সুখে উড়ে ভাব দেখায় বড়লোকি চালের হঠাৎ গজিয়ে উঠা অহংকারে ধরাকে সরা জ্ঞান করে অনায়াসে।
সামাজিক অনেক নিয়ম বদল দরকার, বাংলাদেশের মানুষের মনোজগৎ উন্নত করতে।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৬
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×