somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

ফ্রি হাগ

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্যান আই হ্যাভ এ্যা হাগ? পিছন থেকে কথাটা ভেসে এলো। গতবছর ডিসেম্বরে একদিন মলে হাঁটছিলাম। হঠাৎ এমন একটা বাক্য কানে যেতে ঘুরে দাঁড়ালাম। দেখি আমাকেই লক্ষ করে বলছে, কথাটা একটি ছেলে। আঠাশ ত্রিশ বছরের মধ্যে হবে বয়স। হ্যান্ডসাম ছেলেটি হাগ চাচ্ছে আমার কাছে।
অনেকে হাগ দেয়ায় খুব পটু। নির্মল জড়িয়ে ধরা এই হাগ করাটা এদেশের খুব স্বাভাবিক একটা ধারা। সৌজন্যমূলক নির্মল। তবে সাধারনত পরিচিত এবং অনুষ্ঠানে এই হাগ করা হয়।
শুনেছিলাম হাগ নিয়ে বেশ কথা বার্তা চলছে তখন। তবে তেমন পাত্তা দেইনি তাই খুব ভালো জানাছিল না। কত ধরনের নতুন কিছু চালু হয়। হাগ করা নিয়েও নতুন করে একটা আন্দোলন চলছে।
রিতা এবং মেলিন্ডা ভ্রমণের সময় পরিচিত হয় এবং নিজেদের স্যাসোল মিডিয়ায় সংযুক্ত করে। এক সময় রিতা মেলিন্ডাকে জানায় আমি কানাডা আসছি এবং তোমাকে হাগ করার জন্য আসব। মেলিন্ডার কাছে একরাত থেকে রিতা চলে যায়। শুধু নির্মল এই হাগ দেয়ার জন্য রোড ট্রিপের একটা স্টপেজ দিয়ে, পথে পরিচিত বন্ধুর কাছে আসে রিতা।
বর্তমান সময়ে মানুষ খুব একাকী হয়ে যাচ্ছে। এই একাকী সময়ে কাজে পাওয়ার মতন বন্ধু। হাগ করার মতন কেউ যখন থাকে না। তখন অপরিচিত জনদের হাগ দিয়ে যদি কারো মনে একটু ভালোলাগা তৈরি করা যায়। দুঃখি, বিষন্ন, একাকী একজন মানুষকে যদি একটু ভালোলাগা দেয়া যায় মূহুর্তের আলিঙ্গন দিয়ে। তাহলে সেটা করতে অসুবিধা কোথায়। মানুষ মানুষের জন্য এই ভাবনাই মূল বিষয়।
রিতার নিজস্ব কিছু সমস্যা ছিল। একাকী বসে থেকে, খেয়ে খেয়ে বিশাল ওজন বানিয়ে ছিল শরীরে। গত বছর রিতা অতঃপর উঠে পরে নিজের মতন কিছু একটা করবে বলে। পনেরশ অচেনা মানুষকে হাগ করে সে। রিতার এই কার্যক্রম বেশ প্রচলিত হয়ে যায় কানাডায়। অনেকেই মূহুর্তের জন্য একটা হাগ পেতে চায়, দিতে চায়।
রিতার আগে অস্ট্রেলিয়ার সিক পাপিস ব্যাণ্ডের দল ফ্রি হাগ ক্যাম্পেইন চালায় ২০০৬ সনে।
গিভ মি এ্যা হ্যগ এত পপুলার হয় ওদের গানটা প্রচারের সাথে সাথে চৌয়াত্তর মিলিয়ন ভিউ হয় । রাস্তার উপর ফ্রি হাগ ক্যাম্পেইনে দাঁড়িয়ে প্রায় বাইশ হাজার লোকের সাথে হাগ করে।
ফ্রি হাগস ক্যাম্পেইন এমন একটি সামাজিক আন্দোলন । জনসমাবেশে খোলা জায়গায়, অপরিচিত ব্যক্তিকে আলিঙ্গন করে নিঃস্বার্থ ভাবে, অন্যকে ভাল অনুভূতি দেয়ার জন্য ।
আমাদের সংস্কৃতিতে হাগ করার প্রচলন নাই। পরিবারের লোকজনের মধ্যেও হাগ করা হয় না। হাগ তো দূরে থাক আমরা অপরিচিত ব্যাক্তির মতন আপনি আপনি করে বাবা মার সাথেও কথা বলি অনেক পরিবারে।
এমন সংস্কৃতির মানুষ আমি হুট করে অপরিচিত একজনকে হাগ করে বসতে পারলাম না। যদিও জানি ব্যপারটা নির্মল। অনেকে ইচ্ছা করে ডেকে ডেকে, হাগ দিচ্ছে নিচ্ছে। তবে আমি অভ্যস্ত নই তাই সরি বলে চলে এসেছিলাম।

যত বেশি নাগরকেন্দ্রিক হচ্ছে জীবন, তত বেশি দূরে সরে যাচ্ছে মানুষ থেকে মানুষ। মানুষের কাছে আসার, অচেনা কাউকে একটু ভালো থাকার এই প্রচলনটা হয় তো বেশ প্রচলিত হয়ে উঠত। হাগ করার এই রীতি আরো বেশি প্রচলিত হয়ে উঠত এ বছর হয় তো অস্বাভাবিক মহামারীর অবস্থা তৈরি না হলে।

কিন্তু করোনা, এসে মানুষকে আরো দূরে সরিয়ে দিল মানুষ থেকে। মানুষ এখন ভয়ে ভয়ে অন্য মানুষের দিকে দেখে। দূর থেকে অচেনা কারো দিকে চেয়ে এক টুকরো হাসি বা কোন কথা বার্তা যেমন জমে উঠত হঠাৎ করে কখনো রাস্তা, রেস্তুরা, মলে, বাসে ট্রেনে। এখন অন্য মানুষ দেখে, পাশ কাটিয়ে মুখ ঘুরিয়ে চলে যাওয়ার প্রবনতা আরো বেড়ে গেলো।
তবে কোভিড দূর হলেই কিছু মানুষ হাগ করতে বেড়িয়ে আসবে বলেও অনেক পরিকল্পনা করছে।


সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪৬
৯টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×