যখন আমরা শিশুদের চোখ দিয়ে পৃথিবীকে দেখি, তখন প্রতিটি দৃশ্যই হয়ে ওঠে এক দুর্দান্ত গল্প। ০-০৬ মাস- এই সময়টিতে শিশুরা নতুন শব্দ ও স্বর শুনে অভ্যস্ত হয়। তারা চেহারা ও স্বরের প্রতি বেশি সংবেদনশীল। সোনামণির মধুর সময়- যে সময়ে যে গল্প সিরিজে আজ আমরা কিছু মনোমুগ্ধকর গল্প শিশুদের বলবো, যেখানে বিভিন্ন প্রাণী, যেমন খরগোশ, শিয়াল, পাখি, এবং ফুল, একসাথে পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করছে।
গল্প ১: ছোট্ট পাখি টুনটুনি
একটি ছোট্ট পাখি ছিলো, নাম তার টুনটুনি।
টুনটুনি গাছে গাছে উড়ে বেড়ায়।
'টুইট টুইট!' বলে ডাক দেয়।
টুনটুনি বলে, 'আকাশ অনেক বড়,
আমি আকাশে উড়বো, হালকা হাওয়ায় ভাসবো।
টুনটুনি সবার বন্ধু। তুমি কি টুনটুনিকে দেখেছ?
গল্প ২: লাল বল
একটি লাল বল ছিলো, গোলগাল আর নরম।
বলটা গড়িয়ে যায়—'গড় গড়, গড় গড়, গড় গড়!'
একদিন বলটা বাগানে গড়ালো।
ফুল, পাতা, আর ঘাসের সাথে বল বললো,
'তোমরা কি খেলবে আমার সাথে?'
ঘাস বলল, 'হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমরা তোমার বন্ধু!'
আর তারা মিলে খেললো।
গল্প ৩: রঙিন মাছ
জলে ছিলো একটি রঙিন মাছ।
নীল রঙের লেজ, লাল রঙের পাখনা।
মাছটি জলে দৌড়ায়—'পলাপ পলাপ!'
সে বলে, 'আমি জলের রানী।
তুমি যদি আমার বন্ধু হতে চাও,
তাহলে হাসো, হাসো, হাসো!'
আর মাছটি সবার মুখে হাসি নিয়ে এলো।
গল্প ৪: ছোট্ট গাড়ি
বেবি, একটা ছোট্ট গাড়ি চলে 'বুড়রর বুড়রর'।
গাড়িটা বলে, 'আমি খুব মজার গাড়ি।
তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো পাহাড়ে, নদীতে।
চলে যাবো সূর্যের দেশে।
বুড়রর বুড়রর!'
হাসতে হাসতে গাড়িটা চলে গেলো।
গল্প ৫: তিতা আর মিঠা
তিতা লেবু আর মিঠা আম ছিল দুই বন্ধু।
তিতা লেবু বলে, 'আমার স্বাদ টক!'
মিঠা আম বলে, 'আমার স্বাদ মিষ্টি!'
তারা দুজনে বলল, 'টক আর মিষ্টি মিলে আমরা সেরা!'
তুমি কি টক লেবু আর মিষ্টি আম খেতে চাও?
গল্প ৬: রংধনু
আকাশে উঠল রংধনু।
লাল, নীল, হলুদ, সবুজ—সব রং মিলে সুন্দর।
রংধনু বলে, 'আমি তোমার জন্য এসেছি।
আমার দিকে তাকাও, আর তোমার দিন হবে রঙিন।'
রংধনু হাসে, আকাশও হাসে।
আর আমার সোনামণিও হাসে।
গল্প ৭: হাসি-খুশি ছোট্ট খরগোশ
একদিন, একটি ছোট্ট খরগোশ তার বনভূমিতে মজা করছিল। সে একবার ডানদিকে দৌড়ালো, তারপর বামদিকে, আর মাঝে মাঝে কাঁপিয়ে হাসতে হাসতে লাফিয়ে লাফিয়ে চলে যাচ্ছিল। সবাই তাকে দেখে হাসছিল। খরগোশ বললো, “হাসি মজার জিনিস! তুমি যদি হাসো, তাহলে সবাই খুশি থাকে।” তখন একটি বন্ধু শালিক এসে বললো, “তোমার হাসির মতো মিষ্টি কিছুই নেই। এটা সত্যিই ভালো কাজ!” খরগোশ খুশি হয়ে বললো, “হ্যাঁ, হাসি দিয়ে তো সবার মন ভালো থাকে!”
গল্প ৮: গোলাপ ফুল ও বাচ্চা পাখি
এক ছোট্ট বাচ্চা পাখি তার মা'র সাথে বাসা থেকে বাইরে উড়ে গেল। বাতাসে উড়ে উড়ে সে দেখলো এক সুন্দর গোলাপ ফুল। গোলাপ ফুলের পাপড়ি গুলো নরম নরম, আর তার গন্ধ ছিল খুব মিষ্টি। বাচ্চা পাখি আনন্দে চিৎকার করলো, "মা, দেখো! এই ফুলটা তো খুব সুন্দর!" মা পাখি বললো, "হ্যাঁ, এটা তোমার জন্যই। এই ফুলের মতো তুমি সুন্দর।" শিশুটি খুশি হয়ে পাখির মা'কে দেখে হাসলো।
গল্প ৯: ছোট্ট রঙিন মাছ
এক নদীর পাশে ছিল ছোট্ট একটি মাছ। সে খুব রঙিন, যেন আকাশের সাত রং মিশে গিয়ে তার শরীরে ফুটে উঠেছে। মাছটি নদীর জল খুঁজে বেড়াতো। একদিন সে দেখলো একটি বড় মাছ তাকে অনুসরণ করছে। ছোট মাছ ভয় পায়নি, বরং হাসিমুখে বলল, "ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আমি তো তোমার বন্ধু!" তখন বড় মাছটি হেসে বলল, "তুমি খুব সাহসী, ছোট্ট মাছ।"
গল্প ১০: লাল রঙের পিপঁড়া ও সোনালি প্রজাপতি
একদিন, এক ছোট্ট লাল রঙের পিপঁড়া ঘাসের উপর দৌড়াচ্ছিল। সে খুব দ্রুত চলছিল, মনে হচ্ছিল যেন পৃথিবীটা ছোট হয়ে গেছে। হঠাৎ, সে একটি সোনালি প্রজাপতিকে দেখতে পেল, যেটি খুব সুন্দরভাবে উড়ে যাচ্ছিল। প্রজাপতির পাখাগুলো রঙিন ছিল, যেন আকাশের সব রং মিশে একত্রিত হয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করছে।
পিপঁড়া ছোট্ট পায়ে এগিয়ে গিয়ে প্রজাপতিকে বললো, “তুমি কত সুন্দর! তুমি কীভাবে এত সহজে উড়তে পারো?” প্রজাপতি মিষ্টি করে হাসলো এবং বললো, “আমি সহজে উড়তে পারি কারণ আমি বিশ্বাস করি, আকাশ সবসময় আমার বন্ধু। তুমি জানো, তোমার মতো ছোট্ট পিপঁড়া যদি বিশ্বাস করো, তাহলে তোমার পথও সহজ হয়ে যাবে!”
পিপঁড়া প্রজাপতির কথা শুনে খুশি হয়ে বললো, “তুমি তো সত্যি, আমারও বিশ্বাস জন্মালো। আমি আজ থেকে আরও দ্রুত দৌড়াবো!” তারপর পিপঁড়া নিজের ছোট পা দিয়ে আরও দ্রুত দৌড়াতে শুরু করলো, আর প্রজাপতি হাসতে হাসতে আকাশে উড়ে গেল
এ সম্পর্কিত অন্যান্য পোস্ট-
শিশুদের জন্য মজার শব্দের জাদু
সোনামণির মধুর সময়- যে সময়ে যে গল্প