
ঋতুচক্রের চারটি ঋতু এখানে, এই দেশে উত্তর আমেরিকায়। প্রতিটি অনেক অদ্ভুত ভাবে নিজের রূপ নিয়ে হাজির হয় সময়ে। খুব ভালো লাগে দেখাতে। শ্বেত শুভ্র শীত কাল অসম্ভব সুন্দর। সাদা এমনিতেই আমার প্রিয়, তুষার ধবল শীতকাল বড় রোমান্টিক হয়ে আসে এখানে।
ফায়ার প্লেসে জ্বলে আগুন, ঘর গরম রাখতে। আর বাইরে শীতল বরফপাত। তারমাঝে কফির কাপে বা স্যুপের বাটিতে চুমুক দিতে দিতে বইয়ের অক্ষরে ডুবে যাওয়ার আনন্দ অন্য রকম। কখনো দৃষ্টি মেলে দেখা বাইরে কতটা গাড় হলো বরফের আস্তরন। দারুণ এক আবহাে তৈরি করে স্প্রুস, সিডর গাছ গুলো দাঁড়িয়ে থাকে হালকা সবুজ পাতার আভাস গায়ে মেখে। গাছগুলো জড়িয়ে থাকে সাদা বরফের কম্বল। ন্যাড়া ম্যাপেল, ওক, আপেল, উইলোর ডাল জড়িয়ে থাকে বরফের দারুন সব গাউন। চারপাশে একটা স্বপ্ন মায়া পুরি যেন। এদেশে বৃষ্টিপাত আমার ভালোলাগে না।
এখানে চারটি ঋতু আছে কিন্তু কোন বর্ষাকাল নেই। বর্ষাকাল আমাদের দেশে যতটা ভালো লাগে এখানে আমার বর্ষাকালটা তেমন ভালো লাগেনা। হয়তো জীবন যাত্রার জন্য। বরফের মাঝে পথ চলা যতটা আনন্দের বৃষ্টিতে তেমন নয়।
কিন্তু এবছর প্রচুর বৃষ্টি হলো। বৃষ্টির কারণ ছিল হ্যারিকেন অনেকগুলো যা তছনছ করে দিয়েছে অনেক মানুষের সাজানো ঘর। এবছর জুড়েই ছিল সাউথে, আমেরিকায় অনেক অনেক হারিকেন। তার প্রভাবে অন্ধকার আকাশ। বৃষ্টি আর বাতাস পেয়েছি অনেক । গ্রীষ্মকাল ছিল বেশিরভাগ মেঘাচ্ছন্ন দিন। সারা বছর যেন হয়েছিল বর্ষাকাল। গত তিন দিন ধরে ঘন কালো মেঘের আস্তরণ মাথার উপরে। আকাশ অন্ধকার কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। এমন দিন বড় বিষন্ন লাগে ।
বৃষ্টি ভালো লাগেনা এখানে আমার তুষারপাত দেখতেই বেশি ভালো লাগে। এবং প্রথম দিনের তুষারপাত অসম্ভব সুন্দর, তুষার গুলো যখন সরিয়ে ফেলা হয় পরিচ্ছন্ন করা হয়। তখন বেরিয়ে আসে, কালো কাঁদা ভিতর থেকে। বিচ্ছিরি চাঁদের কলঙ্কের মতন। আজ হঠাৎ বরফ পড়া শুরু হলো। অনেকক্ষণ বাইরে গিয়ে প্রথম বরফের ছোঁয়া অনুভব করলাম। শীত তেমন প্রখর নয়। মিনিট পনের ধরে বরফের মাঝে ঘুরে বেড়ালাম । মাথা ভর্তি বরফ কুচি এখনো জড়িয়ে আছে। প্রকৃতির নানা রকম রংয়ের সাথে মিলে যেতে খুব ভালো লাগে আমার।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ ভোর ৪:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


