somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশুর চোখে প্রকৃতিঃ সোনামনিদের ১০টি গল্প

৩০ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যখন আমরা শিশুদের চোখ দিয়ে পৃথিবীকে দেখি, তখন প্রতিটি দৃশ্যই হয়ে ওঠে এক দুর্দান্ত গল্প। ০-০৬ মাস- এই সময়টিতে শিশুরা নতুন শব্দ ও স্বর শুনে অভ্যস্ত হয়। তারা চেহারা ও স্বরের প্রতি বেশি সংবেদনশীল। সোনামণির মধুর সময়- যে সময়ে যে গল্প সিরিজে আজ আমরা কিছু মনোমুগ্ধকর গল্প শিশুদের বলবো, যেখানে বিভিন্ন প্রাণী, যেমন খরগোশ, শিয়াল, পাখি, এবং ফুল, একসাথে পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করছে।

গল্প ১: ছোট্ট পাখি টুনটুনি


একটি ছোট্ট পাখি ছিলো, নাম তার টুনটুনি।
টুনটুনি গাছে গাছে উড়ে বেড়ায়।
'টুইট টুইট!' বলে ডাক দেয়।
টুনটুনি বলে, 'আকাশ অনেক বড়,
আমি আকাশে উড়বো, হালকা হাওয়ায় ভাসবো।
টুনটুনি সবার বন্ধু। তুমি কি টুনটুনিকে দেখেছ?

গল্প ২: লাল বল


একটি লাল বল ছিলো, গোলগাল আর নরম।
বলটা গড়িয়ে যায়—'গড় গড়, গড় গড়, গড় গড়!'
একদিন বলটা বাগানে গড়ালো।
ফুল, পাতা, আর ঘাসের সাথে বল বললো,
'তোমরা কি খেলবে আমার সাথে?'
ঘাস বলল, 'হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমরা তোমার বন্ধু!'
আর তারা মিলে খেললো।

গল্প ৩: রঙিন মাছ


জলে ছিলো একটি রঙিন মাছ।
নীল রঙের লেজ, লাল রঙের পাখনা।
মাছটি জলে দৌড়ায়—'পলাপ পলাপ!'
সে বলে, 'আমি জলের রানী।
তুমি যদি আমার বন্ধু হতে চাও,
তাহলে হাসো, হাসো, হাসো!'
আর মাছটি সবার মুখে হাসি নিয়ে এলো।

গল্প ৪: ছোট্ট গাড়ি


বেবি, একটা ছোট্ট গাড়ি চলে 'বুড়রর বুড়রর'।
গাড়িটা বলে, 'আমি খুব মজার গাড়ি।
তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো পাহাড়ে, নদীতে।
চলে যাবো সূর্যের দেশে।
বুড়রর বুড়রর!'
হাসতে হাসতে গাড়িটা চলে গেলো।

গল্প ৫: তিতা আর মিঠা


তিতা লেবু আর মিঠা আম ছিল দুই বন্ধু।
তিতা লেবু বলে, 'আমার স্বাদ টক!'
মিঠা আম বলে, 'আমার স্বাদ মিষ্টি!'
তারা দুজনে বলল, 'টক আর মিষ্টি মিলে আমরা সেরা!'
তুমি কি টক লেবু আর মিষ্টি আম খেতে চাও?

গল্প ৬: রংধনু


আকাশে উঠল রংধনু।
লাল, নীল, হলুদ, সবুজ—সব রং মিলে সুন্দর।
রংধনু বলে, 'আমি তোমার জন্য এসেছি।
আমার দিকে তাকাও, আর তোমার দিন হবে রঙিন।'
রংধনু হাসে, আকাশও হাসে।
আর আমার সোনামণিও হাসে।

গল্প ৭: হাসি-খুশি ছোট্ট খরগোশ


একদিন, একটি ছোট্ট খরগোশ তার বনভূমিতে মজা করছিল। সে একবার ডানদিকে দৌড়ালো, তারপর বামদিকে, আর মাঝে মাঝে কাঁপিয়ে হাসতে হাসতে লাফিয়ে লাফিয়ে চলে যাচ্ছিল। সবাই তাকে দেখে হাসছিল। খরগোশ বললো, “হাসি মজার জিনিস! তুমি যদি হাসো, তাহলে সবাই খুশি থাকে।” তখন একটি বন্ধু শালিক এসে বললো, “তোমার হাসির মতো মিষ্টি কিছুই নেই। এটা সত্যিই ভালো কাজ!” খরগোশ খুশি হয়ে বললো, “হ্যাঁ, হাসি দিয়ে তো সবার মন ভালো থাকে!”

গল্প ৮: গোলাপ ফুল ও বাচ্চা পাখি


এক ছোট্ট বাচ্চা পাখি তার মা'র সাথে বাসা থেকে বাইরে উড়ে গেল। বাতাসে উড়ে উড়ে সে দেখলো এক সুন্দর গোলাপ ফুল। গোলাপ ফুলের পাপড়ি গুলো নরম নরম, আর তার গন্ধ ছিল খুব মিষ্টি। বাচ্চা পাখি আনন্দে চিৎকার করলো, "মা, দেখো! এই ফুলটা তো খুব সুন্দর!" মা পাখি বললো, "হ্যাঁ, এটা তোমার জন্যই। এই ফুলের মতো তুমি সুন্দর।" শিশুটি খুশি হয়ে পাখির মা'কে দেখে হাসলো।

গল্প ৯: ছোট্ট রঙিন মাছ


এক নদীর পাশে ছিল ছোট্ট একটি মাছ। সে খুব রঙিন, যেন আকাশের সাত রং মিশে গিয়ে তার শরীরে ফুটে উঠেছে। মাছটি নদীর জল খুঁজে বেড়াতো। একদিন সে দেখলো একটি বড় মাছ তাকে অনুসরণ করছে। ছোট মাছ ভয় পায়নি, বরং হাসিমুখে বলল, "ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আমি তো তোমার বন্ধু!" তখন বড় মাছটি হেসে বলল, "তুমি খুব সাহসী, ছোট্ট মাছ।"

গল্প ১০: লাল রঙের পিপঁড়া ও সোনালি প্রজাপতি


একদিন, এক ছোট্ট লাল রঙের পিপঁড়া ঘাসের উপর দৌড়াচ্ছিল। সে খুব দ্রুত চলছিল, মনে হচ্ছিল যেন পৃথিবীটা ছোট হয়ে গেছে। হঠাৎ, সে একটি সোনালি প্রজাপতিকে দেখতে পেল, যেটি খুব সুন্দরভাবে উড়ে যাচ্ছিল। প্রজাপতির পাখাগুলো রঙিন ছিল, যেন আকাশের সব রং মিশে একত্রিত হয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করছে।
পিপঁড়া ছোট্ট পায়ে এগিয়ে গিয়ে প্রজাপতিকে বললো, “তুমি কত সুন্দর! তুমি কীভাবে এত সহজে উড়তে পারো?” প্রজাপতি মিষ্টি করে হাসলো এবং বললো, “আমি সহজে উড়তে পারি কারণ আমি বিশ্বাস করি, আকাশ সবসময় আমার বন্ধু। তুমি জানো, তোমার মতো ছোট্ট পিপঁড়া যদি বিশ্বাস করো, তাহলে তোমার পথও সহজ হয়ে যাবে!”
পিপঁড়া প্রজাপতির কথা শুনে খুশি হয়ে বললো, “তুমি তো সত্যি, আমারও বিশ্বাস জন্মালো। আমি আজ থেকে আরও দ্রুত দৌড়াবো!” তারপর পিপঁড়া নিজের ছোট পা দিয়ে আরও দ্রুত দৌড়াতে শুরু করলো, আর প্রজাপতি হাসতে হাসতে আকাশে উড়ে গেল

এ সম্পর্কিত অন্যান্য পোস্ট-
শিশুদের জন্য মজার শব্দের জাদু
সোনামণির মধুর সময়- যে সময়ে যে গল্প
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফিরে দেখা ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং ভারতের প্রতি একটি সতর্ক বার্তা

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০০

অতীতে গরুর মাংসে হাড় বেশি হওয়ার জের ধরেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে দেখেছি,
.
ও ভাই মুজে মারো মুজে মারো নেহি মাজাক হ রাহে
.
ঢাল-সড়কি,টেঁটা-বল্লম, গুলতি, লাঠিসোটা, ইট পাটকেল নিয়ে তারা দলে দলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকা কেন শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করলো?

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১১



ব্লগে কে কে বলেন, আমেরিকা শেখকে হত্যা করেছে? খুব বেশী ব্লগার ইহা বলেন না; তারা শেখের দুর্নীতি, আওয়ামী লীগের দোষ টোষ নিয়ে বলেন যে, কিছু বিপথগামী সৈনিক শেখকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গড়ে উঠুক ধর্মীয় সম্প্রিতীর মিলন মেলা

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:২৩


ধর্মের নামে একি রক্তের খেলা চেতনাহীন উন্মত্ত মঞ্চে
বিবেকের প্রদীপ যেন নিভে যাচ্ছে অদৃশ্য ঘন কুটচালে
শতাব্দীর সঞ্চিত মানবতার দীপ্যমান শিখা
অন্ধকারের আবরণে ঢেকে দিচ্ছে সম্প্রিতীর গৌরব গাথা।

গোপন লালসার দাবানলে পুড়ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় বিএসএফের বর্বরতা: পঞ্চগড় সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশিকে হত্যা

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:২১

আরেকটি নিরীহ প্রাণের বলিদান

আবারও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশের সীমান্তে নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। পঞ্চগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আনোয়ার হোসেন নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হওয়ার ঘটনা এলাকাবাসীর মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্ডিয়া আমাদের দেশ দখল করে নেবে......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৭

ইন্ডিয়া আমাদের দেশ দখল করে নেবে......

এতো সোজা!
চাইলেই কেউ কোনো দেশ দখল করে নিতে পারে না- তা সে যতই শক্তিধর দেশ হোক। বড়ো, শক্তিশালী রাষ্ট্র হলেই যদি ছোট এবং দুর্বল দেশকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×