ডেইলি স্টারের খবর থেকে নেওয়াঃ-
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রথম ইনকিউবেটর 'শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর'।
চুয়েট ক্যাম্পাসে ১০ তলার মূল ইনকিউবেশন ভবনটি নির্মাণ করা হবে। সেখানে থাকবে গবেষণা কেন্দ্র, ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমি কোলাবোরেশন জোন, আইডিয়া ডেভেলপমেন্ট জোনসহ ৮টি কোম্পানির জন্য অত্যধুনিক অফিসকক্ষ। বর্তমানে ভবনটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে।
বাংলাদেশের মানুষ (সব মানুষ) যতদিন বুঝবে না ও মানবে না যে- অবকাঠামো মানে কনক্রিট/লোহার বিশাল দালান/গেইট/দেওয়াল/তোরণ/মিনার এইসব না, উন্নয়ন মানে শুধু প্রচুর টাকা খরচ করে বিশাল-বিশাল জিনিস বানানো/কেনা না, ততদিন আসলে বাংলাদেশের প্রকৃত পরিবর্তন হবে না, বরং পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে।
এটা কোন রাজনৈতিক মন্তব্য বা পর্যবেক্ষণ বা বিশ্লেষণ না; এটা একজন ভুক্তভোগী হতভাগা সাধারণ নাগরিকের অভিজ্ঞতাপ্রসূত উপলব্ধি।
আর যেকোন স্থাপনা বা পরিকল্পনার নামের শুরুতে একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তি ও নির্দিষ্ট পরিবারের ব্যক্তিদের নাম থাকা- ঐ পরিবারের/ব্যক্তিদের জন্য অসম্মানজনক। কারণ, যদি ঐ স্থাপনা ও পরিকল্পনাটি অকার্যকর হয়, বা কোন ভুলভ্রান্তি ও ক্ষতির সম্মুখীন হয়, তবে তাদের অপমান হবে। তবে অনেক সময় শুধুমাত্র তাদের নাম থাকার কারণেই জোর করে ঐ সব বস্তু ও ধারণাকে সফল প্রমাণ করতে উঠেপরে লাগা হয়। অথচ আমাদের দেশে, আমাদের জাতিতে- কর্মবীর, পরিশ্রমী, মেধাবী, যোগ্য, সৎ ও জনদরদী মানুষের কমতি নেই। তাদেরকে সবকিছুর আড়ালে ধামাচাপা দিয়ে শুধুমাত্র ক্ষমতাধর, বিত্তবান ও জনপ্রিয় ব্যক্তিদেরকে সাইনবোর্ডের মত ব্যবহার করার মানসিকতা বাদ না দিলে- কোনকিছুই চূড়ান্তভাবে ফলদায়ী হবে না।
১) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বানানো অডিটোরিয়াম পরিত্যক্ত অবস্থায় অব্যবহৃত থাকা;
২) ঢাকাতে বিআরটিসির কোটি কোটি টাকার বাস পরিত্যক্ত অবস্থায় নষ্ট হয়ে যাওয়া;
৩) রোড ছাড়া ব্রিজ ও ব্রিজ ছাড়া ব্রিজের পিলার বানানো;
৪) সিলিকন ভ্যালির নামে ল্যাপটপ-কম্পিউটারের মার্কেট বানানো- যেই যন্ত্রগুলো দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে তেমন কাজেই লাগে না, বরং বিদ্যুৎ অপচয় করে ও মানুষের স্বাস্থ্য-অভ্যাসে ক্ষতি করে;
৫) তালা দেওয়া বন্ধ সরকারি অফিসের নামে কোটি কোটি টাকার সরঞ্জাম কেনা (সেই অফিসের চাকরিজীবিরা গ্রামে না থেকে শহরে অন্য কিছুতে ব্যস্ত) বা কেনার জন্য বরাদ্দ টাকা গায়েব হয়ে যাওয়া;
৬) প্রযুক্তি, ব্যবস্থা, যন্ত্র সব অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হয়ে যাওয়া কিংবা চালু থাকার পরেও ঘন ঘন নষ্টের বাহানায় ডিজিটাল সার্ভিসের পরিবর্তে ম্যানুয়াল সার্ভিস দেওয়া;
চাইলে এরকম লক্ষ লক্ষ বাস্তব উদাহরণ দেওয়া যাবে।
হাতির দেখানোর দাঁত এক, আর চিবানোর দাঁত আরেক- এই প্রবাদটি সম্ভবত আমাদের দেশের "উন্নয়ন কর্মকাণ্ড"-এর পরিপ্রেক্ষিতেই প্রবর্তন হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৪৯