ছোট্ট সোনামণির জন্য গল্প বলা শুধু বিনোদন নয়; এটি তার মানসিক বিকাশ এবং সম্পর্কের গভীরতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু কখন, কীভাবে এবং কোন গল্পটি বলা উচিত? আসুন, জেনে নিই বাচ্চাদের বয়স অনুযায়ী গল্প বলার সঠিক পদ্ধতি।
০-৬ মাস: শব্দ আর সুরের মুগ্ধতা
এই সময়টিতে শিশুরা নতুন শব্দ ও স্বর শুনে অভ্যস্ত হয়। তারা চেহারা ও স্বরের প্রতি বেশি সংবেদনশীল।
গল্পের ধরন: সহজ শব্দ বা ছড়া। যেমন, "ছোট্ট একটি কাক ছিল।"
করণীয়: নরম স্বরে কথা বলুন এবং রঙিন ছবি দেখান।
৬-১২ মাস: ছবি আর ছড়ার আনন্দ
এই বয়সে শিশুরা শব্দের অর্থ বোঝার চেষ্টা করে এবং রঙিন জিনিসে আগ্রহী হয়।
গল্পের ধরন: প্রাণী বা রঙিন জগত নিয়ে গল্প।
করণীয়: "এটা কুকুর! এটা কি বলে? ঘেউ ঘেউ!"
১-২ বছর: নতুন শব্দ শেখা
শিশুরা শব্দ আর বাক্য শিখতে থাকে। গল্পগুলো হতে পারে দৈনন্দিন জীবনের সাথে সম্পর্কিত।
গল্পের ধরন: ছোট ও মজার গল্প।
করণীয়: গল্পে মজার শব্দ যোগ করুন এবং প্রশ্ন করে তাকে অংশগ্রহণ করতে দিন।
২-৩ বছর: কল্পনার জগতে প্রবেশ
শিশুরা গল্প শুনে কল্পনা করতে শুরু করে। তারা গল্পের নায়কদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারে।
গল্পের ধরন: নৈতিক শিক্ষার গল্প।
করণীয়: গল্পের শেষে প্রশ্ন করুন, "তুমি হলে কী করতে?"
৩-৫ বছর: গল্পের অংশীদার
এই সময়ে শিশু গল্পের অংশ নিতে চায়। তারা আরও জটিল এবং দীর্ঘ গল্প পছন্দ করে।
গল্পের ধরন: রূপকথা, মজার বা শিক্ষণীয় গল্প।
করণীয়: গল্পে নতুন চরিত্র যোগ করে শিশুকে বলার সুযোগ দিন।
গল্প বলার সময় শিশুর চোখে চোখ রাখুন।
গলার স্বরে বৈচিত্র্য আনুন, যেন গল্প আকর্ষণীয় হয়।
বইয়ের ছবি দেখিয়ে গল্পকে জীবন্ত করুন।
শিশুরা গল্প শুনতে ভালোবাসে কারণ এটি তাদের কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি করে এবং সম্পর্কের বাঁধন শক্তিশালী করে। তাই, আজ থেকেই শুরু করুন আপনার সোনামণির সাথে গল্প বলার সুন্দর যাত্রা।
আপনার সন্তানের বর্তমান বয়স অনুযায়ী, রঙিন ছবি এবং সহজ শব্দ দিয়ে গল্প বলার অভ্যাস শুরু করুন। শিশুর হাসি আর মুগ্ধতা দেখে আপনিই সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হবেন।
এ সম্পর্কিত অন্যান্য পোস্ট-
শিশুর চোখে প্রকৃতিঃ সোনামনিদের ১০টি গল্প
শিশুদের জন্য মজার শব্দের জাদু
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৬