১ম পর্ব
২য় পর্ব
৩য় পর্ব
৪র্থ পর্ব
তুমি কি দেখো নি তোমার প্রতিপালক কি করেছিলেন আ'দ জাতির সাথে। ইরাম গোত্রের প্রতি যারা সুউচ্চ স্তম্ভের অধিকারী ছিল? যার সমতুল্য অন্য কোন নগরে সৃষ্টি করা হয়নি, এবং সামূদের সাথে? যারা উপত্যকার পাথর কেটে গৃহ নির্মাণ করেছিল? (সুরা ফাজরঃ ৬-৯)
রেল স্টেশন হতে বের হয়ে ডানে তাকাতেই দেখতে পেলাম সামূদদের সেই অভিশপ্ত নগরী। অবিশ্বাস্য! এতদিন শুধু পেট্রানগরীর ছবি দেখে এসেছি। আজ নিজ চোখে তার রূপ অনুধাবন করতে পারলাম। একেকটি পাহাড় কেটে সামূদরা এই সমাধিগুলো তৈরি করেছিল।
আমার জানামতে পবিত্র কোরআনেই সর্বপ্রথম সামূদ, আ’দ ও ইরাম জাতির কথা বলা হয়েছে। এর আগে এসব জাতি সম্পর্কে কেউ জানত না। এখনো রুব আল খালি’তে -Empty Quarter (http://en.wikipedia.org/wiki/Rub'_al_Khali) ইরাম নগরী খুঁজে বেড়ানো হচ্ছে।
আমাদের সবার মাঝেই অস্থিরতা আর উত্তেজনা কাজ করছিল। কখন সমাধিগুলোর কাছে যাব। আমি ও সাঈদ দৌড়ে একটি সমাধির কাছে চলে গেলাম। ঝটপট ছবি উঠানোর কাজ চলছে। ছবি তুলেও শান্তি পাচ্ছিনা। কিভাবে তারা পাহাড় কেটে এমন সমাধি তৈরি করতে পারল? এখনতো আমাদের হাতে কত প্রযুক্তি, আমরা কি পারব পাহাড় কেটে এমন একটা সমাধি তৈরি করতে, পারব একটা পিরামিড তৈরি করতে?
পাহাড়গুলো খুব মসৃণ করে কাটা, কারুকাজ করা হয়েছে। দরজাগুলোর উচ্চতা এখনকার মতোই। এতে বুঝা যায় সামূদরা খুব একটা দীর্ঘদেহী ছিলনা। দরজার উপরে একসময় ঈগল আর সিংহের ছবি ছিল। এখন তা আর নেই, মূর্তিপূজা হবে বলে সৌদিরা তা ভেঙ্গে দিয়েছে।
আমরা সমাধির ভেতরে ঢুকলাম। মেঝেতে ছোট বড় লম্বালম্বি গর্ত, যা সামূদদের কবর ছিল। দেয়ালেও লম্বা গর্ত দেখলাম। সেগুলোও বোধয় কবর হিসাবে ব্যবহার করা হতো। আমরা ভেতর হতে বের হয়ে পাহাড় ঘুরতেই চোখ ছানাবড়া। সামনে আরো বিশাল এক সমাধিপাহাড়, আরো অনেক রাজকীয়। তার চারপাশে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সামূদদের কীর্তি। যতদূর চোখ যায় পাহাড় আর সমাধি। পেট্রা নগরী এর কাছে নমস্য। একদিনে দেখে শেষ করা যাবেনা। পরে জেনেছিলাম সামূদদের যে ফ্যামিলি যত প্রভাবশালী ছিল তাদের সমাধি তত বড় ও কারুকার্যময় ছিল।
সমাধির ভেতরে
সাঈদ এসএলআর ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিল ভালো কিছু ছবি তুলবে বলে। কয়েকটি ছবি তোলার পর কোন কারন ছাড়াই ক্যামেরাটি নষ্ট হয়ে গেল। কিছু মনে করলাম না, ঘটনাচক্র হতেই পারে। কিন্তু বেচারার মন খারাপ, এমন সময় ক্যামেরা নষ্ট হবার কোন মানে হয়?
বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সামূদদের কীর্তি।
আমরা জায়গায় জায়গায় থামছি আর ছবি তুলছি। আমাদের ড্রাইভার এদিকে খুবই বিরক্ত। শেষে বলেই ফেলল, “ ওয়াহেদ মাকান, আশারা সুরা। লেইশ?” (একটা জায়গায় তোমরা ১০ টা ছবি তুলে কি মজা পাও?) ... আমরা তো হেসেই বাঁচিনা, তুমি যদি বুঝতা, তাহলে তুমি ১০০ টা ছবি নিতা।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:২৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




